স্ট্রিম প্রতিবেদক
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে এনসিপি নেতা আখতার হোসেনের ওপর হামলার ঘটনার পর বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশি রাজনৈতিক সংঘাত নতুন মাত্রা নিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেনের ওপর প্রকাশ্যে ডিম ছোড়ার ঘটনা শুধু ব্যক্তিগত আক্রমণ নয়, বরং প্রবাসী বাংলাদেশিদের সম্মিলিত ভাবমূর্তির জন্য বড় দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে।
গত মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) নিউ ইয়র্কের জন এফ কেনেডি (জেএফকে) বিমানবন্দরে আখতার হোসেনকে লক্ষ্য করে ডিম নিক্ষেপ করেন কয়েকজন বিক্ষোভকারী। এ ঘটনায় যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমানকে আটক করে পুলিশ। তবে পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী হিসেবে আখতার নিউ ইয়র্কে গিয়েছিলেন। এই প্রতিনিধি দলে আরও আছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।
বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাঁদের ঘিরে স্লোগান দিতে থাকেন এবং হেনস্তা করেন। আখতার হোসেনকে লক্ষ্য করে ডিম ছোড়ার পাশাপাশি এনসিপির আরেক নেতা তাসনিম জারাকেও অশালীন ভাষায় আক্রমণ করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশি রাজনীতিবিদদের হেনস্তার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। তবে এর মাত্রা বাড়ছে। এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সুইজারল্যান্ডের জেনেভা বিমানবন্দরে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের দ্বারা হেনস্তার শিকার হয়েছিলেন। তবে তাঁর ক্ষেত্রে ডিম নিক্ষেপের মতো ঘটনা ঘটেনি।
আখতার হোসেনের ওপর হামলার কিছু দিন আগেই লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের আরেক উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের গাড়ি লক্ষ্য করে ডিম ছোড়া হয়েছিল। সোয়াস ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের একটি অনুষ্ঠান শেষে বের হওয়ার সময় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা তাঁর গাড়িতে হামলা চালায়। যদিও পরে বাংলাদেশ হাইকমিশন জানায় যে, মাহফুজ আলম সেই গাড়িতে ছিলেন না।
এই ঘটনাগুলো থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট, বিদেশে বাংলাদেশি রাজনৈতিক পক্ষগুলোর মধ্যে অসন্তোষ এখন আর শুধু স্লোগান বা পতাকা প্রদর্শনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এটি শারীরিক হামলা এবং প্রকাশ্য হেনস্তার পর্যায়ে পৌঁছেছে।
বাইরের পৃথিবী এই ঘটনাকে আওয়ামী লীগ, বিএনপি বা এনসিপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল হিসেবে দেখে না। তাদের চোখে এটি হয়তো কেবলই ‘বাংলাদেশিদের সহিংস আচরণ’। আর এই ধারণাটিই পুরো বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের জন্য বড় হুমকি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আনোয়ারুল আজিম স্ট্রিমকে জানান, এ জাতীয় ঘটনা প্রবাসীদের ‘ইমেজের’ জন্য ক্ষতিকর। তিনি আরও বলেন, ‘রেমিটেন্স আমাদের অর্থনীতির একটা বড় চালিকাশক্তি। এই অবস্থায় আমরা যদি দেশের বাইরে এই ধরনের ঘটনাগুলো ঘটাই, এটা সার্বিকভাবে একটা দেশের ইমেজের ওপর নেতিবাচক ফেলে।’
