দীর্ঘ ২৮ বছর পর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (শাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। তবে তফসিল ঘোষণার পরপরই ভোটের তারিখসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।
আজ রোববার (১৬ নভেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআর ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. আবুল মুকিত মোহাম্মদ মোকাদ্দেছ নির্বাচনের এই তফসিল ঘোষণা করেন।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২০ নভেম্বর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ, ২৩ নভেম্বর চূড়ান্তর ভোটার তালিকা প্রকাশ, ২৪ থেকে ২৬ নভেম্বর মনোনয়নপত্র বিতরণ ও জমাদান, ২ ডিসেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ এবং ১৭ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৩ সালে শাবিপ্রবি প্রতিষ্ঠার পর প্রথম পাঁচ বছর ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়মিত হলেও ১৯৯৭ সালের পর তা বন্ধ হয়ে যায়। সম্প্রতি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর শিক্ষার্থীদের জোরালো দাবির মুখে প্রশাসন ২৮ বছর পর পুনরায় নির্বাচন আয়োজনের উদ্যোগ নেয়।
তবে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পরই শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ এর বিরোধিতা করেছে। ছাত্রশিবির, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র মজলিস, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই অংশটি ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়েছে।
আজ দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফয়সাল হোসেন বলেন, ‘প্রশাসন ঘোষিত নির্বাচনের সময় ১২ থেকে ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে চারদিনই ক্যাম্পাস বন্ধ থাকবে। ক্যাম্পাস বন্ধ রেখে নির্বাচন করা হাস্যকর এবং এটি নির্বাচন বানচালের একটি সুস্পষ্ট ইঙ্গিত।’
অন্যদিকে, দিনের শুরুতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘বিশৃঙ্খলাকারী’ আখ্যা দিয়ে তাদের শাস্তিসহ চার দফা দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে ছাত্রদল। তারা মনে করে, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে শাকসু নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা উচিত, যাতে কোনো রাজনৈতিক দল এটিকে ব্যবহার করে জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশকে প্রভাবিত করতে না পারে।
শাবিপ্রবি ছাত্রদলের প্রথম সহসভাপতি সৈয়দ উসামা ইব্রাহিম বলেন, ‘ছাত্রদল সবসময়ই শাকসুর পক্ষে। আমরা মনে করি, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য যৌক্তিক সময় প্রয়োজন। নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত সময় এই ক্ষেত্রে একটি অন্তরায়।’
এদিকে আচরণবিধি ছাড়াই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের মুখপাত্র অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম জানান, আচরণবিধি প্রস্তুত করা হয়েছে এবং শিগগিরই তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রক্টরিয়াল বডির পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও তৎপর থাকবে।