স্ট্রিম ডেস্ক

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরে উত্তাল বাংলাদেশ। এই মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বাংলাদেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। প্রথমে বিক্ষোভ হয় ঢাকার শাহবাগ এলাকায়। পরে তা চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়ে।
বিক্ষোভকারীরা ন্যায়বিচারের দাবি জানান। তারা সড়ক অবরোধ করেন। হাদির নাম ধরে স্লোগান দেন। অল্প সময়ের মধ্যেই পরিস্থিতি সহিংস হয়ে ওঠে। দেশের দুটি শীর্ষ পত্রিকা—প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানো হয়। পরে সেখানে আগুন দেওয়া হয়। সে সময় ভেতরে সাংবাদিকরা আটকা পড়েন। পরে তাঁদের উদ্ধার করা হয়।
সাবেক আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন স্থাপনাও হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়। একই সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক স্থাপনার দিকে মিছিল করার চেষ্টা হয়। এসব মিছিলে ভারতবিরোধী স্লোগান দেওয়া হয়।
বাংলাদেশের এই পরিস্থিতির খবর বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান, রয়টার্স, সিএনএনসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করা হয়। এ ছাড়া টাইমস অব ইন্ডিয়া, দ্য হিন্দু ও হিন্দুস্তান টাইমসসহ ভারতীয় গণমাধ্যগুলোতেও এই খবর ব্যাপক গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করা হয়।
বিবিসি
‘তরুণ প্রতিবাদী নেতার মৃত্যুর পর বাংলাদেশে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে’, এই শিরানামে খবরটি প্রচার করেছে বিবিসি। খবরে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা তরুণ আন্দোলনের এক শীর্ষ নেতা শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর বাংলাদেশে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে।
ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পরদিন এই হামলা ঘটে। হাদি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে চেয়েছিলেন।
মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে রাজধানীতে বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভকারীরা ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোর কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। সেনা মোতায়েন করা হয় এবং আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করা হয়।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস হাদির মৃত্যুকে জাতির জন্য বড় ক্ষতি বলে মন্তব্য করেন। সরকার জাতীয় শোক ঘোষণা করে। তিনি বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত হামলা এবং নির্বাচন বানচালের চেষ্টা। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে।
এই ঘটনা ঘটে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পরের রাজনৈতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে। ওই আন্দোলনের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান এবং পরে মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন।
দ্য গার্ডিয়ান
‘বাংলাদেশে গণতন্ত্রপন্থী নেতার হাসপাতালে মৃত্যুর পর সহিংস বিক্ষোভ’, এই শিরোনামে খবরটি প্রচার করে দ্য গার্ডিয়ান। খবরে বলা হয়, বাংলাদেশের ২০২৪ সালের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম নেতা শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। ঢাকায় মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
মৃত্যুর খবর প্রকাশের পর হাজারো মানুষ ঢাকার রাস্তায় নেমে আসে। তারা হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানায়। এ সময় ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোসহ বেশ কয়েকটি ভবনে অগ্নিসংযোগ করা হয়। অনেক সাংবাদিক ভেতরে আটকা পড়েন। চট্টগ্রামসহ অন্য শহরেও সহিংসতার খবর পাওয়া যায়।
হাদি ছিলেন শেখ হাসিনার দীর্ঘ শাসনের অবসান ঘটানো আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ নেতা। তিনি ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে সংসদ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। বিক্ষোভকারীরা কয়েকটি স্থানে সড়ক অবরোধ করেন এবং ভারতের কূটনৈতিক কর্মকর্তার বাসভবনের সামনে বিক্ষোভের চেষ্টা করেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস হাদির মৃত্যুকে জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি বলে মন্তব্য করেন। সরকার বিশেষ দোয়া ও শোক ঘোষণা করেছে। পুলিশ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ধরতে অভিযান শুরু করেছে এবং সন্দেহভাজনদের ছবি প্রকাশ করে পুরস্কার ঘোষণা করেছে।
এই ঘটনা আসন্ন নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে।
রয়টার্স
