একদিকে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ, আরেকদিকে রক্তঝরা কাশ্মীর, ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তিতে ভারত-পাকিস্তান এক ছাদের তলে বসে ভাগ্য লিখল দুটি অঞ্চলের। বাংলাদেশের নাম চুক্তিপত্রেও এল না, অথচ যুদ্ধ হয়েছিল তাকে ঘিরেই। কাশ্মীরের ‘ভাগ্যবিধাতা’ রূপে পরিণত হল যেন এ চুক্তি। স্বাধীনতার স্বপ্ন আরও দূরে সরে গেল অঞ্চলটির।
রাতুল আল আহমেদ
হিমালয়ের গা ঘেঁষা শৈলশহর সিমলা। ভারতের এ শহরেই ১৯৭২ সালের ২ জুলাই ‘চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী’ দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তান স্বাক্ষর করেছিল এক চুক্তিতে। সিমলা থেকে দূরে থেকেও এক চুক্তিতেই বদলে গিয়েছিল ভারতের দুই সীমান্তে থাকা বাংলাদেশ ও কাশ্মীরের মানুষদের জীবন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোর মধ্যে স্বাক্ষরিত এই সিমলা চুক্তিতে বাংলাদেশের প্রাপ্তি কী ছিল? আর কাশ্মীরের ওপরই বা এর প্রভাব পড়েছিল কীভাবে?
যেভাবে শুরু হল
১৯৭১ সাল। পাকিস্তানি গণহত্যার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ ঘোষণা দিল স্বাধীনতার। ভারত শুরু থেকেই বিভিন্নভাবে এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল। তবে সরাসরি যুদ্ধের ময়দানে ভারত সামিল হয় ৩ ডিসেম্বর। পূর্বে বাংলাদেশ ও পশ্চিমে পাঞ্জাব, দুই রণাঙ্গনেই ভারত জড়িয়ে পড়ে পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে। আর এ যুদ্ধের অবসান ঘটে ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্রবাহিনীর কাছে পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে।
পাকিস্তানের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী আত্মসমর্পণের পর দেশটির ৪৫ হাজার সৈন্য ও আধাসামরিক বাহিনী মিলিয়ে প্রায় ৭৩ হাজার যুদ্ধবন্দি আটক ছিল ভারতে। এছাড়াও পশ্চিম রণাঙ্গনে ভারতের কাছে প্রায় পাঁচ হাজার বর্গমাইল এলাকা হারায় দেশটি।
এসব বেশ কিছু ইস্যু নিয়েই পরের বছর গান্ধী ও ভুট্টো আলোচনায় বসেন। ২৮ জুন থেকে ২ জুলাই সিমলায় চলে টানা আলোচনা। ৩ জুলাই ভোরে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী একমত হন একটি চুক্তিতে। স্বাক্ষরিত হয় সিমলা চুক্তি।
ভারত ও পাকিস্তান একমত হয় এখন থেকে দেশ দুইটি বিরোধ মেটানোর জন্য দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করবে। তারা একে অপরের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি সম্মান জানাবে, এমন অঙ্গীকার করে দেশ দুইটি।
এ চুক্তির একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল ১৯৭১ সালে যুদ্ধবিরতির সময়ে যে সীমারেখা টানা হয়েছিল, তাকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ‘লাইন অব কন্ট্রোল’ (এলওসি) হিসেবে মেনে নেওয়া হয়। লাইন অব কন্ট্রোল বলতে বোঝানো হয় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আপাত স্বীকৃত একটি সীমান্তরেখা, যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নয়।
তারা এই সীমারেখা একতরফাভাবে বদলাবে না বলে সম্মত হয়; তাতে দুই দেশের নিজেদের ভেতর মতভেদ বা এর আইনি ব্যাখ্যা যাই থাকুক না কেন।