এই ধরনের প্রকাশ্য সংঘাতের সবচেয়ে বড় শিকার হয় একটি গোষ্ঠীর সম্মিলিত পরিচয়। উনিশ শতকে দুর্ভিক্ষপীড়িত আয়ারল্যান্ড থেকে লাখ লাখ মানুষ যখন যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমায়, তখন তাদের একটি ছোট অংশ দারিদ্র্য এবং সামাজিক বঞ্চনার কারণে বিভিন্ন সহিংস গ্যাং-এ জড়িয়ে পড়ে। কিন্তু এর দায়ভার বহন করতে হয়েছিল সব আইরিশ অভিবাসীকে। তৎকালীন প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো এই গ্যাং সহিংসতাকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে পুরো আইরিশ জাতিকে ‘মদ্যপ, অসভ্য ও উচ্ছৃঙ্খল’ হিসেবে চিত্রায়িত করে। এর সরাসরি ফল ছিল বর্ণবাদ।
সে সময় বিভিন্ন জায়গায় চাকরির বিজ্ঞাপন দেওয়া হতো। কিন্তু তার সঙ্গে ছোট করে জুড়ে দেওয়া হতো, ‘কোনো আইরিশের আবেদন করার প্রয়োজন নেই’। একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর অপরাধের কারণে বা স্রেফ স্টেরিওটাইপের জন্য পুরো একটি সম্প্রদায়কে দশকের পর দশক ধরে সংগ্রাম করতে হয়েছে নিজেদের সম্মান ফিরে পাওয়ার জন্য।
ইতিহাসের পাতা ওল্টালে এমন আরও ভয়াবহ উদাহরণ পাওয়া যায়। ১৯৮৫ সালে টরন্টো থেকে মুম্বাইগামী এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমানে শিখ চরমপন্থীদের একটি ছোট দল বোমা হামলা চালিয়ে ৩২৯ জন যাত্রীকে হত্যা করে। এটি কানাডার ইতিহাসের সবচেয়ে মর্মান্তিক হামলা। এই অপরাধের সঙ্গে কানাডার লাখ লাখ সাধারণ শিখ নাগরিকের কোনো সম্পর্কই ছিল না। কিন্তু এর পরিণতি ছিল ভয়াবহ।
রাতারাতি পুরো শিখ কমিউনিটিকে সন্দেহের তালিকায় ফেলা হয়। পাগড়ি ও দাড়ি থাকলেই বাড়তি তল্লাশির শিকার হওয়া, কর্মক্ষেত্রে বর্ণবাদের মুখোমুখি হওয়া এবং সামাজিকভাবে একঘরে হয়ে পড়ার মতো ঘটনা তাঁদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে ওঠে। একটি গোষ্ঠীর চরমপন্থার মূল্য দিতে হয়েছে পুরো সম্প্রদায়কে, যা তাঁদের কানাডীয় সমাজে একীভূত হওয়ার প্রক্রিয়াকে বহু বছর পিছিয়ে দিয়েছিল।
এই ঐতিহাসিক ঘটনাগুলো থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট—বিদেশের মাটিতে নিজ দেশের রাজনৈতিক সংঘাত টেনে আনা একটি আত্মঘাতী খেলা। এতে কোনো পক্ষই চূড়ান্তভাবে জেতে না, কিন্তু হেরে যায় পুরো সম্প্রদায়। জেএফকে বিমানবন্দরের ডিম নিক্ষেপের ঘটনাটি হয়তো কয়েক মিনিটের, কিন্তু এর ফলে যে সম্মিলিত লজ্জার দাগ বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের গায়ে লাগে, তা মুছতে হয়তো বহু বছর সময় লেগে যাবে। এই পথ শুধু বিভেদই বাড়ায় না, বরং পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি অসম্মানজনক ভবিষ্যৎ তৈরি করে যায়।
অতি সম্প্রতি ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন শহরে ইরিত্রিয়ান অভিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে ভয়াবহ সহিংস সংঘর্ষ দেখা গেছে। গত বছরের এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানাচ্ছে, ইরিত্রিয়ার একনায়কতান্ত্রিক সরকারের সমর্থকরা বিভিন্ন দেশে সাংস্কৃতিক উৎসবের আয়োজন করে। অন্যদিকে, যারা এই স্বৈরশাসনের শিকার হয়ে দেশ ছেড়েছেন, তারা এসব আয়োজনের বিরোধীতা করেন। অনেক সময় বিদেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত এসব আয়োজনই রণক্ষেত্রে রূপ নেয়।
