জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্মৃতিকথা শেয়ার করেছেন তাঁর সাবেক স্ত্রী গুলতেকিন খান। হুমায়ূন আহমেদ তখন সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রে বাস করছিলেন। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে প্রকাশ করা ফেসবুক পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো।
স্ট্রিম ডেস্ক
এই সত্যি কথাগুলো আমি লিখেছি শুধু মাত্র কিশোরী, তরুণী এবং তাদের অভিভাবকদের জন্যে।
এতো ব্যক্তিগত ঘটনা লিখেছি কারণ আর কোনো মেয়ে আমার (পুরো বিয়েটাতে আমার চেয়ে অভিভাবকদের বেশি ভুল ছিলো।) মত ভুল যেনো না করে।
জুন মাসের ৬ তারিখ ছিল রবিবার। শীলাকে যেমন হাসতে হাসতে বলেছিলাম প্রায় একইভাবে ইকবাল ভাইকেও জানালাম।
ড. ইয়াসমীন হক তাঁর পরিচিত কয়েকজন lawyer আমার বাসায় পাঠান। তাঁদের একজন আমাকে জিজ্ঞেস করেন, ব্যাংকে টাকা-পয়সা কেমন আছে?
আমি বলি, কার ব্যাংকে?
আপনাদের জয়েন্ট account-এ?
আমাদের তো কোনো জয়েন্ট account নেই!
ব্যাংকে হুমায়ূন আহমেদের কতো টাকা আছে?
সেটা তো আমি জানি না
তখন উনি upset হয়ে বলেন, কিছু একটা বলেন?
আমি বলি, একজন মেয়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক আছে!
কী ধরণের সম্পর্ক?
: যতদূর জানি সব ধরণের সম্পর্ক। উনি নিজেই আমাকে জানিয়েছেন! আমি বাকি করো নাম বললাম না! তারা এখন বিয়ে করে শান্তিতে আছেন। কী দরকার তাদের নাম বলার!#
Lawyer-রা দখিন হাওয়ায় (আমার ফ্ল্যাটে যেখানে আমার মৌখিক agreement নিয়ে হুমায়ূন আহমেদ থাকছিলেন) সেখানে যান। এবং চলেও আসেন আমার কাছে। একজন বলেন, তিনি তো কয়েকটি বই দেখান যেখানে আগে থেকেই আন্ডারলাইন করা ছিলো।
: হোটেল গ্রেভার ইন, মে ফ্লাওয়ার আরো কিছু বই। আপনি নাকি অনেক আগে থেকেই ডিভোর্স চাচ্ছিলেন?
: ওগুলো সত্যি না। ডিভোর্সের নিয়ম আমি এখনো জানি না! অ্যামেরিকাতে কীভাবে জানবো? “ হোটেল গ্রেভার ইনে” ওসব বানিয়ে লেখা! তাঁর আত্মজীবনীমূলক বইয়ে অনেক কিছুই তাঁর কল্পনা থেকে লেখা। ঐসব বই লেখার সময় আমি তাঁকে বার বার বলেছিলাম ওসব না লিখতে! কিন্তু উনি আমাকে তখন বলেছিলেন, একদম সত্যি হচ্ছে জলের মতো, কোনো স্বাদহীন, তাই কিছু মিথ্যা থাকলে লোকজন পড়ে মজা পাবে! আমি শুধু তাঁর পায়ে ধরা বাকি রেখেছিলাম। বারবার বলেছি, আমার সম্পর্কে কিছু না লিখতে। আমি বাসা থেকে বের হয়ে যাইনি! ওর তখন খারাপ একটি সময় যাচ্ছিল, নর্থ ডাকোটা ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডির জন্যে একটি পরীক্ষা হয় যার নাম কিউমিলিয়েটিভ, সেখানে দশ নাম্বার থাকে। পরীক্ষার জন্যে সম্ভবত দুই বছর সময় থাকে। সেখানে অনেকগুলো পরীক্ষা হয় এবং দশের মধ্যে তিনটিতে ২ নাম্বার পেতে হয়, বাকি গুলো ১ নাম্বার পেলেই হয়। কিন্তু সে অনেকগুলো পরীক্ষা দিয়েও একটিতেও ২ নাম্বার পায়নি তখনো। এটা নিয়ে তাঁর মধ্যে ফ্রাস্ট্রেশন কাজ করছিলো। তাছাড়া তিনি রেগে গেলেই বলতেন, বাসা থেকে বের হয়ে যাও। সেদিনও পরীক্ষায় ১ পেয়ে মেজাজ খুব খারাপ ছিল। বাসায় এসেই অকারণে রাগারাগি শুরু করে। এবং এক পর্যায়ে কোনো কারণ ছাড়াই আমাকে বলেন, বাসা থেকে বের হয়ে যাও!
