leadT1ad

ক্যারিবীয় সাগরে মার্কিন রণতরী, মাদুরোকে হটাতেই ট্রাম্পের এত আয়োজন?

স্ট্রিম ডেস্ক
স্ট্রিম ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয়ান সাগরে নৌযানকে লক্ষ্য করে ১০ বার বিমান হামলা চালিয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্র হঠাৎ করেই ক্যারিবীয়ান সাগরে ভেনেজুয়েলার আশপাশে সামরিক উপস্থিতি বাড়াতে শুরু করেছে। সামরিক উপস্থিতি বাড়ানো মানে—বিশ্বের সর্ববৃহৎ রণতরী থেকে শুরু করে এফ-৩৫ যুদ্ধ বিমান, পরমাণু শক্তি চালিত সাবমেরিন এবং কয়েক হাজার সেনার উপস্থিতি।

যুক্তরাষ্ট্র এতকিছু করছে শুধু ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে মাদক পাচারকারী চক্র নেটওয়ার্ক ঠেকাতে বা ধ্বংস করতে? কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই বলে আসছে আঞ্চলিক মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবেই এসব করছে দেশটি।

শুক্রবারই (২৪ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র তাদের সর্ববৃহৎ বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড ভূমধ্যসাগর থেকে ক্যারিবীয়ান সাগরে পাঠায়।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের এসব পদক্ষেপকে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো ‘ভুয়া বয়ানে’ যুদ্ধ বাধানোর পাঁয়তারা বলে অভিযোগ করেছেন। গতকাল রণতরী পাঠানোর মধ্য দিয়ে ক্যারিবীয়ান অঞ্চলে উত্তেজনা আরেক ধাপ বৃদ্ধির পরই মাদুরো এই অভিযোগ করেন।

এর আগে, গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ডকে ভূমধ্যসাগর থেকে ক্যারিবীয়ান সাগরে নেওয়ার নির্দেশ দেন। এই রণতরী একসঙ্গে ৯০টি যুদ্ধ বিমান বহন করতে পারে।

এই নির্দেশনার পরই রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরো বলেন, আগ্রাসন চালাতে মিথ্যা বয়ান তৈরি করছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তারা আর কোনো যুদ্ধে জড়াবে না। কিন্তু তারা এখন মিথ্যা বলে যুদ্ধের ক্ষেত্র তৈরি করছে।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয়ান সাগরে নৌযানকে লক্ষ্য করে ১০ বার বিমান হামলা চালিয়েছে। দেশটির বলছে, এসব নৌযানে মাদক পাচারকারীরা ছিল। এর মধ্যে গতকাল চালানো একটি হামলাও রয়েছে। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দাবি, গতকালের ওই হামলায় ছয় মাদক পাচারকারী নিহত হয়েছেন। নৌযানটি ভেনেজুয়েলাভিত্তিক অপরাধচক্র ট্রেন দে আরাগুয়ার নিয়ন্ত্রণে ছিল বলেও তিনি দাবি করেন।

এদিকে, এই হামলার পর অঞ্চলজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে এবং বিশেষজ্ঞরা এর বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। যদিও ট্রাম্প প্রশাসন বার বার বলছে তাদের এই অভিযান মাদক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে। তবে বিশেষজ্ঞ এবং কংগ্রেস সদস্যদের অভিযোগ, মাদুরো সরকারকে অস্থিতিশীল করতেই এই ভীতি জাগানো অভিযান চালাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন।

মাদুরোর সঙ্গে ট্রাম্পের শত্রুতা দীর্ঘদিনের। মাদুরোর বিরুদ্ধে ট্রাম্পের অভিযোগ, তিনি মাদক পাচারকারী সংগঠনের নেতা। যদিও মাদুরো এই অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন।

কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ আবার ট্রাম্পের এই তর্জন গর্জনকে মাদুরোর সরকার পতনের কৌশলও বলছেন। থিঙ্ক ট্যাঙ্ক চাথাম হাউসের ল্যাটিন আমেরিকা বিষয়ক সিনিয়র ফেলো ড. ক্রিস্টোফার সাবাতিনি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে বলেছেন, এটি সরকার পতন সম্পর্কিত। দেশটি (যুক্তরাষ্ট্র) হয়তো অভিযান চালাবে না। আমি মনে করি এটি এক ধরনের সংকেত দেওয়া।

তিনি যুক্তি দেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর উদ্দেশ্য হলো ভেনেজুয়েলার সামরিক বাহিনী এবং মাদুরো ঘনিষ্ঠদের মনে ভীতি জাগিয়ে তোলা। যেন তারা তাঁর বিরুদ্ধে চলে যায়।

Ad 300x250

সম্পর্কিত