রয়টার্সের খবরের শিরোনাম করা হয়েছে, ‘ছাত্রনেতার মৃত্যুতে অস্থিরতায় কেঁপে উঠল বাংলাদেশ’। খবরে বলা হয়, তরুণ নেতা শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর বাংলাদেশে একাধিক শহরে সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ৩২ বছর বয়সী হাদি ছিলেন ছাত্রনেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম মুখপাত্র এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
তাঁর মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। বিক্ষোভকারীরা প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। চট্টগ্রামসহ অন্যান্য শহরেও সহিংসতার ঘটনা ঘটে। আওয়ামী লীগ-সংশ্লিষ্ট স্থাপনা, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ও গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো হামলা ও অবরোধের শিকার হয়।
হাদি ছিলেন ভারতবিরোধী অবস্থানের জন্য পরিচিত। তাঁর মৃত্যুর পর আবারও ভারতবিরোধী বিক্ষোভ জোরদার হয়। ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের দিকে মিছিলের চেষ্টা এবং চট্টগ্রামে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনাও ঘটে।
এই সহিংসতা ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও অস্থির করে তুলেছে।
এসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)
এপির খবরের শিরোনাম করা হয়েছে, ‘২০২৪ অভ্যুত্থানের এক অ্যাকটিভিস্টের মৃত্যুর পর বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় দৈনিকগুলোর অফিসে বিক্ষোভকারীদের হামলা’।
খবরে বলা হয়, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর বাংলাদেশে সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর মৃত্যুর খবর প্রকাশের পর ঢাকায় বিক্ষোভকারীরা দেশের শীর্ষ দুই পত্রিকা প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা চালায় এবং আগুন দেয়।
শরিফ ওসমান হাদি ‘ইনকিলাব মঞ্চ’ নামের একটি সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের মুখপাত্র ছিলেন। তিনি ভারত ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কড়া সমালোচক ছিলেন এবং আসন্ন ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন।
হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শাহবাগসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এবং দেশের অন্যান্য স্থানে বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভকারীরা ভারতবিরোধী ও ধর্মীয় স্লোগান দেয়। ঢাকার সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানটেও হামলা চালানো হয়। নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন থাকলেও শুরুতে তারা বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করেনি।
এই সহিংসতা অন্তর্বর্তী সরকারের সময়কালে রাজনৈতিক অস্থিরতা, ইসলামপন্থীদের উত্থান এবং আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে বাংলাদেশের পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে।
আল-জাজিরা
আল-জাজিরার খবরের শিরোনাম করা হয়েছে, ‘২০২৪ সালের অভুত্থানের অ্যাকটিভিস্ট হত্যার পর বাংলাদেশে অস্থিরতা শুরু হয়েছে’।
খবরে বলা হয়, তরুণ নেতা শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সহিংসতার পর ঢাকাসহ বাংলাদেশের বড় শহরগুলোতে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনের আগে নতুন করে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এই সহিংসতা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলের সহিংস উত্তরাধিকারকেও সামনে এনেছে। তাঁর দল নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়েও উত্তেজনা বেড়েছে। এসব ঘটনায় অনেক পরিবার এখনো ন্যায়বিচারের অপেক্ষায় রয়েছে, যা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম
ভারতের টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরের শিরোনাম করা হয়, ‘নিঃশ্বাস নিতে পারছি না, তোমরা আমাদের মেরে ফেলছো: বাংলাদেশের মিডিয়া হাউসগুলোতে আগুনের আটকা পড়ে সাংবাদিকদের আকুতি’।
খবরে বলা হয়, তরুণ নেতা শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর বাংলাদেশে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ হয় এবং প্রধান দুটি সংবাদমাধ্যম—ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোর কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে বহু সাংবাদিক ও কর্মী ভবনের ভেতরে আটকা পড়েন। পরে ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনীর সহায়তায় তাঁদের উদ্ধার করা হয়।
হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে তাঁর সমর্থকেরা ঢাকার রাস্তায় নেমে আসে। শাহবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় স্লোগান ও বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভকারীরা ভারতের কূটনৈতিক স্থাপনার আশপাশে জড়ো হয় এবং ভারতবিরোধী বক্তব্য দেয়। চট্টগ্রামসহ অন্যান্য শহরেও সহিংসতার খবর পাওয়া যায়।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়েও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের সংসদীয় একটি কমিটি সতর্ক করে বলেছে, বর্তমান পরিস্থিতি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভারসাম্যে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে এবং এটি ভারতের জন্য দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে।
দ্য হিন্দুর খবরের শিরোনাম, ‘তরুণ নেতার মৃত্যুর পর বাংলাদেশে উত্তেজনা; গণমাধ্যম ভবনে আগুন, সাংবাদিকদের উপর হামলা’।
খবরে বলা হয়, শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে বাংলাদেশে ব্যাপক সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। তাঁর মৃত্যু সংবাদ জানাজানি হওয়ার পর রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে পড়ে এবং হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি করে।
রাজনৈতিক ও সামাজিক উত্তেজনা ফিরে এসেছে, বিশেষ করে ভারতের প্রতি বিরোধী স্লোগান ও রাজনৈতিক বিরোধিতা জোরদার হয়েছে।
এ ঘটনায় ঢাকাসহ অন্যান্য শহরে নিরাপত্তা ও অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে পরিস্থিতির আরও অস্থির হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এ ছাড়া হিন্দুস্তান টাইমস, এনডিটিভিসহ ভারতের সব সংবাদ মাধ্যমেই বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে খবর প্রচার করা হয়েছে।
সামগ্রিকভাবে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এই ঘটনাকে বাংলাদেশের গণতন্ত্রে উত্তরণের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হিসেবে তুলে ধরছে। তারা দেশের রাজনৈতিক রূপান্তরকে এখনো ভঙ্গুর বলে উল্লেখ করছে। প্রতিবেদনগুলোতে ঘটনাস্থলের শক্তিশালী ও জীবন্ত চিত্র ব্যবহার করা হয়েছে। এতে সংকটের গভীরতা আরও স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরে উত্তাল বাংলাদেশ। এই মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বাংলাদেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। প্রথমে বিক্ষোভ হয় ঢাকার শাহবাগ এলাকায়। পরে তা চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়ে।
বিক্ষোভকারীরা ন্যায়বিচারের দাবি জানান। তারা সড়ক অবরোধ করেন। হাদির নাম ধরে স্লোগান দেন। অল্প সময়ের মধ্যেই পরিস্থিতি সহিংস হয়ে ওঠে। দেশের দুটি শীর্ষ পত্রিকা—প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানো হয়। পরে সেখানে আগুন দেওয়া হয়। সে সময় ভেতরে সাংবাদিকরা আটকা পড়েন। পরে তাঁদের উদ্ধার করা হয়।
সাবেক আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন স্থাপনাও হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়। একই সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক স্থাপনার দিকে মিছিল করার চেষ্টা হয়। এসব মিছিলে ভারতবিরোধী স্লোগান দেওয়া হয়।
বাংলাদেশের এই পরিস্থিতির খবর বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান, রয়টার্স, সিএনএনসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করা হয়। এ ছাড়া টাইমস অব ইন্ডিয়া, দ্য হিন্দু ও হিন্দুস্তান টাইমসসহ ভারতীয় গণমাধ্যগুলোতেও এই খবর ব্যাপক গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করা হয়।
বিবিসি
‘তরুণ প্রতিবাদী নেতার মৃত্যুর পর বাংলাদেশে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে’, এই শিরানামে খবরটি প্রচার করেছে বিবিসি। খবরে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা তরুণ আন্দোলনের এক শীর্ষ নেতা শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর বাংলাদেশে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে।
ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পরদিন এই হামলা ঘটে। হাদি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে চেয়েছিলেন।
মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে রাজধানীতে বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভকারীরা ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোর কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। সেনা মোতায়েন করা হয় এবং আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করা হয়।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস হাদির মৃত্যুকে জাতির জন্য বড় ক্ষতি বলে মন্তব্য করেন। সরকার জাতীয় শোক ঘোষণা করে। তিনি বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত হামলা এবং নির্বাচন বানচালের চেষ্টা। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে।
এই ঘটনা ঘটে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পরের রাজনৈতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে। ওই আন্দোলনের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান এবং পরে মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন।
দ্য গার্ডিয়ান
