হুমায়ূন শফিক
স্বরাষ্ট্রসচিব নাসিমুল গনির পাকিস্তান সফরকে কেন্দ্র করে গণমাধ্যমে শুরু হয়েছে নানা ধরনের কানাঘুষা। পাকিস্তানের প্রতি এখনও আস্থায় আসতে পারছে না বাংলাদেশ। বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে গণহত্যা বা একাত্তর প্রশ্ন অমীমাংসিত রেখে এই সম্পর্ক কতটা টেকসই হবে, তা নিয়ে সন্দেহ আছে।
আবার কূটনীতি নিয়ে বিশ্লেষকেরা বলছেন, দেশের সঙ্গে দেশের সম্পর্ক হয় প্রয়োজনে। আবার কখনও তা হয় আস্থা বা বিশ্বাসের ভিত্তিতে। পাকিস্তান যদি বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক করতে আগ্রহী হয়, তাহলে সম্পর্ক তো হতেই পারে। তবে তার আগে কয়েকটি বিষয়ের সমাধান প্রয়োজন।
এর আগে ২৩ আগস্ট ঢাকায় এসেছিলেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। তাঁর সফরকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এ সফর পাকিস্তান-বাংলাদেশের সম্পর্কে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে। তাঁর ভাষায়, করাচি থেকে চট্টগ্রাম, কোয়েটা থেকে রাজশাহী, পেশোয়ার থেকে সিলেট এবং লাহোর থেকে ঢাকার তরুণেরা একসঙ্গে কাজ করে ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবে—এমন পরিবেশ গড়ে তোলাই লক্ষ্য।
শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর এবারই ঢাকায় এসেছেন কোনো শীর্ষ পাকিস্তানি কর্মকর্তা। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এটি কূটনৈতিক ও সামরিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে বড় ধরনের অগ্রগতি। তবে সাবেক কূটনীতিক মাসুদ খালিদ সতর্ক করে বলেছেন, অতীত ইতিহাসের কারণে দুই দেশের আস্থায় ঘাটতি এখনো রয়ে গেছে। তাঁর মতে, ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে গঠনমূলক সংলাপের জন্য একটি কাঠামো প্রয়োজন।
বিশ্লেষকেরা একমত যে ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নির্ভর করবে অর্থনীতির ওপর। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ ইমতিয়াজ আহমেদ স্ট্রিমকে বলেন, ‘যেকোনো দুই দেশের সম্পর্ক টেকসই হয় তখনই, যখন তাদের মধ্যে শক্তিশালী অর্থনৈতিক যোগসূত্র থাকে। রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলেও যদি অর্থনৈতিক সম্পর্ক না গড়ে ওঠে, তাহলে উন্নতির সুযোগ সীমিত থাকবে।’
এমন প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ঢাকায় এসে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস, পররাষ্ট্র উপদ্বেষ্টা তৌহিদ হোসেন এবং বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। পাকিস্তানের সাবেক কূটনীতিক আবদুল বাসিত এসব বৈঠককে তাৎপর্যপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছেন। গবেষক আলতাফ পারভেজ মনে করেন, ১৯৭১ সালের ঘটনাবলির একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান ছাড়া আস্থার ঘাটতি দূর হবে না।
ইমতিয়াজ আহমেদ আরও বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি রপ্তারি করছে। পাকিস্তান যদি বাজারে প্রবেশাধিকার না দেয়, তাহলে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা সরকারকে চাপ দেবে যাতে একইভাবে পাকিস্তানকেও সুবিধা না দেওয়া হয়। তাই রাজনৈতিক সদিচ্ছাকে অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে সমন্বয় করাই হবে মূল চ্যালেঞ্জ।
