.png)
তাঁর সমাজতান্ত্রিক চিন্তাধারা ইসলামের সমতার শিক্ষা থেকে অনুপ্রাণিত। ফলে তিনি ধর্মীয় মূল্যবোধ ও প্রগতিশীল রাজনীতির মধ্যে এক সেতুবন্ধন রচনা করেছেন, যা তাঁকে আধুনিক গণমাধ্যমে এক অনন্য কণ্ঠে পরিণত করেছে।

মাহবুবুল আলম তারেক

ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত আমেরিকান সাংবাদিক মেহদি হাসান গত ১৮ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে ‘নো কিংস’ বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তৃতা দিয়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। ডিজিটাল সংবাদমাধ্যম জেটিও-র প্রতিষ্ঠাতা হাসান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির কড়া সমালোচনা করেন। তিনি ট্রাম্পকে উল্লেখ করেন ‘একজন অভিবাসীর পুত্র, অভিবাসীর নাতি এবং অভিবাসীর স্বামী’ হিসেবে। তিনি বলেন, ট্রাম্পের নিজের পারিবারিক ইতিহাসই প্রমাণ করে যে যুক্তরাষ্ট্রের উন্নতিতে অভিবাসীদের অবদান কত গভীর।
ব্যাঙ্গ-রসাত্মক ভঙ্গিতে বক্তব্য শুরু করে হাসান বলেন, ‘আমি একজন সাংবাদিক। আমি একজন অভিবাসী। আর আমি একজন মুসলিম। অর্থাৎ আমি সেই সবকিছু, যা ডোনাল্ড ট্রাম্প ভালোবাসেন।’ এই কথায় তিনি ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী অবস্থানকে বিদ্রূপ করেন। তার বক্তব্যে বিক্ষোভকারীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে। ট্রাম্পের অভিবাসন, শিক্ষা ও নাগরিক অধিকারবিরোধী নীতির প্রতিবাদ জানাতে ‘নো কিংস’ আন্দোলনের অংশ হিসেবে ওই বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। সেদিন পুরো যুক্তরাষ্ট্রজুড়েই বিক্ষোভ হয়। কিন্তু কে এই মেহদি হাসান? কেন তিনি ট্রাম্পের বিরোধিতা করেন?
শ্রমজীবী পরিবার থেকে হার্ভার্ডে
তাঁর পুরো নাম মেহদি রাজা হাসান। ১৯৭৯ সালের ১০ জুলাই ইংল্যান্ডের উইল্টশায়ারের সুইন্ডনে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন ব্রিটিশ-আমেরিকান সাংবাদিক, সম্প্রচারক, লেখক ও মিডিয়া উদ্যোক্তা। তাঁর খ্যাতি মূলত ক্ষমতাবান ও বিখ্যাত ব্যক্তিদের মুখোমুখি সাক্ষাৎকার গ্রহণ, তীক্ষ্ণ ও বুদ্ধিদীপ্ত প্রশ্ন এবং বিশ্ব রাজনীতি, মার্কিন অভ্যন্তরীণ নীতি ও পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে প্রগতিশীল মন্তব্যের জন্য।
তাঁর বাবা ভারতের হায়দরাবাদ থেকে আসা এবং মা ইংরেজ বংশোদ্ভূত। হাসান শ্রমজীবী পরিবারে বড় হয়েছেন। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনীতি, দর্শন ও অর্থনীতিতে (পিপিই) ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০২ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন নেন এবং ২০১১ সালে মার্কিন নাগরিকত্ব লাভ করেন।
হাসানের পেশাগত জীবন সাহসী পরিবর্তন ও সাফল্যে ভরপুর। তিনি প্রথমে ব্রিটিশ গণমাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন, আইটিভির জোনাথন ডিম্বলবাই অনুষ্ঠানে গবেষক ও প্রযোজক হিসেবে। পরবর্তীতে দ্য নিউ স্টেটসম্যান ও দ্য গার্ডিয়ানে কলাম লেখেন।
২০০৯ সালে তিনি আল জাজিরা ইংলিশে যোগ দেন। সেখানে আপফ্রন্ট এবং হেড টু হেড অনুষ্ঠানের সঞ্চালক হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিতি পান। ইসলামভীতি, মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি ও ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যু নিয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কঠোর কঠোর প্রশ্নে জবাবদিহিতার মুখে ফেলেন।