‘বাংলাদেশে গণতন্ত্রপন্থী নেতার হাসপাতালে মৃত্যুর পর সহিংস বিক্ষোভ’, এই শিরোনামে খবরটি প্রচার করে দ্য গার্ডিয়ান। খবরে বলা হয়, বাংলাদেশের ২০২৪ সালের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম নেতা শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। ঢাকায় মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
মৃত্যুর খবর প্রকাশের পর হাজারো মানুষ ঢাকার রাস্তায় নেমে আসে। তারা হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানায়। এ সময় ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোসহ বেশ কয়েকটি ভবনে অগ্নিসংযোগ করা হয়। অনেক সাংবাদিক ভেতরে আটকা পড়েন। চট্টগ্রামসহ অন্য শহরেও সহিংসতার খবর পাওয়া যায়।
হাদি ছিলেন শেখ হাসিনার দীর্ঘ শাসনের অবসান ঘটানো আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ নেতা। তিনি ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে সংসদ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। বিক্ষোভকারীরা কয়েকটি স্থানে সড়ক অবরোধ করেন এবং ভারতের কূটনৈতিক কর্মকর্তার বাসভবনের সামনে বিক্ষোভের চেষ্টা করেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস হাদির মৃত্যুকে জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি বলে মন্তব্য করেন। সরকার বিশেষ দোয়া ও শোক ঘোষণা করেছে। পুলিশ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ধরতে অভিযান শুরু করেছে এবং সন্দেহভাজনদের ছবি প্রকাশ করে পুরস্কার ঘোষণা করেছে।
এই ঘটনা আসন্ন নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে।
রয়টার্স
রয়টার্সের খবরের শিরোনাম করা হয়েছে, ‘ছাত্রনেতার মৃত্যুতে অস্থিরতায় কেঁপে উঠল বাংলাদেশ’। খবরে বলা হয়, তরুণ নেতা শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর বাংলাদেশে একাধিক শহরে সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ৩২ বছর বয়সী হাদি ছিলেন ছাত্রনেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম মুখপাত্র এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
তাঁর মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। বিক্ষোভকারীরা প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। চট্টগ্রামসহ অন্যান্য শহরেও সহিংসতার ঘটনা ঘটে। আওয়ামী লীগ-সংশ্লিষ্ট স্থাপনা, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ও গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো হামলা ও অবরোধের শিকার হয়।
হাদি ছিলেন ভারতবিরোধী অবস্থানের জন্য পরিচিত। তাঁর মৃত্যুর পর আবারও ভারতবিরোধী বিক্ষোভ জোরদার হয়। ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের দিকে মিছিলের চেষ্টা এবং চট্টগ্রামে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনাও ঘটে।
এই সহিংসতা ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও অস্থির করে তুলেছে।
এসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)
এপির খবরের শিরোনাম করা হয়েছে, ‘২০২৪ অভ্যুত্থানের এক অ্যাকটিভিস্টের মৃত্যুর পর বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় দৈনিকগুলোর অফিসে বিক্ষোভকারীদের হামলা’।
খবরে বলা হয়, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর বাংলাদেশে সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর মৃত্যুর খবর প্রকাশের পর ঢাকায় বিক্ষোভকারীরা দেশের শীর্ষ দুই পত্রিকা প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা চালায় এবং আগুন দেয়।
শরিফ ওসমান হাদি ‘ইনকিলাব মঞ্চ’ নামের একটি সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের মুখপাত্র ছিলেন। তিনি ভারত ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কড়া সমালোচক ছিলেন এবং আসন্ন ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন।
হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শাহবাগসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এবং দেশের অন্যান্য স্থানে বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভকারীরা ভারতবিরোধী ও ধর্মীয় স্লোগান দেয়। ঢাকার সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানটেও হামলা চালানো হয়। নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন থাকলেও শুরুতে তারা বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করেনি।
এই সহিংসতা অন্তর্বর্তী সরকারের সময়কালে রাজনৈতিক অস্থিরতা, ইসলামপন্থীদের উত্থান এবং আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে বাংলাদেশের পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে।
আল-জাজিরা
আল-জাজিরার খবরের শিরোনাম করা হয়েছে, ‘২০২৪ সালের অভুত্থানের অ্যাকটিভিস্ট হত্যার পর বাংলাদেশে অস্থিরতা শুরু হয়েছে’।