কাশ্মীর নিয়ে বিশেষ উল্লেখ ছিল সিমলা চুক্তিতে। এখানে দুই দেশই কাশ্মীর ইস্যু শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমাধান করার প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে এক্ষেত্রে কোনো সময়সীমা বা নির্দিষ্ট সমাধানে পৌঁছায়নি তারা। কাশ্মীরের বর্তমান অবস্থা পরিবর্তনের জন্য কোনো একতরফা পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না বলেও উল্লেখ করা হয় এ চুক্তিতে।
পরবর্তী সময়ে অনেক ভারতীয় আমলা দাবি করেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের এ বৈঠকে এলওসিকে আন্তর্জাতিক সীমান্তে রূপান্তরের একটি ‘নীরব সমঝোতায়’ পৌঁছানো হয়েছিল। তবে পাকিস্তানি আমলারা এই ধরনের কোনো সমঝোতার কথা স্বীকার করেননি।
‘যুদ্ধবিরতির রেখা’কে সীমান্ত হিসেবে নেওয়া হয় এ চুক্তিতে। এ যুক্তি দেখিয়ে ভারত দাবি করে জাতিসংঘের সঙ্গে ভারত ও পাকিস্তানের কাশ্মীরের স্বাধীনতা নিয়ে যে গণভোট হওয়ার কথা ছিল, তার আর দরকার নেই। জাতিসংঘের সঙ্গে ১৯৪৯ সালে করাচিতে এই চুক্তি করা হয়েছিল।
তবে পাকিস্তান এই বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করে। পাকিস্তান এখনও জাতিসংঘের মিশনকে আমন্ত্রণ জানিয়ে আসছে।
এই চুক্তি কাশ্মীরিদের জীবনে এক ধরনের বিপর্যয় ডেকে আনে। কাশ্মীরের স্বাধীনতার আলোচনা আন্তর্জাতিক মহলের টেবিল থেকে ভারত-পাকিস্তানের দরকষাকষির মাধ্যম হয়ে ওঠে। কাশ্মীরিরা কী চায়, তার আর দাম থাকে না এ চুক্তির পর। ফলে তাদের স্বাধীনতার আশা আরও দুর্বল হয়ে পড়ে। যুদ্ধবিরতির সাময়িক সীমারেখাকে লাইন অব কন্ট্রোল হিসেবে মেনে নেওয়ার মাধ্যমে কাশ্মীরকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আইনিভাবে ভাগ করে ফেলা হয়।
১৯৪৮ সালে কাশ্মীর নিয়েই প্রথমবারের মতো যুদ্ধে জড়িয়ে পরে ভারত ও পাকিস্তান। যুদ্ধ শুরু হলে সে বছর ভারত জাতিসংঘে কাশ্মীর প্রসঙ্গ তোলে। জাতিসংঘ প্রস্তাব দেয় কাশ্মীরে গণভোট আয়োজনের। সেজন্য দুই দেশকেই সেনা সরিয়ে নেওয়ার কথা বলে জাতিসংঘ। বলা হয়, পরিস্থিতি শান্ত হলে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে কাশ্মীরে গণভোট আয়োজন করা হবে।
দুই দেশেরও সায় ছিল এতে। তবু গণভোট হয়নি কাশ্মীরে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে শুরু থেকেই ছিল আস্থার অভাব। ফলে কোনো দেশই প্রথমে সেনা সরাতে রাজি হয়নি। আর, সিমলা চুক্তির ফলে এই প্রস্তাবনার কফিনে এক অর্থে পেরেক পুঁতে দেওয়া হয়। ফলে জাতিসংঘের গণভোট প্রস্তাব বাস্তব রূপ পায়নি।
সিমলা চুক্তির প্রধান কারণ ছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ। তবু এ চুক্তিতে বাংলাদেশের কোনো উল্লেখ ছিল না। তবে এ বৈঠকের একটি অলিখিত সমঝোতা ছিল। ভারত পাকিস্তানকে চাপ দিয়েছিল যেন তারা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য আলোচনা শুরু করে।
এর ফলে ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে ১৯৭৪ সালে দিল্লি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি সাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রাপ্তি মূলত একটিই। পাকিস্তান থেকে প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার বাঙালি বাংলাদেশে ফিরে আসে। এছাড়াও বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১ লক্ষ ৮ হাজার উর্দুভাষী পাকিস্তানে ফিরে যায়।
