মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বসেছিল এনসিপি। জুলাই সনদের আইনি কাঠামো এবং এর বাস্তবায়ন নিয়ে দাবিসমূহ উত্থাপন, দেশের চলমান বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন তারা। এ বিষয়ে স্ট্রিমের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন।
স্ট্রিম ডেস্ক
বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পরপর সাক্ষাৎ এখন একটি নতুন আলোচ্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় গতকাল এনসিপি নেতাদের সাক্ষাৎ, একই দিনে জামায়াতে ইসলামী ও একদিন আগে বিএনপি নেতাদের উপস্থিতি নতুন এক রাজনৈতিক সমীকরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে। তবে এই আলোচনাকে কেবল দলীয় সমঝোতার দৃষ্টিকোণ থেকে না দেখে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব ও সংস্কার-অভিযাত্রার অংশ হিসেবে দেখা জরুরি। আমি মনে করি, এনসিপি কোনো রাজনৈতিক সমীকরণে নয়, বরং জনগণের পক্ষে অবস্থান নিয়ে সংস্কারের ধারাকে এগিয়ে নিতে চায়।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেহেতু কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল দ্বারা পরিচালিত নয়, সেহেতু দেশের গুরুত্বপূর্ণ বা সংকটময় মুহূর্তে তারা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে একটি সমন্বিত বোঝাপড়ায় পৌঁছানোর চেষ্টা করছে। এটি তাদের নীতিরই একটি অংশ।
এই ইচ্ছার পরিপ্রেক্ষিতেই বিভিন্ন সময়ে তারা কখনো গুটি কয়েক, আবার কখনো প্রায় সব রাজনৈতিক দলকে আলোচনার জন্য ডেকেছে। আমরা এই উদ্যোগকে ইতিবাচকভাবেই দেখি। তবে এর সঙ্গে আমরা এটাও বলতে চাই যে, কোনো সংকটজনক পরিস্থিতি বা ‘ক্রিটিক্যাল মোমেন্ট’ তৈরি হওয়ার পর আলোচনার উদ্যোগ নেওয়ার চেয়ে সংকট যাতে তৈরিই না হয়, সে ধরনের কার্যকর ও সক্রিয় ভূমিকা সরকারের কাছ থেকে আমরা প্রত্যাশা করি।
মঙ্গলবার আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলাম। আমাদের আলোচনার টেবিলে বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট বিষয় ছিল। প্রথমত, আমরা জুলাই সনদের আইনি কাঠামো এবং এর বাস্তবায়ন নিয়ে আমাদের দাবিগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছি। এই সনদের প্রতিটি প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা এবং এর আলোকে প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করা অত্যন্ত জরুরি। এ বিষয়ে সরকারের পরিকল্পনা কী এবং তারা কীভাবে সমাধান করতে চান, তা আমরা জানতে চেয়েছি। প্রধান উপদেষ্টা আমাদের জানিয়েছেন যে, তারা বিষয়টি নিয়ে গুরুত্বের সঙ্গে ভাববেন।
একই সঙ্গে, আমরা দেশের চলমান বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে আমাদের পর্যবেক্ষণ ও দাবি তুলে ধরেছি। আমরা সরকারকে সাধুবাদ জানিয়েছি যে, সেনাবাহিনীর ১৫ জন কর্মকর্তাকে বিচারের আওতায় এনে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে। এটি নিঃসন্দেহে একটি নজিরবিহীন ও সাহসি পদক্ষেপ। কিন্তু বিচারের পরিধি এখানেই সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না।
আমরা দাবি করেছি, বিচারের অন্যান্য ক্ষেত্র, যেমন—আওয়ামী লীগের যেসব নেতা ও মন্ত্রী দুর্নীতির অভিযোগে এখনো কারাগারে আছেন, তাদের বিচার প্রক্রিয়ার অগ্রগতি সম্পর্কে দেশের মানুষ জানতে চায়। বিচারব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হলে সবাইকে সমানভাবে আইনের আওতায় আনতে হবে। একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমরা সরকারের ওপর এই চাপ অব্যাহত রাখার প্রয়োজন অনুভব করেছি।