২০১৫ সালে তাঁর প্রবন্ধ ‘হাউ ইসলামিক ইজ ইসলামিক স্টেট (আইএস)’ ব্যাপক আলোচিত হয়। এতে তিনি যুক্তি দেন যে আইএস ইসলামকে বিকৃতভাবে ব্যবহার করছে। এই লেখাটি তাঁকে ইসলামের একটি ভারসাম্যপূর্ণ ব্যাখ্যার প্রবক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।
২০১৩ সালে মেহদি হাসান যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ সংস্থা এমএসএনবিসি-তে যোগ দেন। পরে তিনি দ্য মেহদি হাসান শো (২০২১–২০২৪) পরিচালনা করেন, যা পিকক ও এমএসএনবিসি-তে সম্প্রচারিত হতো।
২০১৯ সালে নিউট গিংরিচের সঙ্গে বর্ণবাদ বিষয়ে তাঁর বিতর্ক বিশেষভাবে ভাইরাল হয়। হাসান পিবডি ও এমি পুরস্কার অর্জন করেন, তবে তাঁর স্পষ্ট বামপন্থী অবস্থান অনেক রক্ষণশীল মহলের সমালোচনা কুড়ায়।
২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে এমএসএনবিসি-র কাঠামোগত পরিবর্তনের সময় তিনি প্রতিষ্ঠানটি ত্যাগ করেন। এরপর তিনি নিজস্ব সংবাদমাধ্যম জেটিও প্রতিষ্ঠা করেন, যেখানে তিনি প্রধান সম্পাদক ও প্রধান নির্বাহী হিসেবে কাজ করছেন।
জেটিও একটি নতুন প্রজন্মের গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান, যার লক্ষ্য হলো সত্য অনুসন্ধান ও বাস্তব গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজা। মেহদি হাসান প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থাটি গণমাধ্যমের জবাবদিহিতা, নিঃসংকোচ সংবাদ পরিবেশন ও সাহসী মতামতের পক্ষে এক ধরনের আন্দোলন।
২০২৩ সালে প্রকাশিত তাঁর বই ‘উইন এভরি আর্গুমেন্ট: দ্য আর্ট অব ডিবেটিং উইথ ফ্যাক্টস, ডেটা, অ্যান্ড ডেঞ্জারাসলি সিম্পল ল্যাঙ্গুয়েজ’ পাঠকমহলে বেশ জনপ্রিয়তা পায়। বইটিতে তিনি বিতর্কে যুক্তি, তথ্য ও সহজ ভাষা ব্যবহারের কৌশল তুলে ধরেন।
মেহদি হাসান তার সহকর্মী সাংবাদিক শিরিন হাসানকে বিয়ে করেন। তাঁদের দুটি সন্তান রয়েছে। ৪৬ বছর বয়সী মেহদি হাসান বিতর্কিত ও প্রভাবশালী এক গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব। কেউ তাঁকে ‘সাহসী কণ্ঠস্বর’ হিসেবে দেখেন, কেউ আবার শুধু ‘শো স্টপার’ হিসেবে।
একজন সমাজতন্ত্রী ও মুসলিম হিসেবে তাঁর আত্মপরিচয়
মেহদি হাসান একজন শিয়া মুসলমান। তিনি ধর্মনিরপেক্ষ ব্রিটেনে মুসলিম পরিবারে বড় হয়েছেন। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন এবং রমজানে রোজা রাখেন। তাঁর সাংবাদিকতায় প্রায়ই ইসলামের ন্যায় ও দয়া নীতির উল্লেখ দেখা যায়।
এসব মূল্যবোধের মাধ্যমে তিনি ইসলামভীতি ও ইসলাম নিয়ে পশ্চিমাদের ভুল ধারণার প্রতিবাদ করেন। তাঁর মতে, ইসলাম হলো ন্যায়বিচার ও মানবিকতার ধর্ম, যা সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠার পথ দেখায়।
হাসান নিজেকে প্রায়ই সামাজিক বামপন্থী (সোশ্যাল লেফটিস্ট) বা ‘কিছুটা সমাজতন্ত্রী’ বলেও রসিকতার সঙ্গে পরিচয় করান। ১৮ অক্টোবর ওয়াশিংটন ডিসির ‘নো কিংস’ সমাবেশে তিনি বলেন, ‘আমি সামান্য সমাজতন্ত্রী, কিন্তু এটা স্টিফেন মিলারকে বলো না—সে সহজেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।’
তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্টতই কিছুটা বামপন্থী। তিনি গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রের মতো সমাজতান্ত্রিক আদর্শের পক্ষে কথা বলেন এবং ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ও মূলধারার রাজনৈতিক গণমাধ্যমের ব্যর্থতা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। হাসান যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিদ আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্তেজ এবং জোহরান মামদানি-র প্রশংসা করেন, যারা নিজেদের গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রী হিসেবে পরিচয় দেন।
তিনি সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা, সম্পদ কর, শ্রমিক অধিকার ও কর্পোরেশনের ওপর রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণের পক্ষে। তাঁর লেখায় ও বক্তৃতায় মুক্তবাজার অর্থনীতির সীমাবদ্ধতা ও আয়বৈষম্যের সমালোচনা দেখা যায়। যদিও তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য নন, তবুও অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার ও সামাজিক সমতার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেন।
সমর্থকেরা মনে করেন, তিনি ইসলামের ইনসাফ তথা আর্থ-সামজিক ন্যায়বিচারের ধারণা ও সমাজতান্ত্রিক চিন্তাকে সফলভাবে একত্রিত করেছেন। তিনি আসলে তাঁর বিশ্বাস ও মতাদর্শের মধ্যে সফল সমন্বয় করেছেন। মেহদি হাসানের মুসলমান ও সমাজতন্ত্রী—এই দুই পরিচয় একে অপরের পরিপূরক।
তাঁর সমাজতান্ত্রিক চিন্তাধারা ইসলামের সমতার শিক্ষা থেকে অনুপ্রাণিত। ফলে তিনি ধর্মীয় মূল্যবোধ ও প্রগতিশীল রাজনীতির মধ্যে এক সেতুবন্ধন রচনা করেছেন, যা তাঁকে আধুনিক গণমাধ্যমে এক অনন্য কণ্ঠে পরিণত করেছে।
কেন মেহদি হাসান ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরোধী
মেহদি হাসান ট্রাম্পকে গণতন্ত্র, অভিবাসী, সংখ্যালঘু ও বৈশ্বিক ন্যায়বিচারের জন্য হুমকি হিসেবে দেখেন। মুসলিম অভিবাসী ও সমাজতন্ত্রী হিসেবে হাসানের দৃষ্টিভঙ্গি স্বৈরাচার, বর্ণবাদ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে প্রগতিশীল আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। ২০১৬ সাল থেকেই তিনি ট্রাম্পের নীতির তীব্র সমালোচক। দ্য গার্ডিয়ানে ‘মুসলিম নিষেধাজ্ঞা’ নিয়ে তাঁর লেখা বিশেষভাবে আলোচিত হয়। ২০২৫ সালে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদকালে তাঁর সমালোচনা আরও তীব্র রূপ নেয়।
গত ১৮ অক্টোবর ওয়াশিংটন ডিসির ‘নো কিংস’ সমাবেশে তিনি ১০ মিনিটের জ্বালাময়ী বক্তৃতা দেন। এতে তিনি ট্রাম্পকে ‘একনায়কতন্ত্রে আগ্রহী শাসক’ হিসেবে উল্লেখ করেন। সেদিন পুরো যুক্তরাষ্ট্রে ২ হাজার ৫০০-রও বেশি স্থানে ‘নো কিংস’ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
হাসান মনে করেন, ট্রাম্প গণতন্ত্রের মৌলিক নীতিগুলো ধ্বংস করছেন। তিনি ট্রাম্পকে বলেন, ‘অভিমানী স্বৈরাচারী শিশু’। মেহদি মনে করেন, ট্রাম্প এমনকি তৃতীয় মেয়াদেও ক্ষমতায় থাকতে আগ্রহী—যা মার্কিন সংবিধানের ২২তম সংশোধনীর পরিপন্থী।
মেহদি ‘নো কিংস’ আন্দোলনের মূল বার্তা তুলে ধরেন—গণতন্ত্রে রাজা বা একনায়কের জায়গা নেই। ডেমোক্রেসি নাও!-এর সেপ্টেম্বর ২০২৫ সংখ্যায় তিনি অভিযোগ করেন, ট্রাম্প জাতীয় বিপর্যয়কে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন। অভিবাসী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রতি যে শপথ তিনি নিয়েছিলেন, ট্রাম্পের কর্মকাণ্ডকে তিনি সেই শপথের অবমাননা হিসেবে দেখেন।