: আমি বলি কোথায় যাবো?
: উনি বলেন যেখানে ইচ্ছা সেখানে যাও! আমাকে চুপচাপ কাঁদতে দেখে আরো রেগে যান এবং আমাকে ধাক্কা দিয়ে বাইরে পাঠিয়ে ভেতর থেকে দরজা লাগিয়ে দেন। আমার গায়ে তখন একটি শার্ট এবং প্যান্ট, পায়ে স্পন্জের স্যান্ডেল ছিল। আর বাইরে ডিসেম্বর মাসের প্রচন্ড ঠান্ডা! আমি শীতে কাঁপতে কাঁপতে দরজা ধাক্কা দেই আর বলি, দরজা খোলো প্লিজ, কলিংবেল বাজাতে থাকি কিন্তু দরজা খুলে না। বেশ কিছুক্ষণ পরে আমার হাত পা প্রায় জমে যায়! তখন দৌড়াতে থাকি। আমাদের বাসার কাছে একটি দোকান ছিলো। একজন আমেরিকান বৃদ্ধা মহিলা তাঁর বিশাল ড্রয়িং রুমকে নানারকম মসলা, আচার, হারবাল জিনিস দিয়ে দোকান বানিয়েছিলেন। নাম ছিল “টচি”। আমরাও ওখান থেকে মসলা কিনতাম এবং প্রায়ই যেতাম নতুন কোনো মসলার খোঁজে! এমনিতে কাছেই মনে হতো কিন্তু সে শীতের সন্ধ্যায় যেন দোকানটি বাসার কাছে ছিলো সেটি মনে হলো বহু দূরে চলে গেছে! শেষ পর্যন্ত টচি পৌঁছেই দরজা খুলে ভেতরে ঢুকলাম। মনে হলো স্বর্গে ঢুকেছি! বয়স্ক ভদ্রমহিলাকে অনুরোধ করলাম, আমি একটি ফোন করতে পারি কিনা! টাকা পরে দেবো! উনি বললেন, টাকা লাগবে না, তুমি ফোন করো। তিনি আমার প্রাইভেসির জন্যে একটু দূরে সরে গেলেন। আমার একমাত্র মুখস্থ নাম্বারে ফোন করলাম ।
: এ্যান, আমি টিংকু বলছি।
: কী হয়েছে টিংকু, এমনভাবে কথা বলছো কেনো?
: এ্যান, তুমি কি আমাকে একটু তুলে নিতে পারবে?
(এ্যানের ছেলে এ্যারোনকে আমি বেবিসিট করি। কিন্তু আমরা ভালো বন্ধুও)
ওকে ঠিকানা বলি।
এ্যান চলে আসে। আমি টচির বয়স্ক ভদ্রমহিলাকে ধন্যবাদ জানিয়ে গাড়িতে উঠি। ও আমাকে একটি জ্যাকেট দেয়। আমি ভাবি, ও কেমন করে জানলো যে আমার গায়ে জ্যাকেট নেই?
ওর বাড়িতে যেতে যেতে সবকিছু বলি ওকে।
বাসায় পৌঁছে এ্যান আমাকে একটি রুম দেখিয়ে বলে, এখন তুমি ঘুমাওতো!
সারাদিন কাজ করার ক্লান্তি, বাসা পরিষ্কার, রান্না কতো কী করেছি! কোনো কিছুতেই ঘুম আসে না! ভয়ে, উৎকণ্ঠায় এতোক্ষণ কাঁদতেও পারিনি! বালিশে মাথা রাখতেই ঝর্নার মতো দু’চোখের জলে বালিশ ভিজে গেলো! নোভার কথা ভেবে কষ্ট গলার ভেতর আটকে গেলো! এখানে আমার মা-বাবা, ভাই-বোন, কোনো আত্মীয়স্বজন নেই! কি করে সে পারলো এমন করতে? সারা রাত কাঁদতে কাঁদতে কাটলো।
বাথরুমে গিয়ে হাত-মুখ ধুয়ে আমি বসে থাকি।
এ্যান আর স্টেইনলি নাস্তার টেবিলে এসে বসে।
আমিও বসি ওদের সাথে ॥
টেবিলে এ্যান বলে, কি ঠিক করলে?
: কী বলছো, এ্যান?