আমাদের আলোচনার তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের দলীয় পরিচয়। সম্প্রতি বিএনপির পক্ষ থেকে বারবার ‘দলীয় উপদেষ্টা’ প্রসঙ্গটি তোলা হচ্ছে। আমরা মনে করি, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন গঠিত হয়েছিল, তখন সব রাজনৈতিক দলের মতামতের ভিত্তিতেই গঠিত হয়েছিল। এখন যদি কোনো উপদেষ্টার বিরুদ্ধে দলীয় স্বার্থ রক্ষার অভিযোগ ওঠে, তাহলে কেবল একজন বা দুজনকে কেন্দ্র করে বিতর্ক তৈরি করা একটি পক্ষপাতমূলক অবস্থান।
আমাদের প্রস্তাব অত্যন্ত স্পষ্ট—যদি কোনো উপদেষ্টার বিরুদ্ধে দলীয় পরিচয় বা স্বার্থের পক্ষে কাজ করার অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে তাকে অব্যাহতি দিতে হবে। এই নীতি যদি প্রয়োগ করতে হয়, তবে তা সকল অভিযুক্ত উপদেষ্টার ক্ষেত্রেই সমানভাবে প্রযোজ্য হওয়া উচিত। এরপর কোনো শূন্যপদ তৈরি হলে সেখানে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ও দলহীন ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের এই আলোচনার আবহে আমরা দেখলাম, বিএনপি তাদের ব্রিফিংয়ে আবারও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মডেলে ফিরে যাওয়ার কথা বলেছে। আমাদের কাছে এটি অত্যন্ত হতাশাজনক ও দুরভিসন্ধিমূলক একটি পদক্ষেপ বলে মনে হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মূল লক্ষ্য হলো একটি স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন এবং রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ে প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধন করা। বিএনপির এই দাবি সংস্কারের সেই মৌলিক প্রতিশ্রুতি থেকে সরকারকে আরও পিছিয়ে দেবে।
এই পুরো সংস্কার প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত সরকারকে সহযোগিতা করা, একাত্ম হয়ে কাজ করা। কিন্তু তার পরিবর্তে যদি দলগুলো কেবল নিজেদের সংকীর্ণ দলীয় আকাঙ্ক্ষা ও স্বার্থকে মুখ্য করে দেখে, তবে তা দেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে না। আমরা মনে করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে যেকোনো রাজনৈতিক দলের স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে নিরপেক্ষভাবে দেশের মঙ্গলের জন্য কাজ করতে হবে।
যেদিন আমরা যমুনায় গিয়েছিলাম, সেদিন জামায়াতে ইসলামীর নেতারাও সেখানে গিয়েছিলেন। এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমাদের এবং জামায়াত নেতাদের ছবি পাশাপাশি রেখে অনেকে এমন একটি ন্যারেটিভ বা আখ্যান তৈরি করার চেষ্টা করছেন যে, প্রধান উপদেষ্টা হয়তো এনসিপির সঙ্গে জামায়াতের কোনো ধরনের সমঝোতা করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, এটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন ধারণা।
প্রথমত, জামায়াতের সঙ্গে আমাদের বৈঠকটি সম্পূর্ণ আলাদাভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমাদের কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই দলগত শত্রুতা নেই, কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে আমরা আদর্শিক ভিন্নতাকে জলাঞ্জলি দিয়ে কোনো গোপন আঁতাত করছি।
একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা দেশের মানুষের পক্ষে বিভিন্ন ইস্যুতে আমাদের অবস্থান তুলে ধরি। সেই অবস্থান যদি কোনো নির্দিষ্ট দল বা গোষ্ঠীর স্বার্থে আঘাত করে, তা বিবেচনা করে নিজেদের নীতি পরিবর্তন করা আমাদের কাজ নয়। যারা সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থের রাজনীতি করেন, তারাই এ ধরনের গুঞ্জন ছড়িয়ে ফায়দা তোলার চেষ্টা করেন।
