leadT1ad

‘রাজনৈতিক সংশ্লিষ্ট কাউকে মাঠ পর্যায়ে নিয়োগ দেবেন না’, দেশীয় পর্যবেক্ষণ সংস্থাকে সিইসি

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

প্রকাশ : ২৫ নভেম্বর ২০২৫, ১২: ৪৯
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উপলক্ষে নিয়োগ পাওয়া ৮১টি দেশীয় পর্যবেক্ষণ সংস্থার সংলাপের প্রথম সেশনে বক্তব্য রাখেন সিইসি। সংগৃহীত ছবি

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে নিয়োগকৃত দেশীয় পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলোকে নির্বাচন কমিশনের সহযোগী সুপারভাইজার সংস্থা হিসেবে পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলোকে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে মাঠ পর্যায়ে নিয়োগ দিতে নিষেধ করেছেন।

রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘কোনো দলকে সমর্থন করাই রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নয়। রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা বলতে দলের পদধারী হওয়া, মিটিং-মিছিলে যাওয়া বা কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হওয়াকে বোঝাচ্ছে।’

আজ মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উপলক্ষে নিয়োগ পাওয়া ৮১টি দেশীয় পর্যবেক্ষণ সংস্থার সংলাপের প্রথম সেশনে উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘যদিও নির্বাচনের প্রতিটি পর্যায়ে আমাদের নজরদারির জন্য লজিস্টিক ব্যবস্থাপনা রয়েছে, আপনারা এবং সাংবাদিকেরা আমাদের সিসিটিভি হিসেবে সহায়তা করবেন। আশা করি, আপনারা মাঠ পর্যায়ে সুষ্ঠু ও সঠিক প্রতিবেদন দাখিল করবেন। এই প্রতিবেদন শুধু নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করবে না, বরং ভবিষ্যৎ নির্বাচন ব্যবস্থাপনা উন্নতিতেও সহায়তা করবে করবে।’

সঠিক প্রতিবেদন দিতে সঠিক ব্যক্তিদের মাঠ পর্যায়ের নিয়োগ দেওয়ার তাগিদ দিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘মনে রাখতে হবে যেন কোনো ব্যক্তি যার রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা আছে, তিনি কোনোভাবেই নিয়োগ না পান।’

নির্বাচন কমিশন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) আবুল ফজল মোহাম্মদ সানাউল্লাহ যিনি দেশীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থা নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রধান দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি তার বক্তব্যের জানান, এবার নিয়োগ পেতে ৩০০ শতাধিক দেশীয় পর্যবেক্ষণ সংস্থা আবেদন করেছিল। এর মধ্যে ৮১টি সংস্থা নিয়োগ পেয়েছে। এই নিয়োগের মেয়াদ হবে পাঁচ বছর, যেখানে একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং চারটি স্থানীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলোকে তিনটি প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। নির্বাচনের এক সপ্তাহের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিবেদন, নির্বাচনের এক মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন এবং নির্বাচনের দুই বছরের মধ্যে তাদের দ্বিবার্ষিক প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।’

প্রতিবছর ১ থেকে ২ লাখেরও বেশি মাঠ পর্যায়ে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে বলে জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, ‘আমরা চাইনি এই পর্যবেক্ষক সংখ্যায় এবার কম হোক। তাই নানা যোগ্যতা নিরিখে আপনাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মাঠ পর্যায়ে প্রতিবেদন থেকে কিন্তু এমন তথ্যও পেয়েছিলাম যে আপনাদের রাজনৈতিক সমর্থন অথবা কারও কারও আত্মীয় রাজনৈতিক দলে আছেন। কিন্তু সেগুলোকে আমরা আমলে নেইনি। শুধু দেখেছি আপনাদের কেউ রাজনৈতিক কোনো দলে পদবিধারী আছেন কিনা। পেশাগত ক্ষেত্রে নিরপেক্ষভাবে কাজ করাটাই কাম্য।’

এ বছর পর্যবেক্ষকদের বয়স ২১ এ নামিয়ে আনা হয়েছে এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়েছে ন্যূনতম এইচএসসি পাস। সংস্থাগুলোর শীর্ষদের এ তথ্য জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘তাঁদের অভিজ্ঞতা কম বা নেই বললেই চলে। অতএব তাঁদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা এবং যথাযথভাবে তাঁর আচরণবিধি এবং আইনগুলো সম্পর্কে যেন জানতে পারে, সেই ব্যবস্থা আপনাদের করতে হবে। এমনকি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে যেন যথাযথ লজিস্টিক পায়, সেই ব্যবস্থাও আপনাদের নিশ্চিত করতে হবে।’

‘মনে রাখতে হবে, আপনাদের কাজ শুধু বর্তমান নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে সহায়তা করা নয়। বরং আপনাদের প্রতিবেদন ভবিষ্যৎ নির্বাচন ব্যবস্থাকে উন্নততর করতেও পাথেয় হবে’, মন্তব্য করেন সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন।

কোনো অবস্থাতেই একটি দেশীয় সংস্থা বিদেশি কোনো নাগরিককে পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতে পারবেন না। তাঁদের জন্য আলাদা নীতিমালা আছেও উল্লেখ করেন সিইসি।

Ad 300x250
সর্বাধিক পঠিত

সম্পর্কিত