অভিবাসন ইস্যুটি হাসানের কাছে অত্যন্ত ব্যক্তিগত। তিনি নিজেকে বলেন ‘ট্রাম্প ট্রাইফেকটা’। অর্থাৎ, ট্রাম্প যাদের ঘৃণা করেন তিনি তার সবকটি—মুসলিম, অভিবাসী ও সমাজতন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজে একজন অভিবাসীর ছেলে, অভিবাসীর নাতি এবং দুই অভিবাসী নারীকে বিয়ে করেছেন। এ থেকে প্রমাণ হয়, অভিবাসীরাই এমন কাজ করে যা অনেক আমেরিকানও করতে চায় না।’ এই মন্তব্যটি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
মুসলিম পরিচয়ের কারণে হাসান বিশেষভাবে ক্ষুব্ধ ট্রাম্পের তথাকথিত ‘গাজা শান্তি পরিকল্পনা’ নিয়ে, যা গাজায় যুদ্ধবিরতির কথা বলে কিন্তু ন্যায়বিচার উপেক্ষা করে। তিনি বলেন, ‘যিনি “ফিলিস্তিনি” শব্দটাকেই অপমানজনক মনে করেন, তাঁর কাছ থেকে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতার কোনো পরিকল্পনা আশা করা যায় না।’
বক্তৃতার শেষে তিনি বলেন, ‘একদিন ফিলিস্তিনিরাও মুক্ত হবে।’ এভাবেই তিনি ট্রাম্পবিরোধী আন্দোলনকে বৈশ্বিক ন্যায় ও মানবাধিকারের সংগ্রামের সঙ্গে যুক্ত করেন।
সমাজতন্ত্রী হিসেবে হাসান ট্রাম্প ও তাঁর সহযোগীদের ‘মুনাফালোভী দুষ্টচক্র’ বলে আখ্যা দেন। তাঁর মতে, তারা কর্পোরেট স্বার্থ, বর্ণবাদ ও ফ্যাসিবাদকে পুষ্ট করছে।
মেহদি হাসানের কাছে ট্রাম্পের বিরোধিতা কোনো রাজনৈতিক কৌশল নয়, এটি তাঁর নৈতিক দায়িত্ব। মুসলিম, অভিবাসী ও সমাজতন্ত্রী হিসেবে তিনি মনে করেন, ট্রাম্প আমেরিকাকে গণতন্ত্র, সহমর্মিতা ও মানবাধিকারের বিপরীতে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।
ওয়াশিংটনের ‘নো কিংস’ সমাবেশে তাঁর বক্তৃতা—রসিকতা, ইতিহাস ও আশার সমন্বয়ে গঠিত একটি স্পষ্ট বার্তা দেয়—‘আমরা জনগণ কখনও আমাদের দেশকে একনায়ক ও জনবিচ্ছিন্ন নেতাদের হাতে তুলে দেব না।’
ডিজিটাল গণমাধ্যম সংস্থা জেটিও-র প্রধান সম্পাদক হিসেবে হাসান এই সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছেন। তাঁর বিশ্বাস, যুক্তি তখনই জেতে, যখন তথ্য, আবেগ ও ন্যায়ের বিশ্বাস একসঙ্গে কাজ করে।

ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত আমেরিকান সাংবাদিক মেহদি হাসান গত ১৮ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে ‘নো কিংস’ বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তৃতা দিয়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। ডিজিটাল সংবাদমাধ্যম জেটিও-র প্রতিষ্ঠাতা হাসান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির কড়া সমালোচনা করেন। তিনি ট্রাম্পকে উল্লেখ করেন ‘একজন অভিবাসীর পুত্র, অভিবাসীর নাতি এবং অভিবাসীর স্বামী’ হিসেবে। তিনি বলেন, ট্রাম্পের নিজের পারিবারিক ইতিহাসই প্রমাণ করে যে যুক্তরাষ্ট্রের উন্নতিতে অভিবাসীদের অবদান কত গভীর।
ব্যাঙ্গ-রসাত্মক ভঙ্গিতে বক্তব্য শুরু করে হাসান বলেন, ‘আমি একজন সাংবাদিক। আমি একজন অভিবাসী। আর আমি একজন মুসলিম। অর্থাৎ আমি সেই সবকিছু, যা ডোনাল্ড ট্রাম্প ভালোবাসেন।’ এই কথায় তিনি ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী অবস্থানকে বিদ্রূপ করেন। তার বক্তব্যে বিক্ষোভকারীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে। ট্রাম্পের অভিবাসন, শিক্ষা ও নাগরিক অধিকারবিরোধী নীতির প্রতিবাদ জানাতে ‘নো কিংস’ আন্দোলনের অংশ হিসেবে ওই বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। সেদিন পুরো যুক্তরাষ্ট্রজুড়েই বিক্ষোভ হয়। কিন্তু কে এই মেহদি হাসান? কেন তিনি ট্রাম্পের বিরোধিতা করেন?
