বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিলেন ড. রেজা কিবরিয়া। আজ সোমবার (১ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার পর বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দেওয়ার কথা জানান।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে রেজা কিবরিয়াকে দলে স্বাগত জানান। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।
গত নভেম্বরের শুরুর দিকেই বিএনপিতে যোগ দেওয়ার কথা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া। তিনি হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসন থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করতে চান বলে জানিয়েছিলেন।
যোগ দিয়ে রেজা কিবরিয়া বলেন, ‘বিএনপিতে যোগ দিতে পেরে আমি গর্বিত। আমি আজকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগদান করেছি।’
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত গর্বিত যে, রেজা কিবরিয়া এসে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। আমি আমাদের দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তাঁকে অভিনন্দন জানাই। তাঁকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।’
আওয়ামী লীগের ১৯৯৬-২০০১ পর্যন্ত মেয়াদকালে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা শাহ এএমএস কিবরিয়া ২০০৫ সালে হবিগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে গ্রেনেড হামলায় নিহত হন। তাঁর একমাত্র পুত্র ড. রেজা কিবরিয়ার রাজনীতিতে আসাটা ছিল আকস্মিক। অক্সফোর্ডে উচ্চশিক্ষা নেওয়া রেজা কিবরিয়া ২০১৮ সালে আইএমএফের চাকরি ছেড়ে দেশে ফেরেন। ওই বছরই জাতীয় নির্বাচনের আগে আকস্মিকভাবে গণফোরামে যোগ দেন। ওই নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে জোট বেঁধে অংশ নিয়েছিল গণফোরাম; সেই জাতীয় নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের হয়ে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে হবিগঞ্জে প্রার্থীও হন তিনি।
যোগ দেওয়ার পর গণফোরামের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য করা হয়েছিল ড. রেজা কিবরিয়াকে। নির্বাচনের পর তাকে সাধারণ সম্পাদক করেন দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. কামাল হোসেন। এ নিয়ে গণফোরামে দেখা দেয় বিরোধ, চলে বহিষ্কার-পাল্টা বহিষ্কার; মোস্তফা মহসিন মন্টুসহ একাংশ ক্ষুব্ধ হয়ে দল ভাঙার উদ্যোগও নেন। এমন পরিস্থিতিতে ড. কামাল হোসেন দুই পক্ষকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার উদ্যোগ নেন।
তবে দলটিতে বেশিদিন থাকেননি রেজা কিবরিয়া। যোগদানের দেড় বছরের মাথায় পদত্যাগ করেন তিনি। পরে গণফোরাম ছেড়ে সাবেক ডাকসু ভিপি নুরের নেতৃত্বে গণঅধিকার পরিষদে যোগ দিয়ে আহ্বায়কও হন তিনি। এক পর্যায়ে নুরের সঙ্গে মতবিরোধের জেরে গণঅধিকার পরিষদ দুগ্রুপে ভাগ হয়ে যায়। একটি অংশের নেতৃত্বে এখনও নুরুল হক নুর, অন্য অংশের নেতৃত্বে ছিলেন রেজা কিবরিয়া। তবে কিছুদিন ধরেই রাজনীতিতে আবারও নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন তিনি। এবার বিএনপিতে যোগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে আবার রাজনীতির মাঠে দেখা যাবে রেজা কিবরিয়াকে।
প্রসঙ্গত, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রেজা কিবরিয়া হবিগঞ্জ-১ আসনের প্রার্থী হয়েছিলেন। আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের অধিকাংশ আসনে প্রার্থী মনোয়ন দিলেও ওই আসনটিতে এখনও কোনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি।