আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে অন্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোটবাঁধা নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ‘মিডিয়া ট্রায়ালের’ শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমরা যদি কারও সঙ্গে জোট বা আলোচনা করতে চাই, সেটা জাতির সামনে খোলাসা করব, এখানে গোপন কিছু নেই। কিন্তু এক ধরনের মিডিয়া ট্রায়াল করা হচ্ছে। এর সঙ্গে বা ওর সঙ্গে আলোচনা; এসব বলে মিডিয়া ট্রায়াল করা হচ্ছে।’
রোববার (২৩ নভেম্বর) রাজধানীর শাহবাগে আবু সাঈদ কনভেনশন সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এনসিপির যে কোনো প্রক্রিয়া আমরা স্বচ্ছভাবে জনগণের কাছে নেওয়ার চেষ্টা করি। আমাদের পুরো নির্বাচনী প্রক্রিয়া খুবই স্বচ্ছতার সঙ্গে আমরা করতে চাই।’
অনেক দলের সঙ্গে এনসিপির নির্বাচন এবং অন্যান্য ইস্যু নিয়ে আলোচনা হচ্ছে বলেও জানান নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ‘মতবিরোধ থাকলেও আমরা আলোচনা করছি, এইটা গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। কিন্তু এসব আলোচনাকে মিডিয়া ফ্রেমিং করার চেষ্টা করে।’ এসময় এনসিপিকে ‘মিডিয়া ট্রায়াল’-এর শিকার না করার অনুরোধ করেন এনসিপির এই নেতা।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এনসিপির মনোনয়ন দেওয়া নিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘যারা কখনও ভাবেনি নির্বাচন করে সংসদে আসবে, আমরা তাদের নিয়েই ভাবছি। কৃষক, শ্রমিক, শিক্ষক, ইমাম; এমন নানা ধরনের পেশাজীবীদের সবাইকে সংসদে নিতে চায় এনসিপি। আজ থেকে তিন দিন সময় নিয়ে যাচাই-বাছাই হবে, তবুও আমরা স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় যাচাই-বাছাই করতে চাই। তিনশ’ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করতে চাই। যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া শেষ হলেই আমরা তালিকা প্রকাশ করব।’
নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন দলের অবস্থান প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচনের জন্য যে লেভেল প্লেইং ফিল্ড হওয়ার কথা ছিল, সেটা এখনও আমরা দেখতে পাচ্ছি না। নির্বাচন কমিশন, সরকার এবং প্রশাসনকে নির্বাচন নিয়ে যেরকম স্বচ্ছ অবস্থানে থাকার কথা সেটাও আমরা দেখছি না। বরং আমরা দেখতে পাচ্ছি, বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মীরা প্রকাশ্যে বলে বেড়াচ্ছে প্রশাসনকে কীভাবে দখল করতে হবে, কীভাবে হাতে রাখতে হবে। এদিকে যেসব দল বিগত আমলে বন্ধু ছিল, তারা একটা সাজানো নির্বাচন করার পরিকল্পনা করছে। এই ধরনের একটি নির্বাচন হলে গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমরা চাই, গণতান্ত্রিক ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক।’
সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা জানান, এখন পর্যন্ত এনসিপির ১ হাজার ৪৮৪টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে।
এর আগে ৬ নভেম্বর থেকে ফরম বিক্রি শুরু দলটি, যা শেষ হয় ২০ নভেম্বর। দলটির প্রতিটি মনোনয়নপত্রের মূল্য ধরা হয় ১০ হাজার টাকা। তবে জুলাইযোদ্ধা এবং স্বল্প আয়ের ব্যক্তিরা দুই হাজার টাকায় এই ফরম নিয়েছেন।