সম্প্রতি দুই দেশের ফরেন সার্ভিস একাডেমির মধ্যে প্রশিক্ষণ ও জ্ঞানবিনিময় চুক্তি হয়েছে। পাকিস্তান বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেবে। সংবাদ সংস্থা বিএসএস ও এপিপির মধ্যে কনটেন্ট শেয়ারিংয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, এসব উদ্যোগ সম্পর্ককে নতুন মাত্রা দেবে। তবে ইমতিয়াজ আহমেদ স্ট্রিমকে বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন ভিয়েতনামের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় আছে। পাকিস্তান আর আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী নয়। এখন প্রশ্ন হলো, পাকিস্তান আমাদের গার্মেন্টস শিল্পকে তাদের বাজারে প্রবেশাধিকার দেবে কি না।’
২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ পাকিস্তানে ৬১.৯৮ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, আর আমদানি করেছে ৬২৭.৮ মিলিয়ন ডলারের পণ্য, যেখানে ভারসাম্য স্পষ্টত পাকিস্তানের পক্ষে। বাংলাদেশের রপ্তানি মূলত তৈরি পোশাক, পাটজাত দ্রব্য, ওষুধ ও সিরামিকস; আর পাকিস্তান থেকে আসে তুলা, সুতা, রাসায়নিক, কাগজ ও শিল্প কাঁচামাল।
তবে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছে। করাচি-চট্টগ্রাম সরাসরি শিপিং লাইন চালু হওয়ায় ট্রানজিট সময় কমেছে ১১ দিনে, এতে খরচও কমছে। যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের সমঝোতা হয়েছে, যা বাণিজ্য ও বিনিয়োগকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেবে। ঢাকা-করাচি ও ঢাকা-লাহোর রুটে সরাসরি ফ্লাইট চালুর আলোচনাও চলছে। ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ে এতে গতি আসবে।
তবে বাংলাদেশের অর্থনীতি বড় হয়ে যাওয়ায় পাকিস্তানের জন্য চ্যালেঞ্জও তৈরি হয়েছে। তারা যদি শুল্ক সুবিধা ও বাজারে প্রবেশাধিকার না দেয়, তাহলে বাণিজ্য ভারসাম্য কমানো সম্ভব হবে না। এজন্য পারস্পরিক আস্থা তৈরি এবং ব্যবসায়ীদের লাভজনক পরিবেশ নিশ্চিত করাই এখন জরুরি।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সম্পর্ক ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। অর্থনীতি, কূটনীতি ও শিক্ষা-সংস্কৃতি—সব ক্ষেত্রেই যোগাযোগ বাড়ছে। তবে অনেকের মতে, নির্বাচিত সরকার ছাড়া এ সম্পর্ক স্থায়ী অগ্রগতি পাবে না। আলতাফ পারভেজ স্ট্রিমকে বলেন, ‘এখনকার সরকার হয়তো উদ্যোগ শুরু করে দিয়ে যাবে, কিন্তু আসল অগ্রগতি হবে নির্বাচিত সরকারের সময়। তখন পাকিস্তান, ভারত বা অন্য দেশের সঙ্গেও সম্পর্ক নতুনভাবে গড়ে উঠতে পারে।’
ইমতিয়াজ আহমেদ মনে করিয়ে দেন, অর্থনৈতিক কাঠামো যত শক্তিশালী হবে, রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব তত কম প্রভাব ফেলবে। তিনি উদাহরণ দেন ভারত-চীনের সম্পর্কের—যেখানে রাজনৈতিক টানাপোড়েন থাকলেও অর্থনীতি সম্পর্ককে টিকিয়ে রেখেছে। বাংলাদেশের জন্যও এ মডেল হতে পারে পথপ্রদর্শক।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বর্তমানে স্বাভাবিকীকরণের পথে এগোচ্ছে। সাম্প্রতিক কূটনৈতিক সফর, রাজনৈতিক সংলাপ, সামরিক ও পুলিশ প্রশিক্ষণ, শিক্ষা-সংস্কৃতি বিনিময়, সংবাদ সংস্থা ও বাণিজ্যিক উদ্যোগগুলো এই সম্পর্ককে নতুন মাত্রা দিয়েছে। সেই সঙ্গে কিছু বাস্তব প্রায়োগিক পদক্ষেপ বাণিজ্যিক সম্প্রসারণকে সহজ ও কার্যকর করছে।