জামায়াতে ইসলামী একটি স্বতন্ত্র রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের মিটিং করেছে। একই দিনে আমাদের আমন্ত্রণ জানানোটা হয়তো প্রধান উপদেষ্টার দাপ্তরিক শিডিউলের একটি অংশ। আমরা এর পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে বলে মনে করি না এবং সরলভাবেই বিষয়টিকে দেখছি।
জামায়াতের সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক আলাপ-আলোচনা বা আইডিয়া আদান-প্রদানে কোনো ঘাটতি ঘটেনি, কারণ সেই ধরনের কোনো উদ্যোগই ছিল না। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকতেই পারে, কিন্তু তাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা নিন্দনীয়। আমরা সব দলের কর্মকাণ্ডের যৌক্তিক সমালোচনা করি, এবং অন্যরাও আমাদের সমালোচনা করে। এটাই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া।
পরিশেষে, আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে একটি স্বচ্ছ নির্বাচনের রোডম্যাপ, সংস্কারের একটি সুস্পষ্ট রূপরেখা এবং উপদেষ্টাদের দলীয় পরিচয় ও তাদের সুযোগ-সুবিধা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য উন্মুক্ত করার দাবি জানিয়েছি। আমরা আশা করি, সরকার এই দাবিগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে এবং দেশের স্বার্থে একটি দৃঢ় ও নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণ করবে।
বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পরপর সাক্ষাৎ এখন একটি নতুন আলোচ্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় গতকাল এনসিপি নেতাদের সাক্ষাৎ, একই দিনে জামায়াতে ইসলামী ও একদিন আগে বিএনপি নেতাদের উপস্থিতি নতুন এক রাজনৈতিক সমীকরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে। তবে এই আলোচনাকে কেবল দলীয় সমঝোতার দৃষ্টিকোণ থেকে না দেখে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব ও সংস্কার-অভিযাত্রার অংশ হিসেবে দেখা জরুরি। আমি মনে করি, এনসিপি কোনো রাজনৈতিক সমীকরণে নয়, বরং জনগণের পক্ষে অবস্থান নিয়ে সংস্কারের ধারাকে এগিয়ে নিতে চায়।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেহেতু কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল দ্বারা পরিচালিত নয়, সেহেতু দেশের গুরুত্বপূর্ণ বা সংকটময় মুহূর্তে তারা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে একটি সমন্বিত বোঝাপড়ায় পৌঁছানোর চেষ্টা করছে। এটি তাদের নীতিরই একটি অংশ।
এই ইচ্ছার পরিপ্রেক্ষিতেই বিভিন্ন সময়ে তারা কখনো গুটি কয়েক, আবার কখনো প্রায় সব রাজনৈতিক দলকে আলোচনার জন্য ডেকেছে। আমরা এই উদ্যোগকে ইতিবাচকভাবেই দেখি। তবে এর সঙ্গে আমরা এটাও বলতে চাই যে, কোনো সংকটজনক পরিস্থিতি বা ‘ক্রিটিক্যাল মোমেন্ট’ তৈরি হওয়ার পর আলোচনার উদ্যোগ নেওয়ার চেয়ে সংকট যাতে তৈরিই না হয়, সে ধরনের কার্যকর ও সক্রিয় ভূমিকা সরকারের কাছ থেকে আমরা প্রত্যাশা করি।
মঙ্গলবার আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলাম। আমাদের আলোচনার টেবিলে বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট বিষয় ছিল। প্রথমত, আমরা জুলাই সনদের আইনি কাঠামো এবং এর বাস্তবায়ন নিয়ে আমাদের দাবিগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছি। এই সনদের প্রতিটি প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা এবং এর আলোকে প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করা অত্যন্ত জরুরি। এ বিষয়ে সরকারের পরিকল্পনা কী এবং তারা কীভাবে সমাধান করতে চান, তা আমরা জানতে চেয়েছি। প্রধান উপদেষ্টা আমাদের জানিয়েছেন যে, তারা বিষয়টি নিয়ে গুরুত্বের সঙ্গে ভাববেন।
