leadT1ad

গত বছর ৬ জুলাই যা যা ঘটেছিল

গত বছর ৬ জুলাই ছিল শনিবার। ‘বাংলা ব্লকেড’ ঘোষণার দিন। শুক্রবারের ছুটি পেরিয়ে এদিন কোটা সংস্কার আন্দোলন নতুন গতি পায়।

স্ট্রিম ডেস্ক
প্রকাশ : ০৬ জুলাই ২০২৫, ০৯: ২৩
আপডেট : ০৬ জুলাই ২০২৫, ১০: ২৮
৬ জুলাই শাহবাগে কোটা সংস্কার আন্দোলন। ছবি: তথ্য মন্ত্রণালয়

গত বছর ৬ জুলাই ছিল শনিবার। ‘বাংলা ব্লকেড’ ঘোষণার দিন। শুক্রবারের ছুটি পেরিয়ে এদিন কোটা সংস্কার আন্দোলন নতুন গতি পায়। সরকার ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ব্যক্তিরাও কোটা আন্দোলন নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করেন। কোটা সংস্কারের দাবিতে দেশব্যাপী অবরোধের এই ছিল শুরু।

বাংলা ব্লকেডের ঘোষণা
এদিন বিকেলে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে আবার শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। বিকেল সাড়ে চারটা থেকে প্রায় একঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন তাঁরা। অবরোধ শেষে নাহিদ ইসলাম ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

সারা দেশে এ কর্মসূচি পালিত হবে জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আগামীকাল বিকাল তিনটা থেকে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো। শুধু শাহবাগ মোড় নয়, শাহবাগ ও ঢাকা শহরের সায়েন্সল্যাব, চানখারপুল, নীলক্ষেত, মতিঝিলসহ প্রতিটি পয়েন্টে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা নেমে এসে কর্মসূচি সফল করবেন। ঢাকার বাইরের জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক অবরোধ করবেন।’

নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘সরকার মনে করছে আমরা দুই-তিন দিন রাস্তা অবরোধ করে ক্লান্ত হয়ে ঘরে ফিরে যাব। সরকারের এই ধারণা যে ভুল, সেটি আমাদের প্রমাণ করে দিতে হবে।’

এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে বেলা সোয়া তিনটার দিকে একটি মিছিল বের হয়। সেই মিছিলই বিভিন্ন সড়ক ঘুরে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেয়।

এদিন মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অবস্থান নেন। তবে তাঁদের সঙ্গে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের কোনো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি।

সারা দেশে বিক্ষোভ
আগের দিনগুলোর মতো এদিনও সারা দেশের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজধানীর তাঁতীবাজার মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। চট্টগ্রামে ২ নম্বর গেট সড়ক অবরোধ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রাস্তায় নামেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও।


কোটা আদালতের বিষয়: ওবায়দুল কাদের
৬ জুলাই এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কোটা সম্পর্কে বলেন, ‘এটা কোর্টের রায়ের ব্যাপার। আমরা তো কোথাও এই কোটা রাখিনি। আমাদের ব্যবস্থা ছিল কোটামুক্ত। আদালতে কারা মামলা করেছে? আদালতের রায় নিয়ে আমাদের কী বলার আছে? সরকারের কী দোষ? সরকার তো এটা করেনি।’

এ সময় বিএনপি কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করবে বলেও মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বিএনপির আন্দোলন ব্যর্থ। তাই তারা অন্যদের ইস্যুর ওপর ভর করে।

নৈতিক সমর্থন বিএনপির
৬ জুলাই এক সংবাদ সম্মেলনে কোটা সংস্কার ও সর্বজনীন পেনশন প্রত্যাহারের আন্দোলনে নিজেদের নৈতিক সমর্থন জানায় বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বিএনপির নৈতিক সমর্থন রয়েছে এবং তা অব্যাহত থাকবে। এ সময় তিনি প্রশ্ন করেন, বিএনপি কি ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন সমর্থন করতে পারে না?

সরকারের উসকানির অভিযোগে মির্জা ফখরুল বলেন, একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে দেশের ভেতরে যা হচ্ছে, সেটি নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেওয়া বিএনপির দায়িত্ব।

এদিন বিকেলে গাজীপুরে জাতীয় পার্টির এক সম্মেলনে কোটাকে সংবিধানবিরোধী বলেন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি বলেন, ‘আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করি। কিন্তু তাঁদের ছেলেপেলে, তাঁদের পরের প্রজন্ম কোটা প্রথার বিষয়ে খুব একটা নীতির মধ্যে আসে না। আমাদের দেশ সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য এটা বাধা হতে পারে।’

উল্লেখ্য, দেশব্যাপী কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের দাবিগুলো ছিল ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহাল করা; এই পরিপত্র বহাল রেখে একটি কমিশন গঠন করা, যেখানে সরকারি চাকরির সব গ্রেডে দ্রুত সময়ের মধ্যে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া হবে (সুবিধাবঞ্চিত ও প্রতিবন্ধী ব্যতীত); কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করতে না পারা এবং কোটা থেকে প্রার্থী না পাওয়া গেলে মেধাভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া।

Ad 300x250

সম্পর্কিত