leadT1ad

আধিপত্য বিস্তারে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ

নরসিংদীতে গুলিতে একজন নিহত, সাংবাদিকসহ আহত ৫

নরসিংদীর আলোকবালী ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক শাহ আলম চৌধুরী ও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সম্প্রতি বহিষ্কার হওয়া সদস্যসচিব আব্দুল কাইয়ুম মিয়ার সমর্থকদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। সম্প্রতি এই বিরোধ বাড়লে পৃথকভাবে দলীয় কর্মসূচী পালন করছিলেন দুই নেতা। এ নিয়ে তাঁদের অনুসারী লোকজনের মধ্যে কয়েক দিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছিল।

স্ট্রিম সংবাদদাতা
নরসিংদী
প্রকাশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩: ৪৮
সংঘর্ষের প্রতীকী ছবি। স্ট্রিম গ্রাফিক

নরসিংদী সদর উপজেলার আলোকবালীতে মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলন ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ইদন মিয়া (৫৫) নামে একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৫ জন।

এদিকে সংঘর্ষের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে আহত হয়েছেন একটি বেসরকার টিভি চ্যানেলের নিজস্ব প্রতিবেদক আইয়ুব খান সরকার। নরসিংদী সদর হাসপাতাল এলাকায় সংবাদ সংগ্রহের সময় এক পক্ষের সমর্থকদের এলোপাতারি হামলায় তাঁর মাথায় ফলে ফেটে যায়।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টম্বর) ভোর ৫টার দিকে উপজেলার চরাঞ্চালের আলোকবালী ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক শাহ আলম চৌধূরী ও বহিষ্কৃত সদস্যসচিব আব্দুল কাইয়ুম মিয়া গ্রুপের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, বিএনপির দুই গ্রুপের সঙ্গে কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগের স্থানীয় কিছু নেতা-কর্মীও যুক্ত হয়।

সংঘর্ষে নিহত ইদন মিয়া (৫৫) মুরাদনগর গ্রামের বাসিন্দা। আহতদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়নি।

মেঘনায় বালু তোলা নিয়ে দ্বন্দ্ব

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মেঘনায় বালু উত্তোলন ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আলোকবালী ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক শাহ আলম চৌধুরী ও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সম্প্রতি বহিষ্কার হওয়া সদস্যসচিব আব্দুল কাইয়ুম মিয়ার সমর্থকদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। সম্প্রতি এই বিরোধ বাড়লে পৃথকভাবে দলীয় কর্মসূচী পালন করছিলেন দুই নেতা। এ নিয়ে তাঁদের অনুসারী লোকজনের মধ্যে কয়েক দিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছিল।

নরসিংদীতে গুলিতে একজন নিহত, সাংবাদিকসহ আহত ৫। স্ট্রিম ছবি
নরসিংদীতে গুলিতে একজন নিহত, সাংবাদিকসহ আহত ৫। স্ট্রিম ছবি

বৃহস্পতিবার সকালে দুই গ্রুপের লোকজন আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। এতে ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ হন ইদন মিয়া নামের একজন। তাঁকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫ জন। আহতরা সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নেন।

ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক শাহ আলম চৌধুরী বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর বিএনপির বহিষ্কৃত সদস্যসচিব কাইয়ুম। তাঁর নেতৃত্বে মুরাদনগর গ্রামে অস্ত্র, ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও পতিত আওয়ামী লীগের লোকজন দিয়ে হামলা চালায়। তাঁর হামলার প্রতিবাদে এলাকাবাসী প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।’

অভিযোগ বিষয়ে জানতে ইউনিয়ন বিএনপি সাবেক সদস্যসচিব কাইয়ুম মিয়ার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে একাদিকবার কল দেওয়া হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

খবর প্রকাশ করায় সাংবাদিককে হামলা

এদিকে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাঁর সংবাদ সংগ্রহের জন্য হাসপাতাল কম্পাউন্ডে অবস্থান করছিলেন

যমুনা টিভির নরসিংদীর স্টাফ রিপোর্টার আইয়ুব খান সরকারসহ অন্য সংবাদকর্মীরা। হামলার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তাঁর সহকর্মীরা জানান, সংঘর্ষের সময় আলোকবালি ইউনিয়ন বিএনপির বহিস্কৃত আব্দুল কাইউয়ুমকে জড়িয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তাঁর সমর্থকরা। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আইয়ুবকে লাঠিশোটা দিয়ে উপুর্যপরি আঘাত করলে মাথা ফেটে যায় তাঁরা। পরে অন্যান্য সংবাদিক ও উপস্থিত লোকজনের সহায়তায় হাসপাতালের ভিতরে আশ্রয় নেয় তিনি।

সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ফরিদা গুলশানারা কবির জানান, ঘটনার পরে তাকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দেয়া হয়। তার মাথার ডান পাশে চারটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। মাথায় ইনজুরির কারণে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।’

নরসিংদী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমদাদুল হক বলেন, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে পূর্ব বিরোধের জেরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করাসহ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।

Ad 300x250

সম্পর্কিত