leadT1ad

৫০ হাজার টন গ্যাসোলিন, গবেষণা জাহাজ ও স্পিড বোট কিনবে সরকার

স্ট্রিম ডেস্ক
প্রকাশ : ০৬ আগস্ট ২০২৫, ২০: ৩৯
আপডেট : ০৬ আগস্ট ২০২৫, ২০: ৪৩
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার

দেশের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা মেটাতে প্রায় ৫০ হাজার টন গ্যাসোলিন এবং সমুদ্র গবেষণা জোরদারে একটি ছোট গবেষণা জাহাজ, একটি পন্টুন জেটি ও গ্যাংওয়ে এবং দুটি স্পিডবোট ক্রয়ের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

আজ বুধবার (৬ আগস্ট) বাংলাদেশ সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত চলতি বছরের অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির ২৪তম সভায় এই অনুমোদন দেওয়া হয়।

সভায় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের প্রস্তাবের ভিত্তিতে ২০২৫ সালের ক্যালেন্ডার বছরে অতিরিক্ত ৫০ হাজার টন গ্যাসোলিন ৯৫ আনলেডেড (অকটেন) আমদানির প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন করা হয়।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের একটি প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সভায় ‘কনভারসন অব ওয়েট প্রসেস টু ড্রাই প্রসেস অব সিসিসিএল’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ভারতীয় অংশে রোপওয়ে নির্মাণকাজের জন্য আন্তর্জাতিক ডিরেক্ট প্রোকিউরমেন্ট পদ্ধতিতে (ডিপিএম) একটি প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রস্তাব সভায় নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়, যার আওতায় ‘বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্স ইনস্টিটিউট (পর্ব-২) (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্পের জিডি-১ প্যাকেজের আওতায় খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড থেকে একটি ছোট গবেষণা জাহাজ (এতে নমুনা সংগ্রহ ও প্রাসঙ্গিক গবেষণার সরঞ্জামসহ থাকবে) এবং দুটি স্পিডবোট ডিপিএম পদ্ধতিতে ক্রয় করা হবে।

একই প্রকল্পের জিডি-৫ প্যাকেজের আওতায় গবেষণা জাহাজটির নিরাপদ নোঙর নিশ্চিত করতে একটি পন্টুন, জেটি ও গ্যাংওয়ে খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড থেকে ক্রয়ের জন্যও সভায় নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।

এ ছাড়াও সভায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটি প্রস্তাবের নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়, যার আওতায় ২০০৮ সালের সরকারি ক্রয় বিধিমালার ৮৩(১)(ক) ধারা অনুসরণ করে জরুরি রাষ্ট্রীয় প্রয়োজন মেটাতে আন্তর্জাতিক দরপত্র পদ্ধতিতে ৪ লাখ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের ক্ষেত্রে সময়সীমা হ্রাস করা হবে।

দেশের অর্থনীতি ধ্বংসপ্রায় অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে: অর্থ উপদেষ্টা

বাংলাদেশ সচিবালয়ে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির পৃথক দুটি সভায় সভাপতিত্ব করার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত এক বছরে দেশের অর্থনীতি ধ্বংসপ্রায় অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এই বিষয়টি বোঝার জন্য শুধু বাইরের চোখ নয়, বরং বুঝতে হলে অন্তর্দৃষ্টিও প্রয়োজন। উপরিভাগ দেখে মন্তব্য করা যথেষ্ট নয়, এই কয়েক মাসে অনেক কিছু ঘটেছে।’

গত বছরের গণঅভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার আগে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত সংকটাপন্ন ছিল মন্তব্য করে উপদেষ্টা বলেন, ‘সেই পরিস্থিতি থেকে এখন অনেকটাই স্থিতিশীল পর্যায়ে এসেছে।’

তবে তিনি স্বীকার করেন, ভবিষ্যতে কিছু চ্যালেঞ্জ থাকবে, বিশেষ করে মূল্যস্ফীতি আরও কমিয়ে আনা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও জ্বালানি খাতে উন্নয়ন।

তিনি আরও বলেন, ব্যবসায়ীদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ গত সময়গুলোতে এই খাতটি ছিল স্থবির।

মূল্যস্ফীতি বিষয়ে তিনি বলেন, এটি এখন কিছুটা স্বস্তিদায়ক পর্যায়ে নেমেছে। এটি এমন কোনও বিষয় নয় যে গাড়ির ব্রেক টেনে সঙ্গে সঙ্গে কমিয়ে ফেলা যাবে। সময় লাগবে। খাদ্যপণ্যে কিছুটা স্বস্তি এলেও নন-ফুড মূল্যস্ফীতি এখনও একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শুল্ক হারে সফল আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শুল্কহার ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশে আনা হয়েছে। অন্য দেশের তুলনায় এটি খারাপ নয়, বরং বাংলাদেশের অবস্থান মোটামুটি ভালো।

তিনি আরও বলেন, দেশের নিটওয়্যার কারখানাগুলো এই নতুন পরিস্থিতির সাথে দ্রুত খাপ খাইয়ে নিতে পারবে। কিন্তু ওভেন কারখানাগুলো কিছুটা সমস্যায় পড়বে। কারণ তাদের ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ নেই।

তিনি বলেন, শুল্ক চুক্তিটি এখনও স্বাক্ষর হয়নি। তাই কোন কোন খাতে শুল্ক কমাতে হবে, সেটি বিশ্লেষণ করে দেখা হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের বহুল আলোচিত সংস্কার কার্যক্রম প্রসঙ্গে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, সরকার ইতোমধ্যে স্বল্পমেয়াদি কিছু আর্থিক সংস্কার গ্রহণ করেছে। তবে মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সংস্কারে সময় লাগবে।

তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাতের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছে, যার বাস্তবায়নেও সময় প্রয়োজন। পুঁজিবাজারেও কিছু সংস্কার হচ্ছে, যার ফলে হয়তো কিছু অগ্রগতি দেখা যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) অধ্যাদেশে পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে এনবিআরকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়-রাজস্ব নীতি বিভাগ ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ।

তিনি বলেন, ‘আমার লক্ষ্য, ডিসেম্বরের মধ্যে আমি অবশ্যই কিছু একটা করব।’

অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, সরকার এমন সব প্রকল্প গ্রহণ করছে যা বাস্তবায়নযোগ্য এবং দেশের প্রয়োজনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

বিষয়:

সরকার
Ad 300x250

সম্পর্কিত