ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের আগের কাজে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে রাজশাহী বিভাগের ব্যবসায়ীদের এক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এ অনুরোধ জানান।
সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার ‘চেষ্টা’ চলছে, অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘জোর করে, আরেকটি দল অথবা দুটি-তিনটি দলের মতামত বাকি দলগুলোর ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আমরা একটি রাজনৈতিক দল, তারাও রাজনৈতিক দল। এখানে ঐকমত্যের বাইরে গিয়ে তাদের দাবি আমাদের ওপর চাপাতে চাইছে, জনগণের ওপর চাপাতে চাইছে। অথচ ঐকমত্য কমিশন করার উদ্দেশ্য ছিল, ঐকমত্য যতটুকু হবে সেটা নিয়ে আমরা জনগণের কাছে যাব।’
উল্লেখ্য, ‘জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫’ এর বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া সম্পর্কে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ গত ২৮ অক্টোবর সরকারের কাছে পেশ করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার কাছে পাঠানো চিঠিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা নিজেই সই করেন। বিএনপির অভিযোগ, গত ১৭ অক্টোবর জাতীয় সংসদ প্রাঙ্গণে জাতীয় জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের দিন জুলাই জাতীয় সনদের চূড়ান্ত কপি তাদের সামনে উপস্থাপন করা হয়নি। পরবর্তী সময়ে প্রিন্টেড কপি যখন হাতে পাওয়ার পর তারা বিভিন্ন পরিবর্তন পেয়েছেন তাঁরা।
এ প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা আমীর খসরু বলেন, ‘ঐকমত্য হয়েছে, সই হয়েছে, তার বাইরে গিয়ে এখন নতুন নতুন দাবি নিয়ে আসছে। তাদের দাবি মানতে হবে, না মানলে এটা হবে, সেটা হবে...। আবার তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ঐকমত্যের (কমিশন) কিছু লোকজন। তাদেরও আবার মতামত আছে। রাজনীতিবিদদের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে তারা তাদেরটা চাপাতে চাইছে। আবার ঐক্যমত্য কমিশনেরও একটা নিজস্ব মতামত আছে। ঐক্যমত্য কমিশনের মতামতের জন্য তো তাদের সেখানে রাখা হয়নি।’
নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা চলছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা আমাকে প্রতিনিয়ত বলছেন, ফেব্রুয়ারি নয়; পারলে এখনই নির্বাচন করে আমাদের একটু মুক্ত করেন। আমাদের ব্যবসা ধ্বংস হওয়ার উপক্রম। আমরা কোনো বিনিয়োগ করতে পারছি না। বিদেশিরা কোনো বিনিয়োগ করছে না। সুতরাং, এই নির্বাচনকে যারা বিলম্বিত করতে চায় তাদের স্বার্থের জন্য, এখানে ব্যবসায়ীদের সোচ্চার হতে হবে। দ্রুতই নির্বাচনের দিকে যেতে হবে।’
রাজশাহী জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই বিভাগীয় ব্যবসায়ী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। রাজশাহী বিভাগীয় ব্যবসায়ী ফোরাম এর আয়োজন করে। এতে বিএনপি চেয়ারপারসনের অন্যতম উপদেষ্টা ও সাবেক সিটি মেয়র মিজানুর রহমান মিনুসহ রাজশাহী বিভাগের আট জেলার ব্যবসায়ীরা অংশগ্রহণ করেন। সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির সাবেক সভাপতি লুৎফর রহমান।