leadT1ad

ডাকসু ইশতেহার ০৩

প্রার্থীদের ইশতেহারে প্রতিশ্রুতির ফুলঝুড়ি, কতটুকু বাস্তবায়নযোগ্য

কৌরিত্র পোদ্দার তীর্থঢাকা
প্রকাশ : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০: ২৫
আপডেট : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১: ০৪
ডাকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে নানা ইশতেহার প্রকাশ করেছেন প্রার্থীরা। স্ট্রিম গ্রাফিক

রাত পেরোলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট। ক্যাম্পাসের বাতাসে নির্বাচনী আমেজ। ইতোমধ্যে বিভিন্ন প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নিজেদের ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। আবাসন সংকট নিরসন, খাবারের মানোন্নয়ন, পরিবহন ব্যবস্থার আধুনিকায়ন থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ সংস্কারের মতো প্রতিশ্রুতিতে ভরপুর এসব ইশতেহার।

কিন্তু শিক্ষার্থীদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আসার পর এসব প্রতিশ্রুতির কতটা বাস্তবায়ন করতে পারবেন ডাকসুর নির্বাচিত প্রতিনিধিরা? তাঁদের কাজের এখতিয়ারই বা কতটুকু? ডাকসুর গঠনতন্ত্র তাঁদের কতটুকু ক্ষমতা বা স্বাধীনতা দেয়? এই প্রতিবেদনে আলোচনায় থাকা পাঁচটি প্যানেলের ইশতেহার পর্যালোচনা করা হয়েছে; গঠনতন্ত্রের আলোকে দেখা যাক এসব ইশতেহার কতটুকু বাস্তবায়ন সম্ভব।

এ ছাড়া ১৯৭৩-এর অধ্যাদেশ অনুযায়ী, সিনেটে শিক্ষার্থী প্রতিনিধির সংখ্যা ৫। কিন্তু প্রতিরোধ পর্ষদ সেটিকে সংশোধন করে ১০ জন করার প্রস্তাব দিয়েছে। বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদও ৭৩-এর অধ্যাদেশ সংস্কারের দাবি তুলেছে। এ ছাড়া ডাকসু গঠনতন্ত্র সংশোধনের জন্য সর্বোচ্চ উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্যও।

আবাসন ও খাদ্য

প্রতিটি প্যানেলই তাদের ইশতেহারে আবাসন সংকটকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য ‘প্রথম বর্ষ থেকেই সিট’ এবং ‘নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন হল নির্মাণের রোডম্যাপ আদায়’ করার কথা বলেছে। ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল ‘নতুন হল নির্মাণ করে প্রথম দিন থেকেই প্রত্যেক শিক্ষার্থীর আবাসন নিশ্চিত’ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ ‘এক শিক্ষার্থী, এক সিট’ নীতি বাস্তবায়নের কথা বলেছে, আর প্রতিরোধ পর্ষদ ‘গণরুম, গেস্টরুম ও র‍্যাগিং প্রথা নিষিদ্ধ করে ক্যাম্পাস চার্টার প্রকাশ’ করার অঙ্গীকার করেছে।

ডাকসু বা হল সংসদের পক্ষে এককভাবে নতুন হল নির্মাণ করা বা সব শিক্ষার্থীর জন্য আসন নিশ্চিত করা প্রায় অসম্ভব। এটি একটি বড় আর্থিক ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত। ডাকসুর কার্যাবলী অনুযায়ী, (ধারা ৩) এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার ছাত্র সংসদের নেই।

হল সংসদের ক্ষেত্রেও বিষয়টি একই। হল সংসদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, এর সভাপতি হলেন প্রাধ্যক্ষ। হল সংসদ গঠনতন্ত্রের ধারা ৪ অনুযায়ী, প্রাধ্যক্ষের যেকোনো বিষয়ে ভেটো দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। তা ছাড়া ধারা ৯ বলছে, উপাচার্যের অনুমোদন সাপেক্ষে প্রাধ্যক্ষ সংসদকে স্থগিতও করতে পারেন।