শ্রমজীবী পরিবার থেকে হার্ভার্ডে
তাঁর পুরো নাম মেহদি রাজা হাসান। ১৯৭৯ সালের ১০ জুলাই ইংল্যান্ডের উইল্টশায়ারের সুইন্ডনে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন ব্রিটিশ-আমেরিকান সাংবাদিক, সম্প্রচারক, লেখক ও মিডিয়া উদ্যোক্তা। তাঁর খ্যাতি মূলত ক্ষমতাবান ও বিখ্যাত ব্যক্তিদের মুখোমুখি সাক্ষাৎকার গ্রহণ, তীক্ষ্ণ ও বুদ্ধিদীপ্ত প্রশ্ন এবং বিশ্ব রাজনীতি, মার্কিন অভ্যন্তরীণ নীতি ও পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে প্রগতিশীল মন্তব্যের জন্য।
তাঁর বাবা ভারতের হায়দরাবাদ থেকে আসা এবং মা ইংরেজ বংশোদ্ভূত। হাসান শ্রমজীবী পরিবারে বড় হয়েছেন। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনীতি, দর্শন ও অর্থনীতিতে (পিপিই) ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০২ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন নেন এবং ২০১১ সালে মার্কিন নাগরিকত্ব লাভ করেন।
হাসানের পেশাগত জীবন সাহসী পরিবর্তন ও সাফল্যে ভরপুর। তিনি প্রথমে ব্রিটিশ গণমাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন, আইটিভির জোনাথন ডিম্বলবাই অনুষ্ঠানে গবেষক ও প্রযোজক হিসেবে। পরবর্তীতে দ্য নিউ স্টেটসম্যান ও দ্য গার্ডিয়ানে কলাম লেখেন।
২০০৯ সালে তিনি আল জাজিরা ইংলিশে যোগ দেন। সেখানে আপফ্রন্ট এবং হেড টু হেড অনুষ্ঠানের সঞ্চালক হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিতি পান। ইসলামভীতি, মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি ও ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যু নিয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কঠোর কঠোর প্রশ্নে জবাবদিহিতার মুখে ফেলেন।
২০১৫ সালে তাঁর প্রবন্ধ ‘হাউ ইসলামিক ইজ ইসলামিক স্টেট (আইএস)’ ব্যাপক আলোচিত হয়। এতে তিনি যুক্তি দেন যে আইএস ইসলামকে বিকৃতভাবে ব্যবহার করছে। এই লেখাটি তাঁকে ইসলামের একটি ভারসাম্যপূর্ণ ব্যাখ্যার প্রবক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।
২০১৩ সালে মেহদি হাসান যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ সংস্থা এমএসএনবিসি-তে যোগ দেন। পরে তিনি দ্য মেহদি হাসান শো (২০২১–২০২৪) পরিচালনা করেন, যা পিকক ও এমএসএনবিসি-তে সম্প্রচারিত হতো।
২০১৯ সালে নিউট গিংরিচের সঙ্গে বর্ণবাদ বিষয়ে তাঁর বিতর্ক বিশেষভাবে ভাইরাল হয়। হাসান পিবডি ও এমি পুরস্কার অর্জন করেন, তবে তাঁর স্পষ্ট বামপন্থী অবস্থান অনেক রক্ষণশীল মহলের সমালোচনা কুড়ায়।
২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে এমএসএনবিসি-র কাঠামোগত পরিবর্তনের সময় তিনি প্রতিষ্ঠানটি ত্যাগ করেন। এরপর তিনি নিজস্ব সংবাদমাধ্যম জেটিও প্রতিষ্ঠা করেন, যেখানে তিনি প্রধান সম্পাদক ও প্রধান নির্বাহী হিসেবে কাজ করছেন।
