leadT1ad

মধ্যপ্রাচ্যে ঝুঁকিতে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থান: আমিরাতে ভিসা কার্যত বন্ধ, সৌদি আরব নিয়েও শঙ্কা

বাংলাদেশ থেকে শ্রমিকদের প্রধান গন্তব্য মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ। স্ট্রিম গ্রাফিক

বাংলাদেশ থেকে শ্রমিকদের প্রধান গন্তব্য মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ। এর মধ্যে সৌদি আরবে ৩৫ লাখ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) আছেন ১২ লাখ বাংলাদেশি। তবে গত কয়েক বছরে এসব দেশে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থান নিয়ে তৈরি হয়েছে একাধিক ঝুঁকি। বছরখানেক ধরে কার্যত ভিসা বন্ধ রেখেছে ইউএই। কবে দেশটির শ্রমবাজার খুলে দেওয়া হবে, সেই নিশ্চয়তাও কেউ দিতে পারছেন না। আর সৌদি আরবের ভিসা নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা শঙ্কা।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, সৌদি আরবের জনসংখ্যা তিন কোটি ৪৭ লাখ আর আমিরাতের এক কোটি আট লাখের একটু বেশি। এখানে একটা জনমিতিক হিসাবও আছে। এ কারণে তারা এমন জনশক্তি নিতে চায়, যা তাদের কাজে লাগবে— বিশেষ করে চিকিৎসক, নার্স ও প্রকৌশলী। তারা এমন জনশক্তি নেবে না, যেটা তাদের জন্য বোঝা হয়ে যাবে।

বাংলাদেশিদের ভিসা না দেওয়ার বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এস. এম. মাহবুবুল আলম বলেন, এটা নতুন কোনো ইস্যু না, একবছর হয়ে গেছে। স্থায়ীভাবে ভিসা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে—এমন কিছু না। এটা অস্থায়ী—যেকোনো সময় খুলে দিতে পারে। এ নিয়ে আমাদের রাষ্ট্রদূত কাজ করছেন। এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশেও বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থান বাড়ানোর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

অবশ্য এ বিষয়ে বিস্তারিত তিনি বলেননি। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্ট্রিমকে বলেন, ‘দেশ থেকে লোকজন আমিরাতে যেতে চাচ্ছেন, ভিসার জন্য প্রবাসীদের থেকেও চাপ আছে। কিন্তু কবে এই ভিসা খুলে দেওয়া হবে, এমন কোনো আভাস পাচ্ছি না। তারা (আমিরাত) ভিসা খুলছেন না। আমাদের দিক থেকে অনুরোধ করা হলেও সাড়া মিলছে না।’

আরব আমিরাতের ভিসা নিয়ে যা বলছেন কর্মকর্তারা

জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্যানুযায়ী, গত বছর আরব আমিরাতে যান ৪৭ হাজার ১৬৬ বাংলাদেশি। এর আগের বছর ২০২৩ সালে ৯৮ হাজার ৪২২ জন এবং ২০২২ সালে এক লাখ ১১ হাজার ৭৭৫ জন দেশটিতে যান। তবে চলতি বছর মে পর্যন্ত প্রথম পাঁচ মাসে গেছেন মাত্র দুই হাজার ৯৯৩ জন।

জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্যানুযায়ী, গত বছর আরব আমিরাতে যান ৪৭ হাজার ১৬৬ বাংলাদেশি। এর আগের বছর ২০২৩ সালে ৯৮ হাজার ৪২২ জন এবং ২০২২ সালে এক লাখ ১১ হাজার ৭৭৫ জন দেশটিতে যান। তবে চলতি বছর মে পর্যন্ত প্রথম পাঁচ মাসে গেছেন মাত্র দুই হাজার ৯৯৩ জন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা বলেন, গত এক বছর ধরেই সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশিদের ভিসা বন্ধ রয়েছে। দেশ থেকে লোকজন আমিরাতে যেতে চাচ্ছেন; ভিসার জন্য প্রবাসীদের থেকে চাপও আছে। কিন্তু কবে এই ভিসা চালু হবে, এমন কোনো আভাস পাচ্ছি না।

তিনি আরও বলেন, ‘আমিরাতে এই ভিসা বন্ধের পেছনে ইউরোপীয় ইউনিয়নেরও একটা অলিখিত চাপ আছে। কারণ, বহু বাংলাদেশি দুবাই হয়ে অবৈধভাবে ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এটা তাদের জন্য একটা চাপ তৈরি করছে।’

