জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
বৈঠকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা নির্ধারিত সময়ে বিচারকাজ শেষ করতে পারবে না। তাদের আরও সময় প্রয়োজন। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনার পর প্রশাসনের আশ্বাসে আবার নির্বাচন পেছানোর ব্যাপারে সম্মতি দেয় ছাত্রনেতারা।
স্ট্রিম প্রতিবেদক
সারা ক্যাম্পাস যখন ঘুমে নীরব, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হল তখন উত্তপ্ত। ছাত্রনেতা আর প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের মধ্যে চলছে যুক্তি-পাল্টাযুক্তি। ২৬ জুন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় শুরু হওয়া এই বৈঠক শেষ হয় ভোর সাড়ে চারটায়। টানা ১০ ঘণ্টার বৈঠক শেষে তৃতীয়বারের মতো পেছানো হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন।
বৈঠকে অংশ নেওয়া ছাত্রনেতারা বলছেন, পরপর দুবার নির্বাচন পিছিয়েছে প্রশাসন। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুসারে আগামী ৩১ জুলাই নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। এবং নির্বাচনের আগেই জুলাই অভ্যুত্থানের দোষীদের বিচার নিশ্চিতের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে ২৩ জুন ছাত্রনেতাদের কাছে চিঠি পাঠিয়ে বৈঠক আহ্বান করা হয়। চিঠিতে জাকসু নিয়ে মতবিনিময়ের কথা বলা হলেও বৈঠকে আসে জুলাইয়ের বিচারের প্রসঙ্গ।
বৈঠকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা নির্ধারিত সময়ে বিচারকাজ শেষ করতে পারবে না। তাদের আরও সময় প্রয়োজন। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনার পর প্রশাসনের আশ্বাসে আবার নির্বাচন পেছানোর ব্যাপারে সম্মতি দেয় ছাত্রনেতারা।
বৈঠক শেষে আরেকবার জাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করে প্রশাসন। নতুন রোডম্যাপ অনুসারে, আগামী ৩ আগস্টের মধ্যে জুলাইয়ে হামলায় জড়িত ছাত্রলীগের সাময়িক বহিষ্কৃতদের চূড়ান্ত বিচার নিশ্চিত করা হবে। একই দিনে ঘোষিত হবে জাকসুর তফসিল।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল স্ট্রিমকে বলেন, ‘যখনই জাকসু নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসে, তখনই জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হামলাকারীদের বিচার আর জাকসু নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করানো হয়। বিচারসহ নানা অজুহাতে বারবার জাকসু নির্বাচন পেছানো হয়েছে, আবারও পেছাল। আসলে “জুলাইয়ের প্রোডাক্ট” দাবি করা এই প্রশাসন পুরোপুরি ব্যর্থ!’
নির্বাচনের বিষয়ে কথা বলতে জাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মো. মনিরুজ্জামানের মোবাইলে কয়েকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ–উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, গত বছরের ১৪, ১৫, ১৬ ও ১৭ জুলাই ক্যাম্পাসে যে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে এবং এর সঙ্গে জড়িত বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের বিচারের জন্য চলমান তদন্ত কার্যক্রম শেষ হয়নি। এজন্য গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জাকসুর সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কামরুল আহসান সবার মতামত ও সম্মতিক্রমে পুনঃতফসীল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
প্রশাসন এখন যা করছে, তাতে নির্বাচনের বিষয়ে তাদের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বারবার এভাবে নির্বাচন পেছানোর কারণে আদৌ নির্বাচন হবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা থেকে যাচ্ছে। জহির উদ্দিন বাবর, আহ্বায়ক, জাবি ছাত্রদল
গতবছরের জুলাই গণ-অভ্যুত্থাণের পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নেন অধ্যাপক কামরুল আহসান। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়টির নানা অনিয়ম দূর করা এবং বিভিন্ন খাতে সংস্কারের দাবিতে কর্মসূচি পালন করতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। তাঁদের অন্যতম দাবি ছিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছা্ত্র সংসদ নির্বাচন। টানা কর্মসূচি ও আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর জাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
