.png)
পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপটি নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে চালু হবে। এর মাধ্যমে প্রবাসীরা নিবন্ধন করতে ও তাদের ভোটের অবস্থা ট্র্যাক করতে পারবেন।

আল-জাজিরা এক্সপ্লেইনার

বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থায় এতদিন উপেক্ষিত প্রবাসী নাগরিকরা এবার প্রথমবারের মতো জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন। নির্বাচন কমিশন (ইসি) তাদের গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এই উদ্যোগ নিয়েছে।
ইসি-র হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ বাংলাদেশি প্রবাসী এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে, বিশেষ করে উপসাগরীয় অঞ্চল, ইউরোপ, আমেরিকা ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বাস করেন। এ সংখ্যা দেশের মোট ভোটারের প্রায় ১০ শতাংশেরও বেশি।
প্রবাসীদের ভোটদান সহজ করতে কমিশন ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ নামের একটি অ্যাপ চালু করবে। ডাকযোগে ভোট পাঠানোর এই ব্যবস্থা হবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম সংস্কার উদ্যোগ।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে সংসদ নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, বিদেশে ভোট আয়োজন করা অত্যন্ত কঠিন কাজ।
হাসিনা সরকারের পতনের পর এটি হবে প্রথম জাতীয় নির্বাচন, যার ওপর অনেক কিছুই নির্ভর করছে। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের ১১টি নির্বাচনের মধ্যে মাত্র ৪টি নির্বাচন ‘অবাধ ও সুষ্ঠু’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার আল জাজিরাকে বলেন, ‘এই প্রক্রিয়াটি একপ্রকার ‘ব্ল্যাক বক্স’-এর মতো। যদি সত্যতা ও স্বচ্ছতা বজায় না থাকে, পুরো নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। এটি একটি জটিল প্রক্রিয়া, যার জন্য ব্যাপক লজিস্টিক প্রস্তুতি দরকার। সব দেশে একসঙ্গে বাস্তবায়ন সম্ভব নয়, কিন্তু কোথাও না কোথাও থেকে শুরু করতেই হবে।’
কেন এতদিন প্রবাসীরা ভোট দিতে পারেননি
বাংলাদেশের সংবিধান কখনও প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিষিদ্ধ করেনি। সংবিধানের ১২২ অনুচ্ছেদে বলা আছে, ভোটার হতে হলে নাগরিক হতে হবে ও ভোটার তালিকায় নাম থাকতে হবে। তবে সেখানে বসবাসের শর্ত নির্দিষ্ট করা হয়নি।
পরে ১৯৮২ সালের এক অধ্যাদেশে বলা হয়, ভোটারদের ‘নিজ নিজ এলাকায় সাধারণভাবে বসবাস করতে হবে।’ এ অধ্যাদেশ ২০০৯ সালের নির্বাচনী তালিকা আইন চালুর মাধ্যমে বাতিল হয়। নতুন আইনে বিদেশে থাকা বাংলাদেশিদের তাদের নিজ বা পৈতৃক এলাকার ভোটার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
তবে আইনে অধিকার থাকলেও বাস্তবে ভোটের কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মজুমদার বলেন, ‘পূর্ববর্তী নির্বাচনগুলো প্রহসনে পরিণত হয়েছিল—প্রবাসীদের অন্তর্ভুক্ত করার প্রকৃত কোনো ইচ্ছাই ছিল না।’
হাসিনা সরকারের পতনের পর গঠিত সংস্কার কমিশন বিভিন্ন পদ্ধতি বিবেচনা করে অবশেষে ডাকযোগে ভোট ব্যবস্থার সিদ্ধান্ত নেয়, যা একটি মোবাইল অ্যাপ দিয়ে পরিচালিত হবে।
কীভাবে কাজ করবে প্রবাসীদের ডাকভোট
পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপটি নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে চালু হবে। এর মাধ্যমে প্রবাসীরা নিবন্ধন করতে ও তাদের ভোটের অবস্থা ট্র্যাক করতে পারবেন।
নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ আল জাজিরাকে জানান, ‘ভোটাররা অ্যাপে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বর ব্যবহার করে নিবন্ধন করবেন। অ্যাপটি কমিশনের সার্ভারের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে, যাতে ভোটারের নির্বাচনী এলাকা নির্ধারণ করা যায়।’
নিবন্ধনের পর প্রবাসীর ঠিকানায় ডাকযোগে একটি খাম পাঠানো হবে, যার মধ্যে থাকবে ভোটপত্র ও ফেরত পাঠানোর খাম। প্রতিটি খামে থাকবে কিউআর কোড, যা স্ক্যান করলে অ্যাপে ডেলিভারির তথ্য দেখা যাবে।
ভোটার পছন্দ চিহ্নিত করে খাম সিল করে যেকোনো পোস্ট অফিস থেকে পাঠাতে পারবেন। ফেরত খামে থাকা বারকোড দিয়ে ভোটের গন্তব্য পর্যন্ত যাত্রাপথ ট্র্যাক করা যাবে। এসব ব্যালট সরাসরি স্থানীয় রিটার্নিং অফিসারের কাছে পৌঁছাবে—দূতাবাস বা হাইকমিশন এতে যুক্ত থাকবে না।
আখতার আহমেদ বলেন, ‘ভোটের খাম একবার সিল হয়ে গেলে কেবল রিটার্নিং অফিসারই তা খুলতে পারবেন। পথে কোনো খাম খোলা বা আটকানো হলে তা সহজেই ধরা পড়বে।’
এই নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশের নির্বাচনী ইতিহাসে প্রথমবার প্রবাসীদের ভোটাধিকার বাস্তবে কার্যকর হতে যাচ্ছে—যা দেশের গণতন্ত্রে এক নতুন অধ্যায় যোগ করবে।
২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভূমিকা
২০২৪ সালের জুলাই মাসে যখন স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবাদ দমন আরও কঠোর করেন, তখন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকরা তার বিরুদ্ধে রেমিট্যান্স বর্জন আন্দোলন শুরু করেন। রেমিট্যান্স হলো বিদেশে উপার্জিত আয়, যা শ্রমিকরা দেশে তাদের পরিবারের কাছে পাঠান। এটি বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি প্রধান ভিত্তি।
হাসিনার পতনের পরবর্তী অর্থবছরে প্রবাসীরা দেশে রেকর্ড ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পাঠান। উপসাগরীয় দেশগুলোতেও প্রবাসীরা ২০২৪ সালে হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নেন, যেখানে শতাধিক শ্রমিক সংযুক্ত আরব আমিরাতে গ্রেপ্তার হন। পরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হস্তক্ষেপে তাদের বেশিরভাগই মুক্তি পান।
এই আন্দোলনের ফলে প্রবাসী শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার ও ভোটাধিকার প্রশ্নটি সরকারের সংস্কার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসে।
নির্বাচনী সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘আমাদের প্রবাসীরা দেশের রেমিট্যান্স যোদ্ধা। তারা স্বৈরশাসককে ক্ষমতাচ্যুত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তাই তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা সময়ের দাবি।’
আগামী নির্বাচনে প্রবাসী ভোট কতটা প্রভাব ফেলতে পারে
ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি)-র যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, ‘প্রবাসীরা মোট ভোটারের ১০ শতাংশেরও বেশি, আর কিছু আসনে এই হার ২০ শতাংশের কাছাকাছি। তারা সরল সংখ্যাগরিষ্ঠ পদ্ধতিতে (ফার্স্ট-পাস্ট-দ্য-পোস্ট) অল্প ব্যবধানের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফল বদলে দিতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, প্রভাব শুধু সংখ্যার মধ্যেই সীমিত নয়। প্রবাসীরা সাধারণত রাজনৈতিকভাবে সচেতন, অর্থনৈতিকভাবে স্থিতিশীল এবং নিজ এলাকার সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। তাদের অংশগ্রহণ পরিবার ও সমাজের মধ্যে ভোটের প্রবণতা এবং জনমত উভয়কেই প্রভাবিত করতে পারে।