একই সঙ্গে, আমরা দেশের চলমান বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে আমাদের পর্যবেক্ষণ ও দাবি তুলে ধরেছি। আমরা সরকারকে সাধুবাদ জানিয়েছি যে, সেনাবাহিনীর ১৫ জন কর্মকর্তাকে বিচারের আওতায় এনে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে। এটি নিঃসন্দেহে একটি নজিরবিহীন ও সাহসি পদক্ষেপ। কিন্তু বিচারের পরিধি এখানেই সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না।
আমরা দাবি করেছি, বিচারের অন্যান্য ক্ষেত্র, যেমন—আওয়ামী লীগের যেসব নেতা ও মন্ত্রী দুর্নীতির অভিযোগে এখনো কারাগারে আছেন, তাদের বিচার প্রক্রিয়ার অগ্রগতি সম্পর্কে দেশের মানুষ জানতে চায়। বিচারব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হলে সবাইকে সমানভাবে আইনের আওতায় আনতে হবে। একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমরা সরকারের ওপর এই চাপ অব্যাহত রাখার প্রয়োজন অনুভব করেছি।
আমাদের আলোচনার তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের দলীয় পরিচয়। সম্প্রতি বিএনপির পক্ষ থেকে বারবার ‘দলীয় উপদেষ্টা’ প্রসঙ্গটি তোলা হচ্ছে। আমরা মনে করি, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন গঠিত হয়েছিল, তখন সব রাজনৈতিক দলের মতামতের ভিত্তিতেই গঠিত হয়েছিল। এখন যদি কোনো উপদেষ্টার বিরুদ্ধে দলীয় স্বার্থ রক্ষার অভিযোগ ওঠে, তাহলে কেবল একজন বা দুজনকে কেন্দ্র করে বিতর্ক তৈরি করা একটি পক্ষপাতমূলক অবস্থান।
আমাদের প্রস্তাব অত্যন্ত স্পষ্ট—যদি কোনো উপদেষ্টার বিরুদ্ধে দলীয় পরিচয় বা স্বার্থের পক্ষে কাজ করার অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে তাকে অব্যাহতি দিতে হবে। এই নীতি যদি প্রয়োগ করতে হয়, তবে তা সকল অভিযুক্ত উপদেষ্টার ক্ষেত্রেই সমানভাবে প্রযোজ্য হওয়া উচিত। এরপর কোনো শূন্যপদ তৈরি হলে সেখানে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ও দলহীন ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের এই আলোচনার আবহে আমরা দেখলাম, বিএনপি তাদের ব্রিফিংয়ে আবারও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মডেলে ফিরে যাওয়ার কথা বলেছে। আমাদের কাছে এটি অত্যন্ত হতাশাজনক ও দুরভিসন্ধিমূলক একটি পদক্ষেপ বলে মনে হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মূল লক্ষ্য হলো একটি স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন এবং রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ে প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধন করা। বিএনপির এই দাবি সংস্কারের সেই মৌলিক প্রতিশ্রুতি থেকে সরকারকে আরও পিছিয়ে দেবে।
এই পুরো সংস্কার প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত সরকারকে সহযোগিতা করা, একাত্ম হয়ে কাজ করা। কিন্তু তার পরিবর্তে যদি দলগুলো কেবল নিজেদের সংকীর্ণ দলীয় আকাঙ্ক্ষা ও স্বার্থকে মুখ্য করে দেখে, তবে তা দেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে না। আমরা মনে করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে যেকোনো রাজনৈতিক দলের স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে নিরপেক্ষভাবে দেশের মঙ্গলের জন্য কাজ করতে হবে।
যেদিন আমরা যমুনায় গিয়েছিলাম, সেদিন জামায়াতে ইসলামীর নেতারাও সেখানে গিয়েছিলেন। এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমাদের এবং জামায়াত নেতাদের ছবি পাশাপাশি রেখে অনেকে এমন একটি ন্যারেটিভ বা আখ্যান তৈরি করার চেষ্টা করছেন যে, প্রধান উপদেষ্টা হয়তো এনসিপির সঙ্গে জামায়াতের কোনো ধরনের সমঝোতা করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, এটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন ধারণা।