৩১ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক মো. মনিরুজ্জামানকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করে নির্বাচন কমিশন গঠন করে প্রশাসন। কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার, শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হলের প্রভোস্ট লুৎফুল এলাহী, বেগম সুফিয়া কামাল হলের প্রভোস্ট রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা। সদস্যসচিব ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম রাশিদুল আলম।
ওই সময় ভোটার তালিকা প্রকাশ, পরিবেশ পরিষদ গঠনসহ নানা উদ্যোগ নেয় প্রশাসন। হলে হলে মতবিনিময় সভাও হয়। বিভিন্ন অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে গঠনতন্ত্র সংস্কারের বেশ কিছু প্রস্তাবও তৈরি করে কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু গত ১ ফেব্রুয়ারি তফসিল ঘোষণার কথা থাকলেও তা আর হয়নি। জাকসুর গঠনতন্ত্রসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সংস্কারের দাবি জানায় ছাত্রদল। অন্যদিকে তফসিল ঘোষণাসহ দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইসলামী ছাত্র শিবির ও অন্যান্য সংগঠন। ছাত্রসংগঠনগুলোর এই মতবিরোধকে সামনে এনে তফসিল ঘোষণা করেনি প্রশাসন।
আবার আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। পরে চলতি বছরের মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে নির্বাচন হবে বলে শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দেওয়া হয়। বলা হয়, নির্বাচনের ২১ দিন আগে (৩০ এপ্রিল) তফসিল ঘোষণা হবে।
তফসিল ঘোষণার আগের দিন ২৯ এপ্রিল ছাত্রনেতাদের সঙ্গে প্রশাসনের আবার বৈঠক হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ‘জুলাইয়ের দোসর’দের বিচার ও জাকসু নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করানো হয় বলে শিক্ষার্থীরা মন্তব্য করেছেন। কয়েকজন ছাত্রনেতা স্ট্রিমকে বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, জাকসু চাইলে বিচার পেছাবে আর বিচার চাইলে জাকসু পেছাবে। এমন পরিস্থিতিতে বিচার বা নির্বাচন—কোনোটাই না পিছিয়ে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেন শিক্ষার্থীরা।
পরে নির্বাচনের তারিখ পেছানোর শর্তে ৩০ এপ্রিল তফসিল ঘোষণা করেন জাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান। ঘোষণা অনুযায়ী, ৩১ জুলাই নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২৬ জুনের বৈঠক শেষে আবার পেছানো হলো নির্বাচন।
তবুও শেষবারের মতো প্রশাসনের ওপর আস্থা রাখতে চান বাগছাস আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল। তিনি বলেন, ‘এরপরও যদি তারা বিগত স্বৈরাচারী সরকারের মদদপুষ্ট প্রশাসনের মতো শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে, তাহলে শিক্ষার্থীদের নিয়ে উপযুক্ত জবাব দেব!’
২০১২ সালের ১৭ মে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭তম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন। ২০১৩ সালের নভেম্বরে তিনি জাকসু নির্বাচনের উদ্যোগ নেন। এরপর ২০১৪ সালের ২ জানুয়ারি জাকসু নির্বাচনের তারিখও ঘোষণা করা হয়।
তবে এমফিল এবং পিএইচডির শিক্ষার্থীরাও নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন—এমন ঘোষণার পর বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানান শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অনেকেই। তৎকালীন শিক্ষক সমিতির নেতারাও এর বিরোধিতা করেন। এরপর ওই বছরের ২৬ নভেম্বর নির্বাচন কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। কমিশন তখন জানিয়েছিল, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর জাকসু নির্বাচনের আয়োজন করা হবে। সেটি আর হয়ে ওঠেনি।
এরপর ২০১৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জাকসু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। আন্দোলনের মুখে ওই বছরের ২৭ জুন নির্বাচন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়।
