leadT1ad

রাজনৈতিক চাপ নয়, বিরূপ প্রতিক্রিয়াকে প্রতীক তালিকা সংশোধনের কারণ বলছে ইসি

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি প্রকাশিত নির্বাচনী প্রতীক তালিকায় কিছু পরিবর্তন ও সংযোজন রাজনৈতিক দলের চাপের কারণে নয়; বরং কিছু প্রতীক নিয়ে বিরূপ মন্তব্য ও যৌক্তিকতার প্রশ্ন ওঠায় কমিশন তা সংশোধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর নির্বাচন ভবনে সরকারের বিভিন্ন বিভাগ ও মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে জাতীয় নির্বাচনের প্রাকনির্বাচনী সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা অনুযায়ী তফসিল সংশোধন করেছি। আগে ১১৫টি প্রতীক ছিল, সেখান থেকে ১৬টি প্রতীক বাদ দিয়ে নতুন করে ১১৯টি প্রতীক প্রকাশ করা হয়েছে। কিছু প্রতীক নিয়ে যে মন্তব্য এসেছে—কেন রাখা হলো বা রাখা উচিত ছিল কি না—এই বিবেচনায় সংশোধন আনা হয়েছে।’

গত চার মাসের টানাপড়েন শেষে আজ ‘শাপলা কলি’কে অন্তর্ভুক্ত করে নতুন প্রতীক তালিকা প্রকাশ করেছে ইসি।

সচিব স্পষ্ট করে বলেন, ‘শাপলা এবং শাপলা কলি এক নয়। এ দুটো আলাদা প্রতীক। কেউ কেউ এ দুটোকে এক মনে করে বিভ্রান্ত হচ্ছেন, কিন্তু প্রতীক তালিকায় এগুলো ভিন্ন। এটি কারও দাবির ভিত্তিতে নয়, কমিশনের নিজস্ব বিবেচনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দল (এনসিপি) “শাপলা” প্রতীক চেয়েছিল। কিন্তু “শাপলা কলি” আলাদা প্রতীক। এটা কমিশন যথাযথভাবে বিবেচনা করেছে, কোনো রাজনৈতিক দলের দাবি পূরণের বিষয় নয়।’

সিনিয়র সচিব জানান, কিছু প্রতীক নিয়ে জনগণ ও বিভিন্ন মহল থেকে নেতিবাচক মন্তব্য এসেছে। কমিশন সেই মতামত বিবেচনা করেই তালিকা সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেয়। ‘ওভার দ্য পিরিয়ড অব টাইম কিছু প্রতীক নিয়ে বিরূপ মতামত এসেছে। কমিশন মনে করেছে, ঠিক আছে, সংশোধন করলে করা যেতে পারে—এই বিবেচনাতেই করা হয়েছে,’ বলেন আখতার আহমেদ।

তিনি বলেন, কমিশনের এ সিদ্ধান্ত কোনো নির্দিষ্ট দলের দাবির কারণে নয়, বরং বাস্তব প্রয়োজন ও জনমতের আলোকে নেওয়া হয়েছে।

রাজনৈতিক দলের সমালোচনা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি সচিব। তিনি বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক দলের মন্তব্যের ওপর আমি কোনো মতামত দেব না। আমরা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব পালন করছি। কমিশন স্বাধীন প্রতিষ্ঠান—তারা যা প্রয়োজন মনে করবে, তাই করবে।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখানে নতুন কোনো বিতর্কের সুযোগ নেই। কমিশন প্রমাণ করেছে, তারা স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।’

নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের বিষয়ে আখতার আহমেদ জানান, প্রক্রিয়াটি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। ‘মাঠ পর্যায়ের তথ্য কমিশনার আনোয়ারুল সরকার সাহেব পর্যালোচনা করছেন। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই চূড়ান্ত করা হবে,’ বলেন তিনি।

সাপ্তাহিক ছুটির মধ্যেও কমিশন কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা এখন ২৪ ঘণ্টা, ৭ দিন কাজ করছি। বিষয়গুলো যেন ত্রুটিমুক্ত থাকে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’

গণভোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আজকে যে দল এসেছেন, তারা নভেম্বরে গণভোট আয়োজনের দাবি জানাতে এসেছেন। আমরা তাদের কথা শুনেছি। তবে গণভোটের সিদ্ধান্ত সরকার নেবে, এ বিষয়ে কমিশনের কোনো সিদ্ধান্ত নয়।’

প্রতিদিন রাজনৈতিক দলগুলো কমিশনে এসে দাবি জানাচ্ছে—এ প্রসঙ্গে আখতার আহমেদ বলেন, ‘রাজনৈতিক দল, ভোটার ও নির্বাচন কমিশন—এই তিনটি ধারাই নির্বাচনের অংশ। কেউ দেখা করতে এলে সেটা চাপ নয়, বরং নির্বাচন প্রক্রিয়ারই অংশ।’

শেষে তিনি বলেন, ‘আমরা কাউকে চাপ হিসেবে দেখি না। সবাই যাতে অংশ নিতে পারে, সেটা নিশ্চিত করাই আমাদের দায়িত্ব।’

ভোটকেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ড বা নিরাপত্তা-সংক্রান্ত ইস্যুতে তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ফায়ার সার্ভিসকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। নির্বাচনকালীন সময়ে এই বিষয়গুলো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ই দেখবে বলে জানান আখতার আহমেদ।

Ad 300x250

সম্পর্কিত