জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও গণঅধিকার পরিষদ একীভূত হওয়ার আলোচনা চলছে। বিষয়টি নিয়ে দুই দলের মধ্যে বেশ কয়েকবার বৈঠক হয়েছে।
স্ট্রিম প্রতিবেদক
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও গণঅধিকার পরিষদ একীভূত হওয়ার আলোচনা চলছে। বিষয়টি নিয়ে দুই দলের মধ্যে বেশ কয়েকবার বৈঠক হয়েছে। তবে নানা চ্যালেঞ্জ ও জটিলতার মুখে এখনো কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি দল দুটি। একীভূত হওয়ার বিষয়ে দুই দলের নেতারাই ভবিষ্যৎ রাজনীতির সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন। অনেকে আবার শেষ পর্যন্ত দল দুটি একীভূত হতে পারবে কিনা সে নিয়ে সন্দেহও প্রকাশ করেছেন।
এনসিপির বিভিন্ন পর্যায়ের কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা স্ট্রিমকে বলেছেন, একীভূত হলে দেশে নতুন রাজনীতি তৈরি হবে। তরুণরা নতুন বন্দোবস্ত তৈরি করতে পারবেন। তবে শেষ পর্যন্ত দুই দল একীভূত হবে কিনা, হলেও কীভাবে হবে, সেটাই এখন বড় বিষয়। এটা শুধু আলোচনা পর্যায়েই থেমে যেতে পারে। কারণ বিষয়টা বেশ জটিল।
কেন একীভূত হচ্ছে দুই দল
২০২৪ সালে কোটা আন্দোলন থেকে তৈরি হয় গণঅভ্যুত্থান। সেই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের নিয়ে গঠিত হয় এনসিপি। অন্যদিকে ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে পরিচিতি পান নুরুল হক নুর। পরবর্তীতে ২০২১ সালে ওই আন্দোলনের নেতারা মিলে গণঅধিকার পরিষদ নামে রাজনৈতিক দল গঠন করেন।
এর আগে, ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে ভিপি প্রার্থী হিসেবে নুরুল হক নুর ও জিএস প্রার্থী রাশেদ খানের প্যানেল থেকে নির্বাচন করেন নাহিদ ইসলাম ও আখতার হোসেন। ২০২১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঢাকা সফরকে কেন্দ্র করে হওয়া আন্দোলন-বিক্ষোভেও তাঁদের একসঙ্গে মাঠে দেখা যায়।
গণঅধিকার ও এনসিপি আলাদা দল হলেও ২০১৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত দুই দলের নেতাদেরই আন্দোলনের মাঠে একসঙ্গে দেখা যায়। এই তরুণদের অনেকেই আগে নুরুল হক নুরের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন। ২০২৪ সালে গণঅধিকার পরিষদ ছেড়ে অনেক নেতা এনসিপিতে যোগ দিয়েছেন।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনে উভয় দলের সমর্থিত প্যানেলের ‘ভরাডুবি’ হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে দুই দল ভেঙ্গে এক দল হওয়ার আলোচনা সামনে আসে। সে আলোচনার পালে হাওয়া লাগে গত ২৯ অগাস্ট। সেদিন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লাঠিপেটায় আহত হন।
এ বিষয়ে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন স্ট্রিমকে বলেন, ‘তরুণরা একত্রিত ছিল বলেই গণ-অভ্যুত্থান সফল হয়েছে। তরুণরা যখন বিভাজিত থাকবে তখন তারা সফল হতে পারবে না। সে জন্য আমরা একত্রিত হওয়ার একটা পন্থা খোঁজার চেষ্টা করছিলাম। সেখান থেকেই মনে হলো গণঅধিকার পরিষদ ও এনসিপি একসঙ্গে কাজ করতে পারে।’
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন স্ট্রিমকে বলেন, ‘বিষয়টা এমন না যে এনসিপির জন্য খুবই দরকার একসঙ্গে হওয়া। আমি মনে করি না, এক সঙ্গে হওয়া গণঅধিকার পরিষদেরও খুব দরকার। তবে এইটা একটা সময়ের প্রয়োজন। সময়ের প্রয়োজনে সময়ের সন্তানরা একসঙ্গে হবে, এটা একটা স্বাভাবিক চাওয়া।’
কীভাবে একীভূত হবে দুই দল
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এনিসিপি গঠন হওয়ার সময়ই দলটির সঙ্গে যুক্ত হতে চেয়েছিল গণঅধিকার পরিষদ। তখন সেটা সম্ভব হয়নি। এখন আবার একীভূত হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে নুরুল হক নুরের দল। সে প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে দলীয় ও ব্যক্তিগত বৈঠকেও বসেছেন দুই দলের কার্যনির্বাহী সদস্যরা।
এদিকে, যত আলোচনা হচ্ছে, একীভূত হওয়ার বিষয়টি যেন আরও জটিল হয়ে উঠছে। তৈরি হয়েছে নানান প্রশ্ন। দলের প্রধান কে হবেন? দলের নাম কী হবে? দুই দলের নেতারা এক দলে এলে তাঁদের পদ-পদবী এবং অবস্থান কী হবে?