সুতরাং ‘গণরুম-গেস্টরুম’ উচ্ছেদের মতো রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে হলে হল প্রশাসনের সদিচ্ছা এবং সক্রিয় অংশগ্রহণ অপরিহার্য। শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা এক্ষেত্রে কেবল পর্যবেক্ষক ও দাবি আদায়ের ভূমিকা পালন করতে পারেন।

খাদ্য সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতিগুলোর ক্ষেত্রেও চিত্র খুব একটা ভিন্ন নয়। প্রতিরোধ পর্ষদ ‘প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে ক্যাফেটেরিয়া চালু’ এবং স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য ‘শিক্ষার্থীদের খাদ্যে ভর্তুকি’ দেওয়ার কথা বলেছে। ডাকসু গঠনতন্ত্রের ধারা ৫ (জে) অনুযায়ী, ‘কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক’ ক্যাফেটেরিয়ার দায়িত্বে থাকবেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তুকি কিংবা বাজেট সংক্রান্ত কোনো কিছুতে তাঁর একার এখতিয়ার নেই। ধারা ৯ (বি) অনুযায়ী, নির্বাহী কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে ডাকসুতে বাজেট পাশ হয়।

ডাকসুর প্রকৃত ক্ষমতা মূলত এর সাংস্কৃতিক দিকটিতেই। এর গঠনতন্ত্রের ধারা ৩-এ সুস্পষ্টভাবে বিতর্ক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খেলাধুলা আয়োজন এবং জার্নাল প্রকাশের কথা বলা হয়েছে। ধারা ৫ (এল) অনুযায়ী ‘সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক’ এবং ধারা ৫ (এন) অনুযায়ী ‘ক্রীড়া সম্পাদক’-এর কাঁধেই এই দায়িত্বগুলো অর্পিত।

অ্যাকাডেমিক ও গবেষণা

শিক্ষার মানোন্নয়নে প্রায় সব প্যানেলই আকর্ষণীয় প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল ‘বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে কারিকুলাম পর্যালোচনার জন্য কমিটি গঠন’ এবং ‘মেধার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগের ওপর জোর’ দেওয়ার কথা বলেছে। স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য ‘একাডেমিক রাইটিং ও সফটওয়্যার প্রশিক্ষণের আয়োজন’ এবং প্রতিরোধ পর্ষদ ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেটের অন্তত ১০ ভাগ গবেষণা খাতে বরাদ্দ নিশ্চিত’ করার মতো প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

কারিকুলাম প্রণয়ন, শিক্ষক নিয়োগ, বা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট বরাদ্দের মতো বিষয়গুলো সম্পূর্ণভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটের এখতিয়ারভুক্ত। ডাকসুর এখানে সরাসরি কোনো ভূমিকা নেই।

তবে, গবেষণা বা দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক কর্মশালা আয়োজন ডাকসুর এখতিয়ারের মধ্যেই পড়ে। গঠনতন্ত্রের ধারা ৫ (এম) অনুযায়ী, ‘গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক’-এর দায়িত্ব গবেষণা কার্যক্রম, কর্মশালা ও সেমিনার আয়োজন করা। একইভাবে, ধারা ৫ (আই) অনুযায়ী ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক’ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কর্মশালা আয়োজন করতে পারেন। কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির আধুনিকায়নের দাবি তোলা গেলেও, একে ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার মতো সিদ্ধান্ত নিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে। প্রতিরোধ পর্ষদের সার্বক্ষণিক লাইব্রেরি খোলা রাখার প্রতিশ্রুতি তাই প্রশাসনের অনুমোদনসাপেক্ষ।

গঠনতন্ত্রের ধারা ৫ (পি) অনুযায়ী, ‘শিক্ষার্থী পরিবহন সম্পাদক’-এর মূল দায়িত্ব হলো বাসগুলোর চলাচল তত্ত্বাবধান করা। নতুন বাস কেনা বা নতুন রুট চালু করা একটি বড় আর্থিক বিষয়, যা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল।

