leadT1ad

পূজার ছুটি শেষে রাকসুর প্রচারণা: অনিশ্চিয়তার মধ্যেও আশাবাদী প্রার্থীরা

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৮: ৪৮
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু)। স্ট্রিম ছবি

দুর্গাপূজার ছুটি শেষে নতুন উদ্যমে শুরু হয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের প্রচারণা। প্রার্থীরা ভোটারদের থেকে ইতিবাচক সাড়া পেলেও সাম্প্রতিক ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি এবং ‘পোষ্যকোটা’ ইস্যুর কারণে নির্বাচন নিয়ে তাঁদের মধ্যে অনিশ্চয়তাও বিরাজ করছে।

এদিকে রাকসু (হল সংসদ ও সিনেট-এ ছাত্র প্রতিনিধি) নির্বাচন-২০২৫ সম্পর্কিত প্রচারণা কার্যক্রমের সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এফ নজরুল ইসলামের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ৫ অক্টোবর সকাল ৮টা থেকে ১৪ অক্টোবর রাত ১২টা পর্যন্ত প্রার্থীরা প্রচারণা চালাতে পারবেন। আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আচরণবিধি মেনে প্রচারণা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।স

ছাত্রদল মনোনীত ভিপি পদপ্রার্থী শেখ নূর উদ্দিন আবীর বলেন, 'পূজার ছুটির পর আবার প্রচার প্রচারণা শুরু হলো। আজকে (গতকাল) আমরা আমাদের “ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম” প্যানেল থেকে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে শহীদ শামসুজ্জোহা স্যারের কবর জিয়ারত করলাম। আমরা ভোটারদের কাছে যাচ্ছি, ভালো সাড়া দিচ্ছেন তাঁরা। আমারা আশাবাদী ভালো কিছুর জন্য। কিছু দুষ্কৃতকারী রাকসু বানচাল করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। কিন্তু যত প্যানেল আছে, প্রার্থীরা, ভোটাররা, নির্বাচন কমিশন--সবার সঠিক প্রচেষ্টা থাকলে ইনশা আল্লাহ সঠিক সময়ে রাকসু অনুষ্ঠিত হবে।'

মহিলাবিষয়ক সম্পাদক পদপ্রার্থী সামসাদ জাহান বলেন, 'ক্যাম্পাসে এখনো পুরোপুরি প্রাণ ফিরেনি, তবে শিক্ষার্থীদের পদচারণা ধীরে ধীরে বাড়ছে। আমরা আশা করছি, কয়েক দিনের মধ্যেই আগের মতো সরব হয়ে উঠবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। আমরা যাঁরা প্রার্থী রয়েছি, নতুন উদ্দ্যমে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলছি, তাঁদের মতামত নিচ্ছি এবং চেষ্টা করছি আবার সেই উৎসবমুখর পরিবেশটা ফিরিয়ে আনতে।'

সামসাদ জাহান আরও বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য শুধু ভোট চাওয়া নয় বরং শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাকসু নিয়ে একধরনের ইতিবাচক স্পিরিট জাগিয়ে তোলা। যাতে সবার মনে হয়, প্রকৃতপক্ষে রাকসু আমাদের নিজের অধিকার ও কণ্ঠের প্রতিফলন। আমরা চাই না এই নির্বাচনটি নামমাত্র আনুষ্ঠানিকতা হোক। এই নির্বাচন যেন কোনো গোষ্ঠী বা পক্ষের স্বার্থে প্রহসনে পরিণত না হয়।'

সামসাদ জাহান বলেন, 'অতীতে নানা ঘটনার কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে একধরনের অনিশ্চয়তা কাজ করছে। তবে আমরা আশাবাদী যদি সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায় এবং প্রশাসন নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখে, তাহলে এটি হতে পারে গণতান্ত্রিক চর্চার এক নতুন অধ্যায়। আমরা কোনো প্রহসন চাই না। আমরা চাই, নির্বাচনটি হোক অবাধ, নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর। যদি কেউ নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করে বা নির্বাচন বানচাল করতে চায়, তবে শিক্ষার্থীরা তা মেনে নেবো না।'

রাকসুর এজিএস পদপ্রার্থী সজিবুর রহমান বলেন, 'রাকসু নির্বাচন প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে অন্যরকম আমেজ তৈরি করেছে। পূজার ছুটি শেষ হলো। একাডেমিক কার্যক্রম আবার শুরু হয়েছে। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ফেরা শুরু করেছে। ছুটিতে প্রায় সব শিক্ষার্থী বাড়িতে থাকায় প্রার্থীরা অনলাইনে প্রচারণা চালিয়েছেন। কেউ আকর্ষণীয় ও ইউনিক ফটোকার্ড ব্যবহার করছেন, আবার কেউ ফানি ভিডিও কনটেন্ট বানিয়ে প্রচারণা করছেন। আমি পোষ্যকোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে ৪৪ ঘণ্টারও বেশি অনশনে থাকার কারণে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছিলাম, তাই অনলাইন প্রচারণায় সক্রিয় থাকতে পারিনি। তবুও অন্য প্রার্থীদের সৃজনশীল অনলাইন প্রচারণা ভালো লেগেছে। এখন নির্বাচনের বিষয়ে কিছুটা শঙ্কা আছে।যদি শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা আবারও পোষ্যকোটা ইস্যু তুলে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত করেন এবং রাকসু নিয়ে তালবাহানা হয়, তাহলে দলমত নির্বিশেষে সকল শিক্ষার্থীকে নিয়ে আমরা শক্ত হাতে তাদের প্রতিহত করব।'

উল্লেখ্য, গত ২০ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাদের ওপর হামলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি শুরু করেছিলেন। এতে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকায় এবং ২৯ সেপ্টেম্বর-৪ অক্টোবর পর্যন্ত পূজার ছুটির কারণে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস ছাড়তে থাকেন। ফলে ভোটার সংখ্যা কমতে থাকায় ছাত্রদলসহ স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ভোট পেছানোর দাবি তোলেন। যদিও ছাত্রশিবির এর বিরোধীতা করে। ফলে ২২ সেপ্টেম্বর রাতে জরুরি সভায় ২৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য রাকসু নির্বাচন পিছিয়ে ১৬ অক্টোবর নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়।

Ad 300x250

সম্পর্কিত