সম্প্রতি দৈনিক মানবজমিনে ‘তারা এখন রাষ্ট্রদূত হওয়ার দৌড়ে’ শিরোনামে এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) ড. নিয়াজ আহমেদ খানসহ চারজনকে রাষ্ট্রদূত বানাতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার। বাকিরা হলেন প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি বিষয়ক দূত লামিয়া মোর্শেদ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী ও তার বোন হুসনা সিদ্দিকী।
এই প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি–বিষয়ক সমন্বয়ক লামিয়া মোর্শেদ, আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং তাঁর বোন হোসনা সিদ্দিকীকে জড়িয়ে দৈনিক মানবজমিন যে সংবাদ প্রকাশ করেছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
তিনি ফেসবুক পোস্টে আরও লিখেছেন, সূত্রহীন ও কল্পনানির্ভর ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার উল্লিখিত তিনজনকে বিভিন্ন দেশে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দিতে চায়। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে, তাদের কথিত “রাষ্ট্রদূত হওয়ার খায়েশ” পূরণে “পেশাদার কূটনীতিকদের বলি দিতে হচ্ছে।” সাংবাদিকতার ন্যূনতম নীতি, দায়িত্ববোধ ও পেশাদারিত্বহীন এই প্রতিবেদনে রাষ্ট্রদূতের সম্মানজনক পদকে “মাখন খাওয়া” এবং তাঁদের কল্পিত নিয়োগকে “গাছেরটা খেয়ে তলারটা কুড়ানো”–র মতো অবমাননাকর উপমার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে—যা সংশ্লিষ্ট সবার জন্য চরম অপমানজনক ও নিন্দনীয়।
এ ধরনের ভাষা প্রয়োগ ও ভিত্তিহীন অভিযোগ স্পষ্টভাবে ‘ব্যক্তিগত বিদ্বেষ ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ মানসিকতার প্রতিফলন বলেও মনে করেন শফিকুল আলম। তিনি লিখেছেন, এই বিষয়ে লামিয়া মোর্শেদ আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানালে মানবজমিন দাবি করে যে তারা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রাথমিক আলোচনার ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে—যদিও সেই দাবিটিও সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কোনো দায়িত্বশীল সংবাদমাধ্যমের পক্ষে এ ধরনের অবমাননাকর ভাষা ব্যবহার করে অসত্য প্রতিবেদন প্রকাশ অকল্পনীয়। মানবজমিন এর মধ্য দিয়ে নিজেদের তৃতীয় সারির সংবাদমাধ্যমের মানহীনতার স্তরে নামিয়ে এনেছে এবং যথারীতি কোনো ক্ষমা প্রার্থনা করেনি।
প্রেস সচিব লিখেছেন, আমরা দৈনিক মানবজমিনের প্রতি উক্ত মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর ও মানহানিকর প্রতিবেদনটি অবিলম্বে প্রত্যাহার করে আনুষ্ঠানিকভাবে দুঃখপ্রকাশের আহ্বান জানাচ্ছি।
শনিবার দুপুরের দিকে মানবজমিনের প্রতিবেদনটি অনলাইন ভার্সনে পাওয়া যায়নি। তবে মানবজমিনে লামিয়া মোর্শেদের প্রতিবাদের প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রাথমিক আলোচনার ওপর ভিত্তি করে মানবজমিন এই রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল। যা নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়। এই রিপোর্টে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমেদসহ আরও দুজনের রাষ্ট্রদূত হওয়ার খবর প্রকাশ করা হয়। এর মধ্যে ঢাবি ভিসি ড. নিয়াজের নিয়োগ চূড়ান্ত হওয়ার পথে। ইতিমধ্যেই তার ফাইলটি কোপেনহেগেন সরকারের সবুজ সংকেতের অপেক্ষায়।