তবে সম্পর্কের গভীর উন্নয়নের জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছাই যথেষ্ট নয়। পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যের ভারসাম্য স্থাপন, রপ্তানি বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি এবং ব্যবসায়ীদের আস্থা অর্জন সমান গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা পাকিস্তানের বাজারে প্রবেশাধিকার ও শুল্ক সুবিধা পেতে সচেতন, যা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণের প্রধান চাবিকাঠি।
৭১-এর ইতিহাসের ইস্যু এখনো অমীমাংসিত থাকায় সম্পর্কের স্থায়ীত্বে তা একটি বড় বাধা। নির্বাচিত সরকারই এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান এবং গভীর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা নিতে সক্ষম। অর্থনৈতিক কাঠামো শক্তিশালী থাকলে রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ থাকলেও সম্পর্কের একটি স্থিতিশীল ভিত্তি তৈরি হয়।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে সমন্বিত কূটনৈতিক সদিচ্ছা, অর্থনৈতিক সুযোগ সুবিধা, ইতিহাসের ইস্যুর সমাধান এবং নির্বাচিত সরকারের স্থিতিশীল নেতৃত্বের ওপর। এ সব ক্ষেত্রে সঠিক পদক্ষেপ নিলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ইতিবাচক পরিবর্তন সম্ভব।
স্বরাষ্ট্রসচিব নাসিমুল গনির পাকিস্তান সফরকে কেন্দ্র করে গণমাধ্যমে শুরু হয়েছে নানা ধরনের কানাঘুষা। পাকিস্তানের প্রতি এখনও আস্থায় আসতে পারছে না বাংলাদেশ। বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে গণহত্যা বা একাত্তর প্রশ্ন অমীমাংসিত রেখে এই সম্পর্ক কতটা টেকসই হবে, তা নিয়ে সন্দেহ আছে।
আবার কূটনীতি নিয়ে বিশ্লেষকেরা বলছেন, দেশের সঙ্গে দেশের সম্পর্ক হয় প্রয়োজনে। আবার কখনও তা হয় আস্থা বা বিশ্বাসের ভিত্তিতে। পাকিস্তান যদি বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক করতে আগ্রহী হয়, তাহলে সম্পর্ক তো হতেই পারে। তবে তার আগে কয়েকটি বিষয়ের সমাধান প্রয়োজন।
এর আগে ২৩ আগস্ট ঢাকায় এসেছিলেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। তাঁর সফরকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এ সফর পাকিস্তান-বাংলাদেশের সম্পর্কে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে। তাঁর ভাষায়, করাচি থেকে চট্টগ্রাম, কোয়েটা থেকে রাজশাহী, পেশোয়ার থেকে সিলেট এবং লাহোর থেকে ঢাকার তরুণেরা একসঙ্গে কাজ করে ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবে—এমন পরিবেশ গড়ে তোলাই লক্ষ্য।
শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর এবারই ঢাকায় এসেছেন কোনো শীর্ষ পাকিস্তানি কর্মকর্তা। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এটি কূটনৈতিক ও সামরিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে বড় ধরনের অগ্রগতি। তবে সাবেক কূটনীতিক মাসুদ খালিদ সতর্ক করে বলেছেন, অতীত ইতিহাসের কারণে দুই দেশের আস্থায় ঘাটতি এখনো রয়ে গেছে। তাঁর মতে, ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে গঠনমূলক সংলাপের জন্য একটি কাঠামো প্রয়োজন।
বিশ্লেষকেরা একমত যে ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নির্ভর করবে অর্থনীতির ওপর। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ ইমতিয়াজ আহমেদ স্ট্রিমকে বলেন, ‘যেকোনো দুই দেশের সম্পর্ক টেকসই হয় তখনই, যখন তাদের মধ্যে শক্তিশালী অর্থনৈতিক যোগসূত্র থাকে। রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলেও যদি অর্থনৈতিক সম্পর্ক না গড়ে ওঠে, তাহলে উন্নতির সুযোগ সীমিত থাকবে।’
