স্ট্রিম ডেস্ক
নেপালে জেন-জি আন্দোলনে পুলিশ-বিক্ষোভকারী সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯। আহত হয়েছে আরও ১০০ জনের বেশি। সম্প্রতি কেপি শর্মা অলি নেতৃতাধীন সরকারের সিদ্ধান্তে একাধিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাপের ওপর নিষেধাজ্ঞা ও সরকারে দুর্নীতির প্রতিবাদে শুরু হওয়া এ বিক্ষোভ এখন সহিংস আন্দোলনে রূপ নিয়েছে।
আজ রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) নেপালি সংবাদমাধ্যম দ্য কাটমান্ডু পোস্ট জানিয়েছে, রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে শুরু হওয়া এই জেন-জি বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে দেশটির অন্যান্য অঞ্চলেও। ইতিমধ্যেই বানেশ্বর, সিংহদরবার, নারায়ণহিটি ও সংবেদনশীল সরকারি এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছে।
প্রতিবাদ ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠলে প্রধানমন্ত্রী অলি আজ সন্ধ্যায় মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নিউ বানেশ্বর এলাকায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধিত হয়নি অভিযোগ করে নেপাল সরকার ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামসহ একাধিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের ঘোষণা দেয়। সরকারের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২৮ আগস্ট থেকে এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হলেও মেটা (ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ), অ্যালফাবেট (ইউটিউব), এক্স (আগের টুইটার), রেডিট ও লিংকডইন কেউই বেঁধে দেওয়ার সময়সীমার মধ্যে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেনি।
অন্যদিকে টিকটক, ভাইবার, উইটক, নিমবাজ ও পোপো লাইভ নিবন্ধন করেছে বলে এখনো চালু রয়েছে। টেলিগ্রাম ও গ্লোবাল ডায়েরির আবেদন এখনো যাচাই করছে নেপাল সরকার।
গত বছর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এই নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। নির্দেশে আরও বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানিগুলোকে অবশ্যই নেপালে একটি শাখা কেন্দ্র গড়ে তুলতে হবে এবং একজন কর্মকর্তা ও একজন কমপ্লায়েন্স অফিসার নিয়োগ করতে হবে।
‘দ্য কাঠমান্ডু পোস্ট’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, নেপালে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৩৫ লাখ ও ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারী প্রায় ৩৬ লাখ। অনেকেই তাদের ব্যবসার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর নির্ভরশীল। তাই এগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে মানুষ রাস্তায় নামে। পরে এই আন্দোলন দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়।
২৪ বছর বয়সী ছাত্র যুবরাজ রাজভাণ্ডারী এএফপিকে বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ আমাদের রাস্তায় নামতে বাধ্য করেছে, কিন্তু এটাই একমাত্র কারণ নয়। নেপালে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নেওয়া দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা প্রতিবাদ করছি।’
২০ বছর বয়সী ছাত্রী ইক্ষামা তুমরোক বলেন, তিনি সরকারের ‘স্বৈরাচারী মনোভাবের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন। তাঁর ভাষায়, ‘আমরা পরিবর্তন চাই। আগের প্রজন্ম হয়তো সহ্য করেছে, কিন্তু আমাদের প্রজন্মে এই ঘুনেধরা ব্যবস্থার সমাপ্তি ঘটবে।’
এক ভিডিওতে একজন প্রতিবাদকারীকে বলতে শোনা যায়, ‘নেতাদের ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যৎ আছে। আমাদের ভবিষ্যৎ কোথায়?’