সম্প্রতি জার্মানি, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে এই দুই পক্ষের মধ্যে রাজপথে ভয়াবহ দাঙ্গা হয়েছে, যেখানে লাঠি, পাথর এমনকি ছুরিও ব্যবহার করা হয়েছে।
প্রবাসী ইরিত্রিয়ানরা এসব সহিংসতার ফল পেতে শুরু করেছেন। সুইস কর্তৃপক্ষ গত বছর ইরিত্রিয়ার জাতীয় দিবস পালনের অনুমতি দেয়নি। একইভাবে নেদারল্যান্ডসের রিজভাইক শহরেও ইরিত্রিয়ার স্বাধীনতা দিবসের সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে গত বছর।
এ ধরনের আচরণের ফলে কোনো দেশের নাগরিকদের ভিসার হার কমিয়ে দেওয়া হতে পারে বলেও জানান আনোয়ারুল আজিম। জনশক্তি আমদানির ক্ষেত্রে দেশগুলোর কাছে অনেক বিকল্প থাকে। তাই যে দেশের সম্পর্কে ধারণা নেতিবাচক, তাদের বাদ দেওয়া বা ভিসা কমিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশিদের ক্ষেত্রে সরাসরি হয়তো লেখা হবে না ‘কোনো বাংলাদেশির আবেদন করার প্রয়োজন নেই’। কিন্তু ভিসা তালিকা থেকে বাদ দেওয়া, অভিবাসন নীতি কঠোর করাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ রাষ্ট্রগুলো নিতেই পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে এনসিপি নেতা আখতার হোসেনের ওপর হামলার ঘটনার পর বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশি রাজনৈতিক সংঘাত নতুন মাত্রা নিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেনের ওপর প্রকাশ্যে ডিম ছোড়ার ঘটনা শুধু ব্যক্তিগত আক্রমণ নয়, বরং প্রবাসী বাংলাদেশিদের সম্মিলিত ভাবমূর্তির জন্য বড় দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে।
গত মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) নিউ ইয়র্কের জন এফ কেনেডি (জেএফকে) বিমানবন্দরে আখতার হোসেনকে লক্ষ্য করে ডিম নিক্ষেপ করেন কয়েকজন বিক্ষোভকারী। এ ঘটনায় যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমানকে আটক করে পুলিশ। তবে পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী হিসেবে আখতার নিউ ইয়র্কে গিয়েছিলেন। এই প্রতিনিধি দলে আরও আছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।
বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাঁদের ঘিরে স্লোগান দিতে থাকেন এবং হেনস্তা করেন। আখতার হোসেনকে লক্ষ্য করে ডিম ছোড়ার পাশাপাশি এনসিপির আরেক নেতা তাসনিম জারাকেও অশালীন ভাষায় আক্রমণ করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশি রাজনীতিবিদদের হেনস্তার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। তবে এর মাত্রা বাড়ছে। এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সুইজারল্যান্ডের জেনেভা বিমানবন্দরে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের দ্বারা হেনস্তার শিকার হয়েছিলেন। তবে তাঁর ক্ষেত্রে ডিম নিক্ষেপের মতো ঘটনা ঘটেনি।
আখতার হোসেনের ওপর হামলার কিছু দিন আগেই লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের আরেক উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের গাড়ি লক্ষ্য করে ডিম ছোড়া হয়েছিল। সোয়াস ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের একটি অনুষ্ঠান শেষে বের হওয়ার সময় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা তাঁর গাড়িতে হামলা চালায়। যদিও পরে বাংলাদেশ হাইকমিশন জানায় যে, মাহফুজ আলম সেই গাড়িতে ছিলেন না।