গত সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, ‘দলের নাম এনসিপিই থাকবে, এনসিপির প্রতীকই থাকবে। অন্য দলের নাম-মার্কা “ডিজলভ” হবে। এনসিপির আন্ডারে আরও অনেকগুলো দল আসছে। আমরা বড় ধরনের একটা পার্টি করতে যাচ্ছি। অনেকগুলো দল, অনেকগুলো মত, অনেকগুলো ব্যানার এনসিপির ব্যানারে চলে আসবে।’
এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ও দলটির লিঁয়াজো কমিটির প্রধান আরিফুল ইসলাম আদীব স্ট্রিমকে বলেন, এনসিপি নিজের নামে প্রতিষ্ঠিত। এজ এ কালেক্টিভ লিডারশিপ এখানে একটা এস্টাবলিশড হইছে। গণঅধিকারের ক্ষেত্রে এটা নুর ভাইয়ের পার্টি হিসেবেই পরিচিত। মানে ব্যক্তি নুর ভাই যতটা রিচ করছে, পার্টি কিন্তু অতটা রিচ করে নাই।’
আদীব আরও বলেন, ‘এখন দুইটা পার্টি বিলুপ্ত করে দিয়ে আবার নতুন করে নিবন্ধন নেওয়া তো সম্ভব না। কারণ নেক্সট অনেকগুলো প্রসিডিউর আছে। ফলে যদি গ্রামারটিক্যালি যেকোনো একটা রাখতে হয়, সেটা তো এনসিপিই লজিক্যাল বেশি। মূলত এনসিপির নাম এবং কাঠামো ঠিক থাকবে। এখানে একোমোডেশনের একটা বিষয়ে প্রস্তাবনা বা আলাপ-আলোচনা হইছে।’
তবে এ প্রস্তাব মানতে নারাজ গণঅধিকার পরিষদ। দলটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন স্ট্রিমকে বলেন, ‘শর্ত দিয়ে প্রেম হয় না, শর্ত দিয়ে ভালোবাসা হয় না। সুতরাং শর্ত দিয়ে এলে এক হওয়া যায় না। তারা যদি শুরুতেই মনে করেন যে নাহিদ ইসলাম প্রধান হবেন এবং দলের নাম এনসিপি থাকবে, সেক্ষেত্রে আলোচনা বাড়ানো কঠিন হবে। আলোচনা যদি একটি ইতিবাচক জায়গায় নিয়ে যেতে হয়, তাহলে সেখানে সব ধরনের সম্ভাবনা রয়েছে, সব ধরনের আলোচনা হতে পারে। সেটিকে সামনে রেখেই বসতে হবে।’
থেমে যেতে পারে আলোচনা!
