নাহিদ ইসলাম বলেছেন, হামলাকারী মুজিববাদী সন্ত্রাসীরা যেন ছাড় না পায়, তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনতে হবে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘আমরা আবারও গোপালগঞ্জে যাব। জীবিত থাকলে গোপালগঞ্জের প্রত্যেক উপজেলায়, প্রত্যেক গ্রামে কর্মসূচি করব।’
ভোলায় এনসিপির পথসভা
গত বছরের ১৪ জুলাই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বক্তব্যে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। ওই বক্তব্যের প্রতিবাদে সেদিন রাতেই তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’ স্লোগানে মিছিল করেন। দেশজুড়ে আলোড়ন তোলে সেই মিছিল।
পটুয়াখালীর পথসভা শেষ করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা-কর্মীরা রওনা করেন বরগুনার উদ্দেশে। ঝড়-বৃষ্টি এবং খানাখন্দ ভরা রাস্তা পেরিয়ে সোমবার (১৪ জুলাই) বিকেলে বরগুনায় পৌঁছে দলটির গাড়ি বহর। পাঁচটায় শুরু হয় পদযাত্রা।
‘অনেকে রিকশাওয়ালা, মজুর, কৃষক, শ্রমিকদের তুই তুকারি করে কথা বলে৷ তাদেরকে তুচ্ছ করে, তাচ্ছিল্য করে৷ আমরা কি এই বাংলাদেশ চেয়েছি! বাংলাদেশকে এমনভাবে তৈরি করতে হবে, একজন রিকশাওয়ালা, একজন সচিব সবার সম্মান হবে সমান।‘
বিলের ধারে এনসিপি নেতাদের হাস্যোজ্জ্বল ও উচ্ছ্বসিত একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘ভাইরাল’ হয়। পরে একই স্থানে ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যায়, সেই বিলে নেমে সমর্থকদের সঙ্গে ‘শাপলা’ ‘এনসিপি’ ইত্যাদি স্লোগান দিচ্ছেন নেতারা।
আমরা শুনছি শাপলা প্রতীক আমাদের দেওয়া হবে না। নির্বাচন কমিশন মিটিং করার আগেই কিভাবে এই খবর প্রচার হলো। ধিক্কার জানাই নির্বাচন কমিশনকে। আপনাদের রিমোট কন্ট্রোল কাদের হাতে তা আমরা জানি।
৯ জুলাই সারাদিন গণসংযোগ শেষে সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে একটি সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’। এখানে পরদিন বুধবার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা ‘বাংলা ব্লকেড’ ঘোষণা করেন নাহিদ ইসলাম।
কুষ্টিয়ায় নাহিদ ইসলাম
পদযাত্রায় এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশপন্থী রাজনীতির পথ দেখিয়ে গেছেন আবরার ফাহাদ। সেই পথেই এনসিপি রাজনীতি করছে, সেই পথ ধরেই জুলাই গণ-অভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছিল।’
এদিন বিকেলে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে আবার শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। বিকেল সাড়ে চারটা থেকে প্রায় একঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন তাঁরা। অবরোধ শেষে নাহিদ ইসলাম ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
শহীদদের যে স্বপ্ন ছিল, তা জানাচ্ছি। শহীদ পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কটা রাজনৈতিক নয়। দল-মত নির্বিশেষে শহীদ পরিবারের সঙ্গে আত্মার সম্পর্ক। শহীদ পরিবারের ক্ষতি অপূরণীয়।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জুলাই ঘোষণাপত্র, মৌলিক সংস্কার, গণহত্যার বিচার ও নতুন সংবিধানের জন্য আমরা লড়াই করছি। অবশ্যই জুলাই-আগস্টের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে হবে এবং সাংবিধানিক ভিত্তি থাকবে এই ঘোষণাপত্রে।
পরাজিত শক্তির রেখে যাওয়া পুরাতন বন্দোবস্ত পরিবর্তন করা ছাড়া কাঙ্ক্ষিত নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবেনা। যত দ্রুত সংষ্কার হবে, তত তাড়াতাড়ি দেশ সঠিক পথে এগিয়ে যাবে। আমরা জুলাই পদযাত্রার মাধ্যমে যে সাড়া পাচ্ছি তাতে জনগণের প্রত্যাশা বাস্তবায়ন করেই ছাড়ব।
কুড়িগ্রামে এনসিপির পথসভা
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘উন্নয়ন মানে কেবল ঢাকার উন্নয়ন না। দেশে উন্নয়নের কথা শোনা গেলেও সেই উন্নয়ন সবার কাছে পৌঁছায় না।’
এনসিপির মাসব্যাপী পদযাত্রা
নাহিদ ইসলাম বলেন, যারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হামলা করেছিল, সেই ফ্যাসিস্টরা এখনও ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। গত ১৬ বছর শেখ হাসিনাসহ তার দোসররা দেশের মানুষের ওপর অন্যায়-অত্যাচার করেছে, তাদের বিচার আমরা অবশ্যই নিশ্চিত করব।
‘নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে বিচার, সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি নতুন সংবিধানের দিকে যেতেই হবে’—এমন মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।