leadT1ad

লক্ষ্মীপুরে বৃষ্টি-জোয়ারে সড়ক বিচ্ছিন্ন, দুর্ভোগে ২০ হাজার বাসিন্দা

গ্রাম্য চিকিৎসক রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘একজন ব্যক্তি খুবই অসুস্থ, তিনি আমার ফার্মেসিতে যাবেন, কিন্তু যেতে পারেননি। এখন আমাকেই আসতে হয়েছে।’

স্ট্রিম সংবাদদাতালক্ষ্মীপুর
প্রকাশ : ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৬: ৩৯
লক্ষ্মীপুরে বৃষ্টি-জোয়ারে সড়ক বিচ্ছিন্ন। স্ট্রিম ছবি

লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার বলিরপোল-নাছিরগঞ্জ সড়কটি বিচ্ছিন্ন হয়ে গভীর খালে পরিণত হয়েছে। অতিবৃষ্টি ও মেঘনা নদীর জোয়ারের পানির চাপে এই অবস্থা হয়েছে। এতে চলাচলে দুর্ভোগে পড়েছে স্থানীয় কয়েকটি গ্রামের অন্তত ২০ হাজার বাসিন্দা।

এ ছাড়া উপজেলার চরমার্টিন ও চরকালকিনিসহ বিভিন্ন এলাকায় কাঁচা সড়ক ক্ষতবিক্ষত হয়ে চলাচলের প্রায় অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। রবিবার (২৭ জুলাই) বিকেলে উপজেলার চরমার্টিন ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের চরমার্টিন গ্রামে গিয়ে এই অবস্থা দেখা গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নাছিরগঞ্জ-বলিরপোল সড়কের আশপাশে অন্তত ২০ হাজার মানুষের বসবাস। প্রতিদিন এই সড়কে কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করে। সড়ক ঘেঁষে পূর্বপাশে রয়েছে খাল। অতিজোয়ারে প্রতিবারই সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

চলতি বর্ষায় সম্প্রতি অতিবৃষ্টি ও জোয়ারের পানির চাপে সড়কটি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত স্থানটি প্রায় ৩০ ফুট চড়া খালের আকার ধারণ করেছে। এতে সড়কে চলাচলকারী লোকজন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। সড়কের পশ্চিম পাশের কোমড় পানি পেরিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে সবাইকে। স্কুল শিক্ষার্থীরাও এই দুর্ভোগে পোহাচ্ছে।

সড়কটি বিচ্ছিন্ন হওয়ায় চলাচলে দুর্ভোগে পড়েছে স্থানীয় কয়েকটি গ্রামের অন্তত ২০ হাজার বাসিন্দা। স্ট্রিম ছবি
সড়কটি বিচ্ছিন্ন হওয়ায় চলাচলে দুর্ভোগে পড়েছে স্থানীয় কয়েকটি গ্রামের অন্তত ২০ হাজার বাসিন্দা। স্ট্রিম ছবি

এদিকে আশপাশের বিকল্প কাঁচা সড়কগুলোও ভাঙাচোরা, প্রায় ব্যবহার অনুপযোগী। ফলে মূল সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে জরুরি প্রয়োজনে দ্রুত কোথাও যাতায়াতের সুযোগ থাকছে না।

মাছ ব্যবসায়ী মো. শাহজাহান বলেন, ‘তীব্র জোয়ারের চাপে রবিবার ভোরের দিকে সড়কটি ভেঙে যায়। পরে এক ঘণ্টার মধ্যেই ভাঙনটি খালে পরিণত হয়েছে। আমাদের মসজিদের রাস্তাটিও ভেঙে গেছে।’

গ্রাম্য চিকিৎসক রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘একজন ব্যক্তি খুবই অসুস্থ, তিনি আমার ফার্মেসিতে যাবেন, কিন্তু যেতে পারেননি। এখন আমাকেই আসতে হয়েছে। কোনো প্রসূতিকে জরুরি অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার সুযোগও বন্ধ হয়ে গেছে।’

বাইসাইকেল কাঁধে উঠিয়ে সাঁকো পারাপার হচ্ছিল স্কুল ফেরত শিক্ষার্থী রায়হান আহমেদ। সে বলে, ‘বিদ্যালয়ে যাওয়ার সময়ও সড়কের ভাঙনটি বড় ছিল না। ছুটি শেষে এসে দেখি ভাঙনটি খাল হয়ে গেছে। এখান দিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। এ জন্য সাঁকো পেরিয়ে মানুষের বাড়ির ভেতর দিয়ে যেতে হচ্ছে।’

সড়কটি বিচ্ছিন্ন হওয়ায় চলাচলে দুর্ভোগে পড়েছে স্থানীয় কয়েকটি গ্রামের অন্তত ২০ হাজার বাসিন্দা। স্ট্রিম ছবি
সড়কটি বিচ্ছিন্ন হওয়ায় চলাচলে দুর্ভোগে পড়েছে স্থানীয় কয়েকটি গ্রামের অন্তত ২০ হাজার বাসিন্দা। স্ট্রিম ছবি

কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাহাত উজ জামান বলেন, ‘নাছিরগঞ্জ-বলিরপোল সড়ক বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘটনাটি জেনেছি। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) প্রশাসককে সরেজমিনে গিয়ে পর্যবেক্ষণ করে আমাকে বিষয়টি জানানোর জন্য বলা হয়েছে।’

ইউএনও বলেন, ‘স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি জোয়ার হওয়ায় সড়কটি ভেঙেছে। এটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা এখানে একটি কালভার্ট নির্মাণের চেষ্টা করব, যেন পানি যাওয়ার একটি ব্যবস্থা হয়। সড়কটি সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে অবহিত করা হবে।’

Ad 300x250

সম্পর্কিত