‘তাদের ভোটের প্রভাব শুধু ব্যালট বাক্সে নয়, নির্বাচনের সামগ্রিক পরিবেশ এবং গতি পরিবর্তনেও অনুভূত হবে’, যোগ করেন তিনি।
দীর্ঘদিন ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত থাকার পর এবার প্রবাসীদের অংশগ্রহণ বাংলাদেশের নির্বাচনী রাজনীতিতে এক নতুন যুগের সূচনা করবে। রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য এটি মধ্যপ্রাচ্য, মালয়েশিয়া ও ইউরোপজুড়ে নতুন ভোটারভিত্তি গড়ে তোলার সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে এই বিশাল বিদেশি ভোটারগোষ্ঠীর সঙ্গে কার্যকরভাবে যোগাযোগ স্থাপন করা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুল তথ্য ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর ঝুঁকিও রয়েছে। তবে সাইফুল্লাহর মতে, প্রবাসীরা সাধারণত তথ্যসমৃদ্ধ ও অনলাইন-সচেতন হওয়ায় তারা নিজেরাই এসব ভুল তথ্যের বিরুদ্ধে সবচেয়ে শক্ত প্রতিরক্ষা হিসেবে কাজ করতে পারেন।
তিনি বলেন, ‘তারা শুধু বিভ্রান্তির শিকার নন, বরং এর বিরুদ্ধে আমাদের সবচেয়ে কার্যকর প্রতিরক্ষা-প্রাচীর।’
প্রবাসী শ্রমিকদের প্রত্যাশা ও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি
উপসাগরীয় অঞ্চলে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিক তাহসিন শাকিল বলেন, ‘বিমানবন্দরে আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়, লাগেজে অকারণে তল্লাশি হয়, আর দূতাবাসগুলো আমাদের অভিযোগ উপেক্ষা করে। পাসপোর্ট বা কাজের কাগজ পেতেও মাসের পর মাস লাগে। দেশের অর্থনীতি আমাদের টাকায় চলে, অথচ আমাদের সঙ্গে তৃতীয় শ্রেণির নাগরিকের মতো আচরণ করা হয়।’
ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি)
দলটি প্রবাসীদের এই অসন্তোষের প্রতিফলন ঘটিয়েছে তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে। দলের নেতা সাইফুল্লাহ বলেন, ‘প্রবাসীদের শুধু রেমিট্যান্স প্রেরক হিসেবে দেখা যাবে না। আমরা তাদের রাষ্ট্র পুনর্গঠনের অংশীদার ও বাংলাদেশের বৈদেশিক দূত হিসেবে স্বীকৃতি দিতে চাই।’
দলের ইশতেহারে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে—প্রবাসীদের ভোটাধিকার স্থায়ীভাবে নিশ্চিত করা, দূতাবাস ও বিমানবন্দরে হয়রানি বন্ধ করা, বিদেশে বিপদে পড়া নাগরিকদের জন্য জরুরি সহায়তা কার্যক্রম চালু করা।
এনসিপির ইশতেহারে আরও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে—প্রবাসীদের জন্য সরকারি সেবায় ডিজিটাল প্রবেশাধিকার, দেশে ফিরে আসা নাগরিকদের পুনর্বাসন সহায়তা এবং নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ায় সরাসরি অংশগ্রহণের কাঠামো তৈরি করা। এর মাধ্যমে প্রবাসীদের শুধু রেমিট্যান্স প্রেরক নয়, বরং জাতীয় উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার অঙ্গীকার করা হয়েছে।
সাইফুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য একটাই—দূরত্ব যেন ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণ না হয়।’