খবরে বলা হয়, তরুণ নেতা শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সহিংসতার পর ঢাকাসহ বাংলাদেশের বড় শহরগুলোতে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনের আগে নতুন করে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এই সহিংসতা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলের সহিংস উত্তরাধিকারকেও সামনে এনেছে। তাঁর দল নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়েও উত্তেজনা বেড়েছে। এসব ঘটনায় অনেক পরিবার এখনো ন্যায়বিচারের অপেক্ষায় রয়েছে, যা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম
ভারতের টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরের শিরোনাম করা হয়, ‘নিঃশ্বাস নিতে পারছি না, তোমরা আমাদের মেরে ফেলছো: বাংলাদেশের মিডিয়া হাউসগুলোতে আগুনের আটকা পড়ে সাংবাদিকদের আকুতি’।
খবরে বলা হয়, তরুণ নেতা শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর বাংলাদেশে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ হয় এবং প্রধান দুটি সংবাদমাধ্যম—ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোর কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে বহু সাংবাদিক ও কর্মী ভবনের ভেতরে আটকা পড়েন। পরে ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনীর সহায়তায় তাঁদের উদ্ধার করা হয়।
হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে তাঁর সমর্থকেরা ঢাকার রাস্তায় নেমে আসে। শাহবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় স্লোগান ও বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভকারীরা ভারতের কূটনৈতিক স্থাপনার আশপাশে জড়ো হয় এবং ভারতবিরোধী বক্তব্য দেয়। চট্টগ্রামসহ অন্যান্য শহরেও সহিংসতার খবর পাওয়া যায়।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়েও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের সংসদীয় একটি কমিটি সতর্ক করে বলেছে, বর্তমান পরিস্থিতি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভারসাম্যে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে এবং এটি ভারতের জন্য দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে।
দ্য হিন্দুর খবরের শিরোনাম, ‘তরুণ নেতার মৃত্যুর পর বাংলাদেশে উত্তেজনা; গণমাধ্যম ভবনে আগুন, সাংবাদিকদের উপর হামলা’।
খবরে বলা হয়, শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে বাংলাদেশে ব্যাপক সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। তাঁর মৃত্যু সংবাদ জানাজানি হওয়ার পর রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে পড়ে এবং হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি করে।
রাজনৈতিক ও সামাজিক উত্তেজনা ফিরে এসেছে, বিশেষ করে ভারতের প্রতি বিরোধী স্লোগান ও রাজনৈতিক বিরোধিতা জোরদার হয়েছে।
এ ঘটনায় ঢাকাসহ অন্যান্য শহরে নিরাপত্তা ও অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে পরিস্থিতির আরও অস্থির হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এ ছাড়া হিন্দুস্তান টাইমস, এনডিটিভিসহ ভারতের সব সংবাদ মাধ্যমেই বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে খবর প্রচার করা হয়েছে।
সামগ্রিকভাবে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এই ঘটনাকে বাংলাদেশের গণতন্ত্রে উত্তরণের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হিসেবে তুলে ধরছে। তারা দেশের রাজনৈতিক রূপান্তরকে এখনো ভঙ্গুর বলে উল্লেখ করছে। প্রতিবেদনগুলোতে ঘটনাস্থলের শক্তিশালী ও জীবন্ত চিত্র ব্যবহার করা হয়েছে। এতে সংকটের গভীরতা আরও স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।

কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান বিন জাসিম আল থানি সতর্ক করেছেন, গাজায় ইসরায়েলের প্রতিদিনের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন পুরো শান্তিচুক্তি প্রক্রিয়াকে বিপদের মুখে ফেলছে। তিনি দ্রুত চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর মতে, এতে গাজায় চলমান ভয়াবহ যুদ্ধের অবসান ঘটানো সম্ভব হবে।
১ দিন আগে
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধের মধ্যেও ভারতের রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ২০২৫ সালের নভেম্বরে ভারতের রপ্তানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
১ দিন আগে
প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্বাঞ্চলে সর্বশেষ এক হামলায় চারজন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এই হামলার ঘোষণা আসে এমন এক সময়ে, যখন মার্কিন পার্লামেন্টে কংগ্রেসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভেনেজুয়েলা নীতির বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাবগুলো বাতিল হয়ে যায়।
১ দিন আগে
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার (১৭ ডিসেম্বর ২০২৫) হোয়াইট হাউস থেকে মার্কিন জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। এটি ছিল একটি বিরল প্রাইমটাইম ভাষণ। ট্রাম্প ভাষণটি দেন হোয়াইট হাউসের ডিপ্লোম্যাটিক রিসেপশন রুম থেকে। ভাষণের দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ২৫ মিনিট।
১ দিন আগে