পরিবহন ও স্বাস্থ্য

পরিবহন সংকট নিরসনে স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য ‘বাসের ট্রিপ বাড়ানো’ ও ‘নতুন রুট চালু’ করার কথা বলেছে। ছাত্রদল ‘ক্যাম্পাসে ব্যাটারিচালিত শাটল সার্ভিস চালু’ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, আর প্রতিরোধ পর্ষদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘নিজস্ব অর্থায়নে বাস ক্রয়’ করার দাবি তুলেছে।

স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে, প্রায় সব প্যানেলই মেডিকেল সেন্টারের আধুনিকায়ন, অ্যাম্বুলেন্স বৃদ্ধি, ২৪ ঘণ্টা ডাক্তার নিশ্চিত করা এবং মানসিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

গঠনতন্ত্রের ধারা ৫ (পি) অনুযায়ী, ‘শিক্ষার্থী পরিবহন সম্পাদক’-এর মূল দায়িত্ব হলো বাসগুলোর চলাচল তত্ত্বাবধান করা। নতুন বাস কেনা বা নতুন রুট চালু করা একটি বড় আর্থিক বিষয়, যা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল। ডাকসু এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের চাহিদা তুলে ধরে প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে, কিন্তু নিজেরা বাস কিনতে বা নতুন চালক নিয়োগ দিতে পারে না।

একইভাবে, মেডিকেল সেন্টারের আধুনিকায়ন বা নতুন ডাক্তার নিয়োগের ক্ষমতাও ডাকসুর নেই। তবে, ধারা ৫ (এস) অনুযায়ী, ‘স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক’ স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন বা কর্মশালা আয়োজন করতে পারেন। শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তার জন্য বিভিন্ন সেমিনার বা সাপোর্ট গ্রুপ তৈরির উদ্যোগ নেওয়াও তার এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে, যা প্রায় প্রতিটি প্যানেলই তাদের ইশতেহারে রেখেছে। এটি বাস্তবায়নযোগ্য।

সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া ও অন্যান্য কার্যক্রম

প্রতিটি প্যানেলই খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ছাত্রদল ‘নিয়মিত আন্তঃবিভাগ ও আন্তঃহল ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন’, স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য ‘জিমনেশিয়ামের আধুনিকায়ন’ এবং প্রতিরোধ পর্ষদ ‘হল অডিটোরিয়াম সংস্কার’ করার কথা বলেছে। এ ছাড়া সাইবার বুলিং প্রতিরোধ সেল গঠন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান, বৃক্ষরোপণ এবং ডিজিটাল অ্যাপ তৈরির মতো প্রতিশ্রুতিও প্রায় সবার ইশতেহারে রয়েছে।

ডাকসুর প্রকৃত ক্ষমতা মূলত এর সাংস্কৃতিক দিকটিতেই। এর গঠনতন্ত্রের ধারা ৩-এ সুস্পষ্টভাবে বিতর্ক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খেলাধুলা আয়োজন এবং জার্নাল প্রকাশের কথা বলা হয়েছে। ধারা ৫ (এল) অনুযায়ী ‘সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক’ এবং ধারা ৫ (এন) অনুযায়ী ‘ক্রীড়া সম্পাদক’-এর কাঁধেই এই দায়িত্বগুলো অর্পিত। তারা বাজেট প্রণয়ন করে নির্বাহী কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে এসব কার্যক্রম সহজেই বাস্তবায়ন করতে পারেন।

ধারা ৫ (টি) অনুযায়ী, সাইবার বুলিং বা যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধে শিক্ষার্থীদের আইনি সহায়তা দেওয়া বা সচেতনতা তৈরির মতো উদ্যোগ মানবাধিকার ও আইন বিষয়ক সম্পাদক নিতে পারেন। এই প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবসম্মত এবং ডাকসুর এখতিয়ারভুক্ত।

প্রতিটি প্যানেলই তাদের ইশতেহারে আবাসন সংকটকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য ‘প্রথম বর্ষ থেকেই সিট’ এবং ‘নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন হল নির্মাণের রোডম্যাপ আদায়’ করার কথা বলেছে। ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল ‘নতুন হল নির্মাণ করে প্রথম দিন থেকেই প্রত্যেক শিক্ষার্থীর আবাসন নিশ্চিত’ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

