leadT1ad

ক্ষমতায় গেলে ‘মহান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা এবং বিশ্বাস’ পুনর্বহাল করব: সালাহউদ্দিন আহমেদ

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। ছবি: আন্তর্জাতিক খতমে নবুওয়ত মহাসম্মেলনের ফেসবুক লাইভ থেকে

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সংবিধানের অনুচ্ছেদ আটে এবং রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতিতে ‘মহান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা এবং বিশ্বাস’ পুনর্বহাল করবে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘মহান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা এবং বিশ্বাস’ সংবিধানের অনুচ্ছেদ আটে এবং রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতিতে ছিল। সেটা তুলে দেওয়া হয়েছে আপনারা জানেন। আপনারা কি চান সেটা আমরা পুনর্বহাল করি? ইনশাআল্লাহ সেটা আমরা পুনর্বহাল করবো।’

শনিবার (১৫ নভেম্বর) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত পরিষদের উদ্যোগে ‘আহমদিয়া সম্প্রদায়ের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণার’ দাবিতে ‘আন্তর্জাতিক খতমে নবুওয়ত মহাসম্মেলনে’ অংশ নিয়ে একথা বলেন।

আজ সকাল ৯টায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘আন্তর্জাতিক খতমে নবুওয়ত মহাসম্মেলন’ শুরু হয়। এতে যোগ দেন বিএনপি, জামায়াত, হেফাজত, জমিয়ত, খেলাফত, ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা। সম্মেলনে ভারত, পাকিস্তান, সৌদিসহ আরও কয়েকটি দেশের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতারাও অংশ নেন।

সম্মেলনে অংশ নিয়ে বক্তব্যের শুরুতে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের নেতা জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের সংবিধানে প্রথমবারের মতো বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম সংযোজন করেছিলেন। এখনও বহাল আছে, অনেকেই এটি সরিয়ে দিতে চেয়েছিল, পারে নাই।

এরপরে তিনি বলেন, ‘মহান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা এবং বিশ্বাস’ সংবিধানের অনুচ্ছেদ আটে এবং রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতিতে ছিল। সেটা তুলে দেওয়া হয়েছে আপনারা জানেন। আপনারা কি চান সেটা আমরা পুনর্বহাল করি? ইনশাআল্লাহ সেটা আমরা পুনর্বহাল করবো।’

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা রাসুলুল্লাহ (সা)-কে আখেরি নবী হিসেবে বিশ্বাস করে কলমা পড়ে মুসলমান হয়েছি। বাংলাদেশের মানুষ হিসেবে আমরা বাংলাদেশি পরিচয়ে বিশ্বাস করি।’ তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) বলে গিয়েছেন আমিই আখেরি নবী, আমার পরে কোনো নবী-রসুল আসবে না।’

যে দাবিতে সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে, সেদিকে ইঙ্গিত করে বক্তব্যের এক পর্যায়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আপনারা যেটা শুনতে চাচ্ছেন, সেটা বলি। ইনশাআল্লাহ যদি বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় সরকার পরিচালনার দায়িত্ব আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের দেয়, এদেশের জনগণ যদি মুহাব্বত করে, দায়িত্ব আমাদের দেয়, যদি আপনারা সবাই সহযোগিতা করেন, মঞ্চে উপবিষ্ট পীরে কামেল-বুজুর্গানে দ্বিন যারা আমাদের পরিচালিত করেন—আপনারা সবাই যদি সহযোগিতা করেন, একসঙ্গে থাকেন, তাহলে আপনাদের এখানে যেসব দাবি-দাওয়া আছে, আমরা সব দাবি-দাওয়ার পক্ষে ইনশাআল্লাহ কানুনি সব ব্যবস্থা জাতীয় সংসদে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে গ্রহণ করা হবে ইনশাআল্লাহ। এই জন্য সমস্ত জাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’

বক্তব্যের এই পর্যায়ে মঞ্চের সামনে থেকে সম্মিলিত জনতা তাঁদের দাবির ব্যাপারে স্পষ্ট অবস্থান জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আপনারা যে ভাষায় আমাকে কথা বলতে বলছেন, সেটা আইনের ভাষা না। আইনের ভাষা হচ্ছে, এগুলো কার্যকর করার জন্য ও প্রস্তাব গ্রহণ করার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, জাতীয় সংসদে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, এবং সারা বাংলাদেশের মুসলমানকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’

এসময় খতমে নবুওয়তের পক্ষ থেকে দেওয়া ঘোষণাপত্রটি হাতে নিয়ে তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমরা ইনশাআল্লাহ আপনাদের এই প্রস্তাব গ্রহণ করবো।’ এসময়ে সামনে থাকা জনতাকে উচ্চস্বরে বারবার বলতে শোনা যায়, ‘স্যার কাদিয়ানিরা কাফের আপনার মুখ থেকে শুনতে চাই।’ উত্তরে সালাহউদ্দিন আহমেদ আবারও বলেন, ‘আমরা কানুনি ব্যবস্থার কথা বলতে চাই। আমি আগেই বলেছি, যারা রাসুলুল্লাহ (সা.) এর পক্ষে নয় তারা মুসলমান হতে পারে না।’

সম্মিলিত খতমে নবুয়ত পরিষদের আহ্বায়ক ও খতমে নবুয়ত সংরক্ষণ কমিটি বাংলাদেশের আমির মধুপুরের পীর মাওলানা আবদুল হামিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনটি সকাল ৯টায় শুরু হয়ে বেলা ২টার পরে শেষ হয়।

সম্মেলন থেকে সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত পরিষদ বাংলাদেশ কাদিয়ানিদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে নতুন করে চারদফা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে:

১. আগামী ৩০ এপ্রিল (২০২৬) পর্যন্ত সর্বস্তরের আলেম-উলামা ও তৌহিদি জনতার অংশগ্রহণে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি।

২. মে ও জুন মাস জুড়ে দেশের প্রতিটি জেলায় দায়িত্বরত জেলা প্রশাসক (ডিসি) বরাবর স্মারকলিপি প্রদান।

৩. জুলাই ২০২৬ থেকে নভেম্বর ২০২৬ পর্যন্ত পাঁচ মাসে সারা দেশের প্রতিটি বিভাগে পর্যায়ক্রমে বিভাগীয় খতমে নবুওয়ত সম্মেলন আয়োজন।

৪. উপরোক্ত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করার পরও যদি কাদিয়ানি সম্প্রদায়কে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম সংখ্যালঘু ঘোষণা করার ন্যায়সঙ্গত দাবি সরকার কর্তৃক বাস্তবায়িত না হয়, তবে পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণের লক্ষ্যে দেশের প্রতিনিধিত্বশীল শীর্ষ উলামায়ে কেরামকে নিয়ে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর মাসে জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলন আহ্বান করা হবে।

Ad 300x250

সম্পর্কিত