চুক্তিতে বাংলাদেশ চেয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য চিহ্নিত ১৯৫ জন পাকিস্তানি সামরিক কর্মকর্তার বিচার। তবে পাকিস্তান তা কৌশলে এড়িয়ে যায়।
ভারত আটককৃত প্রায় ৬ হাজার ৫০০ পাকিস্তানি যুদ্ধবন্দিকে মুক্তি দেয়। পাকিস্তানও আর তাদের বিচার করল না।
এছাড়াও কথা ছিল চুক্তি মোতাবেক স্বাধীন বাংলাদেশে থেকে যাওয়া উর্দু ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীকে পাকিস্তান ফেরত নেবে। তবু তা বাস্তবায়ন করা হয়নি । এর ফলে স্বাধীন বাংলাদেশে আটকে পড়া পাকিস্তানিরা মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হয়।
এই চুক্তিতে এই তিন দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভূক্ত ছিল। চুক্তির প্রেক্ষিত ছিল বাংলাদেশ। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন থেকে যায়, এই চুক্তি কি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত মূল্যায়ন করতে পেরেছিল?
হিমালয়ের গা ঘেঁষা শৈলশহর সিমলা। ভারতের এ শহরেই ১৯৭২ সালের ২ জুলাই ‘চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী’ দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তান স্বাক্ষর করেছিল এক চুক্তিতে। সিমলা থেকে দূরে থেকেও এক চুক্তিতেই বদলে গিয়েছিল ভারতের দুই সীমান্তে থাকা বাংলাদেশ ও কাশ্মীরের মানুষদের জীবন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোর মধ্যে স্বাক্ষরিত এই সিমলা চুক্তিতে বাংলাদেশের প্রাপ্তি কী ছিল? আর কাশ্মীরের ওপরই বা এর প্রভাব পড়েছিল কীভাবে?
যেভাবে শুরু হল
১৯৭১ সাল। পাকিস্তানি গণহত্যার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ ঘোষণা দিল স্বাধীনতার। ভারত শুরু থেকেই বিভিন্নভাবে এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল। তবে সরাসরি যুদ্ধের ময়দানে ভারত সামিল হয় ৩ ডিসেম্বর। পূর্বে বাংলাদেশ ও পশ্চিমে পাঞ্জাব, দুই রণাঙ্গনেই ভারত জড়িয়ে পড়ে পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে। আর এ যুদ্ধের অবসান ঘটে ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্রবাহিনীর কাছে পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে।
পাকিস্তানের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী আত্মসমর্পণের পর দেশটির ৪৫ হাজার সৈন্য ও আধাসামরিক বাহিনী মিলিয়ে প্রায় ৭৩ হাজার যুদ্ধবন্দি আটক ছিল ভারতে। এছাড়াও পশ্চিম রণাঙ্গনে ভারতের কাছে প্রায় পাঁচ হাজার বর্গমাইল এলাকা হারায় দেশটি।
এসব বেশ কিছু ইস্যু নিয়েই পরের বছর গান্ধী ও ভুট্টো আলোচনায় বসেন। ২৮ জুন থেকে ২ জুলাই সিমলায় চলে টানা আলোচনা। ৩ জুলাই ভোরে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী একমত হন একটি চুক্তিতে। স্বাক্ষরিত হয় সিমলা চুক্তি।
ভারত ও পাকিস্তান একমত হয় এখন থেকে দেশ দুইটি বিরোধ মেটানোর জন্য দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করবে। তারা একে অপরের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি সম্মান জানাবে, এমন অঙ্গীকার করে দেশ দুইটি।
