leadT1ad

পাইলসের রোগীকে পিত্তথলির অপারেশন, পালিয়েছেন চিকিৎসক-নার্সরা

ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলী এলাকার শাহ সুফি সড়কে অবস্থিত সৌদি-বাংলা প্রাইভেট হাসপাতালে সোমবার রাতে ভুল চিকিৎসার ঘটনা ঘটে। এতে চিকিৎসা নিতে আসা নারীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ঘটনাটি জানাজানি হয়।

স্ট্রিম সংবাদদাতা
স্ট্রিম সংবাদদাতা
ফরিদপুর

প্রকাশ : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭: ৫৭
সৌদি-বাংলা প্রা. হাসপাতাটি সিলগালা করেছেন সিভিল সার্জন। ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুর শহরের একটি বেসরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র সৌদি-বাংলা প্রাইভেট হাসপাতালে গৃহবধূ হ্যাপি বেগম (৩৫) ভর্তি হয়েছিলেন পাইলস জনিত সমস্যা নিয়ে। কিন্তু চিকিৎসক তাঁর পিত্তথলির (গলফব্লাডার) অস্ত্রোপচার করে ফেলেছেন। এতে ওই নারীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ঘটনাটি জানাজানি হয়।

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাত ৮ টার দিকে শহরের ঝিলটুলী এলাকার শাহ সুফি সড়কে অবস্থিত সৌদি-বাংলা প্রাইভেট হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সিভিল সার্জন ডা. মাহামুদুল হাসান ওই হাসপাতালে যান। ঘটনার সত্যতা পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালটি বন্ধ ঘোষণা করেন তিনি। তবে অভিযুক্ত চিকিৎসক নজরুল ইসলাম শোভন সহ হাসপাতালের নার্স কৌশলে পালিয়ে যান। ভুল চিকিৎসার ঘটনায় একটি কমিটি গঠনের মাধ্যমে তদন্ত করে হাসপাতাল ও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান সিভিল সার্জন।

ভুক্তভোগী হ্যাপি বেগম জেলার সদরপুর উপজেলার বাসিন্দা মো. আসলাম হোসেনের স্ত্রী। তাঁর মেয়ে জান্নাতি আক্তার অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার দিন ‘হাসপাতালে আরেকজন রোগী ভর্তি ছিলেন, যার পিত্তথলিতে পাথর হয়েছে। কিন্তু সেই রোগীর জায়গায় ডাক্তার নজরুল ইসলাম শোভন আমার আম্মুকে অপারেশন করেছে। তিনি কোনো কাগজপত্র যাচাই-বাছাই ছাড়া অপারেশন করেছেন।’

হাসপাতালের লোকজন ও ভুক্তভোগী নারীর স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দুপুরে হাসপাতালে গৃহবধূ হ্যাপি বেগম ভর্তি হন পাইলসের সমস্যা নিয়ে। চিকিৎসক ফজলুল হকের তত্ত্বাবধানে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাঁকে পিত্তথলির অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসক নজরুল ইসলাম শোভন।

এদিকে অস্ত্রপোচারের কয়েক ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও হ্যাপি বেগমকে কোনো চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। পরে অবস্থার অবনতি হলে রোগীর স্বজনরা বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন ও ছাত্র প্রতিনিধিদের কাছে অভিযোগ করেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে সিভিল সার্জন ও বিএমএর নেতারা হাসপাতালে গিয়ে রোগীর শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করে ফরিদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালে পাঠান।

ওই ঘটনায় ফরিদপুরের তরুণ সংগঠক আবরাব নাদিম অভিযোগ করে বলেন, ‘রোগীর ভুল চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা তৈরি হওয়ার পর হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা পালিয়ে যান। ৩ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। রোগীর কাগজপত্র, ফিটনেস না দেখেই অপারেশন করা হয়েছে। আমরা এ ঘটনার উপযুক্ত বিচারের দাবি জানাই।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চিকিৎসক নজরুল ইসলাম শোভনের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন নম্বরে একাধিকবার কল করেও বন্ধ থাকায় তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

ভুল চিকিৎসার বিষয়টি নিশ্চিত করে ফরিদপুরের সিভিল সার্জন মাহামুদুল হাসান বলেন, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, নার্স ও চিকিৎসকের গাফিলতির কারণেই এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগী নারীকে দ্রুত সুস্থ করে তুলতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাঁর শারীরিক অবস্থা বর্তমানে ভালো আছে। একই সঙ্গে ওই হাসপাতালের ভর্তি অন্য রোগীদের সরকারি জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করে প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।’

Ad 300x250

সম্পর্কিত