আলোচনা হলেও শেষ পর্যন্ত দুই দল একীভূত হতে পারবে কিনা, সেটা নিয়ে দ্বিধা জানিয়েছেন অনেকে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনসিপির নীতিনির্ধারক পর্যায়ের কয়েকজন নেতা স্ট্রিমকে জানিয়েছেন, বিষয়টা বেশ জটিল। দুইটা দলই বড়। সবারই জেলা, উপজেলা পর্যায়ে কমিটি আছে। ফলে এসব একসঙ্গে নিয়ে আসাটা সম্ভব হবে কিনা, সেটা নিয়ে সন্দেহ আছে।
এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব স্ট্রিমকে বলেন, ‘একোমোডেশনের একটা চ্যালেঞ্জ আছে। আওয়ামী লীগের বিদ্যমান যে এস্টাবলিশমেন্ট আছে বড় দলগুলা, সে দলগুলাও চায় না যে তরুণেরা এক হোক। কারণ এরা এক হইলেই বাংলাদেশের রাজনীতির সমীকরণ চেঞ্জ হয়ে যাবে, যেটা নিয়ে অলরেডি আলাপ-আলোচনা চলছে।’
আদীব আরও বলেন, ‘আমরা এক হলে জাতীয়তাবাদী ভার্সেস ইসলামপন্থীর বাইরে একটা নতুন মধ্যমপন্থী ডিরেকশন তৈরি হবে। ফলে এখানকার এস্টাবলিশমেন্টও আসলে চাচ্ছে না যে জিনিসটা ইজিলি হোক। এছাড়া লিডারশিপ একোমোডেশনও একটা ফ্যাক্টর।’
রাশেদ খাঁন স্ট্রিমকে বলেন, ‘আমরা সবাই যদি ছাড় দেওয়ার মানসিকতা অর্জন করতে পারি এবং একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে উদার হই, সেক্ষেত্রে এনসিপি এবং গণঅধিকার পরিষদ একীভূত হতে পারবে। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি, এনসিপির কয়েকজন নেতা ফেসবুকে বা গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন যে, আমরা নাকি এনসিপিতে যোগদান করছি। তারা যদি এটা মনে করেন এবং এটা যদি এনসিপির দলীয় বক্তব্য হয়, সেক্ষেত্রে আসলে তাদের সঙ্গে আমাদের কাজ করা খুব কঠিন হবে। তো আমি জানি না আসলে তারা কী চায়?’
রাশেদ আরও বলেন, ‘এনসিপি যদি মনে করে, আমরা বড়, তাহলে তাদের অনেক কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে, ছাড় দিতে হবে। আর যদি মনে করে, আমরা ছিলাম, থাকবো, যুগে যুগে লড়বো, আর কারোর দরকার নাই। ওকে, ভালো। আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’
এখন আর সম্ভাবনা নেই
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ মনে করেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে এ ধরনের জোট করা বা দল করা খুব স্বাভাবিক। তবে গণঅধিকার পরিষদ ও এনসিপি এই মুহূর্তে একীভূত হবে বলে তাঁর মনে হয় না।
ড. সাব্বির আহমেদ স্ট্রিমকে বলেন, ‘এই মুহূর্তে দল দুটি একীভূত হবে বলে আমার মনে হচ্ছে না এবং এটা শোনা যাচ্ছে। কারণ এনসিপি তো অলরেডি রেজিস্ট্রেশন পেয়ে যাওয়ার কথা। এখন আর সম্ভাবনা আমি দেখি না।’
এদিকে নুরুল হক নুরের ইমেজ বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে নুরের দলীয় হিসাব-নিকাশ রয়েছে বলে জানান তিনি। সাব্বির আহমেদ স্ট্রিমকে বলেন, ‘এই মুহূর্তে গণঅধিকার পরিষদ যদি এনসিপির সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়, তাহলে নূরের পজিশনটা কি হবে? নুর তো নিশ্চয়ই নাহিদের আন্ডারে কাজ করবে না। কারণ নুর তো নাহিদের চেয়ে বড়। তবে তাঁদের মধ্যে নির্বাচনী জোট হতে পারে।’
যদি দুই দল একীভূত হয়ে যায়, তাহলে আগামীর রাজনীতি কেমন হবে প্রশ্ন করলে সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘বামকে ভর করে চলা রাজনৈতিক দল খুব বেশি শক্তিশালী হবে না। সেক্যুলার পলিটিক্সের ক্ষেত্রে রাতারাতি একটা কিছু করে ফেলবে বলে আমার মনে হয় না। আগামী দিনের রাজনীতিতে তারা অনেক আসন পাবে, তাও না।’
