leadT1ad

‘অপমানিত’ রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন নির্বাচনের পর পদত্যাগ করতে চান

স্ট্রিম ডেস্ক
স্ট্রিম ডেস্ক

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সংগৃহীত ছবি

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ‘অপমানিত’ বোধ করায় আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের পর মেয়াদের মাঝপথেই পদত্যাগের পরিকল্পনা করছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা জানান।

রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে সাহাবুদ্দিন সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হলেও তাঁর ক্ষমতা মূলত আলংকারিক। ঢাকার সরকারি বাসভবন থেকে হোয়াটসঅ্যাপে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি চলে যেতে আগ্রহী। আমি বেরিয়ে যেতে চাই।’

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন আরও বলেন, ‘নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত আমার দায়িত্বে থাকা উচিত। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণেই আমি এই পদ ধরে রেখেছি।’

রাষ্ট্রপতি অভিযোগ করেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত প্রায় সাত মাস ধরে তাঁর সঙ্গে কোনো সাক্ষাৎ করেননি। রাষ্ট্রপতির প্রেস উইং তাঁর নিয়ন্ত্রণ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া গত সেপ্টেম্বর মাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাসগুলো থেকে তাঁর ছবি সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘কনস্যুলেট, দূতাবাস এবং হাইকমিশনগুলোতে রাষ্ট্রপতির ছবি ছিল, কিন্তু হঠাৎ এক রাতে তা সরিয়ে ফেলা হলো। এতে জনগণের কাছে ভুল বার্তা যায় যে হয়তো রাষ্ট্রপতিকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমি এতে অত্যন্ত অপমানিত বোধ করেছি।’

সাহাবুদ্দিন জানান, ছবি সরানোর বিষয়ে তিনি ড. ইউনূসকে চিঠি লিখেছিলেন, কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমার কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’

৭৫ বছর বয়সী মো. সাহাবুদ্দিন ২০২৩ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের মনোনয়নে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পাঁচ বছরের জন্য রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। আগামী বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

২০২৪ সালের আগস্টে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর ১৫ বছরের আওয়ামী শাসনামলের অবসান ঘটে। সংসদ ভেঙে দেওয়ার পর দেশে একমাত্র অবশিষ্ট সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষ হিসেবে রাষ্ট্রপতির পদটি তখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য রয়টার্স প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উপদেষ্টাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তাৎক্ষণিক কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। রাষ্ট্রপতি জানান, শিক্ষার্থী আন্দোলনকারীরা শুরুতে তাঁর পদত্যাগের দাবি তুললেও, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে কোনো রাজনৈতিক দল তাঁকে পদত্যাগ করতে বলেনি।

শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলেন কি না—এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকৃতি জানান রাষ্ট্রপতি। তিনি দাবি করেন, রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর থেকে তিনি কোনো দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং স্বাধীনভাবে কাজ করছেন।

Ad 300x250

সম্পর্কিত