leadT1ad

আরও এক জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর, ইসরায়েলি হামলায় দুদিনে নিহত ৮

স্ট্রিম ডেস্ক
স্ট্রিম ডেস্ক
ঢাকা

প্রকাশ : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১২: ৪৪
ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে গাজা। সেই ধ্বংস্তুপের নিচে চাপা পড়েছে ইসরায়েলি জিম্মিদের মরদেহও। ছবি: সংগৃহীত।

হামাস আরও এক মৃত জিম্মির মরদেহ ইসরায়েলকে হস্তান্তর করেছে। সোমবার পর্যন্ত মোট ১৬ জন জিম্মির মরদেহ ফেরত দেওয়া হলো। এর কয়েক ঘণ্টা আগে দক্ষিণ গাজায় ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় দুই ফিলিস্তিনি নিহত হন। গাজায় যুদ্ধবিরতি পরিস্থিতি এখনো নাজুক বলে আল জাজিরা জানিয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, রেড ক্রস ওই কফিনের দায়িত্ব নিয়েছে এবং সেটি গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ১০ অক্টোবর থেকে কার্যকর যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী, হামাস ২৮ জন মৃত জিম্মির মরদেহ ফেরত দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে। জীবিত ২০ জন জিম্মিকে ১৩ অক্টোবর মুক্তি দেওয়া হয়।

সর্বশেষ মরদেহ ফেরতের পর কিছু জিম্মির পরিবার ইসরায়েলি সরকারকে সতর্ক করেছে। তারা বলেছে, হামাস যদি বাকি মরদেহগুলো দ্রুত ফেরত না দেয়, তবে যুদ্ধবিরতি স্থগিত করা উচিত।

হোস্টেজেস অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিস ফোরাম জানায়, ‘হামাস জানে প্রতিটি মৃত জিম্মির অবস্থান কোথায়’। তারা ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোকে আহ্বান জানায়, ‘হামাস সব শর্ত পূরণ না করা পর্যন্ত চুক্তির পরবর্তী ধাপ এগিয়ে নেওয়া উচিত নয়।’

শনিবার হামাসের আলোচক খলিল আল-হাইয়া বলেন, জিম্মিদের মরদেহ খুঁজে বের করা কঠিন হয়ে পড়েছে, কারণ ‘ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী গাজার ভূপ্রকৃতি বদলে দিয়েছে।’ তিনি জানান, যারা মরদেহগুলো কবর দিয়েছিলেন, তাদের কেউ কেউ যুদ্ধে নিহত হয়েছেন, আবার কেউ সঠিক স্থান ভুলে গেছেন।

এর পরদিন ইসরায়েল মিশরীয় এক প্রযুক্তিগত দলকে গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেয়, যারা মৃতদেহ সন্ধান পরিচালনা করছে। এই কাজে খননযন্ত্র ও ট্রাক ব্যবহার করা হচ্ছে।

গাজার নাসের হাসপাতাল জানায়, সোমবারের ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় অন্তত দুজন নিহত হয়েছেন। গত দুদিনে ইসরায়েলি হামলায় মোট ৮জন নিহত ও ১৩ জন আহত হয়েছেন বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের গাজা অভিযানে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৬৮ হাজার ৫২৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৭০ হাজার ৩৯৫ জন আহত হয়েছেন।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, শনিবার ইসলামিক জিহাদ গোষ্ঠীর এক সদস্যকে লক্ষ্য করে চালানো ইসরায়েলি হামলাকে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন হিসেবে দেখছে না।

তিনি বলেন, ‘আমাদের দৃষ্টিতে এটি যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ নয়। ওই ব্যক্তি ইসরায়েলি সেনাদের ওপর হামলার পরিকল্পনা করছিলেন। যদি তাৎক্ষণিক হুমকি থাকে, ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে এবং মধ্যস্থতাকারীরাও এতে একমত।’

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর গত দুই সপ্তাহে প্রায় ৪ লাখ ৭৩ হাজার মানুষ উত্তর গাজায় ফিরে গেছেন। তারা এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত ঘরবাড়ি ও খাদ্য–পানির ঘাটতির মুখোমুখি।

ফিলিস্তিন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রধান ইউনুস আল-খাতিব সতর্ক করে বলেছেন, যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও গাজার জনগণ এখনও চরম মানবিক সংকটে ভুগছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও জানিয়েছে, গাজায় মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা প্রয়োজন এমন মানুষের সংখ্যা দুই বছরে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে এখন ১০ লাখ ছাড়িয়েছে।

Ad 300x250

সম্পর্কিত