নির্বাচন প্রস্তুতি কমিটিকে জাকসুর পুরোনো গঠনতন্ত্র সংশোধনের দায়িত্ব দেয় প্রশাসন। এ উদ্দেশ্যে ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করে কমিটি। কিন্তু গঠনতন্ত্র আর সংশোধন করা হয়নি।
ওই বছরের ২৮ জুন সিনেট অধিবেশন শুরুর আধা ঘণ্টা আগে সিনেটকক্ষ ঘেরাও করে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন। পরে নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের ঘোষণা দেন তৎকালীন উপাচার্য ফারজানা ইসলাম। ৩১ জুলাই প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল মান্নান চৌধুরীকে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু সেই কমিশন আর পূর্ণাঙ্গ হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা বলছেন, সে সময় ক্যাম্পাসজুড়ে চলছিল নির্বাচনের প্রস্তুতি। টানা ১০ বছর ক্যাম্পাসে ঢুকতে না পারা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ওই সময় কড়া নিরাপত্তায় জাকসুর আলোচনায় যোগ দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে প্রবেশ করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭১ সালের ১২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরুর পরের বছরই প্রথম জাকসু নির্বাচন হয়। এরপর ১৯৭৪, ১৯৭৯, ১৯৮০, ১৯৮১, ১৯৮৯, ১৯৯০ ও ১৯৯১ সালসহ মোট ৮ বার নির্বাচন হয়েছে। ১৯৯২ সালে শেষবারের মতো নির্বাচন হয়। কিন্তু ১৯৯৩ সালের ২৯ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ক্লাবে ছাত্ররা শিক্ষকদের ওপর হামলা চালালে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ভেঙে দেয় প্রশাসন। ওই ছিল শেষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলছেন, জুলাই আন্দোলনের পর হামলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার এবং জাকসু নির্বাচন—এই দুই বিষয়ে সব শিক্ষার্থী ঐক্যবদ্ধ। কিন্তু প্রশাসনের অন্য সব কিছু ঠিক থাকলেও এই দুই বিষয়ে কোনো অগ্রগতি নেই। বরং নানা টালবাহানায় বিচার ও নির্বাচন দুটোই পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে সেপ্টেম্বরে জাকসু নির্বাচন করা সম্ভব কি না তা নিয়ে আশঙ্কা আছে। এই আশঙ্কার কথা গতকালের সিনেট অধিবেশনেও বলেছি আমি। তবে উপাচার্য যেহেতু প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আমরা আশাবাদী। অধ্যাপক মোতাহার হোসেন, সাবেক সভাপতি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর স্ট্রিমকে বলেন, ‘আমরা সব সময় জাকসু নির্বাচনের পক্ষে ছিলাম। বারবার এই দাবি উত্থাপন করেছি বলেই জাকসু এতদূর পর্যন্ত আসতে পেরেছে।’
জহির উদ্দিন বাবর আরও বলেন, প্রশাসন এখন যা করছে, তাতে নির্বাচনের বিষয়ে তাদের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বারবার এভাবে নির্বাচন পেছানোর কারণে আদৌ নির্বাচন হবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা থেকে যাচ্ছে।
তবে এবারের ঘোষিত তারিখের মধ্যে নির্বাচন না হলে সবাইকে নিয়ে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জহির উদ্দিন।
নির্বাচন না হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও আশা প্রকাশ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মোতাহার হোসেন। তিনি স্ট্রিমকে বলেন, ‘গতকাল (শনিবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪২তম বার্ষিক সিনেট অধিবেশন হয়েছে। সেই অধিবেশনে আমি কোনো ছাত্র প্রতিনিধি পাইনি। কারণ জাকসু থেকেই পাঁচজন ছাত্র প্রতিনিধি সিনেটে যুক্ত হন।’
এর মধ্যে জাকসু নিয়ে ক্যাম্পাসে আলোচনা চলছে এবং তৃতীয়বারের মতো নির্বাচনের তারিখ পিছিয়েছে উল্লেখ করে মোতাহার হোসেন বলেন, ‘আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে সেপ্টেম্বরে জাকসু নির্বাচন করা সম্ভব কি না তা নিয়ে আশঙ্কা আছে। এই আশঙ্কার কথা গতকালের সিনেট অধিবেশনেও বলেছি আমি। তবে উপাচার্য যেহেতু প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আমরা আশাবাদী।’
সারা ক্যাম্পাস যখন ঘুমে নীরব, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হল তখন উত্তপ্ত। ছাত্রনেতা আর প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের মধ্যে চলছে যুক্তি-পাল্টাযুক্তি। ২৬ জুন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় শুরু হওয়া এই বৈঠক শেষ হয় ভোর সাড়ে চারটায়। টানা ১০ ঘণ্টার বৈঠক শেষে তৃতীয়বারের মতো পেছানো হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন।
বৈঠকে অংশ নেওয়া ছাত্রনেতারা বলছেন, পরপর দুবার নির্বাচন পিছিয়েছে প্রশাসন। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুসারে আগামী ৩১ জুলাই নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। এবং নির্বাচনের আগেই জুলাই অভ্যুত্থানের দোষীদের বিচার নিশ্চিতের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে ২৩ জুন ছাত্রনেতাদের কাছে চিঠি পাঠিয়ে বৈঠক আহ্বান করা হয়। চিঠিতে জাকসু নিয়ে মতবিনিময়ের কথা বলা হলেও বৈঠকে আসে জুলাইয়ের বিচারের প্রসঙ্গ।
বৈঠকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা নির্ধারিত সময়ে বিচারকাজ শেষ করতে পারবে না। তাদের আরও সময় প্রয়োজন। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনার পর প্রশাসনের আশ্বাসে আবার নির্বাচন পেছানোর ব্যাপারে সম্মতি দেয় ছাত্রনেতারা।
বৈঠক শেষে আরেকবার জাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করে প্রশাসন। নতুন রোডম্যাপ অনুসারে, আগামী ৩ আগস্টের মধ্যে জুলাইয়ে হামলায় জড়িত ছাত্রলীগের সাময়িক বহিষ্কৃতদের চূড়ান্ত বিচার নিশ্চিত করা হবে। একই দিনে ঘোষিত হবে জাকসুর তফসিল।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল স্ট্রিমকে বলেন, ‘যখনই জাকসু নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসে, তখনই জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হামলাকারীদের বিচার আর জাকসু নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করানো হয়। বিচারসহ নানা অজুহাতে বারবার জাকসু নির্বাচন পেছানো হয়েছে, আবারও পেছাল। আসলে “জুলাইয়ের প্রোডাক্ট” দাবি করা এই প্রশাসন পুরোপুরি ব্যর্থ!’
নির্বাচনের বিষয়ে কথা বলতে জাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মো. মনিরুজ্জামানের মোবাইলে কয়েকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ–উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, গত বছরের ১৪, ১৫, ১৬ ও ১৭ জুলাই ক্যাম্পাসে যে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে এবং এর সঙ্গে জড়িত বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের বিচারের জন্য চলমান তদন্ত কার্যক্রম শেষ হয়নি। এজন্য গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জাকসুর সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কামরুল আহসান সবার মতামত ও সম্মতিক্রমে পুনঃতফসীল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
প্রশাসন এখন যা করছে, তাতে নির্বাচনের বিষয়ে তাদের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বারবার এভাবে নির্বাচন পেছানোর কারণে আদৌ নির্বাচন হবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা থেকে যাচ্ছে। জহির উদ্দিন বাবর, আহ্বায়ক, জাবি ছাত্রদল
গতবছরের জুলাই গণ-অভ্যুত্থাণের পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নেন অধ্যাপক কামরুল আহসান। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়টির নানা অনিয়ম দূর করা এবং বিভিন্ন খাতে সংস্কারের দাবিতে কর্মসূচি পালন করতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। তাঁদের অন্যতম দাবি ছিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছা্ত্র সংসদ নির্বাচন। টানা কর্মসূচি ও আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর জাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
৩১ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক মো. মনিরুজ্জামানকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করে নির্বাচন কমিশন গঠন করে প্রশাসন। কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার, শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হলের প্রভোস্ট লুৎফুল এলাহী, বেগম সুফিয়া কামাল হলের প্রভোস্ট রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা। সদস্যসচিব ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম রাশিদুল আলম।
ওই সময় ভোটার তালিকা প্রকাশ, পরিবেশ পরিষদ গঠনসহ নানা উদ্যোগ নেয় প্রশাসন। হলে হলে মতবিনিময় সভাও হয়। বিভিন্ন অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে গঠনতন্ত্র সংস্কারের বেশ কিছু প্রস্তাবও তৈরি করে কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু গত ১ ফেব্রুয়ারি তফসিল ঘোষণার কথা থাকলেও তা আর হয়নি। জাকসুর গঠনতন্ত্রসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সংস্কারের দাবি জানায় ছাত্রদল। অন্যদিকে তফসিল ঘোষণাসহ দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইসলামী ছাত্র শিবির ও অন্যান্য সংগঠন। ছাত্রসংগঠনগুলোর এই মতবিরোধকে সামনে এনে তফসিল ঘোষণা করেনি প্রশাসন।
আবার আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। পরে চলতি বছরের মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে নির্বাচন হবে বলে শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দেওয়া হয়। বলা হয়, নির্বাচনের ২১ দিন আগে (৩০ এপ্রিল) তফসিল ঘোষণা হবে।
তফসিল ঘোষণার আগের দিন ২৯ এপ্রিল ছাত্রনেতাদের সঙ্গে প্রশাসনের আবার বৈঠক হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ‘জুলাইয়ের দোসর’দের বিচার ও জাকসু নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করানো হয় বলে শিক্ষার্থীরা মন্তব্য করেছেন। কয়েকজন ছাত্রনেতা স্ট্রিমকে বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, জাকসু চাইলে বিচার পেছাবে আর বিচার চাইলে জাকসু পেছাবে। এমন পরিস্থিতিতে বিচার বা নির্বাচন—কোনোটাই না পিছিয়ে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেন শিক্ষার্থীরা।
পরে নির্বাচনের তারিখ পেছানোর শর্তে ৩০ এপ্রিল তফসিল ঘোষণা করেন জাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান। ঘোষণা অনুযায়ী, ৩১ জুলাই নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২৬ জুনের বৈঠক শেষে আবার পেছানো হলো নির্বাচন।
তবুও শেষবারের মতো প্রশাসনের ওপর আস্থা রাখতে চান বাগছাস আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল। তিনি বলেন, ‘এরপরও যদি তারা বিগত স্বৈরাচারী সরকারের মদদপুষ্ট প্রশাসনের মতো শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে, তাহলে শিক্ষার্থীদের নিয়ে উপযুক্ত জবাব দেব!’
২০১২ সালের ১৭ মে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭তম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন। ২০১৩ সালের নভেম্বরে তিনি জাকসু নির্বাচনের উদ্যোগ নেন। এরপর ২০১৪ সালের ২ জানুয়ারি জাকসু নির্বাচনের তারিখও ঘোষণা করা হয়।
তবে এমফিল এবং পিএইচডির শিক্ষার্থীরাও নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন—এমন ঘোষণার পর বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানান শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অনেকেই। তৎকালীন শিক্ষক সমিতির নেতারাও এর বিরোধিতা করেন। এরপর ওই বছরের ২৬ নভেম্বর নির্বাচন কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। কমিশন তখন জানিয়েছিল, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর জাকসু নির্বাচনের আয়োজন করা হবে। সেটি আর হয়ে ওঠেনি।
এরপর ২০১৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জাকসু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। আন্দোলনের মুখে ওই বছরের ২৭ জুন নির্বাচন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়।
নির্বাচন প্রস্তুতি কমিটিকে জাকসুর পুরোনো গঠনতন্ত্র সংশোধনের দায়িত্ব দেয় প্রশাসন। এ উদ্দেশ্যে ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করে কমিটি। কিন্তু গঠনতন্ত্র আর সংশোধন করা হয়নি।
ওই বছরের ২৮ জুন সিনেট অধিবেশন শুরুর আধা ঘণ্টা আগে সিনেটকক্ষ ঘেরাও করে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন। পরে নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের ঘোষণা দেন তৎকালীন উপাচার্য ফারজানা ইসলাম। ৩১ জুলাই প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল মান্নান চৌধুরীকে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু সেই কমিশন আর পূর্ণাঙ্গ হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা বলছেন, সে সময় ক্যাম্পাসজুড়ে চলছিল নির্বাচনের প্রস্তুতি। টানা ১০ বছর ক্যাম্পাসে ঢুকতে না পারা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ওই সময় কড়া নিরাপত্তায় জাকসুর আলোচনায় যোগ দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে প্রবেশ করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭১ সালের ১২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরুর পরের বছরই প্রথম জাকসু নির্বাচন হয়। এরপর ১৯৭৪, ১৯৭৯, ১৯৮০, ১৯৮১, ১৯৮৯, ১৯৯০ ও ১৯৯১ সালসহ মোট ৮ বার নির্বাচন হয়েছে। ১৯৯২ সালে শেষবারের মতো নির্বাচন হয়। কিন্তু ১৯৯৩ সালের ২৯ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ক্লাবে ছাত্ররা শিক্ষকদের ওপর হামলা চালালে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ভেঙে দেয় প্রশাসন। ওই ছিল শেষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলছেন, জুলাই আন্দোলনের পর হামলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার এবং জাকসু নির্বাচন—এই দুই বিষয়ে সব শিক্ষার্থী ঐক্যবদ্ধ। কিন্তু প্রশাসনের অন্য সব কিছু ঠিক থাকলেও এই দুই বিষয়ে কোনো অগ্রগতি নেই। বরং নানা টালবাহানায় বিচার ও নির্বাচন দুটোই পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে সেপ্টেম্বরে জাকসু নির্বাচন করা সম্ভব কি না তা নিয়ে আশঙ্কা আছে। এই আশঙ্কার কথা গতকালের সিনেট অধিবেশনেও বলেছি আমি। তবে উপাচার্য যেহেতু প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আমরা আশাবাদী। অধ্যাপক মোতাহার হোসেন, সাবেক সভাপতি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর স্ট্রিমকে বলেন, ‘আমরা সব সময় জাকসু নির্বাচনের পক্ষে ছিলাম। বারবার এই দাবি উত্থাপন করেছি বলেই জাকসু এতদূর পর্যন্ত আসতে পেরেছে।’
জহির উদ্দিন বাবর আরও বলেন, প্রশাসন এখন যা করছে, তাতে নির্বাচনের বিষয়ে তাদের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বারবার এভাবে নির্বাচন পেছানোর কারণে আদৌ নির্বাচন হবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা থেকে যাচ্ছে।
তবে এবারের ঘোষিত তারিখের মধ্যে নির্বাচন না হলে সবাইকে নিয়ে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জহির উদ্দিন।
নির্বাচন না হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও আশা প্রকাশ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মোতাহার হোসেন। তিনি স্ট্রিমকে বলেন, ‘গতকাল (শনিবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪২তম বার্ষিক সিনেট অধিবেশন হয়েছে। সেই অধিবেশনে আমি কোনো ছাত্র প্রতিনিধি পাইনি। কারণ জাকসু থেকেই পাঁচজন ছাত্র প্রতিনিধি সিনেটে যুক্ত হন।’
এর মধ্যে জাকসু নিয়ে ক্যাম্পাসে আলোচনা চলছে এবং তৃতীয়বারের মতো নির্বাচনের তারিখ পিছিয়েছে উল্লেখ করে মোতাহার হোসেন বলেন, ‘আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে সেপ্টেম্বরে জাকসু নির্বাচন করা সম্ভব কি না তা নিয়ে আশঙ্কা আছে। এই আশঙ্কার কথা গতকালের সিনেট অধিবেশনেও বলেছি আমি। তবে উপাচার্য যেহেতু প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আমরা আশাবাদী।’
২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য হারে এই এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনা বেড়েছে। গত ৬ মাসেই দুর্ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে ১০০টি, এতে ২৯জন নিহত ও ১৯৩ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে জুন মাসের ২৮ দিনেই ২১টি দূর্ঘটনায় ৪৭জন আহত ১২জন নিহত হয়েছেন।
২ দিন আগেশুধু বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থা, নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীই নয় বরং ভারতীয় বাহিনীরও গুমে জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন করা এ তদন্ত কমিশন।
৪ দিন আগেআজ আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবস। দেশে মাদকসেবীর সংখ্যা এখন দেড় কোটি। মাদকাসক্তের সংখ্যা ৮৩ লাখ। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে দেশে মাদক নিরাময় কেন্দ্র আছে ৩৮৫টি।
৪ দিন আগে