leadT1ad

‘ওরা হৃদয়ের মরদেহ গুম করার চেষ্টা করেছিল’, অভিযোগ স্বজনদের

ঘটনার সুরতহাল প্রতিবেদন অনুযায়ী, হৃদয়ের কপাল ও নাকের পাশে জখম রয়েছে। এ ছাড়াও ঘাড়, পিঠ ও শরীরের বিভিন্ন অংশে কালচে জখম ছিল বলে উল্লেখ রয়েছে ওই প্রতিবেদনে।

প্রকাশ : ৩০ জুন ২০২৫, ২১: ৪৪
ছবি: স্ট্রিম গ্রাফিক

গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে মেকানিক্যাল মিস্ত্রি মো. হৃদয় (১৯) হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার ওই ব্যক্তি গ্রিনল্যান্ড লিমিটেড ফ্যাক্টরি থেকে হৃদয়ের মরদেহ নিয়ে শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উদ্দেশ্যে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন কোনাবাড়ী থানার ওসি মো. সালাহউদ্দিন। তিনি আরও জানান, ঘটনার ভিডিও ফুটেজ যাচাই করে সম্পৃক্ত আরও কয়েকজনের নাম ও ঠিকানা যাচাই করা গেছে। তাঁদেরকে গ্রেপ্তারের প্রস্তুতি চলছে।

গত শুক্রবার (২৭ জুন) মধ্যরাতে গাজীপুরের কোনাবাড়ীর গ্রিনল্যান্ড লিমিটেড ফ্যাক্টরিতে মো. হৃদয় নামের এক তরুণকে ‘চোর সন্দেহে’ পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে। তাঁকে নির্যাতনের সময় ধারণ করা ভিডিও এবং ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। ঘটনাটি বিশ্লেষণ করতে গিয়ে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলার এজাহার, সুরতহাল প্রতিবেদন, লাশ হস্তান্তরের কপি এবং ধারণ করা ভিডিও ফুটেজ স্ট্রিমের কাছে আসে।

মামলার এজাহার অনুযায়ী, রাত ৮টার দিকে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে কাজের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে রওনা হন হৃদয়। কিন্তু ডিউটি শেষ করে আর বাসায় ফেরেননি তিনি। পরদিন শনিবার (২৮ জুন) হৃদয়ের মা ও বড় ভাই মো. লিটন মিয়া (৩৬) তাঁর খোঁজ নেওয়ার জন্য গ্রিনল্যান্ড ফ্যাক্টরিতে গেলে জানতে পারেন, হৃদয়ের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সেখানকার শ্রমিকেরা টাঙ্গাইল-গাজীপুর মহাসড়কে আন্দোলন করছে। এরপর ফ্যাক্টরির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তাঁরা হৃদয়ের মরদেহের সন্ধানে শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। সেখানে গিয়ে হাসপাতালের পাশে থামানো একটি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে হৃদয়ের মরদেহ শনাক্ত করে তাঁর পরিবার।

এ বিষয়ে মো. লিটন বলেন, ‘আমি ও আমার মা গাজীপুর সদর হাসপাতালে (শহীদ তাজউদ্দিন হাসপাতাল) গেলে দেখি সেখানে আমার ভাইয়ের মরদেহ নেই। এরপর এক ব্যক্তি এসে জানায়, আমার ভাইয়ের মরদেহ হাসপাতালের পাশে একটি অ্যাম্বুলেন্সে ফেলে রাখা হয়েছে। এ কথা শোনার পর আমার বোনের স্বামী গিয়ে হৃদয়ের লাশ শনাক্ত করে।’

কিন্তু মরদেহ শনাক্ত করতে পারলেও ময়নাতদন্তের কারণে মরদেহ বুঝে পেতে আরও দুই দিন লেগে যায় ভুক্তভোগীর স্বজনদের। গত রোববার (২৯ জুন) সন্ধ্যা ৬টার দিকে হৃদয়ের মরদেহ তাঁদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

হৃদয় হত্যাকাণ্ডের সুরতহাল প্রতিবেদন। সংগৃহীত ছবি
হৃদয় হত্যাকাণ্ডের সুরতহাল প্রতিবেদন। সংগৃহীত ছবি

মৃত হৃদয়ের দুলাভাই বাবর অভিযোগ করে বলেন, ‘ওরা হৃদয়ের মরদেহ গুম করে ফেলার চেষ্টা করেছিল। তাঁরা হৃদয়ের মরদেহ মেডিকেলের এক কোনায় অ্যাম্বুলেন্সে করে ফেলে রেখেছিল।’

ঘটনার সুরতহাল প্রতিবেদন অনুযায়ী, হৃদয়ের কপাল ও নাকের পাশে জখম রয়েছে। এ ছাড়াও ঘাড়, পিঠ ও শরীরের বিভিন্ন অংশে কালচে জখম ছিল বলে উল্লেখ রয়েছে ওই প্রতিবেদনে।

মামলার অগ্রগতির বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. হেলাল উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এখন পর্যন্ত প্রাথমিক তদন্তে হৃদয়ের চুরির অভিযোগের আলামত খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এই হত্যার বিষয়ে গ্রিনল্যান্ড লিমিটেড ফ্যাক্টরির সহকারি ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এজিএম) কামরুল ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

Ad 300x250

সম্পর্কিত