: লয়্যারের সাথে কথা বলবে না? একবারে ডিভোর্স পাঠাতে বলবে?
আমি ভয়ে আঁতকে উঠি!
না, না। হুমায়ূন আমাকে অনেক ভালোবাসে! রাগের মাথায় ওসব করেছে!
তুমি আমাকে একটু বাসায় দিয়ে আসতে পারবে? নোভার জন্যে খুব মন খারাপ লাগছে!
ওরা দু’জন অদ্ভুতভাবে তাকিয়ে থাকে।
বাসায় ঢুকেই আমি নোভাকে কোলে নিয়ে দুতালায় যাই। বিছানায় বসে নোভাকে জড়িয়ে ধরে শব্দ করে কাঁদতে থাকি।
আর বলি, নোভাকে আমার বোকামি করতে দেবো না। ওর হাজবেন্ডের যেনো সাহস না হয় ওকে ধাক্কা দিয়ে বাসা থেকে বের করে দেবার!
আমার চোখের সামনে অসংখ্য ছবি দেখতে পাই যেখানে একটি ১৮/১৯ বয়েসের তরুণী চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে এবং একজন হুমায়ূন আহমেদ তাকে যা ইচ্ছে তা বলে বকছে।
আমার খুব ইচ্ছে হচ্ছিল ইয়াসমীনের পাঠানো ঐ লয়্যারকে জিজ্ঞেস করতে “আসলে তখনি নোভাকে নিয়ে দেশে ফিরে ঐ ভদ্রলোককে ডিভোর্স দেয়া উচিত ছিলো, তাই না?” কিন্তু পারিনি!
এই সত্যি কথাগুলো আমি লিখেছি শুধু মাত্র কিশোরী, তরুণী এবং তাদের অভিভাবকদের জন্যে।
এতো ব্যক্তিগত ঘটনা লিখেছি কারণ আর কোনো মেয়ে আমার (পুরো বিয়েটাতে আমার চেয়ে অভিভাবকদের বেশি ভুল ছিলো।) মত ভুল যেনো না করে।
জুন মাসের ৬ তারিখ ছিল রবিবার। শীলাকে যেমন হাসতে হাসতে বলেছিলাম প্রায় একইভাবে ইকবাল ভাইকেও জানালাম।
ড. ইয়াসমীন হক তাঁর পরিচিত কয়েকজন lawyer আমার বাসায় পাঠান। তাঁদের একজন আমাকে জিজ্ঞেস করেন, ব্যাংকে টাকা-পয়সা কেমন আছে?
আমি বলি, কার ব্যাংকে?
আপনাদের জয়েন্ট account-এ?
আমাদের তো কোনো জয়েন্ট account নেই!
ব্যাংকে হুমায়ূন আহমেদের কতো টাকা আছে?
সেটা তো আমি জানি না
তখন উনি upset হয়ে বলেন, কিছু একটা বলেন?
আমি বলি, একজন মেয়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক আছে!
কী ধরণের সম্পর্ক?
: যতদূর জানি সব ধরণের সম্পর্ক। উনি নিজেই আমাকে জানিয়েছেন! আমি বাকি করো নাম বললাম না! তারা এখন বিয়ে করে শান্তিতে আছেন। কী দরকার তাদের নাম বলার!#
Lawyer-রা দখিন হাওয়ায় (আমার ফ্ল্যাটে যেখানে আমার মৌখিক agreement নিয়ে হুমায়ূন আহমেদ থাকছিলেন) সেখানে যান। এবং চলেও আসেন আমার কাছে। একজন বলেন, তিনি তো কয়েকটি বই দেখান যেখানে আগে থেকেই আন্ডারলাইন করা ছিলো।
: হোটেল গ্রেভার ইন, মে ফ্লাওয়ার আরো কিছু বই। আপনি নাকি অনেক আগে থেকেই ডিভোর্স চাচ্ছিলেন?