এমন প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ঢাকায় এসে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস, পররাষ্ট্র উপদ্বেষ্টা তৌহিদ হোসেন এবং বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। পাকিস্তানের সাবেক কূটনীতিক আবদুল বাসিত এসব বৈঠককে তাৎপর্যপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছেন। গবেষক আলতাফ পারভেজ মনে করেন, ১৯৭১ সালের ঘটনাবলির একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান ছাড়া আস্থার ঘাটতি দূর হবে না।
ইমতিয়াজ আহমেদ আরও বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি রপ্তারি করছে। পাকিস্তান যদি বাজারে প্রবেশাধিকার না দেয়, তাহলে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা সরকারকে চাপ দেবে যাতে একইভাবে পাকিস্তানকেও সুবিধা না দেওয়া হয়। তাই রাজনৈতিক সদিচ্ছাকে অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে সমন্বয় করাই হবে মূল চ্যালেঞ্জ।
সম্প্রতি দুই দেশের ফরেন সার্ভিস একাডেমির মধ্যে প্রশিক্ষণ ও জ্ঞানবিনিময় চুক্তি হয়েছে। পাকিস্তান বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেবে। সংবাদ সংস্থা বিএসএস ও এপিপির মধ্যে কনটেন্ট শেয়ারিংয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, এসব উদ্যোগ সম্পর্ককে নতুন মাত্রা দেবে। তবে ইমতিয়াজ আহমেদ স্ট্রিমকে বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন ভিয়েতনামের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় আছে। পাকিস্তান আর আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী নয়। এখন প্রশ্ন হলো, পাকিস্তান আমাদের গার্মেন্টস শিল্পকে তাদের বাজারে প্রবেশাধিকার দেবে কি না।’
২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ পাকিস্তানে ৬১.৯৮ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, আর আমদানি করেছে ৬২৭.৮ মিলিয়ন ডলারের পণ্য, যেখানে ভারসাম্য স্পষ্টত পাকিস্তানের পক্ষে। বাংলাদেশের রপ্তানি মূলত তৈরি পোশাক, পাটজাত দ্রব্য, ওষুধ ও সিরামিকস; আর পাকিস্তান থেকে আসে তুলা, সুতা, রাসায়নিক, কাগজ ও শিল্প কাঁচামাল।
তবে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছে। করাচি-চট্টগ্রাম সরাসরি শিপিং লাইন চালু হওয়ায় ট্রানজিট সময় কমেছে ১১ দিনে, এতে খরচও কমছে। যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের সমঝোতা হয়েছে, যা বাণিজ্য ও বিনিয়োগকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেবে। ঢাকা-করাচি ও ঢাকা-লাহোর রুটে সরাসরি ফ্লাইট চালুর আলোচনাও চলছে। ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ে এতে গতি আসবে।
তবে বাংলাদেশের অর্থনীতি বড় হয়ে যাওয়ায় পাকিস্তানের জন্য চ্যালেঞ্জও তৈরি হয়েছে। তারা যদি শুল্ক সুবিধা ও বাজারে প্রবেশাধিকার না দেয়, তাহলে বাণিজ্য ভারসাম্য কমানো সম্ভব হবে না। এজন্য পারস্পরিক আস্থা তৈরি এবং ব্যবসায়ীদের লাভজনক পরিবেশ নিশ্চিত করাই এখন জরুরি।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সম্পর্ক ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। অর্থনীতি, কূটনীতি ও শিক্ষা-সংস্কৃতি—সব ক্ষেত্রেই যোগাযোগ বাড়ছে। তবে অনেকের মতে, নির্বাচিত সরকার ছাড়া এ সম্পর্ক স্থায়ী অগ্রগতি পাবে না। আলতাফ পারভেজ স্ট্রিমকে বলেন, ‘এখনকার সরকার হয়তো উদ্যোগ শুরু করে দিয়ে যাবে, কিন্তু আসল অগ্রগতি হবে নির্বাচিত সরকারের সময়। তখন পাকিস্তান, ভারত বা অন্য দেশের সঙ্গেও সম্পর্ক নতুনভাবে গড়ে উঠতে পারে।’