প্রথমত, জামায়াতের সঙ্গে আমাদের বৈঠকটি সম্পূর্ণ আলাদাভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমাদের কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই দলগত শত্রুতা নেই, কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে আমরা আদর্শিক ভিন্নতাকে জলাঞ্জলি দিয়ে কোনো গোপন আঁতাত করছি।
একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা দেশের মানুষের পক্ষে বিভিন্ন ইস্যুতে আমাদের অবস্থান তুলে ধরি। সেই অবস্থান যদি কোনো নির্দিষ্ট দল বা গোষ্ঠীর স্বার্থে আঘাত করে, তা বিবেচনা করে নিজেদের নীতি পরিবর্তন করা আমাদের কাজ নয়। যারা সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থের রাজনীতি করেন, তারাই এ ধরনের গুঞ্জন ছড়িয়ে ফায়দা তোলার চেষ্টা করেন।
জামায়াতে ইসলামী একটি স্বতন্ত্র রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের মিটিং করেছে। একই দিনে আমাদের আমন্ত্রণ জানানোটা হয়তো প্রধান উপদেষ্টার দাপ্তরিক শিডিউলের একটি অংশ। আমরা এর পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে বলে মনে করি না এবং সরলভাবেই বিষয়টিকে দেখছি।
জামায়াতের সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক আলাপ-আলোচনা বা আইডিয়া আদান-প্রদানে কোনো ঘাটতি ঘটেনি, কারণ সেই ধরনের কোনো উদ্যোগই ছিল না। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকতেই পারে, কিন্তু তাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা নিন্দনীয়। আমরা সব দলের কর্মকাণ্ডের যৌক্তিক সমালোচনা করি, এবং অন্যরাও আমাদের সমালোচনা করে। এটাই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া।
পরিশেষে, আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে একটি স্বচ্ছ নির্বাচনের রোডম্যাপ, সংস্কারের একটি সুস্পষ্ট রূপরেখা এবং উপদেষ্টাদের দলীয় পরিচয় ও তাদের সুযোগ-সুবিধা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য উন্মুক্ত করার দাবি জানিয়েছি। আমরা আশা করি, সরকার এই দাবিগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে এবং দেশের স্বার্থে একটি দৃঢ় ও নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণ করবে।
জুলাইয়ের ছাত্র গণঅভ্যুত্থান আকস্মিক কোনো ঘটনা ছিল না। এর নেপথ্যে অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে কাজ করেছে শিক্ষিত তরুণদের মধ্যে জমে থাকা দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ ও হতাশা, যার মূলে রয়েছে ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব ও কর্মসংস্থানের সংকট।
৭ ঘণ্টা আগেকাগজ-কলমে দেশের অর্থনীতিকে যতই ঊর্ধ্বগতির দেখানো হোক, বাজারে গিয়ে তার আলাদা চেহারাটাই দেখা যায়। বাজারে ঢুকলেই বোঝা যায়, কীভাবে টাকার দুর্বলতা নীরবে মানুষের দৈনন্দিনকে বদলে দেয়।
৯ ঘণ্টা আগেপ্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেকে ‘শান্তির দূত’ হিসেবে প্রশংসা করছেন। নেতানিয়াহু অশ্রুসিক্ত চোখে মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দিদের স্বাগত জানাচ্ছেন। হামাসের নেতারা কাতারের দোহা অফিস থেকে ঘোষণা দিচ্ছেন, ‘প্রতিরোধ জয়ী হয়েছে।’ সবাই নিজেদের বিজয়ী ভাবছে।
১৩ ঘণ্টা আগেআসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বিরাজ করছে অনিশ্চয়তার পরিবেশ। এরই মধ্যে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর একটি দাবি—তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায় দেখতে চায়। আপাতদৃষ্টিতে এটি একটি কৌশলগত রাজনৈতিক অবস্থান মনে হলেও
১ দিন আগে