উপাচার্যই ‘সব’

ডাকসু নিয়ে প্রার্থীরা অনেক ইশতেহার দিলেও, ডাকসুর সর্বময় ক্ষমতা অনেকটাই উপাচার্য তথা সভাপতির হাতে ন্যস্ত। ধারা ৫ (বি)-এ বলা হয়েছে, সভাপতি সিন্ডিকেটের অনুমোদন সাপেক্ষে এবং ডাকসুর সর্বোত্তম স্বার্থে নির্বাহী কমিটির যে কাউকে, যে কোনো সময় বরখাস্ত করতে পারেন। এমনকি পুরো কমিটিই বাতিল করে নতুন নির্বাচন ঘোষণা করতে পারেন।

এখানে ‘সর্বোত্তম স্বার্থ’ বিষয়টি সুনির্দিষ্টভাবে সংজ্ঞায়ন করা হয়নি। তা ছাড়া ১৯৭৩-এর অধ্যাদেশ অনুযায়ী, সিন্ডিকেটে কোনো শিক্ষার্থী থাকার সুযোগ নেই।

অর্থাৎ, শিক্ষার্থীদের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিকে যে কোনো সময় বরখাস্ত করা যাবে। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কাছে কোনো জবাবদিহিতার প্রয়োজন নেই।

প্রতিরোধ পর্ষদ তাদের ইশতেহারে এই বিষয়টি তুলে ধরেছে। তারা বলছে, ‘হল এবং কেন্দ্রীয় সংসদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অপসারণ বা কোনো কারণে বিলুপ্ত করতে হলে তা শিক্ষার্থীদের গণভোটের মাধ্যমে হতে হবে, কোনোভাবেই প্রোভোস্ট এবং উপাচার্যের হাতে এ ক্ষমতা রাখা যাবে না।’

এ ছাড়া ১৯৭৩-এর অধ্যাদেশ অনুযায়ী, সিনেটে শিক্ষার্থী প্রতিনিধির সংখ্যা ৫। কিন্তু প্রতিরোধ পর্ষদ সেটিকে সংশোধন করে ১০ জন করার প্রস্তাব দিয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদও ৭৩-এর অধ্যাদেশ সংস্কারের দাবি তুলেছে। এ ছাড়া ডাকসু গঠনতন্ত্র সংশোধনের জন্য সর্বোচ্চ উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্যও।

কোন প্রক্রিয়ায় ৭৩-এর অধ্যাদেশ সংস্কার করা হবে, সেটি সম্পর্কে কিছু বলা নেই প্যানেলগুলোর ইশতেহারে। ডাকসুর নিজস্ব গঠনতন্ত্র সংশোধন করার ক্ষমতা নির্বাচিত শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের নেই। গঠনতন্ত্রের ধারা ১৬ অনুযায়ী, এটি কেবল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট পরিবর্তন করতে পারে।

প্রতিবছর নির্বাচন আয়োজনের বিষয়টিও ডাকসুর হাতে নেই। গঠনতন্ত্রের ধারা ৮ (জি) অনুযায়ী, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করার ক্ষমতা ডাকসুর সভাপতির, অর্থাৎ উপাচার্যের। শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা কেবল নিয়মিত নির্বাচনের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে পারেন।

প্রতিরোধ পর্ষদ কীভাবে তাঁদের গঠনতন্ত্র সংক্রান্ত ইশতেহার বাস্তবায়ন করবে, সে বিষয়ে জানতে চাইলে প্যানেলটির সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) প্রার্থী জাবির আহমেদ জুবেল স্ট্রিমকে বলেন, ‘ডাকসুর সদস্য হিসেবে হয়তো অফিশিয়াল ক্ষমতা থাকবে না, কিন্তু তারপরও আমরা আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে বাধ্য করতে পারব যে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে। আমরা নির্বাচিত হয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে লড়াই করে আমাদের ইশতেহারের বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করব। আমরা গঠনতন্ত্রের পরিবর্তনের বিষয়টা বাস্তবায়ন করব।’

Ad 300x250

সম্পর্কিত