জেটিও একটি নতুন প্রজন্মের গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান, যার লক্ষ্য হলো সত্য অনুসন্ধান ও বাস্তব গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজা। মেহদি হাসান প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থাটি গণমাধ্যমের জবাবদিহিতা, নিঃসংকোচ সংবাদ পরিবেশন ও সাহসী মতামতের পক্ষে এক ধরনের আন্দোলন।
২০২৩ সালে প্রকাশিত তাঁর বই ‘উইন এভরি আর্গুমেন্ট: দ্য আর্ট অব ডিবেটিং উইথ ফ্যাক্টস, ডেটা, অ্যান্ড ডেঞ্জারাসলি সিম্পল ল্যাঙ্গুয়েজ’ পাঠকমহলে বেশ জনপ্রিয়তা পায়। বইটিতে তিনি বিতর্কে যুক্তি, তথ্য ও সহজ ভাষা ব্যবহারের কৌশল তুলে ধরেন।
মেহদি হাসান তার সহকর্মী সাংবাদিক শিরিন হাসানকে বিয়ে করেন। তাঁদের দুটি সন্তান রয়েছে। ৪৬ বছর বয়সী মেহদি হাসান বিতর্কিত ও প্রভাবশালী এক গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব। কেউ তাঁকে ‘সাহসী কণ্ঠস্বর’ হিসেবে দেখেন, কেউ আবার শুধু ‘শো স্টপার’ হিসেবে।
একজন সমাজতন্ত্রী ও মুসলিম হিসেবে তাঁর আত্মপরিচয়
মেহদি হাসান একজন শিয়া মুসলমান। তিনি ধর্মনিরপেক্ষ ব্রিটেনে মুসলিম পরিবারে বড় হয়েছেন। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন এবং রমজানে রোজা রাখেন। তাঁর সাংবাদিকতায় প্রায়ই ইসলামের ন্যায় ও দয়া নীতির উল্লেখ দেখা যায়।
এসব মূল্যবোধের মাধ্যমে তিনি ইসলামভীতি ও ইসলাম নিয়ে পশ্চিমাদের ভুল ধারণার প্রতিবাদ করেন। তাঁর মতে, ইসলাম হলো ন্যায়বিচার ও মানবিকতার ধর্ম, যা সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠার পথ দেখায়।
হাসান নিজেকে প্রায়ই সামাজিক বামপন্থী (সোশ্যাল লেফটিস্ট) বা ‘কিছুটা সমাজতন্ত্রী’ বলেও রসিকতার সঙ্গে পরিচয় করান। ১৮ অক্টোবর ওয়াশিংটন ডিসির ‘নো কিংস’ সমাবেশে তিনি বলেন, ‘আমি সামান্য সমাজতন্ত্রী, কিন্তু এটা স্টিফেন মিলারকে বলো না—সে সহজেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।’
তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্টতই কিছুটা বামপন্থী। তিনি গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রের মতো সমাজতান্ত্রিক আদর্শের পক্ষে কথা বলেন এবং ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ও মূলধারার রাজনৈতিক গণমাধ্যমের ব্যর্থতা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। হাসান যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিদ আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্তেজ এবং জোহরান মামদানি-র প্রশংসা করেন, যারা নিজেদের গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রী হিসেবে পরিচয় দেন।
তিনি সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা, সম্পদ কর, শ্রমিক অধিকার ও কর্পোরেশনের ওপর রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণের পক্ষে। তাঁর লেখায় ও বক্তৃতায় মুক্তবাজার অর্থনীতির সীমাবদ্ধতা ও আয়বৈষম্যের সমালোচনা দেখা যায়। যদিও তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য নন, তবুও অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার ও সামাজিক সমতার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেন।
