leadT1ad

গাইবান্ধায় ৭ জনের শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ

স্ট্রিম সংবাদদাতা
স্ট্রিম সংবাদদাতা
গাইবান্ধা
প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ১০: ৪৫
অ্যানথ্রাক্স। স্ট্রিম গ্রাফিক

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে সাত জনের শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ পাওয়া গেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় শহরের রাবেয়া ক্লিনিক অ্যান্ড নাসিং হোমের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ এক চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের শরীরে এমন উপসর্গ পাওয়া যায়। পরে চিকিৎসক মনজুরুল করিম তাদের প্রাথমিক ব্যবস্থাপত্র দেন এবং গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। কিন্তু রাত সাড়ে ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত হাসপাতালে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ নিয়ে কোনো ভর্তি রোগী পাওয়া যায়নি।

ফলে উপসর্গ পাওয়া রোগীদের নাম পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। তবে তাদের সবার বাড়ি জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় বলে জানা গেছে। রাত সাড়ে ১০টায় চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ মনজুরুল করিম অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি মুঠোফোনের বলেন, ‘অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত গরুর মাংস খেলে সাধারণত এই রোগের উপসর্গ দেখা দেয়। তবে দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসায় এই রোগ সেড়ে যায়। ’

এসব বিষয়ে গাইবান্ধার সিভিল সার্জন রকিবুজ্জামান বলেন, কয়েকদিন আগে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের কিশামত গ্রামে অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত গরু জবাই করা হয়। এই গরুর মাংস কাটাকাটি করায় কিসামত গ্রামের কয়েকজন অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হন। তারা সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্তদের লক্ষণ হচ্ছে চর্মরোগ। আক্রান্তদের মধ্যে কারো শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। ভর্তি করার মত এখন পর্যন্ত কোনো রোগী আসেনি।

এদিকে কিশামত গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েকদিন আগে এই গ্রামের প্রায় ১১ জন অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ নিয়ে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসা নেয়।

কিশামত গ্রামের ইউপি সদস্য হাফিজার রহমান বলেন, কয়েকদিন আগে স্থানীয়রা অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত একটি গরু জবাই করে মাংস কাটাকাটি করে। চারদিন পর গত বৃহস্পতিবার কয়েকজনের শরীরে বিভিন্ন অংশে ফোঁসকা পড়ে এবং মাংসে পচন ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়। বিশেষ করে হাত, নাক, মুখ, চোখে এসব উপসর্গ দেখা গেছে। তারা সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য বলেছে চিকিৎসা নেয়।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি পার্শ্ববর্তী রংপুরের পীরগাছা উপজেলায় গরু ছাগলের মাঝে অ্যানথ্রাক্স রোগের প্রকোপ দেখা দেয়, তার প্রভাব এখন সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষত সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা, সর্বানন্দ, তারাপুর, বেলকা, পৌরসভা এলাকায় অ্যানথ্রাক্সের প্রার্দুভাব দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে সর্বানন্দ, বামনডাঙ্গা, তারাপুর ও পৌরসভায় অ্যানথ্রাক্স টিকাও দেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত পশু পরিচর্যা করলে বা সেই পশু জবাই করে মাংস কাটাকাটি করলে মানুষের মাঝেও অ্যানথ্রাক্স রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে। সে কারণে অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত গরু-ছাগল কোনো অবস্থাতেই জবাই করা যাবে না।

উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন মোজাম্মেল হক বলেন, উপজেলার বেশ কিছু এলাকায় অ্যানথ্রাক্স রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। পৌরসভায় দুটি গরু মারা গেছে। সাহাবাজ এলাকায় অ্যানথ্রাক্সের প্রার্দুভাব দেখা দেওয়ায় ওই এলাকায় ইতোমধ্যে টিকা দেওয়া হয়েছে। আমাদের কাছে ১৩ হাজার টিকা রয়েছে, আমরা আরও চাহিদা পাঠিয়েছি। পেলে গরু-ছাগলের টিকা দেওয়া হবে। রোগাক্রান্ত গরু-ছাগলের মাংস খেলে মানুষ আক্রান্ত হবে না। তবে আক্রান্ত পশু পরিচর্যা করলে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

Ad 300x250

সম্পর্কিত