এই অভিযোগের বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায় ২০২৩ সালে বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) থেকে। সংস্থাটি ওই সময় জানিয়েছিল, ২০২১ ও ২০২২ সালে অন্তত দুই লাখ বাংলাদেশি ভ্রমণ ভিসায় দুবাই যান। যাদের নতুন একটি রুটে আফগানিস্তান, ইরান, লিবিয়া ও ইরাকি নাগরিকদের সঙ্গে মিলিয়ে ইউরোপে পাচারের চেষ্টা করেছিল দালাল চক্র।

এ নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা বলেন, আমিরাতের কর্মকর্তাদের যখন ভিসা খুলে দেওয়ার অনুরোধ করছি, তখন তারা অভিযোগ করেছেন যে আমাদের শ্রমিকরা প্রচুর ভুয়া নথি দিচ্ছেন। এ ছাড়া সে দেশের জেলখানায়ও প্রচুর বাংলাদেশি। সবকিছু মিলিয়ে গত বছরের অক্টোবর থেকেই তারা আমাদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করেছে। আমিরাতের শীর্ষ পর্যায় থেকেই এই নির্দেশনা আছে।

ভিসা পুরোপুরি বন্ধের বিষয়টি অস্বীকার করেছে আবুধাবিতে বাংলাদেশ দূতাবাস। ‘ইউএই ভিসা অনলাইন ডটকম’ নামে একটি ওয়েবসাইটে বাংলাদেশিদের জন্য আমিরাত ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বলে সংবাদ প্রচার করলে দূতাবাস জানায়, ‘ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের যে খবর প্রচার হয়েছে, তা সঠিক নয়। আমিরাত কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে যে এই ধরনের কোনো ঘোষণা আমিরাতের কোনো কর্তৃপক্ষ দেয়নি।’

তাঁর ভাষ্য, বাংলাদেশিদের জন্য আমিরাতের ভিসা বন্ধ মানে একেবারেই বন্ধ। সাধারণ ভিসা তো দিচ্ছে না, অনেক সময় লাল পাসপোর্টের কেউ ভিসা নিতে চাইলেও ওই দেশ থেকে যারা আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, নিজ দেশের মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে তাদেরকে ভিসা বের করে আনতে হয়।

অবশ্য ভিসা পুরোপুরি বন্ধের বিষয়টি অস্বীকার করেছে আবুধাবিতে বাংলাদেশ দূতাবাস। ‘ইউএই ভিসা অনলাইন ডটকম’ নামে একটি ওয়েবসাইটে বাংলাদেশিদের জন্য আমিরাত ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বলে সংবাদ প্রচার করলে দূতাবাস জানায়, ‘ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের যে খবর প্রচার হয়েছে, তা সঠিক নয়। আমিরাত কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে যে এই ধরনের কোনো ঘোষণা আমিরাতের কোনো কর্তৃপক্ষ দেয়নি।’

এ নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা অবশ্য বলছেন, আনুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া না হলেও বাংলাদেশিদের ভিসা দিচ্ছে না আমিরাত। গত বছরের অক্টোবর থেকেই তারা এটা বন্ধ রেখেছে।

সৌদি আরবের ভিসা চালু থাকা নিয়েও ভয়

এখন পর্যন্ত সৌদি আরবে ভিসার হার ঠিক রয়েছে। বিএমইটি তথ্য বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত সৌদি আরব গেছেন তিন লাখ চার জন। এর আগের বছর ছয় লাখ ২৮ হাজার ৫৬৪ জন, ২০২৩ সালে চার লাখ ৯৭ হাজার ৬৭৪ জন এবং ২০২২ সালে ছয় লাখ ১২ হাজার ৪১৮ জন দেশটিতে যান।

তবে এই ভিসাও বন্ধ বা সীমিত হতে পারে বলে আশঙ্কার করা জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তিনি স্ট্রিমকে বলেন, ‘সৌদির ভিসা টিমটিম করে জ্বলছে। যেকোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে। পুলিশের বিশেষ শাখা এসবি থেকে যে রিপোর্ট পেয়েছি, তাতে দেখা গেছে গত বছর অন্তত সাড়ে তিন হাজার লোক ওমরাহ করতে গিয়ে আর ফিরে আসেননি। ওমরাহ করতে গিয়ে ভিক্ষা করা কিংবা ট্যাক্সি চালানোর লোক আমাদের কম না। ওমরাহ করতে ৯০ দিনের ভিসা নিয়ে যায়, ওখানে গিয়ে তারা ট্যাক্সি চালান। চুরির বদনাম তো রয়েছেই।’