প্রায় সব ধরনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞার কারণে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নেপালের ব্যবসা-বাণিজ্য ও পর্যটন শিল্প।
অসংখ্য নেপালি নাগরিকের পরিবার-পরিজন বিদেশে বসবাস ও কাজ করেন। তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মেসেজিং অ্যাপ একেবারেই অপরিহার্য।
গতকাল রোববার কয়েক ডজন সাংবাদিক রাজধানী কাঠমান্ডুতে জড়ো হয়ে ‘সোশ্যাল নেটওয়ার্ক বন্ধ নয়, কণ্ঠরোধ নয়’, ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আমাদের অধিকার’ এবং ‘গণতন্ত্র হ্যাকড, স্বৈরশাসন ফিরে এসেছে’ ইত্যাদি স্লোগান দিয়ে এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন।
আন্তর্জাতিক এনজিও ‘কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস’ (সিপিজে) সতর্ক করে বলে, এই নিষেধাজ্ঞা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য এক ‘বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত’।
এদিকে সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি বলেন, তিনি ‘জাতিকে দুর্বল করার’ কোনো প্রচেষ্টা বরদাশত করবেন না।
গতকাল রোববার এক বিবৃতিতে নেপাল সরকার জানিয়েছে, তারা চিন্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে সম্মান করে এবং এর সুরক্ষা ও অবাধ ব্যবহারের পরিবেশ সৃষ্টি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এর আগেও অনলাইন জালিয়াতি ও মানি লন্ডারিংয়ের কাজে ব্যবহৃত হওয়ার অভিযোগে নেপাল সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রাম বন্ধ করেছিল। গত বছর নেপাল সরকার টিকটকও নিষিদ্ধ করেছিল। তবে আগস্টে টিকটক নেপালি বিধিনিষেধ মানতে রাজি হলে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।
নেপাল-ভারত সীমান্ত বিশেষত কালাপানি, লিপুলেখ ও লিম্পিয়াধুরা অঞ্চল নিয়ে বিরোধের জের ধরে দেশটিতে জাতীয়তাবাদী মনোভাব বেড়েছে। অনেকেই দেশের সার্বভৌমত্ব ও রাজনৈতিক স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এসব বিষয়ে বিরোধিতা ও জাতীয়তাবাদী কণ্ঠস্বর তুলে ধরার প্রধান মাধ্যম হয়ে উঠেছিল। তাই গতকাল সরকার যখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে দেয়, তখন সেটিকে রাজনৈতিক সেন্সরশিপ হিসেবে দেখা হয়। বিশেষ করে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ব্যবস্থাপনায় সরকারের সমালোচনা দমন করার চেষ্টা বলেই মনে করেছে অনেকে।
এছাড়া নেপালের রাজপরিবারের সঙ্গে ভারতের ঐতিহাসিক সম্পর্কও দীর্ঘদিন ধরে আলোচিত। নেপালে আগের বিভিন্ন আন্দোলন ও বর্তমান আন্দোলনের অংশগ্রহণকারীরা, নেপালি রাজতন্ত্রের এই ঘনিষ্ঠতাকে অতিরিক্ত বিদেশি প্রভাবের প্রতীক হিসেবে দেখে।
অন্যদিকে, চীন সরাসরি এই প্রতিবাদে জড়িত না হলেও বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) চুক্তির মাধ্যমে নেপালের রাজনীতি তাদের প্রভাব স্পষ্ট। নেপালের সংবাদমাধ্যম অন্নপূর্ণা পোস্টে প্রকাশিত এক মতামতে দাবি করা হয়েছে, নেপালের চীনের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান সম্পর্কই হয়তো সরকারের ভিন্নমত দমনের একটি কারণ। চীনের মতো কঠোর ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সেন্সরশিপ হয়তো নেপালের জন্য একটি মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নেপালের চলমান অস্থিরতা থেকে বাংলাদেশকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ, বাংলাদেশও ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যেই ধোঁয়াশা ও রাজনৈতিক অনাস্থা সৃষ্টির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। নেপালের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষেধাজ্ঞা ও চীনের সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠতা দক্ষিণ এশিয়ায় আরও অস্থিরতা তৈরি করতে পারে। বড় শক্তিগুলোর প্রভাব যদি বাড়ে তবে আসন্ন নির্বাচনের আগের সময় আরও জটিল হয়ে যেতে পারে।
২০২৪ সালে বাংলাদেশের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকেই এশিয়ার বিভিন্ন দেশে একই রকম আন্দোলন দেখা যাচ্ছে। নেপালের এই আন্দোলনের ফলাফল কী হবে, তা এখন অনিশ্চিত। তবে বিশ্বজুড়ে গণমানুষের জাগরণের যে নতুন জোয়ার শুরু হয়েছে, তা হয়ত বিভিন্ন রাষ্ট্রকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করবে।
নেপালে জেন-জি আন্দোলনে পুলিশ-বিক্ষোভকারী সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯। আহত হয়েছে আরও ১০০ জনের বেশি। সম্প্রতি কেপি শর্মা অলি নেতৃতাধীন সরকারের সিদ্ধান্তে একাধিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাপের ওপর নিষেধাজ্ঞা ও সরকারে দুর্নীতির প্রতিবাদে শুরু হওয়া এ বিক্ষোভ এখন সহিংস আন্দোলনে রূপ নিয়েছে।