: ওগুলো সত্যি না। ডিভোর্সের নিয়ম আমি এখনো জানি না! অ্যামেরিকাতে কীভাবে জানবো? “ হোটেল গ্রেভার ইনে” ওসব বানিয়ে লেখা! তাঁর আত্মজীবনীমূলক বইয়ে অনেক কিছুই তাঁর কল্পনা থেকে লেখা। ঐসব বই লেখার সময় আমি তাঁকে বার বার বলেছিলাম ওসব না লিখতে! কিন্তু উনি আমাকে তখন বলেছিলেন, একদম সত্যি হচ্ছে জলের মতো, কোনো স্বাদহীন, তাই কিছু মিথ্যা থাকলে লোকজন পড়ে মজা পাবে! আমি শুধু তাঁর পায়ে ধরা বাকি রেখেছিলাম। বারবার বলেছি, আমার সম্পর্কে কিছু না লিখতে। আমি বাসা থেকে বের হয়ে যাইনি! ওর তখন খারাপ একটি সময় যাচ্ছিল, নর্থ ডাকোটা ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডির জন্যে একটি পরীক্ষা হয় যার নাম কিউমিলিয়েটিভ, সেখানে দশ নাম্বার থাকে। পরীক্ষার জন্যে সম্ভবত দুই বছর সময় থাকে। সেখানে অনেকগুলো পরীক্ষা হয় এবং দশের মধ্যে তিনটিতে ২ নাম্বার পেতে হয়, বাকি গুলো ১ নাম্বার পেলেই হয়। কিন্তু সে অনেকগুলো পরীক্ষা দিয়েও একটিতেও ২ নাম্বার পায়নি তখনো। এটা নিয়ে তাঁর মধ্যে ফ্রাস্ট্রেশন কাজ করছিলো। তাছাড়া তিনি রেগে গেলেই বলতেন, বাসা থেকে বের হয়ে যাও। সেদিনও পরীক্ষায় ১ পেয়ে মেজাজ খুব খারাপ ছিল। বাসায় এসেই অকারণে রাগারাগি শুরু করে। এবং এক পর্যায়ে কোনো কারণ ছাড়াই আমাকে বলেন, বাসা থেকে বের হয়ে যাও!
: আমি বলি কোথায় যাবো?
: উনি বলেন যেখানে ইচ্ছা সেখানে যাও! আমাকে চুপচাপ কাঁদতে দেখে আরো রেগে যান এবং আমাকে ধাক্কা দিয়ে বাইরে পাঠিয়ে ভেতর থেকে দরজা লাগিয়ে দেন। আমার গায়ে তখন একটি শার্ট এবং প্যান্ট, পায়ে স্পন্জের স্যান্ডেল ছিল। আর বাইরে ডিসেম্বর মাসের প্রচন্ড ঠান্ডা! আমি শীতে কাঁপতে কাঁপতে দরজা ধাক্কা দেই আর বলি, দরজা খোলো প্লিজ, কলিংবেল বাজাতে থাকি কিন্তু দরজা খুলে না। বেশ কিছুক্ষণ পরে আমার হাত পা প্রায় জমে যায়! তখন দৌড়াতে থাকি। আমাদের বাসার কাছে একটি দোকান ছিলো। একজন আমেরিকান বৃদ্ধা মহিলা তাঁর বিশাল ড্রয়িং রুমকে নানারকম মসলা, আচার, হারবাল জিনিস দিয়ে দোকান বানিয়েছিলেন। নাম ছিল “টচি”। আমরাও ওখান থেকে মসলা কিনতাম এবং প্রায়ই যেতাম নতুন কোনো মসলার খোঁজে! এমনিতে কাছেই মনে হতো কিন্তু সে শীতের সন্ধ্যায় যেন দোকানটি বাসার কাছে ছিলো সেটি মনে হলো বহু দূরে চলে গেছে! শেষ পর্যন্ত টচি পৌঁছেই দরজা খুলে ভেতরে ঢুকলাম। মনে হলো স্বর্গে ঢুকেছি! বয়স্ক ভদ্রমহিলাকে অনুরোধ করলাম, আমি একটি ফোন করতে পারি কিনা! টাকা পরে দেবো! উনি বললেন, টাকা লাগবে না, তুমি ফোন করো। তিনি আমার প্রাইভেসির জন্যে একটু দূরে সরে গেলেন। আমার একমাত্র মুখস্থ নাম্বারে ফোন করলাম ।
: এ্যান, আমি টিংকু বলছি।
: কী হয়েছে টিংকু, এমনভাবে কথা বলছো কেনো?
: এ্যান, তুমি কি আমাকে একটু তুলে নিতে পারবে?
(এ্যানের ছেলে এ্যারোনকে আমি বেবিসিট করি। কিন্তু আমরা ভালো বন্ধুও)
ওকে ঠিকানা বলি।
এ্যান চলে আসে। আমি টচির বয়স্ক ভদ্রমহিলাকে ধন্যবাদ জানিয়ে গাড়িতে উঠি। ও আমাকে একটি জ্যাকেট দেয়। আমি ভাবি, ও কেমন করে জানলো যে আমার গায়ে জ্যাকেট নেই?