এই পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতি এক নতুন বাস্তবতায় প্রবেশ করছে, যেখানে দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভূমিকা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)
বিএনপির পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির বিশেষ সহকারী ও দলের সদস্য সাইমুম পারভেজ বলেন, দলটি প্রবাসী শ্রমিকদের কল্যাণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেবে। তিনি বলেন, ‘বিএনপি চায় বিশ্বের প্রতিটি বাংলাদেশ দূতাবাস প্রবাসীদের সুরক্ষা ও কল্যাণে আরও সক্রিয় ভূমিকা নিক, যাতে তারা আর হয়রানির শিকার না হন। পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য জোরদারেও কাজ করবে।’
তিনি আরও জানান, বিএনপি ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দেশে প্রবাসী কমিটি (ডায়াসপোরা কমিটি) গঠন করেছে। ‘বিএনপির এই বিস্তৃত নেটওয়ার্কের কারণে প্রবাসী ভোটারদের কাছে পৌঁছানো কঠিন হবে না’, বলেন তিনি।
পারভেজ আরও যোগ করেন, ‘বিএনপি এখন নীতিনির্ভর রাজনীতিতে মনোযোগী। আমরা ইতিমধ্যেই কৃষি, কর্মসংস্থান ও শিক্ষাখাতে নীতি প্রস্তাব দিয়েছি। আগামী মাসগুলোতে দেখাব, কীভাবে এসব নীতি সাধারণ মানুষের জীবন বদলে দেবে। সেই কারণেই আমি বিশ্বাস করি, প্রবাসী সম্প্রদায় বিএনপিকেই ভোট দেবে।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী প্রার্থী ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিশির মনির জানান, প্রবাসীদের উদ্বেগ ও দাবি তাদের দলের নীতির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। তিনি আল জাজিরাকে বলেন, ‘জামায়াতই প্রথম প্রবাসীদের ভোটের সুযোগ তৈরির বিষয়টি তুলেছিল। আমি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলাম, যাতে নির্বাচন কমিশন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়। আদালত সেই আবেদন গ্রহণ করেছে।’
মনির জানান, যুক্তরাজ্য ও উপসাগরীয় দেশগুলোতে তার সাম্প্রতিক সফরে তিনি দেখেছেন, অনেক প্রবাসী জামায়াতের পক্ষে ভোট দিতে আগ্রহী। ‘আমরা প্রবাসীদের জন্য একক সেবা কেন্দ্র (ওয়ান-স্টপ সার্ভিস) প্রস্তাব করছি, যাতে জমি বা ফৌজদারি মামলাসংক্রান্ত জটিলতা সহজে সমাধান করা যায়। তারা সহজ সেবা চান, আমরাও তা দিতে চাই’, বলেন তিনি।
তিনি আরও জানান, জামায়াত এমন পরিবেশ তৈরি করতে চায় যা প্রবাসীদের দেশে বিনিয়োগেও উৎসাহিত করবে। অনেক প্রবাসী ঢাকার বিমানবন্দরে লাগেজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ করেছেন। ‘আমরা এসব সমস্যার সমাধান করব’, আশ্বাস দেন মনির।
(আল-জাজিরার মাসুম বিল্লাহর প্রতিবেদন, ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ করেছেন মাহবুবুল আলম তারেক)

বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থায় এতদিন উপেক্ষিত প্রবাসী নাগরিকরা এবার প্রথমবারের মতো জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন। নির্বাচন কমিশন (ইসি) তাদের গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এই উদ্যোগ নিয়েছে।
ইসি-র হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ বাংলাদেশি প্রবাসী এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে, বিশেষ করে উপসাগরীয় অঞ্চল, ইউরোপ, আমেরিকা ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বাস করেন। এ সংখ্যা দেশের মোট ভোটারের প্রায় ১০ শতাংশেরও বেশি।
