স্ট্রিম প্রতিবেদক
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক ভাষণে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ঘোষণা করেছিলেন যে, তাঁর নেতৃত্বাধীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এমন একটি কাশ্মীর গড়ে তুলবে যা শুধু সন্ত্রাসমুক্তই নয়, বরং পর্যটকদের জন্য এক স্বর্গরাজ্যে পরিণত হবে। তবে ২০২৫ সালের শুরুতে জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি যে বাস্তবতা তুলে ধরেছে, তা মোদির প্রতিশ্রুতির সঙ্গে ব্যাপক বিরোধ তৈরি করেছে। এই নিয়ে একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা
নিবন্ধে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে সংঘটিত এক সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। এই ঘটনার পর অঞ্চলটির নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে এবং কাশ্মীরের অর্ধেক এলাকায় পর্যটকদের প্রবেশ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়। ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায় এবং পারস্পরিক গোলাগুলির ঘটনাও ঘটে। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করলেও ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করেছে। এরই প্রেক্ষাপটে ভারত সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করে, যা দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটায়।
কাশ্মীরের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিও তীব্র নিরাপত্তা অভিযানে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পেহেলগাম হামলার পর ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী অঞ্চলজুড়ে চিরুনি অভিযান শুরু করে, যার অংশ হিসেবে দেড় হাজারের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং ‘সন্দেহভাজন’ সন্ত্রাসীদের ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এই ঘটনা মোদি সরকারের কাশ্মীর নীতির এক বড় দুর্বলতা উন্মোচিত করেছে। বিশেষত, ২০১৯ সালে কাশ্মীরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা বাতিলের সিদ্ধান্ত, যা কোনো আলোচনার ভিত্তিতে হয়নি, আজ এক প্রশ্নবিদ্ধ সিদ্ধান্ত হিসেবে উঠে এসেছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে মোদি সরকার দাবি করেছিল, কাশ্মীরকে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করাই ছিল মূল লক্ষ্য। কিন্তু বাস্তবে তা আরও বিচ্ছিন্নতা ও অসন্তোষ ডেকে এনেছে।
বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর হাজার হাজার নাগরিক গ্রেপ্তার হন, বন্ধ হয়ে যায় ইন্টারনেট ও টেলিযোগাযোগ। জনমিতিক কাঠামো পরিবর্তনের আশঙ্কায় আঞ্চলিক নেতারাও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। যদিও সরকার পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধি করে ‘স্বাভাবিকতা’ তুলে ধরতে চেয়েছে—২০২৪ সালে রেকর্ড ৩৫ লাখ পর্যটক সফর করেছেন—তবে বিশ্লেষকদের মতে, পর্যটন কখনোই প্রকৃত শান্তির মাপকাঠি নয়।
কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ আগে থেকেই পর্যটকদের সংখ্যা দিয়ে ‘স্বাভাবিকতা’ বোঝানোর প্রবণতা সম্পর্কে সতর্ক করেছিলেন। পেহেলগাম হামলা সেই সতর্কবার্তারই বাস্তব রূপ বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক প্রবীণ দোনথি। তাঁর মতে, নয়াদিল্লি ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলো একধরনের আত্মতুষ্টিতে ভুগছিল।
উল্লেখযোগ্যভাবে, শ্রীনগরে ৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত একটি নিরাপত্তা পর্যালোচনা সভায় কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি, যা ইঙ্গিত দেয় যে, দিল্লি বিষয়টিকে মূলত পাকিস্তানের সঙ্গে বৈদেশিক সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে দেখে এবং স্থানীয় রাজনৈতিক মতামতের গুরুত্ব তেমন বিবেচনা করে না।
সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিতের ঘটনাটি আরও উদ্বেগজনক। ১৯৬০ সালের এই চুক্তি বহু যুদ্ধ সত্ত্বেও টিকে ছিল এবং আন্তর্জতিকভাবে তা সফল জলবণ্টন ব্যবস্থার উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হতো। ভারতের এই সিদ্ধান্ত পাকিস্তানের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি আরও জোরালো করেছে। পাকিস্তান ইতিমধ্যে এই পদক্ষেপকে যুদ্ধের ইঙ্গিত হিসেবে বিবেচনা করছে এবং ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তি থেকে সরে আসার হুমকি দিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এসব পদক্ষেপ রাজনৈতিকভাবে তাৎক্ষণিক সুবিধা দিলেও দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতার পথে বড় প্রতিবন্ধক। বিশেষ করে, যখন মোদি সরকার কাশ্মীর ইস্যুকে আদর্শিক লড়াই হিসেবে উপস্থাপন করে এবং রাজনৈতিক শক্তি সংহত করতে এর ব্যবহার করে।
বিশেষজ্ঞরা আরও আশঙ্কা করছেন যে, কাশ্মীর ইস্যুতে মোদি সরকারের জাতীয়তাবাদী অবস্থান ভারতের অন্য অঞ্চলেও মুসলিম বিরোধী মনোভাব বাড়িয়ে তুলছে। হামলার পর কাশ্মীরিদের ওপর হামলা, মুসলিম ভাড়াটেদের উচ্ছেদ, এমনকি চিকিৎসাসেবা থেকে মুসলিমদের বঞ্চিত করার মতো ঘটনা উদ্বেগজনক প্রবণতা নির্দেশ করে।
পরিশেষে, বিশ্লেষকদের অভিমত—কাশ্মীর সংকটের সমাধান কেবল বাহ্যিক শত্রু চিহ্নিত করে নয়, বরং স্থানীয় জনগণের সঙ্গে অন্তর্মুখী রাজনৈতিক সংলাপ ও সমঝোতার মাধ্যমেই সম্ভব। আর এই পথে না হাঁটলে সহিংসতা ও রাজনৈতিক অচলাবস্থা দীর্ঘায়িত হতে পারে।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক ভাষণে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ঘোষণা করেছিলেন যে, তাঁর নেতৃত্বাধীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এমন একটি কাশ্মীর গড়ে তুলবে যা শুধু সন্ত্রাসমুক্তই নয়, বরং পর্যটকদের জন্য এক স্বর্গরাজ্যে পরিণত হবে। তবে ২০২৫ সালের শুরুতে জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি যে বাস্তবতা তুলে ধরেছে, তা মোদির প্রতিশ্রুতির সঙ্গে ব্যাপক বিরোধ তৈরি করেছে। এই নিয়ে একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা
নিবন্ধে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে সংঘটিত এক সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। এই ঘটনার পর অঞ্চলটির নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে এবং কাশ্মীরের অর্ধেক এলাকায় পর্যটকদের প্রবেশ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়। ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায় এবং পারস্পরিক গোলাগুলির ঘটনাও ঘটে। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করলেও ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করেছে। এরই প্রেক্ষাপটে ভারত সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করে, যা দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটায়।
কাশ্মীরের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিও তীব্র নিরাপত্তা অভিযানে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পেহেলগাম হামলার পর ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী অঞ্চলজুড়ে চিরুনি অভিযান শুরু করে, যার অংশ হিসেবে দেড় হাজারের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং ‘সন্দেহভাজন’ সন্ত্রাসীদের ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এই ঘটনা মোদি সরকারের কাশ্মীর নীতির এক বড় দুর্বলতা উন্মোচিত করেছে। বিশেষত, ২০১৯ সালে কাশ্মীরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা বাতিলের সিদ্ধান্ত, যা কোনো আলোচনার ভিত্তিতে হয়নি, আজ এক প্রশ্নবিদ্ধ সিদ্ধান্ত হিসেবে উঠে এসেছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে মোদি সরকার দাবি করেছিল, কাশ্মীরকে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করাই ছিল মূল লক্ষ্য। কিন্তু বাস্তবে তা আরও বিচ্ছিন্নতা ও অসন্তোষ ডেকে এনেছে।
বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর হাজার হাজার নাগরিক গ্রেপ্তার হন, বন্ধ হয়ে যায় ইন্টারনেট ও টেলিযোগাযোগ। জনমিতিক কাঠামো পরিবর্তনের আশঙ্কায় আঞ্চলিক নেতারাও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। যদিও সরকার পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধি করে ‘স্বাভাবিকতা’ তুলে ধরতে চেয়েছে—২০২৪ সালে রেকর্ড ৩৫ লাখ পর্যটক সফর করেছেন—তবে বিশ্লেষকদের মতে, পর্যটন কখনোই প্রকৃত শান্তির মাপকাঠি নয়।
কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ আগে থেকেই পর্যটকদের সংখ্যা দিয়ে ‘স্বাভাবিকতা’ বোঝানোর প্রবণতা সম্পর্কে সতর্ক করেছিলেন। পেহেলগাম হামলা সেই সতর্কবার্তারই বাস্তব রূপ বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক প্রবীণ দোনথি। তাঁর মতে, নয়াদিল্লি ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলো একধরনের আত্মতুষ্টিতে ভুগছিল।
উল্লেখযোগ্যভাবে, শ্রীনগরে ৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত একটি নিরাপত্তা পর্যালোচনা সভায় কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি, যা ইঙ্গিত দেয় যে, দিল্লি বিষয়টিকে মূলত পাকিস্তানের সঙ্গে বৈদেশিক সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে দেখে এবং স্থানীয় রাজনৈতিক মতামতের গুরুত্ব তেমন বিবেচনা করে না।
সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিতের ঘটনাটি আরও উদ্বেগজনক। ১৯৬০ সালের এই চুক্তি বহু যুদ্ধ সত্ত্বেও টিকে ছিল এবং আন্তর্জতিকভাবে তা সফল জলবণ্টন ব্যবস্থার উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হতো। ভারতের এই সিদ্ধান্ত পাকিস্তানের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি আরও জোরালো করেছে। পাকিস্তান ইতিমধ্যে এই পদক্ষেপকে যুদ্ধের ইঙ্গিত হিসেবে বিবেচনা করছে এবং ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তি থেকে সরে আসার হুমকি দিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এসব পদক্ষেপ রাজনৈতিকভাবে তাৎক্ষণিক সুবিধা দিলেও দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতার পথে বড় প্রতিবন্ধক। বিশেষ করে, যখন মোদি সরকার কাশ্মীর ইস্যুকে আদর্শিক লড়াই হিসেবে উপস্থাপন করে এবং রাজনৈতিক শক্তি সংহত করতে এর ব্যবহার করে।
বিশেষজ্ঞরা আরও আশঙ্কা করছেন যে, কাশ্মীর ইস্যুতে মোদি সরকারের জাতীয়তাবাদী অবস্থান ভারতের অন্য অঞ্চলেও মুসলিম বিরোধী মনোভাব বাড়িয়ে তুলছে। হামলার পর কাশ্মীরিদের ওপর হামলা, মুসলিম ভাড়াটেদের উচ্ছেদ, এমনকি চিকিৎসাসেবা থেকে মুসলিমদের বঞ্চিত করার মতো ঘটনা উদ্বেগজনক প্রবণতা নির্দেশ করে।
পরিশেষে, বিশ্লেষকদের অভিমত—কাশ্মীর সংকটের সমাধান কেবল বাহ্যিক শত্রু চিহ্নিত করে নয়, বরং স্থানীয় জনগণের সঙ্গে অন্তর্মুখী রাজনৈতিক সংলাপ ও সমঝোতার মাধ্যমেই সম্ভব। আর এই পথে না হাঁটলে সহিংসতা ও রাজনৈতিক অচলাবস্থা দীর্ঘায়িত হতে পারে।
ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সব মিলিয়ে এখন ভারতের পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত মোট শুল্ক দাঁড়াল ৫০ শতাংশ। অথচ দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ট মিত্র হিসেবেই পরিচিত।
১০ ঘণ্টা আগেপ্রাচীন রোমান আইনও সম্মান রক্ষার্থে হত্যাকে ন্যায্যতা দিত এই বলে যে, ব্যভিচারের জন্য দোষী সাব্যস্ত নারীদের তাদের স্বামীরা হত্যা করতে পারতেন। চীনে কিং রাজবংশের সময়ে পিতা ও স্বামীদের এমন কন্যাদের হত্যা করার অধিকার ছিল, যারা পরিবারের অসম্মান করেছে বলে মনে করা হতো।
২ দিন আগেমার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন পাল্টা শুল্কনীতি সারা দুনিয়ায় হৈচৈ ফেলে দিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেসব দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করেছে তার প্রায় সব দেশই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিয়েছে। বাংলাদেশও এ আলোচনায় অংশ নিয়েছে।
৪ দিন আগেনতুন পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) হোয়াইট হাউস এক বিবৃতি দিয়ে সংশোধিত শুল্কহারের এ ঘোষণা দেয়। ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক অংশীদার ৬৯টি দেশের ওপর আরোপ করা শুল্কহারের তালিকা দেওয়া হয়।
৫ দিন আগে