ইমতিয়াজ আহমেদ মনে করিয়ে দেন, অর্থনৈতিক কাঠামো যত শক্তিশালী হবে, রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব তত কম প্রভাব ফেলবে। তিনি উদাহরণ দেন ভারত-চীনের সম্পর্কের—যেখানে রাজনৈতিক টানাপোড়েন থাকলেও অর্থনীতি সম্পর্ককে টিকিয়ে রেখেছে। বাংলাদেশের জন্যও এ মডেল হতে পারে পথপ্রদর্শক।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বর্তমানে স্বাভাবিকীকরণের পথে এগোচ্ছে। সাম্প্রতিক কূটনৈতিক সফর, রাজনৈতিক সংলাপ, সামরিক ও পুলিশ প্রশিক্ষণ, শিক্ষা-সংস্কৃতি বিনিময়, সংবাদ সংস্থা ও বাণিজ্যিক উদ্যোগগুলো এই সম্পর্ককে নতুন মাত্রা দিয়েছে। সেই সঙ্গে কিছু বাস্তব প্রায়োগিক পদক্ষেপ বাণিজ্যিক সম্প্রসারণকে সহজ ও কার্যকর করছে।
তবে সম্পর্কের গভীর উন্নয়নের জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছাই যথেষ্ট নয়। পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যের ভারসাম্য স্থাপন, রপ্তানি বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি এবং ব্যবসায়ীদের আস্থা অর্জন সমান গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা পাকিস্তানের বাজারে প্রবেশাধিকার ও শুল্ক সুবিধা পেতে সচেতন, যা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণের প্রধান চাবিকাঠি।
৭১-এর ইতিহাসের ইস্যু এখনো অমীমাংসিত থাকায় সম্পর্কের স্থায়ীত্বে তা একটি বড় বাধা। নির্বাচিত সরকারই এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান এবং গভীর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা নিতে সক্ষম। অর্থনৈতিক কাঠামো শক্তিশালী থাকলে রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ থাকলেও সম্পর্কের একটি স্থিতিশীল ভিত্তি তৈরি হয়।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে সমন্বিত কূটনৈতিক সদিচ্ছা, অর্থনৈতিক সুযোগ সুবিধা, ইতিহাসের ইস্যুর সমাধান এবং নির্বাচিত সরকারের স্থিতিশীল নেতৃত্বের ওপর। এ সব ক্ষেত্রে সঠিক পদক্ষেপ নিলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ইতিবাচক পরিবর্তন সম্ভব।
বেসরকারি ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ-এর শিক্ষক ড. মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেনের ভেরিফায়েড ফেসবুক একাউন্টে দেওয়া দুটি পোস্ট ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। এরইমধ্যে পোস্টগুলো তিনি সরিয়ে নিয়ে ‘দুঃখপ্রকাশ’ করেছেন।
১৭ মিনিট আগেসম্প্রতি এক ওয়াজ মাহফিলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) সম্পর্কে ‘সম্মানহানিকর, কুরুচিপূর্ণ ও মিথ্যা’ মন্তব্যের অভিযোগ এনে বিতর্কিত ইসলামিক বক্তা মুফতি আমির হামজাকে জনসম্মুক্ষে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনার দাবি জানিয়ে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগেগাজীপুরের টঙ্গীতে কেমিক্যাল গুদামের আগুন নেভাতে গিয়ে দগ্ধ ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সর্বোচ্চ মানের চিকিৎসা নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
১ ঘণ্টা আগেবিশ্বকে বদলে দিতে তরুণদের ‘থ্রি-জিরো ক্লাব’ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
১ ঘণ্টা আগে