প্রবাসীদের ভোটদান সহজ করতে কমিশন ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ নামের একটি অ্যাপ চালু করবে। ডাকযোগে ভোট পাঠানোর এই ব্যবস্থা হবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম সংস্কার উদ্যোগ।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে সংসদ নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, বিদেশে ভোট আয়োজন করা অত্যন্ত কঠিন কাজ।
হাসিনা সরকারের পতনের পর এটি হবে প্রথম জাতীয় নির্বাচন, যার ওপর অনেক কিছুই নির্ভর করছে। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের ১১টি নির্বাচনের মধ্যে মাত্র ৪টি নির্বাচন ‘অবাধ ও সুষ্ঠু’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার আল জাজিরাকে বলেন, ‘এই প্রক্রিয়াটি একপ্রকার ‘ব্ল্যাক বক্স’-এর মতো। যদি সত্যতা ও স্বচ্ছতা বজায় না থাকে, পুরো নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। এটি একটি জটিল প্রক্রিয়া, যার জন্য ব্যাপক লজিস্টিক প্রস্তুতি দরকার। সব দেশে একসঙ্গে বাস্তবায়ন সম্ভব নয়, কিন্তু কোথাও না কোথাও থেকে শুরু করতেই হবে।’
কেন এতদিন প্রবাসীরা ভোট দিতে পারেননি
বাংলাদেশের সংবিধান কখনও প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিষিদ্ধ করেনি। সংবিধানের ১২২ অনুচ্ছেদে বলা আছে, ভোটার হতে হলে নাগরিক হতে হবে ও ভোটার তালিকায় নাম থাকতে হবে। তবে সেখানে বসবাসের শর্ত নির্দিষ্ট করা হয়নি।
পরে ১৯৮২ সালের এক অধ্যাদেশে বলা হয়, ভোটারদের ‘নিজ নিজ এলাকায় সাধারণভাবে বসবাস করতে হবে।’ এ অধ্যাদেশ ২০০৯ সালের নির্বাচনী তালিকা আইন চালুর মাধ্যমে বাতিল হয়। নতুন আইনে বিদেশে থাকা বাংলাদেশিদের তাদের নিজ বা পৈতৃক এলাকার ভোটার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
তবে আইনে অধিকার থাকলেও বাস্তবে ভোটের কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মজুমদার বলেন, ‘পূর্ববর্তী নির্বাচনগুলো প্রহসনে পরিণত হয়েছিল—প্রবাসীদের অন্তর্ভুক্ত করার প্রকৃত কোনো ইচ্ছাই ছিল না।’
হাসিনা সরকারের পতনের পর গঠিত সংস্কার কমিশন বিভিন্ন পদ্ধতি বিবেচনা করে অবশেষে ডাকযোগে ভোট ব্যবস্থার সিদ্ধান্ত নেয়, যা একটি মোবাইল অ্যাপ দিয়ে পরিচালিত হবে।
কীভাবে কাজ করবে প্রবাসীদের ডাকভোট
পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপটি নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে চালু হবে। এর মাধ্যমে প্রবাসীরা নিবন্ধন করতে ও তাদের ভোটের অবস্থা ট্র্যাক করতে পারবেন।
নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ আল জাজিরাকে জানান, ‘ভোটাররা অ্যাপে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বর ব্যবহার করে নিবন্ধন করবেন। অ্যাপটি কমিশনের সার্ভারের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে, যাতে ভোটারের নির্বাচনী এলাকা নির্ধারণ করা যায়।’
নিবন্ধনের পর প্রবাসীর ঠিকানায় ডাকযোগে একটি খাম পাঠানো হবে, যার মধ্যে থাকবে ভোটপত্র ও ফেরত পাঠানোর খাম। প্রতিটি খামে থাকবে কিউআর কোড, যা স্ক্যান করলে অ্যাপে ডেলিভারির তথ্য দেখা যাবে।
ভোটার পছন্দ চিহ্নিত করে খাম সিল করে যেকোনো পোস্ট অফিস থেকে পাঠাতে পারবেন। ফেরত খামে থাকা বারকোড দিয়ে ভোটের গন্তব্য পর্যন্ত যাত্রাপথ ট্র্যাক করা যাবে। এসব ব্যালট সরাসরি স্থানীয় রিটার্নিং অফিসারের কাছে পৌঁছাবে—দূতাবাস বা হাইকমিশন এতে যুক্ত থাকবে না।