এ চুক্তির একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল ১৯৭১ সালে যুদ্ধবিরতির সময়ে যে সীমারেখা টানা হয়েছিল, তাকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ‘লাইন অব কন্ট্রোল’ (এলওসি) হিসেবে মেনে নেওয়া হয়। লাইন অব কন্ট্রোল বলতে বোঝানো হয় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আপাত স্বীকৃত একটি সীমান্তরেখা, যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নয়।
তারা এই সীমারেখা একতরফাভাবে বদলাবে না বলে সম্মত হয়; তাতে দুই দেশের নিজেদের ভেতর মতভেদ বা এর আইনি ব্যাখ্যা যাই থাকুক না কেন।
কাশ্মীর নিয়ে বিশেষ উল্লেখ ছিল সিমলা চুক্তিতে। এখানে দুই দেশই কাশ্মীর ইস্যু শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমাধান করার প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে এক্ষেত্রে কোনো সময়সীমা বা নির্দিষ্ট সমাধানে পৌঁছায়নি তারা। কাশ্মীরের বর্তমান অবস্থা পরিবর্তনের জন্য কোনো একতরফা পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না বলেও উল্লেখ করা হয় এ চুক্তিতে।
পরবর্তী সময়ে অনেক ভারতীয় আমলা দাবি করেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের এ বৈঠকে এলওসিকে আন্তর্জাতিক সীমান্তে রূপান্তরের একটি ‘নীরব সমঝোতায়’ পৌঁছানো হয়েছিল। তবে পাকিস্তানি আমলারা এই ধরনের কোনো সমঝোতার কথা স্বীকার করেননি।
‘যুদ্ধবিরতির রেখা’কে সীমান্ত হিসেবে নেওয়া হয় এ চুক্তিতে। এ যুক্তি দেখিয়ে ভারত দাবি করে জাতিসংঘের সঙ্গে ভারত ও পাকিস্তানের কাশ্মীরের স্বাধীনতা নিয়ে যে গণভোট হওয়ার কথা ছিল, তার আর দরকার নেই। জাতিসংঘের সঙ্গে ১৯৪৯ সালে করাচিতে এই চুক্তি করা হয়েছিল।
তবে পাকিস্তান এই বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করে। পাকিস্তান এখনও জাতিসংঘের মিশনকে আমন্ত্রণ জানিয়ে আসছে।
এই চুক্তি কাশ্মীরিদের জীবনে এক ধরনের বিপর্যয় ডেকে আনে। কাশ্মীরের স্বাধীনতার আলোচনা আন্তর্জাতিক মহলের টেবিল থেকে ভারত-পাকিস্তানের দরকষাকষির মাধ্যম হয়ে ওঠে। কাশ্মীরিরা কী চায়, তার আর দাম থাকে না এ চুক্তির পর। ফলে তাদের স্বাধীনতার আশা আরও দুর্বল হয়ে পড়ে। যুদ্ধবিরতির সাময়িক সীমারেখাকে লাইন অব কন্ট্রোল হিসেবে মেনে নেওয়ার মাধ্যমে কাশ্মীরকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আইনিভাবে ভাগ করে ফেলা হয়।
১৯৪৮ সালে কাশ্মীর নিয়েই প্রথমবারের মতো যুদ্ধে জড়িয়ে পরে ভারত ও পাকিস্তান। যুদ্ধ শুরু হলে সে বছর ভারত জাতিসংঘে কাশ্মীর প্রসঙ্গ তোলে। জাতিসংঘ প্রস্তাব দেয় কাশ্মীরে গণভোট আয়োজনের। সেজন্য দুই দেশকেই সেনা সরিয়ে নেওয়ার কথা বলে জাতিসংঘ। বলা হয়, পরিস্থিতি শান্ত হলে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে কাশ্মীরে গণভোট আয়োজন করা হবে।
দুই দেশেরও সায় ছিল এতে। তবু গণভোট হয়নি কাশ্মীরে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে শুরু থেকেই ছিল আস্থার অভাব। ফলে কোনো দেশই প্রথমে সেনা সরাতে রাজি হয়নি। আর, সিমলা চুক্তির ফলে এই প্রস্তাবনার কফিনে এক অর্থে পেরেক পুঁতে দেওয়া হয়। ফলে জাতিসংঘের গণভোট প্রস্তাব বাস্তব রূপ পায়নি।