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও গণঅধিকার পরিষদ একীভূত হওয়ার আলোচনা চলছে। বিষয়টি নিয়ে দুই দলের মধ্যে বেশ কয়েকবার বৈঠক হয়েছে। তবে নানা চ্যালেঞ্জ ও জটিলতার মুখে এখনো কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি দল দুটি। একীভূত হওয়ার বিষয়ে দুই দলের নেতারাই ভবিষ্যৎ রাজনীতির সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন। অনেকে আবার শেষ পর্যন্ত দল দুটি একীভূত হতে পারবে কিনা সে নিয়ে সন্দেহও প্রকাশ করেছেন।
এনসিপির বিভিন্ন পর্যায়ের কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা স্ট্রিমকে বলেছেন, একীভূত হলে দেশে নতুন রাজনীতি তৈরি হবে। তরুণরা নতুন বন্দোবস্ত তৈরি করতে পারবেন। তবে শেষ পর্যন্ত দুই দল একীভূত হবে কিনা, হলেও কীভাবে হবে, সেটাই এখন বড় বিষয়। এটা শুধু আলোচনা পর্যায়েই থেমে যেতে পারে। কারণ বিষয়টা বেশ জটিল।
কেন একীভূত হচ্ছে দুই দল
২০২৪ সালে কোটা আন্দোলন থেকে তৈরি হয় গণঅভ্যুত্থান। সেই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের নিয়ে গঠিত হয় এনসিপি। অন্যদিকে ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে পরিচিতি পান নুরুল হক নুর। পরবর্তীতে ২০২১ সালে ওই আন্দোলনের নেতারা মিলে গণঅধিকার পরিষদ নামে রাজনৈতিক দল গঠন করেন।
এর আগে, ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে ভিপি প্রার্থী হিসেবে নুরুল হক নুর ও জিএস প্রার্থী রাশেদ খানের প্যানেল থেকে নির্বাচন করেন নাহিদ ইসলাম ও আখতার হোসেন। ২০২১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঢাকা সফরকে কেন্দ্র করে হওয়া আন্দোলন-বিক্ষোভেও তাঁদের একসঙ্গে মাঠে দেখা যায়।
গণঅধিকার ও এনসিপি আলাদা দল হলেও ২০১৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত দুই দলের নেতাদেরই আন্দোলনের মাঠে একসঙ্গে দেখা যায়। এই তরুণদের অনেকেই আগে নুরুল হক নুরের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন। ২০২৪ সালে গণঅধিকার পরিষদ ছেড়ে অনেক নেতা এনসিপিতে যোগ দিয়েছেন।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনে উভয় দলের সমর্থিত প্যানেলের ‘ভরাডুবি’ হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে দুই দল ভেঙ্গে এক দল হওয়ার আলোচনা সামনে আসে। সে আলোচনার পালে হাওয়া লাগে গত ২৯ অগাস্ট। সেদিন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লাঠিপেটায় আহত হন।
এ বিষয়ে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন স্ট্রিমকে বলেন, ‘তরুণরা একত্রিত ছিল বলেই গণ-অভ্যুত্থান সফল হয়েছে। তরুণরা যখন বিভাজিত থাকবে তখন তারা সফল হতে পারবে না। সে জন্য আমরা একত্রিত হওয়ার একটা পন্থা খোঁজার চেষ্টা করছিলাম। সেখান থেকেই মনে হলো গণঅধিকার পরিষদ ও এনসিপি একসঙ্গে কাজ করতে পারে।’
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন স্ট্রিমকে বলেন, ‘বিষয়টা এমন না যে এনসিপির জন্য খুবই দরকার একসঙ্গে হওয়া। আমি মনে করি না, এক সঙ্গে হওয়া গণঅধিকার পরিষদেরও খুব দরকার। তবে এইটা একটা সময়ের প্রয়োজন। সময়ের প্রয়োজনে সময়ের সন্তানরা একসঙ্গে হবে, এটা একটা স্বাভাবিক চাওয়া।’
কীভাবে একীভূত হবে দুই দল
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এনিসিপি গঠন হওয়ার সময়ই দলটির সঙ্গে যুক্ত হতে চেয়েছিল গণঅধিকার পরিষদ। তখন সেটা সম্ভব হয়নি। এখন আবার একীভূত হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে নুরুল হক নুরের দল। সে প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে দলীয় ও ব্যক্তিগত বৈঠকেও বসেছেন দুই দলের কার্যনির্বাহী সদস্যরা।
এদিকে, যত আলোচনা হচ্ছে, একীভূত হওয়ার বিষয়টি যেন আরও জটিল হয়ে উঠছে। তৈরি হয়েছে নানান প্রশ্ন। দলের প্রধান কে হবেন? দলের নাম কী হবে? দুই দলের নেতারা এক দলে এলে তাঁদের পদ-পদবী এবং অবস্থান কী হবে?