আখতার আহমেদ বলেন, ‘ভোটের খাম একবার সিল হয়ে গেলে কেবল রিটার্নিং অফিসারই তা খুলতে পারবেন। পথে কোনো খাম খোলা বা আটকানো হলে তা সহজেই ধরা পড়বে।’
এই নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশের নির্বাচনী ইতিহাসে প্রথমবার প্রবাসীদের ভোটাধিকার বাস্তবে কার্যকর হতে যাচ্ছে—যা দেশের গণতন্ত্রে এক নতুন অধ্যায় যোগ করবে।
২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভূমিকা
২০২৪ সালের জুলাই মাসে যখন স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবাদ দমন আরও কঠোর করেন, তখন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকরা তার বিরুদ্ধে রেমিট্যান্স বর্জন আন্দোলন শুরু করেন। রেমিট্যান্স হলো বিদেশে উপার্জিত আয়, যা শ্রমিকরা দেশে তাদের পরিবারের কাছে পাঠান। এটি বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি প্রধান ভিত্তি।
হাসিনার পতনের পরবর্তী অর্থবছরে প্রবাসীরা দেশে রেকর্ড ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পাঠান। উপসাগরীয় দেশগুলোতেও প্রবাসীরা ২০২৪ সালে হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নেন, যেখানে শতাধিক শ্রমিক সংযুক্ত আরব আমিরাতে গ্রেপ্তার হন। পরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হস্তক্ষেপে তাদের বেশিরভাগই মুক্তি পান।
এই আন্দোলনের ফলে প্রবাসী শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার ও ভোটাধিকার প্রশ্নটি সরকারের সংস্কার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসে।
নির্বাচনী সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘আমাদের প্রবাসীরা দেশের রেমিট্যান্স যোদ্ধা। তারা স্বৈরশাসককে ক্ষমতাচ্যুত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তাই তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা সময়ের দাবি।’
আগামী নির্বাচনে প্রবাসী ভোট কতটা প্রভাব ফেলতে পারে
ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি)-র যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, ‘প্রবাসীরা মোট ভোটারের ১০ শতাংশেরও বেশি, আর কিছু আসনে এই হার ২০ শতাংশের কাছাকাছি। তারা সরল সংখ্যাগরিষ্ঠ পদ্ধতিতে (ফার্স্ট-পাস্ট-দ্য-পোস্ট) অল্প ব্যবধানের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফল বদলে দিতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, প্রভাব শুধু সংখ্যার মধ্যেই সীমিত নয়। প্রবাসীরা সাধারণত রাজনৈতিকভাবে সচেতন, অর্থনৈতিকভাবে স্থিতিশীল এবং নিজ এলাকার সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। তাদের অংশগ্রহণ পরিবার ও সমাজের মধ্যে ভোটের প্রবণতা এবং জনমত উভয়কেই প্রভাবিত করতে পারে।
‘তাদের ভোটের প্রভাব শুধু ব্যালট বাক্সে নয়, নির্বাচনের সামগ্রিক পরিবেশ এবং গতি পরিবর্তনেও অনুভূত হবে’, যোগ করেন তিনি।
দীর্ঘদিন ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত থাকার পর এবার প্রবাসীদের অংশগ্রহণ বাংলাদেশের নির্বাচনী রাজনীতিতে এক নতুন যুগের সূচনা করবে। রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য এটি মধ্যপ্রাচ্য, মালয়েশিয়া ও ইউরোপজুড়ে নতুন ভোটারভিত্তি গড়ে তোলার সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে এই বিশাল বিদেশি ভোটারগোষ্ঠীর সঙ্গে কার্যকরভাবে যোগাযোগ স্থাপন করা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুল তথ্য ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর ঝুঁকিও রয়েছে। তবে সাইফুল্লাহর মতে, প্রবাসীরা সাধারণত তথ্যসমৃদ্ধ ও অনলাইন-সচেতন হওয়ায় তারা নিজেরাই এসব ভুল তথ্যের বিরুদ্ধে সবচেয়ে শক্ত প্রতিরক্ষা হিসেবে কাজ করতে পারেন।
তিনি বলেন, ‘তারা শুধু বিভ্রান্তির শিকার নন, বরং এর বিরুদ্ধে আমাদের সবচেয়ে কার্যকর প্রতিরক্ষা-প্রাচীর।’
প্রবাসী শ্রমিকদের প্রত্যাশা ও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি
উপসাগরীয় অঞ্চলে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিক তাহসিন শাকিল বলেন, ‘বিমানবন্দরে আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়, লাগেজে অকারণে তল্লাশি হয়, আর দূতাবাসগুলো আমাদের অভিযোগ উপেক্ষা করে। পাসপোর্ট বা কাজের কাগজ পেতেও মাসের পর মাস লাগে। দেশের অর্থনীতি আমাদের টাকায় চলে, অথচ আমাদের সঙ্গে তৃতীয় শ্রেণির নাগরিকের মতো আচরণ করা হয়।’
ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি)
দলটি প্রবাসীদের এই অসন্তোষের প্রতিফলন ঘটিয়েছে তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে। দলের নেতা সাইফুল্লাহ বলেন, ‘প্রবাসীদের শুধু রেমিট্যান্স প্রেরক হিসেবে দেখা যাবে না। আমরা তাদের রাষ্ট্র পুনর্গঠনের অংশীদার ও বাংলাদেশের বৈদেশিক দূত হিসেবে স্বীকৃতি দিতে চাই।’
দলের ইশতেহারে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে—প্রবাসীদের ভোটাধিকার স্থায়ীভাবে নিশ্চিত করা, দূতাবাস ও বিমানবন্দরে হয়রানি বন্ধ করা, বিদেশে বিপদে পড়া নাগরিকদের জন্য জরুরি সহায়তা কার্যক্রম চালু করা।
এনসিপির ইশতেহারে আরও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে—প্রবাসীদের জন্য সরকারি সেবায় ডিজিটাল প্রবেশাধিকার, দেশে ফিরে আসা নাগরিকদের পুনর্বাসন সহায়তা এবং নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ায় সরাসরি অংশগ্রহণের কাঠামো তৈরি করা। এর মাধ্যমে প্রবাসীদের শুধু রেমিট্যান্স প্রেরক নয়, বরং জাতীয় উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার অঙ্গীকার করা হয়েছে।
সাইফুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য একটাই—দূরত্ব যেন ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণ না হয়।’
এই পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতি এক নতুন বাস্তবতায় প্রবেশ করছে, যেখানে দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভূমিকা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)
বিএনপির পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির বিশেষ সহকারী ও দলের সদস্য সাইমুম পারভেজ বলেন, দলটি প্রবাসী শ্রমিকদের কল্যাণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেবে। তিনি বলেন, ‘বিএনপি চায় বিশ্বের প্রতিটি বাংলাদেশ দূতাবাস প্রবাসীদের সুরক্ষা ও কল্যাণে আরও সক্রিয় ভূমিকা নিক, যাতে তারা আর হয়রানির শিকার না হন। পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য জোরদারেও কাজ করবে।’
তিনি আরও জানান, বিএনপি ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দেশে প্রবাসী কমিটি (ডায়াসপোরা কমিটি) গঠন করেছে। ‘বিএনপির এই বিস্তৃত নেটওয়ার্কের কারণে প্রবাসী ভোটারদের কাছে পৌঁছানো কঠিন হবে না’, বলেন তিনি।
