ঝিনাইদহের সদর উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে উপজেলার কলোমনখালি বাজারে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে ১০ জনকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এলাকায় মোতায়েন রয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।
জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও দোগাছি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আসাদ চৌধুরী এবং স্থানীয় বিএনপি নেতা ও সামাজিক মাতব্বর মাসুদ জোয়ার্দারের সমর্থকদের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয় বলে জানা গেছে। সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করছেন তাঁরা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, জেলার সদর উপজেলার কলোমনখালি এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আসাদ চৌধুরী ও মাসুদ জোয়ার্দারের সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। কয়েকদিন আগেও উভয়পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। এ নিয়ে সোমবার সকালে কলোমনখালি বাজারে উভয় পক্ষের সমর্থকরা দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে আব্দুর রহিম মোল্লা, হাসেম আলী, গোলাম রসুল, সুরুজ ও ইয়ালিদসহ ১০ জনকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কলোমনখালি এলাকার বাসিন্দা সাইফুল হোসেন বলেন, বহুদিন ধরে স্থানীয়ভাবে বিএনপির মধ্যে দুই গ্রুপ ভাগ হয়ে গেছে। কিছুদিন আগে মাসুদ জোয়ার্দারের সমর্থক আলমগীর নামের একজনকে মারপিট করে আসাদ চৌধুরীর সমর্থকেরা। তিনি ঢাকায় চিকিৎসা শেষে বাড়ি এসে তাঁদের লোকজন নিয়ে সোমবার বাজারে এলে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি শুরু হয়। মাসুদের সমর্থকদের বাজারঘাটে আসা বন্ধ ছিল। যে কারণে বাজার দখল ও আসা নিয়ে সংঘর্ষ।
সদর হাসপাতালে জরুরি বিভাগে চিকিৎসক সুলতানা মেফতাহুল জান্নাত জানান, ‘আহতদের শরীরে ধারালো অস্ত্র ও ইটের আঘাতের ক্ষত রয়েছে। তবে তাদের শারীরিক অবস্থা শঙ্কামুক্ত।’
জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান আসাদ চৌধুরী বলেন, ‘সকালে তারা (মাসুদের সমর্থক) বাজারে এসে হঠাৎ করেই আমার লোকজনের ওপর হামলা করে। পরে খবর পেয়ে আমাদের লোকজন বাজারে গেলে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে আমাদের ৫ জন গুরুতর আহত হয়েছে।’
পাল্টা হামলার অভিযোগ করে মাসুদ জোয়ার্দার বলেন, ‘আমাদের লোকজনের উপর তারা (আসাদের সমর্থক) প্রথম হামলা চালায়। আহতদের নিয়ে ব্যস্ত আছি, এখন বিস্তারিত কথা বলতে পারছি না।’
ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি (অপারেশন) সামছুজ্জোহা জানান, ‘সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে। এলাকায় এখন অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।’ এলাকায় পুলিশ মোতায়েনের তথ্য জানিয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘সামাজিক আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’