আজ রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) নেপালি সংবাদমাধ্যম দ্য কাটমান্ডু পোস্ট জানিয়েছে, রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে শুরু হওয়া এই জেন-জি বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে দেশটির অন্যান্য অঞ্চলেও। ইতিমধ্যেই বানেশ্বর, সিংহদরবার, নারায়ণহিটি ও সংবেদনশীল সরকারি এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছে।
প্রতিবাদ ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠলে প্রধানমন্ত্রী অলি আজ সন্ধ্যায় মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নিউ বানেশ্বর এলাকায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধিত হয়নি অভিযোগ করে নেপাল সরকার ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামসহ একাধিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের ঘোষণা দেয়। সরকারের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২৮ আগস্ট থেকে এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হলেও মেটা (ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ), অ্যালফাবেট (ইউটিউব), এক্স (আগের টুইটার), রেডিট ও লিংকডইন কেউই বেঁধে দেওয়ার সময়সীমার মধ্যে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেনি।
অন্যদিকে টিকটক, ভাইবার, উইটক, নিমবাজ ও পোপো লাইভ নিবন্ধন করেছে বলে এখনো চালু রয়েছে। টেলিগ্রাম ও গ্লোবাল ডায়েরির আবেদন এখনো যাচাই করছে নেপাল সরকার।
গত বছর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এই নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। নির্দেশে আরও বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানিগুলোকে অবশ্যই নেপালে একটি শাখা কেন্দ্র গড়ে তুলতে হবে এবং একজন কর্মকর্তা ও একজন কমপ্লায়েন্স অফিসার নিয়োগ করতে হবে।
‘দ্য কাঠমান্ডু পোস্ট’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, নেপালে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৩৫ লাখ ও ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারী প্রায় ৩৬ লাখ। অনেকেই তাদের ব্যবসার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর নির্ভরশীল। তাই এগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে মানুষ রাস্তায় নামে। পরে এই আন্দোলন দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়।
২৪ বছর বয়সী ছাত্র যুবরাজ রাজভাণ্ডারী এএফপিকে বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ আমাদের রাস্তায় নামতে বাধ্য করেছে, কিন্তু এটাই একমাত্র কারণ নয়। নেপালে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নেওয়া দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা প্রতিবাদ করছি।’
২০ বছর বয়সী ছাত্রী ইক্ষামা তুমরোক বলেন, তিনি সরকারের ‘স্বৈরাচারী মনোভাবের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন। তাঁর ভাষায়, ‘আমরা পরিবর্তন চাই। আগের প্রজন্ম হয়তো সহ্য করেছে, কিন্তু আমাদের প্রজন্মে এই ঘুনেধরা ব্যবস্থার সমাপ্তি ঘটবে।’
এক ভিডিওতে একজন প্রতিবাদকারীকে বলতে শোনা যায়, ‘নেতাদের ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যৎ আছে। আমাদের ভবিষ্যৎ কোথায়?’
প্রায় সব ধরনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞার কারণে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নেপালের ব্যবসা-বাণিজ্য ও পর্যটন শিল্প।
অসংখ্য নেপালি নাগরিকের পরিবার-পরিজন বিদেশে বসবাস ও কাজ করেন। তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মেসেজিং অ্যাপ একেবারেই অপরিহার্য।
গতকাল রোববার কয়েক ডজন সাংবাদিক রাজধানী কাঠমান্ডুতে জড়ো হয়ে ‘সোশ্যাল নেটওয়ার্ক বন্ধ নয়, কণ্ঠরোধ নয়’, ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আমাদের অধিকার’ এবং ‘গণতন্ত্র হ্যাকড, স্বৈরশাসন ফিরে এসেছে’ ইত্যাদি স্লোগান দিয়ে এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন।
আন্তর্জাতিক এনজিও ‘কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস’ (সিপিজে) সতর্ক করে বলে, এই নিষেধাজ্ঞা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য এক ‘বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত’।
এদিকে সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি বলেন, তিনি ‘জাতিকে দুর্বল করার’ কোনো প্রচেষ্টা বরদাশত করবেন না।