ওর বাড়িতে যেতে যেতে সবকিছু বলি ওকে।
বাসায় পৌঁছে এ্যান আমাকে একটি রুম দেখিয়ে বলে, এখন তুমি ঘুমাওতো!
সারাদিন কাজ করার ক্লান্তি, বাসা পরিষ্কার, রান্না কতো কী করেছি! কোনো কিছুতেই ঘুম আসে না! ভয়ে, উৎকণ্ঠায় এতোক্ষণ কাঁদতেও পারিনি! বালিশে মাথা রাখতেই ঝর্নার মতো দু’চোখের জলে বালিশ ভিজে গেলো! নোভার কথা ভেবে কষ্ট গলার ভেতর আটকে গেলো! এখানে আমার মা-বাবা, ভাই-বোন, কোনো আত্মীয়স্বজন নেই! কি করে সে পারলো এমন করতে? সারা রাত কাঁদতে কাঁদতে কাটলো।
বাথরুমে গিয়ে হাত-মুখ ধুয়ে আমি বসে থাকি।
এ্যান আর স্টেইনলি নাস্তার টেবিলে এসে বসে।
আমিও বসি ওদের সাথে ॥
টেবিলে এ্যান বলে, কি ঠিক করলে?
: কী বলছো, এ্যান?
: লয়্যারের সাথে কথা বলবে না? একবারে ডিভোর্স পাঠাতে বলবে?
আমি ভয়ে আঁতকে উঠি!
না, না। হুমায়ূন আমাকে অনেক ভালোবাসে! রাগের মাথায় ওসব করেছে!
তুমি আমাকে একটু বাসায় দিয়ে আসতে পারবে? নোভার জন্যে খুব মন খারাপ লাগছে!
ওরা দু’জন অদ্ভুতভাবে তাকিয়ে থাকে।
বাসায় ঢুকেই আমি নোভাকে কোলে নিয়ে দুতালায় যাই। বিছানায় বসে নোভাকে জড়িয়ে ধরে শব্দ করে কাঁদতে থাকি।
আর বলি, নোভাকে আমার বোকামি করতে দেবো না। ওর হাজবেন্ডের যেনো সাহস না হয় ওকে ধাক্কা দিয়ে বাসা থেকে বের করে দেবার!
আমার চোখের সামনে অসংখ্য ছবি দেখতে পাই যেখানে একটি ১৮/১৯ বয়েসের তরুণী চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে এবং একজন হুমায়ূন আহমেদ তাকে যা ইচ্ছে তা বলে বকছে।
আমার খুব ইচ্ছে হচ্ছিল ইয়াসমীনের পাঠানো ঐ লয়্যারকে জিজ্ঞেস করতে “আসলে তখনি নোভাকে নিয়ে দেশে ফিরে ঐ ভদ্রলোককে ডিভোর্স দেয়া উচিত ছিলো, তাই না?” কিন্তু পারিনি!
রাস্তায় নেমে যখন কেউ দীপ্ত কণ্ঠে গেয়ে ওঠে—‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’, তখন সেই গানের গহিনে তাকালে দেখা যায়, এক প্রবীণ পুরুণ দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁর চোখে আলো নেই, বয়সের ভারে ন্যুজ্ব হয়ে গেছে পিঠ, কিন্তু কণ্ঠে ঠিকই ধ্বনিত হচ্ছে তেজদীপ্ত হুঙ্কার—‘রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই’। তিনি আহমদ রফিক, আমাদ
১ দিন আগেসেই অর্থে আহমদ রফিক সামাজিকভাবে কোনো সম্মানজনক পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন না। তাতে খুব-একটা ক্ষতি যে হয়েছে, সেটি আমরা অন্তত মনেও করি না। জার্মান লেখক গেয়র্গ ক্রিস্টফ লিশটেনব্যর্গ বলতেন যে, ‘সম্মানজনক পদের তুলনায় ব্যক্তির সম্মানের গুণ অনেক বেশি মূল্যবান।’
১ দিন আগেভাষা সংগ্রামী ও গবেষক আহমদ রফিক আর নেই। আজ বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) রাজধানীর বারডেম হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কেমন ছিল তাঁর জীবনের শেষদিনগুলো?
১ দিন আগেবাংলাদেশের রংপুর বিভাগে অ্যানথ্রাক্সের (তড়কা রোগ) প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। বিশেষভাবে পীরগাছা, মিঠাপুকুর ও কাউনিয়া উপজেলায় আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। মানবদেহে নিশ্চিত আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ জনে।
১ দিন আগে