গত সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, ‘দলের নাম এনসিপিই থাকবে, এনসিপির প্রতীকই থাকবে। অন্য দলের নাম-মার্কা “ডিজলভ” হবে। এনসিপির আন্ডারে আরও অনেকগুলো দল আসছে। আমরা বড় ধরনের একটা পার্টি করতে যাচ্ছি। অনেকগুলো দল, অনেকগুলো মত, অনেকগুলো ব্যানার এনসিপির ব্যানারে চলে আসবে।’
এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ও দলটির লিঁয়াজো কমিটির প্রধান আরিফুল ইসলাম আদীব স্ট্রিমকে বলেন, এনসিপি নিজের নামে প্রতিষ্ঠিত। এজ এ কালেক্টিভ লিডারশিপ এখানে একটা এস্টাবলিশড হইছে। গণঅধিকারের ক্ষেত্রে এটা নুর ভাইয়ের পার্টি হিসেবেই পরিচিত। মানে ব্যক্তি নুর ভাই যতটা রিচ করছে, পার্টি কিন্তু অতটা রিচ করে নাই।’
আদীব আরও বলেন, ‘এখন দুইটা পার্টি বিলুপ্ত করে দিয়ে আবার নতুন করে নিবন্ধন নেওয়া তো সম্ভব না। কারণ নেক্সট অনেকগুলো প্রসিডিউর আছে। ফলে যদি গ্রামারটিক্যালি যেকোনো একটা রাখতে হয়, সেটা তো এনসিপিই লজিক্যাল বেশি। মূলত এনসিপির নাম এবং কাঠামো ঠিক থাকবে। এখানে একোমোডেশনের একটা বিষয়ে প্রস্তাবনা বা আলাপ-আলোচনা হইছে।’
তবে এ প্রস্তাব মানতে নারাজ গণঅধিকার পরিষদ। দলটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন স্ট্রিমকে বলেন, ‘শর্ত দিয়ে প্রেম হয় না, শর্ত দিয়ে ভালোবাসা হয় না। সুতরাং শর্ত দিয়ে এলে এক হওয়া যায় না। তারা যদি শুরুতেই মনে করেন যে নাহিদ ইসলাম প্রধান হবেন এবং দলের নাম এনসিপি থাকবে, সেক্ষেত্রে আলোচনা বাড়ানো কঠিন হবে। আলোচনা যদি একটি ইতিবাচক জায়গায় নিয়ে যেতে হয়, তাহলে সেখানে সব ধরনের সম্ভাবনা রয়েছে, সব ধরনের আলোচনা হতে পারে। সেটিকে সামনে রেখেই বসতে হবে।’
থেমে যেতে পারে আলোচনা!
আলোচনা হলেও শেষ পর্যন্ত দুই দল একীভূত হতে পারবে কিনা, সেটা নিয়ে দ্বিধা জানিয়েছেন অনেকে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনসিপির নীতিনির্ধারক পর্যায়ের কয়েকজন নেতা স্ট্রিমকে জানিয়েছেন, বিষয়টা বেশ জটিল। দুইটা দলই বড়। সবারই জেলা, উপজেলা পর্যায়ে কমিটি আছে। ফলে এসব একসঙ্গে নিয়ে আসাটা সম্ভব হবে কিনা, সেটা নিয়ে সন্দেহ আছে।
এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব স্ট্রিমকে বলেন, ‘একোমোডেশনের একটা চ্যালেঞ্জ আছে। আওয়ামী লীগের বিদ্যমান যে এস্টাবলিশমেন্ট আছে বড় দলগুলা, সে দলগুলাও চায় না যে তরুণেরা এক হোক। কারণ এরা এক হইলেই বাংলাদেশের রাজনীতির সমীকরণ চেঞ্জ হয়ে যাবে, যেটা নিয়ে অলরেডি আলাপ-আলোচনা চলছে।’
আদীব আরও বলেন, ‘আমরা এক হলে জাতীয়তাবাদী ভার্সেস ইসলামপন্থীর বাইরে একটা নতুন মধ্যমপন্থী ডিরেকশন তৈরি হবে। ফলে এখানকার এস্টাবলিশমেন্টও আসলে চাচ্ছে না যে জিনিসটা ইজিলি হোক। এছাড়া লিডারশিপ একোমোডেশনও একটা ফ্যাক্টর।’
রাশেদ খাঁন স্ট্রিমকে বলেন, ‘আমরা সবাই যদি ছাড় দেওয়ার মানসিকতা অর্জন করতে পারি এবং একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে উদার হই, সেক্ষেত্রে এনসিপি এবং গণঅধিকার পরিষদ একীভূত হতে পারবে। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি, এনসিপির কয়েকজন নেতা ফেসবুকে বা গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন যে, আমরা নাকি এনসিপিতে যোগদান করছি। তারা যদি এটা মনে করেন এবং এটা যদি এনসিপির দলীয় বক্তব্য হয়, সেক্ষেত্রে আসলে তাদের সঙ্গে আমাদের কাজ করা খুব কঠিন হবে। তো আমি জানি না আসলে তারা কী চায়?’
