leadT1ad

ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন

‘ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া নীতিগতভাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।

স্ট্রিম ডেস্ক
স্ট্রিম ডেস্ক
ঢাকা
প্রকাশ : ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ২১: ২৫
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার

‘ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া নীতিগতভাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।

বৈঠক শেষে বিকেলে রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।

তিনি বলেন, প্রস্তাবিত অধ্যাদেশটি জারি হলে উপাত্ত সংগ্রহ, প্রক্রিয়াকরণ, মজুত বা ধারণ, ব্যবহার বা পুনর্ব্যবহার, স্থানান্তর, প্রকাশ, বিনষ্টকরণ, আন্তর্জাতিক মান বজায় সর্বোপরি ডিজিটাল সেক্টরের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

একইদিন বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ (চিফ অ্যাডভাইজার জিওবি) থেকে 'এক নজরে জাতীয় উপাত্ত ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ শীর্ষক পোস্টে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।

সেখানে বলা হয়েছে, ব্যক্তিগত উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণের ক্ষেত্রে উপাত্তের গোপনীয়তা, বিশ্বস্ততা, সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ ন্যায্যতা, আন্তঃপরিবাহিতা, ডিজিটাল অর্থনীতির সম্ভাবনা সুরক্ষিত করা এবং দায়িত্বশীল উদ্ভাবনকে উৎসাহিতকরণ ইত্যাদি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার উদ্দেশ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ কর্তৃক ‘ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ প্রণয়ণের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত অধ্যাদেশটি জারি হলে উপাত্ত সংগ্রহ, প্রক্রিয়াকরণ, মজুত বা ধারণ, ব্যবহার বা পুনঃব্যবহার, স্থানান্তর, প্রকাশ, বিনষ্টকরণ, আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখা সর্বোপরি ডিজিটাল সেক্টরের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এর উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যগুলো—

  • প্রস্তাবিত অধ্যাদেশের মোট ধারা সংখ্যা ৫৭ টি;
  • প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে কোন ব্যক্তির উপাত্ত তার মালিকানাধীন গণ্য করে তার সম্মতিতে আইনসম্মতভাবে প্রক্রিয়াকরণের বিধান রাখা হয়েছে;
  • ব্যক্তিগত উপাত্ত সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াকরণের জন্য প্রক্রিয়াকরণের উদ্দেশ্য, ধারণ-মেয়াদ, স্থানান্তর ও প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবহিত করে উপাত্তধারীর সম্মতি গ্রহণের বিধান রাখা হয়েছে;
  • কোনো উপাত্ত-জিম্মাদার, মূল উদ্দেশ্যের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হলে উপাত্তধারীর ব্যক্তিগত উপাত্ত অধিকতর প্রক্রিয়া করার বিধান রাখা হয়েছে;
  • শিশু বা সম্মতি প্রদানে সক্ষম নয় এমন ব্যক্তি সম্পর্কিত উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণে পিতা-মাতা বা আইনগত অভিভাবক বা সিদ্ধান্ত প্রদান করতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত এমন ব্যক্তির সম্মতি গ্রহণের বিধান রাখা হয়েছে;
  • উপাত্তধারীর লিখিত আবেদনের মাধ্যমে উপাত্ত জিম্মাদারের নিকট উপাত্তধারীর অধিকার প্রয়োগের বিধার রাখা হয়েছে;
  • সংবেদনশীল ব্যক্তিগত উপাত্ত শর্তসাপেক্ষে প্রক্রিয়াকরণের বিধান রাখা হয়েছে;
  • উপাত্ত-জিম্মাদার কর্তৃক প্রক্রিয়াকৃত উপাত্তে উপাত্তধারীর প্রবেশাধিকারের (access) বিধান রাখা হয়েছে;
  • উপাত্তধারী যে কোনো সময় সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে তার সম্মতি প্রত্যাহার করতে পারবেন;
  • উপাত্তধারীর সম্মতি ব্যতিরেকে, যে উদ্দেশ্যে ব্যক্তিগত উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছিল সে উদ্দেশ্যে ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ব্যক্তিগত উপাত্ত প্রকাশ (disclosure) করা যাবে না;
  • এই অধ্যাদেশের অধীনে গঠিত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো স্বতন্ত্র উপাত্ত নিরীক্ষকের মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ে ব্যক্তিগত উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণ সংক্রান্ত কার্যক্রম-নিরীক্ষার বিধার রাখা হয়েছে;
  • জাতীয় নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, জনশৃঙ্খলা বা জনস্বার্থ, অপরাধ প্রতিরোধ, তদন্ত, কর ফাঁকি প্রতিরোধ, জনস্বাস্থ্য, সরকারি তহবিলের অপব্যবহার, অনুসন্ধান বা তদন্ত, পরিসংখ্যান প্রস্তুতকরণ, শিক্ষা, শৈল্পিক কাজ বা সাহিত্য রচনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণের প্রয়োজন হলে উপাত্তধারীর সম্মতি গ্রহণ হতে অব্যাহতির বিধান রাখা হয়েছে;
  • এই অধ্যাদেশে সরকার কর্তৃক ব্যক্তিগত উপাত্ত ৪টি শ্রেণিতে বিভাজন করা হয়েছে, যথা: (ক) পাবলিক বা উন্মুক্ত ব্যক্তিগত উপাত্ত, (খ) অভ্যন্তরীণ ব্যক্তিগত উপাত্ত, (গ) গোপনীয় ব্যক্তিগত উপাত্ত, (ঘ) সীমাবদ্ধ ব্যক্তিগত উপাত্ত;
  • এই অধ্যাদেশের উদ্দেশ্য পূরণের নিমিত্ত দ্বিপাক্ষিক, বহুপাক্ষিক এবং আন্তঃসীমান্ত ব্যক্তিগত উপাত্ত বিনিময় এবং অন্যান্য সহযোগিতার উদ্দেশ্যে অন্য যে কোনো দেশ বা বহুপাক্ষিক সংস্থা বা কনসোর্টিয়াম বা ফোরামের সাথে সংযুক্তির বিধান রাখা হয়েছে;
  • উপাত্তধারীর অধিকার লঙ্ঘিত হলে প্রশাসনিক জরিমানা এবং ক্ষতিপূরণ আদায়ের বিধান রাখা হয়েছে;
  • এই অধ্যাদেশের বিধান লঙ্ঘন করে অসৎ উদ্দেশ্যে প্রক্রিয়াকরণ, অননুমোদিতভাবে প্রবেশ বা হস্তক্ষেপ, বেআইনি টেম্পারিং, অপব্যবহার, সংবেদনশীল ব্যক্তিগত উপাত্ত অননুমোদিতভাবে প্রক্রিয়াকরণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে দন্ড আরোপের বিধান রাখা হয়েছে;
  • উপাত্ত-জিম্মাদার ব্যক্তিগত উপাত্ত নির্ধারিত মেয়াদের অতিরিক্ত মেয়াদে ধারণ করতে পারবেন না।
Ad 300x250

সম্পর্কিত