সমর্থকেরা মনে করেন, তিনি ইসলামের ইনসাফ তথা আর্থ-সামজিক ন্যায়বিচারের ধারণা ও সমাজতান্ত্রিক চিন্তাকে সফলভাবে একত্রিত করেছেন। তিনি আসলে তাঁর বিশ্বাস ও মতাদর্শের মধ্যে সফল সমন্বয় করেছেন। মেহদি হাসানের মুসলমান ও সমাজতন্ত্রী—এই দুই পরিচয় একে অপরের পরিপূরক।
তাঁর সমাজতান্ত্রিক চিন্তাধারা ইসলামের সমতার শিক্ষা থেকে অনুপ্রাণিত। ফলে তিনি ধর্মীয় মূল্যবোধ ও প্রগতিশীল রাজনীতির মধ্যে এক সেতুবন্ধন রচনা করেছেন, যা তাঁকে আধুনিক গণমাধ্যমে এক অনন্য কণ্ঠে পরিণত করেছে।
কেন মেহদি হাসান ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরোধী
মেহদি হাসান ট্রাম্পকে গণতন্ত্র, অভিবাসী, সংখ্যালঘু ও বৈশ্বিক ন্যায়বিচারের জন্য হুমকি হিসেবে দেখেন। মুসলিম অভিবাসী ও সমাজতন্ত্রী হিসেবে হাসানের দৃষ্টিভঙ্গি স্বৈরাচার, বর্ণবাদ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে প্রগতিশীল আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। ২০১৬ সাল থেকেই তিনি ট্রাম্পের নীতির তীব্র সমালোচক। দ্য গার্ডিয়ানে ‘মুসলিম নিষেধাজ্ঞা’ নিয়ে তাঁর লেখা বিশেষভাবে আলোচিত হয়। ২০২৫ সালে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদকালে তাঁর সমালোচনা আরও তীব্র রূপ নেয়।
গত ১৮ অক্টোবর ওয়াশিংটন ডিসির ‘নো কিংস’ সমাবেশে তিনি ১০ মিনিটের জ্বালাময়ী বক্তৃতা দেন। এতে তিনি ট্রাম্পকে ‘একনায়কতন্ত্রে আগ্রহী শাসক’ হিসেবে উল্লেখ করেন। সেদিন পুরো যুক্তরাষ্ট্রে ২ হাজার ৫০০-রও বেশি স্থানে ‘নো কিংস’ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
হাসান মনে করেন, ট্রাম্প গণতন্ত্রের মৌলিক নীতিগুলো ধ্বংস করছেন। তিনি ট্রাম্পকে বলেন, ‘অভিমানী স্বৈরাচারী শিশু’। মেহদি মনে করেন, ট্রাম্প এমনকি তৃতীয় মেয়াদেও ক্ষমতায় থাকতে আগ্রহী—যা মার্কিন সংবিধানের ২২তম সংশোধনীর পরিপন্থী।
মেহদি ‘নো কিংস’ আন্দোলনের মূল বার্তা তুলে ধরেন—গণতন্ত্রে রাজা বা একনায়কের জায়গা নেই। ডেমোক্রেসি নাও!-এর সেপ্টেম্বর ২০২৫ সংখ্যায় তিনি অভিযোগ করেন, ট্রাম্প জাতীয় বিপর্যয়কে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন। অভিবাসী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রতি যে শপথ তিনি নিয়েছিলেন, ট্রাম্পের কর্মকাণ্ডকে তিনি সেই শপথের অবমাননা হিসেবে দেখেন।
অভিবাসন ইস্যুটি হাসানের কাছে অত্যন্ত ব্যক্তিগত। তিনি নিজেকে বলেন ‘ট্রাম্প ট্রাইফেকটা’। অর্থাৎ, ট্রাম্প যাদের ঘৃণা করেন তিনি তার সবকটি—মুসলিম, অভিবাসী ও সমাজতন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজে একজন অভিবাসীর ছেলে, অভিবাসীর নাতি এবং দুই অভিবাসী নারীকে বিয়ে করেছেন। এ থেকে প্রমাণ হয়, অভিবাসীরাই এমন কাজ করে যা অনেক আমেরিকানও করতে চায় না।’ এই মন্তব্যটি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
মুসলিম পরিচয়ের কারণে হাসান বিশেষভাবে ক্ষুব্ধ ট্রাম্পের তথাকথিত ‘গাজা শান্তি পরিকল্পনা’ নিয়ে, যা গাজায় যুদ্ধবিরতির কথা বলে কিন্তু ন্যায়বিচার উপেক্ষা করে। তিনি বলেন, ‘যিনি “ফিলিস্তিনি” শব্দটাকেই অপমানজনক মনে করেন, তাঁর কাছ থেকে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতার কোনো পরিকল্পনা আশা করা যায় না।’
বক্তৃতার শেষে তিনি বলেন, ‘একদিন ফিলিস্তিনিরাও মুক্ত হবে।’ এভাবেই তিনি ট্রাম্পবিরোধী আন্দোলনকে বৈশ্বিক ন্যায় ও মানবাধিকারের সংগ্রামের সঙ্গে যুক্ত করেন।
সমাজতন্ত্রী হিসেবে হাসান ট্রাম্প ও তাঁর সহযোগীদের ‘মুনাফালোভী দুষ্টচক্র’ বলে আখ্যা দেন। তাঁর মতে, তারা কর্পোরেট স্বার্থ, বর্ণবাদ ও ফ্যাসিবাদকে পুষ্ট করছে।
মেহদি হাসানের কাছে ট্রাম্পের বিরোধিতা কোনো রাজনৈতিক কৌশল নয়, এটি তাঁর নৈতিক দায়িত্ব। মুসলিম, অভিবাসী ও সমাজতন্ত্রী হিসেবে তিনি মনে করেন, ট্রাম্প আমেরিকাকে গণতন্ত্র, সহমর্মিতা ও মানবাধিকারের বিপরীতে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।
ওয়াশিংটনের ‘নো কিংস’ সমাবেশে তাঁর বক্তৃতা—রসিকতা, ইতিহাস ও আশার সমন্বয়ে গঠিত একটি স্পষ্ট বার্তা দেয়—‘আমরা জনগণ কখনও আমাদের দেশকে একনায়ক ও জনবিচ্ছিন্ন নেতাদের হাতে তুলে দেব না।’
ডিজিটাল গণমাধ্যম সংস্থা জেটিও-র প্রধান সম্পাদক হিসেবে হাসান এই সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছেন। তাঁর বিশ্বাস, যুক্তি তখনই জেতে, যখন তথ্য, আবেগ ও ন্যায়ের বিশ্বাস একসঙ্গে কাজ করে।
.png)

বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থায় এতদিন উপেক্ষিত প্রবাসী নাগরিকরা এবার প্রথমবারের মতো জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন। নির্বাচন কমিশন (ইসি) তাদের গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এই উদ্যোগ নিয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগে
দীর্ঘ এক শীতলতার পর বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সাম্প্রতিক উষ্ণতা দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতিতে এক নতুন মেরুকরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের ক্ষত এবং পরবর্তীকালে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতার কারণে প্রায় দেড় দশক ধরে এই সম্পর্ক ছিল নিষ্ক্রিয়।
১ দিন আগে
প্রাইভেট মিলিটারি কোম্পানি (পিএমসি) এখন আধুনিক যুদ্ধের অপরিহার্য উপাদান। রাষ্ট্রের জবাবদিহি এড়িয়ে, করপোরেট শক্তির ছায়ায় এই সংস্থাগুলো আজ যুদ্ধের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে। প্রযুক্তিনির্ভর ও গোপন এই নতুন যুদ্ধের ধরনে লাভের হিসাব মানবিকতার চেয়েও বড় হয়ে উঠেছে। যুদ্ধ এখন শুধু রণাঙ্গনে নয়, করপোরেট চুক্তি।
২ দিন আগে
সম্প্রতি জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ অভিযোগ করেছেন, আসন্ন সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ আমলের মতো কারচুপির ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি বলেন, আবারও একটা ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দিকে যাচ্ছি আমরা।
২ দিন আগে