এখন পর্যন্ত সৌদি আরবে ভিসার হার ঠিক রয়েছে। বিএমইটি তথ্য বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত সৌদি আরব গেছেন তিন লাখ চার জন। এর আগের বছর ছয় লাখ ২৮ হাজার ৫৬৪ জন, ২০২৩ সালে চার লাখ ৯৭ হাজার ৬৭৪ জন এবং ২০২২ সালে ছয় লাখ ১২ হাজার ৪১৮ জন দেশটিতে যান।

অন্যান্য আরব দেশে ভিসার হার নগণ্য

বিএমইটি তথ্যানুযায়ী, চলতি বছর মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশের মধ্যে কুয়েতে ১১ হাজার ১১ জন, কাতারে ৪০ হাজার ৩০৮ জন, লেবাননে দুই হাজার ১৮১ জন, জর্ডানে চার হাজার ৯২৬ ও ওমানে ৪৩ বাংলাদেশি গেছেন।

এর আগের বছর এই সংখ্যা ছিল কুয়েতে ৩৩ হাজার ৩১ জন, কাতারে ৭৪ হাজার ৪২২ জন, লেবাননে চার হাজার ২২৫ জন, জর্ডানে ১৫ হাজার ৪১৩ ও ওমানে ৩৫৮ জন। ২০২৩ সালে এটি ছিল কুয়েতে ৩৬ হাজার ৫৪৮ জন, কাতারে ৫৬ হাজার ১৪৮ জন, লেবাননে দুই হাজার ৫৯৪, জর্ডানে আট হাজার ৬২৬ জন ও ওমানে এক লাখ ২৭ হাজার ৮৮৩ জন। আর ২০২২ সালে কুয়েতে ২০ হাজার ৪২২, কাতারে ২৪ হাজার ৪৪৭ জন, লেবাননে ৮৫৮ জন, জর্ডানে ১২ হাজার ২৩১ জন ও ওমানে এক লাখ ৭৯ হাজার ৬১২ জন ভিসা পান।

বিএমইটির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশের শ্রমবাজার বাংলাদেশিদের জন্য উঠানামা করেছে। আবার কয়েকটি দেশে একেবারে ধস নেমেছে, বিশেষ করে সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কুয়েত, লেবানন ও জর্ডানে।

মধ্যপ্রাচ্যের আরেক দেশ ইরাকে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) থাকায় সেখানে বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা সহজ করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা।

জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য বলছে, ইরাকে চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে ২০৪ জন গেছেন। তার আগের বছর ৬৮ জন, ২০২৩ সালে ৯২ জন, ২০২২ সালে ৬৪ জন ও ২০২১ সালে গেছেন পাঁচজন।

শরণার্থী ও অভিবাসী আন্দোলন গবেষণা ইউনিটের (আরএমএমআরইউ) এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালে বাংলাদেশি নাগরিকরা পর্যটন ও ভিজিট ভিসায় ওমানে যেতে পারতেন এবং সেখানেই অবস্থান করে তাদের ভিসার ধরন পরিবর্তন করে কর্মভিসা নিতে পারতেন। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শ্রমবাজারের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার পদক্ষেপ হিসেবে রয়্যাল ওমান পুলিশ এই ভিসা স্ট্যাটাস পরিবর্তন ব্যবস্থা স্থগিত করে।

এ ছাড়া বাহরাইনের শ্রমবাজারে ২০১৭ সালের পর বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থান নেই বললেই চলে। ওই বছরে দেশটিতে ১৯ হাজার ৩১৮ শ্রমিক যান। পরের বছর ৮১১ জন, ২০১৯ সালে ১৩৩, ২০২০ সালে তিন, ২০২১ সালে ১১, ২০২২ সালে ১০ ও ২০২৩ সালে মাত্র একজন শ্রমিক দেশটিতে যান। এরপর থেকে দেশটিতে আর কোনো শ্রমিক যেতে পারেননি।

বাহরাইনের ভিসা বন্ধের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই কর্মকর্তা বলেন, ২০১৭ সালে বাহরাইনের এক নাগরিককে হত্যা করেন এক বাংলাদেশি। এরপর থেকে তারা আর ভিসা দিচ্ছে না।

এদিকে, শরণার্থী ও অভিবাসী আন্দোলন গবেষণা ইউনিটের (আরএমএমআরইউ) এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালে বাংলাদেশি নাগরিকরা পর্যটন ও ভিজিট ভিসায় ওমানে যেতে পারতেন এবং সেখানেই অবস্থান করে তাদের ভিসার ধরন পরিবর্তন করে কর্মভিসা নিতে পারতেন। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শ্রমবাজারের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার পদক্ষেপ হিসেবে রয়্যাল ওমান পুলিশ এই ভিসা স্ট্যাটাস পরিবর্তন ব্যবস্থা স্থগিত করে।

সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির বলেন, ‘একটা কথা হচ্ছে যে আমরা নিজেদের দেশের নিয়মকানুন যেমন মানবো, অন্য যেই দেশে যাব সেখানকার নিয়মকানুনও আমাদের মানতে হবে। নিয়ম না মানার সংস্কৃতি ধারণ করে যদি আমরা ওখানে থাকার চেষ্টা করি, তখন সেটা অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে। এমন প্রবণতা চলতে থাকলে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো ব্যবস্থা নিতে পারে।’

লোকজন তো যাচ্ছে, তাহলে আমরা কেন বলি ভিসা বন্ধ হচ্ছে— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ধরুন, ডিসেম্বরে ভিসা পেয়েছে, জানুয়ারিতে গেছে। এমন তো হচ্ছে। আবার মাঝে মাঝে দু-এক মাস চালু হয়, আবার বন্ধ হয়ে যায়। দুবাইয়ে ভিসা বন্ধ হলেও গ্রুপ বা অ্যাটেস্টেড ভিসা আনা যায়। ওই দেশের কোম্পানি দিয়ে দেশটির দূতাবাসের মাধ্যমে অ্যাটেস্টেড করে ভিসা আনা যায়।’

বিএমইটির ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘সৌদি আরবেও গ্রুপ ভিসা অ্যাটেস্টেড হয়ে আসছে। সেখানে এভাবেই ভিসা হয়। ব্যক্তিরা যে যার মতো করে নিয়ে আসেন। ধরুন, আমি একটা কোম্পানিতে চাকরি করি, সেখানে লোক লাগবে। ওই ভিসাটা দেশে পাঠিয়ে দেবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির বলেন, ‘একটা কথা হচ্ছে যে আমরা নিজেদের দেশের নিয়মকানুন যেমন মানবো, অন্য যেই দেশে যাব সেখানকার নিয়মকানুনও আমাদের মানতে হবে। নিয়ম না মানার সংস্কৃতি ধারণ করে যদি আমরা ওখানে থাকার চেষ্টা করি, তখন সেটা অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে। এমন প্রবণতা চলতে থাকলে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো ব্যবস্থা নিতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যে দেশে যাব, সেই দেশের নিয়মের বিরুদ্ধে কিছু করলে দায় কিছুটা আমাদের ওপরও আসবে। কাজেই দেশের ভেতরে যা-ই করি না কেন, বাইরে গিয়ে নিয়ম-কানুনের বিষয়ে সতর্ক হতে হবে। কারণ, এতে ব্যক্তিগত ক্ষতির পাশাপাশি সামগ্রিকভাবে দেশের ভাবমর্যাদা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়। ভবিষ্যতে যারা দেশের বাইরে যাওয়ার সুযোগ কাজে লাগাতে পারত, তাদের সম্ভাবনাও নষ্ট হয়ে যায়।’

যা বলছেন সংশ্লিষ্টরা

জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) মহাপরিচালক (ডিজি) সালেহ আহমদ মোজাফফর স্ট্রিমকে বলেন, ‘আমিরাত ভিসা দেয় না। তবে, দেশটিতে আমাদের জনশক্তি যাচ্ছে না, এমনটি না। তারা কেবল একটি কোম্পানিকে অনুমতি দিয়েছে, সেটাও আমিরাতেরই। সৌদি আরবে নিয়মিতই যাচ্ছে। অন্য দেশগুলোর তুলনায় মধ্যপ্রাচ্যেই আমাদের জনশক্তি বেশি যাচ্ছে।’

তবে বিএমইটিরই এক কর্মকর্তা স্ট্রিমকে বলেন, ‘সৌদি আরবের ভিসাটা কোনো রকমের টিকে আছে। এজন্য কিছু টাকা-পয়সা দিতে হয়। সৌদিরটা বন্ধ হয়ে গেলে একেবারে সব বন্ধ হয়ে যাবে। আর কুয়েতে যেটা হচ্ছে, সরাসরি কোম্পানি থেকে কাজ নিয়ে আসে। এগুলো গ্রুপ ভিসা, অ্যাটেস্টেড ভিসা—এগুলোতে কোনো ঝামেলা নেই। তবে, কাতার ও দুবাইয়ে বন্ধ।’

Ad 300x250

সম্পর্কিত