এই ঘটনাগুলো থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট, বিদেশে বাংলাদেশি রাজনৈতিক পক্ষগুলোর মধ্যে অসন্তোষ এখন আর শুধু স্লোগান বা পতাকা প্রদর্শনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এটি শারীরিক হামলা এবং প্রকাশ্য হেনস্তার পর্যায়ে পৌঁছেছে।
বাইরের পৃথিবী এই ঘটনাকে আওয়ামী লীগ, বিএনপি বা এনসিপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল হিসেবে দেখে না। তাদের চোখে এটি হয়তো কেবলই ‘বাংলাদেশিদের সহিংস আচরণ’। আর এই ধারণাটিই পুরো বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের জন্য বড় হুমকি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আনোয়ারুল আজিম স্ট্রিমকে জানান, এ জাতীয় ঘটনা প্রবাসীদের ‘ইমেজের’ জন্য ক্ষতিকর। তিনি আরও বলেন, ‘রেমিটেন্স আমাদের অর্থনীতির একটা বড় চালিকাশক্তি। এই অবস্থায় আমরা যদি দেশের বাইরে এই ধরনের ঘটনাগুলো ঘটাই, এটা সার্বিকভাবে একটা দেশের ইমেজের ওপর নেতিবাচক ফেলে।’
এই ধরনের প্রকাশ্য সংঘাতের সবচেয়ে বড় শিকার হয় একটি গোষ্ঠীর সম্মিলিত পরিচয়। উনিশ শতকে দুর্ভিক্ষপীড়িত আয়ারল্যান্ড থেকে লাখ লাখ মানুষ যখন যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমায়, তখন তাদের একটি ছোট অংশ দারিদ্র্য এবং সামাজিক বঞ্চনার কারণে বিভিন্ন সহিংস গ্যাং-এ জড়িয়ে পড়ে। কিন্তু এর দায়ভার বহন করতে হয়েছিল সব আইরিশ অভিবাসীকে। তৎকালীন প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো এই গ্যাং সহিংসতাকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে পুরো আইরিশ জাতিকে ‘মদ্যপ, অসভ্য ও উচ্ছৃঙ্খল’ হিসেবে চিত্রায়িত করে। এর সরাসরি ফল ছিল বর্ণবাদ।
সে সময় বিভিন্ন জায়গায় চাকরির বিজ্ঞাপন দেওয়া হতো। কিন্তু তার সঙ্গে ছোট করে জুড়ে দেওয়া হতো, ‘কোনো আইরিশের আবেদন করার প্রয়োজন নেই’। একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর অপরাধের কারণে বা স্রেফ স্টেরিওটাইপের জন্য পুরো একটি সম্প্রদায়কে দশকের পর দশক ধরে সংগ্রাম করতে হয়েছে নিজেদের সম্মান ফিরে পাওয়ার জন্য।
ইতিহাসের পাতা ওল্টালে এমন আরও ভয়াবহ উদাহরণ পাওয়া যায়। ১৯৮৫ সালে টরন্টো থেকে মুম্বাইগামী এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমানে শিখ চরমপন্থীদের একটি ছোট দল বোমা হামলা চালিয়ে ৩২৯ জন যাত্রীকে হত্যা করে। এটি কানাডার ইতিহাসের সবচেয়ে মর্মান্তিক হামলা। এই অপরাধের সঙ্গে কানাডার লাখ লাখ সাধারণ শিখ নাগরিকের কোনো সম্পর্কই ছিল না। কিন্তু এর পরিণতি ছিল ভয়াবহ।
রাতারাতি পুরো শিখ কমিউনিটিকে সন্দেহের তালিকায় ফেলা হয়। পাগড়ি ও দাড়ি থাকলেই বাড়তি তল্লাশির শিকার হওয়া, কর্মক্ষেত্রে বর্ণবাদের মুখোমুখি হওয়া এবং সামাজিকভাবে একঘরে হয়ে পড়ার মতো ঘটনা তাঁদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে ওঠে। একটি গোষ্ঠীর চরমপন্থার মূল্য দিতে হয়েছে পুরো সম্প্রদায়কে, যা তাঁদের কানাডীয় সমাজে একীভূত হওয়ার প্রক্রিয়াকে বহু বছর পিছিয়ে দিয়েছিল।