পারভেজ আরও যোগ করেন, ‘বিএনপি এখন নীতিনির্ভর রাজনীতিতে মনোযোগী। আমরা ইতিমধ্যেই কৃষি, কর্মসংস্থান ও শিক্ষাখাতে নীতি প্রস্তাব দিয়েছি। আগামী মাসগুলোতে দেখাব, কীভাবে এসব নীতি সাধারণ মানুষের জীবন বদলে দেবে। সেই কারণেই আমি বিশ্বাস করি, প্রবাসী সম্প্রদায় বিএনপিকেই ভোট দেবে।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী প্রার্থী ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিশির মনির জানান, প্রবাসীদের উদ্বেগ ও দাবি তাদের দলের নীতির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। তিনি আল জাজিরাকে বলেন, ‘জামায়াতই প্রথম প্রবাসীদের ভোটের সুযোগ তৈরির বিষয়টি তুলেছিল। আমি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলাম, যাতে নির্বাচন কমিশন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়। আদালত সেই আবেদন গ্রহণ করেছে।’
মনির জানান, যুক্তরাজ্য ও উপসাগরীয় দেশগুলোতে তার সাম্প্রতিক সফরে তিনি দেখেছেন, অনেক প্রবাসী জামায়াতের পক্ষে ভোট দিতে আগ্রহী। ‘আমরা প্রবাসীদের জন্য একক সেবা কেন্দ্র (ওয়ান-স্টপ সার্ভিস) প্রস্তাব করছি, যাতে জমি বা ফৌজদারি মামলাসংক্রান্ত জটিলতা সহজে সমাধান করা যায়। তারা সহজ সেবা চান, আমরাও তা দিতে চাই’, বলেন তিনি।
তিনি আরও জানান, জামায়াত এমন পরিবেশ তৈরি করতে চায় যা প্রবাসীদের দেশে বিনিয়োগেও উৎসাহিত করবে। অনেক প্রবাসী ঢাকার বিমানবন্দরে লাগেজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ করেছেন। ‘আমরা এসব সমস্যার সমাধান করব’, আশ্বাস দেন মনির।
(আল-জাজিরার মাসুম বিল্লাহর প্রতিবেদন, ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ করেছেন মাহবুবুল আলম তারেক)
.png)

ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত আমেরিকান সাংবাদিক মেহদি হাসান গত ১৮ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে ‘নো কিংস’ বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তৃতা দিয়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। ডিজিটাল সংবাদমাধ্যম জেটিও-র প্রতিষ্ঠাতা হাসান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির কড়া সমালোচনা করেন।
১০ ঘণ্টা আগে
দীর্ঘ এক শীতলতার পর বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সাম্প্রতিক উষ্ণতা দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতিতে এক নতুন মেরুকরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের ক্ষত এবং পরবর্তীকালে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতার কারণে প্রায় দেড় দশক ধরে এই সম্পর্ক ছিল নিষ্ক্রিয়।
১ দিন আগে
প্রাইভেট মিলিটারি কোম্পানি (পিএমসি) এখন আধুনিক যুদ্ধের অপরিহার্য উপাদান। রাষ্ট্রের জবাবদিহি এড়িয়ে, করপোরেট শক্তির ছায়ায় এই সংস্থাগুলো আজ যুদ্ধের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে। প্রযুক্তিনির্ভর ও গোপন এই নতুন যুদ্ধের ধরনে লাভের হিসাব মানবিকতার চেয়েও বড় হয়ে উঠেছে। যুদ্ধ এখন শুধু রণাঙ্গনে নয়, করপোরেট চুক্তি।
১ দিন আগে
সম্প্রতি জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ অভিযোগ করেছেন, আসন্ন সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ আমলের মতো কারচুপির ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি বলেন, আবারও একটা ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দিকে যাচ্ছি আমরা।
২ দিন আগে