সিমলা চুক্তির প্রধান কারণ ছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ। তবু এ চুক্তিতে বাংলাদেশের কোনো উল্লেখ ছিল না। তবে এ বৈঠকের একটি অলিখিত সমঝোতা ছিল। ভারত পাকিস্তানকে চাপ দিয়েছিল যেন তারা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য আলোচনা শুরু করে।
এর ফলে ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে ১৯৭৪ সালে দিল্লি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি সাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রাপ্তি মূলত একটিই। পাকিস্তান থেকে প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার বাঙালি বাংলাদেশে ফিরে আসে। এছাড়াও বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১ লক্ষ ৮ হাজার উর্দুভাষী পাকিস্তানে ফিরে যায়।
চুক্তিতে বাংলাদেশ চেয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য চিহ্নিত ১৯৫ জন পাকিস্তানি সামরিক কর্মকর্তার বিচার। তবে পাকিস্তান তা কৌশলে এড়িয়ে যায়।
ভারত আটককৃত প্রায় ৬ হাজার ৫০০ পাকিস্তানি যুদ্ধবন্দিকে মুক্তি দেয়। পাকিস্তানও আর তাদের বিচার করল না।
এছাড়াও কথা ছিল চুক্তি মোতাবেক স্বাধীন বাংলাদেশে থেকে যাওয়া উর্দু ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীকে পাকিস্তান ফেরত নেবে। তবু তা বাস্তবায়ন করা হয়নি । এর ফলে স্বাধীন বাংলাদেশে আটকে পড়া পাকিস্তানিরা মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হয়।
এই চুক্তিতে এই তিন দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভূক্ত ছিল। চুক্তির প্রেক্ষিত ছিল বাংলাদেশ। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন থেকে যায়, এই চুক্তি কি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত মূল্যায়ন করতে পেরেছিল?
ইউরোপ এখন জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোর একটি। বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় ইউরোপ দ্বিগুণ গতিতে উষ্ণ হয়ে উঠছে। সমাধান হিসেবে একদিকে রয়েছে এসি ব্যবহারের স্বল্পকালীন স্বস্তি, অন্যদিকে আছে এসি ব্যবহারের দীর্ঘমেয়াদি পরিবেশগত ক্ষতি।
১ ঘণ্টা আগেএকজন নারী এখানে সহিংসতার শিকার হলেন। কিন্তু সেটি কী ধরনের সহিংসতা বা যে অপরাধটি ঘটল, তাকে আইনি প্রক্রিয়ায় অানার কোনো চেষ্টাই তৎক্ষনিকভাবে করা হল না; বরং সহিংসতার ‘সারভাইভার’কে আরও ভয়াবহভাবে সহিংসতার মুখে ঠেলে দেওয়া হল। আক্রান্ত নারীর ভিডিও ধারণ করলেন একাধিক ব্যক্তি। তাঁকে মারধরও করলেন।
১ দিন আগে২০২৪ সালের ৫ জুন এক রায় দেন হাইকোর্ট। সেই রায়ে ২০১৮ সালে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়। সেইসাথে, পূর্বের মুক্তিযোদ্ধা কোটা ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেওয়া হয়।
২ দিন আগেজোহরান মামদানির জন্ম উগান্ডায়, কিন্তু আমরা কি জানি ভারতীয়রা সেখানে কীভাবে গেলেন? একসময় যারা গড়েছিল রেললাইন, শুরু করেছিল বাণিজ্য, পত্তন করেছিল নতুন শহর, সেই তাদেরকেই স্বৈরাচারী এক শাসকের ঘোষণায় এক কাপড়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। উগান্ডার সেই বিস্ময়কর ইতিহাস ফিরে দেখার সময় এখন।
২ দিন আগে