এই ঐতিহাসিক ঘটনাগুলো থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট—বিদেশের মাটিতে নিজ দেশের রাজনৈতিক সংঘাত টেনে আনা একটি আত্মঘাতী খেলা। এতে কোনো পক্ষই চূড়ান্তভাবে জেতে না, কিন্তু হেরে যায় পুরো সম্প্রদায়। জেএফকে বিমানবন্দরের ডিম নিক্ষেপের ঘটনাটি হয়তো কয়েক মিনিটের, কিন্তু এর ফলে যে সম্মিলিত লজ্জার দাগ বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের গায়ে লাগে, তা মুছতে হয়তো বহু বছর সময় লেগে যাবে। এই পথ শুধু বিভেদই বাড়ায় না, বরং পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি অসম্মানজনক ভবিষ্যৎ তৈরি করে যায়।
অতি সম্প্রতি ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন শহরে ইরিত্রিয়ান অভিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে ভয়াবহ সহিংস সংঘর্ষ দেখা গেছে। গত বছরের এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানাচ্ছে, ইরিত্রিয়ার একনায়কতান্ত্রিক সরকারের সমর্থকরা বিভিন্ন দেশে সাংস্কৃতিক উৎসবের আয়োজন করে। অন্যদিকে, যারা এই স্বৈরশাসনের শিকার হয়ে দেশ ছেড়েছেন, তারা এসব আয়োজনের বিরোধীতা করেন। অনেক সময় বিদেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত এসব আয়োজনই রণক্ষেত্রে রূপ নেয়।
সম্প্রতি জার্মানি, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে এই দুই পক্ষের মধ্যে রাজপথে ভয়াবহ দাঙ্গা হয়েছে, যেখানে লাঠি, পাথর এমনকি ছুরিও ব্যবহার করা হয়েছে।
প্রবাসী ইরিত্রিয়ানরা এসব সহিংসতার ফল পেতে শুরু করেছেন। সুইস কর্তৃপক্ষ গত বছর ইরিত্রিয়ার জাতীয় দিবস পালনের অনুমতি দেয়নি। একইভাবে নেদারল্যান্ডসের রিজভাইক শহরেও ইরিত্রিয়ার স্বাধীনতা দিবসের সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে গত বছর।
এ ধরনের আচরণের ফলে কোনো দেশের নাগরিকদের ভিসার হার কমিয়ে দেওয়া হতে পারে বলেও জানান আনোয়ারুল আজিম। জনশক্তি আমদানির ক্ষেত্রে দেশগুলোর কাছে অনেক বিকল্প থাকে। তাই যে দেশের সম্পর্কে ধারণা নেতিবাচক, তাদের বাদ দেওয়া বা ভিসা কমিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশিদের ক্ষেত্রে সরাসরি হয়তো লেখা হবে না ‘কোনো বাংলাদেশির আবেদন করার প্রয়োজন নেই’। কিন্তু ভিসা তালিকা থেকে বাদ দেওয়া, অভিবাসন নীতি কঠোর করাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ রাষ্ট্রগুলো নিতেই পারে।
দেশে ডেঙ্গুতে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে সারা দেশে নতুন করে ৬৩২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
১১ মিনিট আগেআগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলো ‘ফাউল করার নিয়তে’ নামবে না আশা প্রকাশ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, সব খেলোয়াড় যদি ফাউল করার নিয়তে মাঠে নামে তাহলে রেফারির পক্ষে ম্যাচ পণ্ড হওয়া থেকে রক্ষা করা সম্ভব হয় না। সুতরাং খেলোয়াড়দের ফাউল করার নিয়ত থেকে দূরে থাকতে
৩৮ মিনিট আগেকৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, কোনো অবস্থাতেই ফসলি জমি নষ্ট করা যাবে না। বিশেষ করে দুই ও তিন ফসলি জমিতে নির্মাণ করা যাবে না কোনো স্থাপনা। কৃষি জমি রক্ষায় কঠোর বিধান রেখে ভূমি ব্যবহার ও কৃষি ভূমি সুরক্ষা অধ্যাদেশ প্রণয়নের কাজ চলছে।
২ ঘণ্টা আগেগাজীপুরের টঙ্গীতে কেমিক্যাল গুদামের আগুন নেভাতে গিয়ে নিহত ও আহত ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের পরিবারকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ১৩ লাখ টাকা আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগে