leadT1ad

এনবিআর ২০-২৩ অর্থবছরে ১.৮৮ লাখ কোটি টাকার ভ্যাট হারিয়েছে: সিপিডি

স্ট্রিম প্রতিবেদকঢাকা
প্রকাশ : ২৬ আগস্ট ২০২৫, ২১: ৪০
আপডেট : ২৬ আগস্ট ২০২৫, ২১: ৫৩
সংগৃহীত ছবি

২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রায় ১ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা ভ্যাট আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সাম্প্রতিক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।

গবেষণায় দেখা গেছে, ওই অর্থবছরে এনবিআর মোট ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৬ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করতে পেরেছে। তবে সেই সময়ে সরকারের কোষাগারে ভ্যাট বাবদ আসা সম্ভব ছিল ৩ লাখ ২০ হাজার ১১৭ কোটি টাকা। ফলে প্রায় ১ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি দেখা দিয়েছে। গবেষকরা এ ঘাটতিকে মূলত কর ফাঁকি ও বিভিন্ন অব্যাহতির কারণে মনে করছেন।

সিপিডির জ্যেষ্ঠ গবেষণা সহযোগী তামীম আহমেদ বলেন, ‘আমরা ভ্যাটের কার্যকর হার বা ইফেক্টিভ রেট নির্ধারণ করেছি, যা ১১.৭ শতাংশ। এই হার অনুযায়ী গণনা করলে দেখা গেছে আদায় যতই হোক না কেন, প্রকৃত আদায়ের তুলনায় রাজস্বে বিশাল ফাঁক রয়েছে।’

গবেষণার জন্য ঢাকা ও চট্টগ্রামের ১২৩টি করপোরেট প্রতিষ্ঠান এবং দেশের বিভিন্ন এলাকার ৩৮৯টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৭২ শতাংশ প্রতিষ্ঠান মনে করে, কর কর্মকর্তাদের দুর্নীতি তাদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। ৮২ শতাংশ ব্যবসায়ী দাবি করেছেন, তাদের ওপর ‘অন্যায্য’ হারে কর আরোপ করা হয়েছে। এ ছাড়া ৭৯ শতাংশ প্রতিষ্ঠান এনবিআর কর্মকর্তাদের জবাবদিহির অভাবকে বড় সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করেছে।

সমীক্ষার আরও ফলাফলে দেখা গেছে, প্রায় পাঁচজন ব্যবসায়ীর মধ্যে চারজন বর্তমানে কর ব্যবস্থার ওপর অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ৬৫ শতাংশ ব্যবসায়ী নিয়মিত কর দাবিকে কেন্দ্র করে কর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। অনেকেই অভিযোগ করেছেন, কর কর্মকর্তারা যথাযথ ব্যাখ্যা বা পূর্বাভাস ছাড়াই ইচ্ছামতো কর আরোপ করেন। এই ধরনের প্রথা শুধু করের সংখ্যা বৃদ্ধি করে না, বরং অদৃশ্য চাপের মাধ্যমে ব্যবসার কার্যক্রমকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করে।

ভ্যাট আইন ও নীতি সম্পর্কেও ব্যবসায়ীদের অসন্তোষ প্রকাশ পেয়েছে। ৭৩.৫ শতাংশ ব্যবসায়ী জানিয়েছে, জটিল ভ্যাট হার ও নিয়মাবলী তাদের জন্য বড় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এ ছাড়া অস্পষ্ট নীতি, কর কর্মকর্তাদের সীমিত সহযোগিতা, প্রশিক্ষণ ও সচেতনতার অভাব, পণ্য ও সেবার শ্রেণিবিন্যাসের জটিলতা এবং উচ্চ অনুবর্তন ব্যয় ব্যবসায়ীদের বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। এই সমীক্ষা পরিচালনা করা হয়েছে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের এন্টারপ্রাইজ সার্ভের কাঠামো অনুসরণ করে।

অনুষ্ঠানে সাবেক অর্থ সচিব সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘গবেষণায় ৬১টি সুপারিশ রাখা হয়েছে। ব্যক্তির জন্য অনলাইন রিটার্ন বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব করা হয়েছে। করপোরেট ক্ষেত্রে দ্রুত বাস্তবায়ন প্রয়োজন। এ ছাড়া শিক্ষা ও শিক্ষার ব্যবসাকে আলাদা করে কর ব্যবস্থা প্রণয়ন করার সুপারিশ করা হয়েছে। করপোরেট ট্যাক্স কাঠামো এমনভাবে সংস্কার করা উচিত যাতে রপ্তানি ও অরপ্তানিমুখী উভয় খাতের জন্য কর হার ১৫ শতাংশের নিচে না আসে। এটি বাস্তবায়নযোগ্য।’

ট্যাক্স বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ এইচ মাহবুব সালেকিন বলেন, ‘কর অফিসে দুর্নীতি বেশি। মামলাগুলো দ্রুত ও স্বচ্ছভাবে সমাধান হলে রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি পেত এবং বিদেশি সাহায্যের ওপর নির্ভরশীলতা কমত। তবে এনবিআরের চেয়ারম্যান আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছেন, যা ইতিবাচক।’

ভ্যাট বিভাগের প্রথম সচিব মশিউর রহমান বলেন, ‘আগামী ১০ বছরের রাজস্ব কৌশলপত্রে ভ্যাটের ওপর বাড়ানো ফোকাস করলে দীর্ঘমেয়াদে ভালো ফলাফল পাওয়া সম্ভব। তবে এই মুহূর্তে ভ্যাট রেট কমালে রাজস্ব আহরণে বড় প্রভাব পড়বে।’

গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘আমরা ২০২৫ সালের তথ্য নিয়ে গবেষণা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এনবিআর থেকে তথ্য সংগ্রহে জটিলতা ও বিড়ম্বনার কারণে তা সম্ভব হয়নি।’

Ad 300x250

নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেটে হামলার ঘটনায় এনসিপি ডায়াস্পোরা অ্যালায়েন্সের উদ্বেগ

রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান নিয়ে যে কারণে সন্দেহ

ডাকসু নির্বাচনে প্রচারণা শুরু, আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ

‘আমার বাবা মা আমাকে সাপোর্ট করে বলেই আমি এতদূর এগিয়ে এসেছি’

বিচার চাইলে বলে আমরা নাকি মায়াকান্না করি, অভিযোগ অভিভাবকদের

সম্পর্কিত