গতকাল রোববার এক বিবৃতিতে নেপাল সরকার জানিয়েছে, তারা চিন্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে সম্মান করে এবং এর সুরক্ষা ও অবাধ ব্যবহারের পরিবেশ সৃষ্টি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এর আগেও অনলাইন জালিয়াতি ও মানি লন্ডারিংয়ের কাজে ব্যবহৃত হওয়ার অভিযোগে নেপাল সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রাম বন্ধ করেছিল। গত বছর নেপাল সরকার টিকটকও নিষিদ্ধ করেছিল। তবে আগস্টে টিকটক নেপালি বিধিনিষেধ মানতে রাজি হলে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।
নেপাল-ভারত সীমান্ত বিশেষত কালাপানি, লিপুলেখ ও লিম্পিয়াধুরা অঞ্চল নিয়ে বিরোধের জের ধরে দেশটিতে জাতীয়তাবাদী মনোভাব বেড়েছে। অনেকেই দেশের সার্বভৌমত্ব ও রাজনৈতিক স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এসব বিষয়ে বিরোধিতা ও জাতীয়তাবাদী কণ্ঠস্বর তুলে ধরার প্রধান মাধ্যম হয়ে উঠেছিল। তাই গতকাল সরকার যখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে দেয়, তখন সেটিকে রাজনৈতিক সেন্সরশিপ হিসেবে দেখা হয়। বিশেষ করে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ব্যবস্থাপনায় সরকারের সমালোচনা দমন করার চেষ্টা বলেই মনে করেছে অনেকে।
এছাড়া নেপালের রাজপরিবারের সঙ্গে ভারতের ঐতিহাসিক সম্পর্কও দীর্ঘদিন ধরে আলোচিত। নেপালে আগের বিভিন্ন আন্দোলন ও বর্তমান আন্দোলনের অংশগ্রহণকারীরা, নেপালি রাজতন্ত্রের এই ঘনিষ্ঠতাকে অতিরিক্ত বিদেশি প্রভাবের প্রতীক হিসেবে দেখে।
অন্যদিকে, চীন সরাসরি এই প্রতিবাদে জড়িত না হলেও বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) চুক্তির মাধ্যমে নেপালের রাজনীতি তাদের প্রভাব স্পষ্ট। নেপালের সংবাদমাধ্যম অন্নপূর্ণা পোস্টে প্রকাশিত এক মতামতে দাবি করা হয়েছে, নেপালের চীনের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান সম্পর্কই হয়তো সরকারের ভিন্নমত দমনের একটি কারণ। চীনের মতো কঠোর ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সেন্সরশিপ হয়তো নেপালের জন্য একটি মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নেপালের চলমান অস্থিরতা থেকে বাংলাদেশকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ, বাংলাদেশও ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যেই ধোঁয়াশা ও রাজনৈতিক অনাস্থা সৃষ্টির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। নেপালের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষেধাজ্ঞা ও চীনের সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠতা দক্ষিণ এশিয়ায় আরও অস্থিরতা তৈরি করতে পারে। বড় শক্তিগুলোর প্রভাব যদি বাড়ে তবে আসন্ন নির্বাচনের আগের সময় আরও জটিল হয়ে যেতে পারে।
২০২৪ সালে বাংলাদেশের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকেই এশিয়ার বিভিন্ন দেশে একই রকম আন্দোলন দেখা যাচ্ছে। নেপালের এই আন্দোলনের ফলাফল কী হবে, তা এখন অনিশ্চিত। তবে বিশ্বজুড়ে গণমানুষের জাগরণের যে নতুন জোয়ার শুরু হয়েছে, তা হয়ত বিভিন্ন রাষ্ট্রকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করবে।
নেপাল সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম (ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব) কোম্পানির সাথে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিরোধে জড়িয়েছে, যা মূলত রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিভ্রান্তিকর তথ্য এবং সামাজিক অস্থিরতার কারণে সৃষ্টি হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগেরাত পেরোলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট। ক্যাম্পাসের বাতাসে নির্বাচনী আমেজ। ইতোমধ্যে বিভিন্ন প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নিজেদের ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। আবাসন সংকট নিরসন, খাবারের মানোন্নয়ন, পরিবহন ব্যবস্থার আধুনিকায়ন থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ
৫ ঘণ্টা আগেঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে আগামীকাল ৯ সেপ্টেম্বর। ভোটে মোট ৯টি পূর্ণাঙ্গ প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। বিশ্লেষকদের মতে, এবারের ডাকসু নির্বাচন বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতি এবং জাতীয় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি মাইলফলক হতে যাচ্ছে।
১০ ঘণ্টা আগেলেবাননের দক্ষিণাঞ্চল থেকে শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতিসংঘ। আগামী বছরের শেষ নাগাদ শান্তিরক্ষীদের ফিরিয়ে নেবে তারা। যুক্তরাষ্ট্র ও তার ঘনিষ্ঠ মিত্র ইসরায়েলের চাপের মুখে নেওয়া এ সিদ্ধান্তকে অনেকে দেখছেন ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ বাস্তবায়নের নতুন অগ্রগতি হিসেবে।
১৫ ঘণ্টা আগে