রাশেদ আরও বলেন, ‘এনসিপি যদি মনে করে, আমরা বড়, তাহলে তাদের অনেক কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে, ছাড় দিতে হবে। আর যদি মনে করে, আমরা ছিলাম, থাকবো, যুগে যুগে লড়বো, আর কারোর দরকার নাই। ওকে, ভালো। আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’
এখন আর সম্ভাবনা নেই
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ মনে করেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে এ ধরনের জোট করা বা দল করা খুব স্বাভাবিক। তবে গণঅধিকার পরিষদ ও এনসিপি এই মুহূর্তে একীভূত হবে বলে তাঁর মনে হয় না।
ড. সাব্বির আহমেদ স্ট্রিমকে বলেন, ‘এই মুহূর্তে দল দুটি একীভূত হবে বলে আমার মনে হচ্ছে না এবং এটা শোনা যাচ্ছে। কারণ এনসিপি তো অলরেডি রেজিস্ট্রেশন পেয়ে যাওয়ার কথা। এখন আর সম্ভাবনা আমি দেখি না।’
এদিকে নুরুল হক নুরের ইমেজ বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে নুরের দলীয় হিসাব-নিকাশ রয়েছে বলে জানান তিনি। সাব্বির আহমেদ স্ট্রিমকে বলেন, ‘এই মুহূর্তে গণঅধিকার পরিষদ যদি এনসিপির সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়, তাহলে নূরের পজিশনটা কি হবে? নুর তো নিশ্চয়ই নাহিদের আন্ডারে কাজ করবে না। কারণ নুর তো নাহিদের চেয়ে বড়। তবে তাঁদের মধ্যে নির্বাচনী জোট হতে পারে।’
যদি দুই দল একীভূত হয়ে যায়, তাহলে আগামীর রাজনীতি কেমন হবে প্রশ্ন করলে সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘বামকে ভর করে চলা রাজনৈতিক দল খুব বেশি শক্তিশালী হবে না। সেক্যুলার পলিটিক্সের ক্ষেত্রে রাতারাতি একটা কিছু করে ফেলবে বলে আমার মনে হয় না। আগামী দিনের রাজনীতিতে তারা অনেক আসন পাবে, তাও না।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ওই প্রতিবেদনে ডাকসু নির্বাচনে কারচুপির যে চিত্র উঠে এসেছে, তা খতিয়ে দেখা জরুরি। এই ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও গৌরবময় ঐতিহ্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
২ ঘণ্টা আগেদোয়া মাহফিলে রিজভী কাজী আসাদকে ‘আদর্শবান, নির্লোভ নেতা’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘তাঁর মতো মহৎ হয়ে কাজ করলে দল ও সমাজের জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করা সম্ভব।’
২ ঘণ্টা আগেবৃহস্পতিবার একইসঙ্গে ২৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রদলের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এর সবগুলোই নোয়াখালী জেলার। এসব কমিটিকেও ৩০ দিনের মধ্যে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি নেত্রকোনা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আংশিক কমিটিও এদিন ঘোষণা করা হয়।
২ ঘণ্টা আগেগণ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (গকসু) নির্বাচনে বিজয়ী হলেও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার জেরে সদস্যপদ বাতিলের ঝুঁকিতে পড়েছেন নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক (জিএস) মো. রায়হান খান ও সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) সামিউল হাসান শোভন।
৫ ঘণ্টা আগে