একসময় ভারতের কাছে বাংলাদেশ ছিল কেবল কূটনৈতিক বা অর্থনৈতিক অংশীদার। কিন্তু সাম্প্রতিক গণ-অভ্যুত্থান ও বাংলাদেশের রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতি পশ্চিমবঙ্গ থেকে দিল্লি সর্বত্র নির্বাচনী কৌশলের কেন্দ্রে চলে এসেছে।
স্ট্রিম ডেস্ক
আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনামলে ভূ-রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিকভাবে বাংলাদেশ ভারতের সামনে একপ্রকার নতজানু অবস্থায়ই ছিল। সেসময় ভারত বাংলাদেশকে অনেকটা তার একটি করদরাজ্য হিসেবেই দেখত। কিন্তু গত বছর গণ-অভ্যুত্থানে পট পরিবর্তনের পর থেকে শুরু করে ভারতীয় রাজনীতির অঙ্গনে বাংলাদেশ এখন এক অভূত গুরুত্ব পাচ্ছে। বিশেষত পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে বারবারই আলোচনায় উঠে আসছে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি থেকে শুরু করে বিজেপি—সব দলই নানা সময়ে বাংলাদেশের পরিস্থিতিকে নিজেদের রাজনৈতিক কৌশলে ব্যবহার করছেন। যৌথ সীমান্ত, ভাষা ও সংস্কৃতির টানাপোড়েন এবং সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা মিলিয়ে এই ইস্যু ভারতের নির্বাচনী মাঠে এক বিশেষ মাত্রা তৈরি করেছে। মমতা ব্যানার্জির বিভিন্ন বক্তব্য, ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সঙ্গে তার বাগবিতণ্ডা এবং বাংলাভাষী মুসলমানদের বাংলাদেশে ‘পুশ ইন’ (বা পুশব্যাক) ইত্যাদি ঘটনা এই ইস্যুকে আরও জটিল করে তুলেছে।
ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব
ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ৪ হাজার ৯৬ কিলোমিটার লম্বা সীমান্ত রয়েছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে লম্বা যৌথ স্থলসীমান্তগুলোর একটি। এই সীমান্ত অভিবাসন, বাণিজ্য এবং নিরাপত্তা ইস্যুর কেন্দ্রবিন্দু। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সঙ্গে দেশটির যোগাযোগ রক্ষায়ও বাংলাদেশকে তাদের দরকার। কিন্তু অভিবাসন এবং সীমান্ত ‘অনুপ্রবেশ’ ভারতের রাজনীতিতে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ভারতের কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার প্রায়ই অভিযোগ করে যে বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অভিবাসীদের অনুপ্রবেশ পশ্চিমবঙ্গ এবং অন্যান্য রাজ্যের জনসংখ্যার ভারসাম্য নষ্ট করছে।
পশ্চিমবঙ্গে এই ইস্যু আরও স্পর্শকাতর কারণ রাজ্যের জনসংখ্যার একটি বড় অংশ বাংলাভাষী মুসলমান। তাদের অনেকে বাংলাদেশের সঙ্গে ঐতিহাসিক সংযোগ রাখেন। বিষয়টি সেখানে ভোটব্যাংক পলিটিক্সে পরিণত হয়েছে। বিজেপি এই বাংলাভাষী মুসলমানদের ‘অবৈধ অভিবাসী’ এবং ‘অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে হিন্দু ভোটারদের একত্রিত করার চেষ্টা করে। তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি) তাদের পাশে দাঁড়িয়ে মুসলিম ভোটারদের আকর্ষণ করে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বারবার অভিযোগ করেছেন, বিজেপি সীমান্ত ইস্যুকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করছে। বিশেষ করে ‘বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ’ বা ‘পুশ ইন’ বিতর্ককে ঘিরে বিজেপির বক্তব্য তিনি কঠোরভাবে প্রতিহত করেছেন। মমতার দাবি, বাংলাভাষী মুসলমানদের টার্গেট করে বিজেপি বিভাজনের রাজনীতি চালাচ্ছে।
এর মধ্যেই বাংলাদেশে যখন গণ-অভ্যুত্থান বা রাজনৈতিক সংঘাতের খবর ছড়ায়, তা বিজেপির হাতে নতুন অস্ত্র হিসেবে উঠে আসে। বিজেপির রাজনৈতিক প্রচারণায় বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরেই একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে আছে। কখনো অনুপ্রবেশ ইস্যু, কখনো ‘ঘর ওয়াপসি’ বা ‘এনআরসি’— সব ক্ষেত্রেই বাংলাদেশকে ব্যবহার করা হয়েছে ভারতের জনমনে ভয় ও বিভাজন তৈরির জন্য।
বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়লে বিজেপি সেটিকে প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরে বলে, ‘দেখুন, ওখান থেকে সমস্যা আসতে পারে।’ আবার সীমান্তে পুশ ইন ইস্যু নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সরকারের বিরোধ বিজেপির জন্য এক ধরনের রাজনৈতিক লাভের ক্ষেত্র তৈরি করে। এতে মমতা ব্যানার্জির অবস্থানও জটিল হয়ে পড়ে।
ভাষা, সংস্কৃতি ও পারিবারিক বন্ধনের কারণে সীমান্তের দুই বাংলার মানুষের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ। ফলে ঢাকার রাজনৈতিক টালমাটাল অবস্থা কলকাতা কিংবা পশ্চিমবঙ্গের জনমনে দ্রুত প্রতিফলিত হয়। তাই বাংলাদেশে গণ-অভ্যুত্থান বা বড় রাজনৈতিক অস্থিরতা হলে তার প্রভাব শুধু ঢাকায় সীমাবদ্ধ থাকে না। সীমান্ত পার হয়ে এ প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে পশ্চিমবঙ্গেও। উদ্বাস্তু আশঙ্কা থেকে শুরু করে সীমান্ত নিরাপত্তা, সব কিছুই তখন ভারতের নির্বাচনী ইস্যু হয়ে ওঠে। বিজেপি এটিকে জাতীয় নিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে উপস্থাপন করে। আর মমতা ব্যানার্জি মানবিকতা ও বাংলার সামাজিক বাস্তবতার দিকটি তুলে ধরলেও বাস্তব পদক্ষেপে কেন্দ্রীয় সরকার তথা বিজেপির সিদ্ধান্তের বাইরে যেতে পারেন না।
সবমিলিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতি ভারতের নির্বাচনী মাঠে এক ধরনের ছায়াযুদ্ধ তৈরি করছে। যে কারণে বলা যায়— ভারতের রাজনীতিতে বাংলাদেশ এখন কেবল কূটনৈতিক প্রতিবেশী নয় বরং সরাসরি নির্বাচনী কৌশলের অংশও হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশ নিয়ে মমতার বিভিন্ন বক্তব্য
গত বছর (২০২৪) বাংলাদেশে গণ-অভ্যুত্থান শুরু হয় জুলাই মাসে, যা আগস্টে শেখ হাসিনার সরকারকে পতনের দিকে নিয়ে যায়। এই সময় থেকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশের পরিস্থিতি, অভিবাসন, সংখ্যালঘু নিরাপত্তা এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে একাধিক বক্তব্য দিয়েছেন। তাঁর মন্তব্যগুলো প্রায়ই রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
২১ জুলাই ছাত্র-জনতার ওপর আওয়ামী সরকারের সহিংসতা চলাকালে মমতা বলেছিলেন, পড়শি দেশ থেকে কেউ আমাদের কাছে আশ্রয় চাইলে আমার তাকে ফিরিয়ে দেব না। সেসময় আওয়ামী লীগ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ মমতার এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান। হাসান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ থেকে কারো ছেড়ে চলে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।
এরপর ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের পর মমতা বলেন, ‘বাংলাদেশের সংকটে কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তকে আমরা সমর্থন করব। অন্তর্জাতিক বিষয়ে রাজ্য নয়, কেন্দ্রই সিদ্ধান্ত নেবে।’
ডিসেম্বরে হিন্দুদের ওপর কিছু হামলার ঘটনায় মমতা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বাংলাদেশের হিন্দুদের রক্ষা করা এবং যারা ভারতে ফিরতে চায় তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার কথা বলেন। এমনকি তিনি জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের প্রস্তাবও জানান বাংলাদেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে। এই বিষয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে জাতিসংঘের কাছে আহ্বান জানাতে বলেন। এর প্রতিবাদে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর কিছু হামলা নিয়ে ভারতের গণ-মাধ্যমে অতিরঞ্জিত করে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
পুশ ইন নিয়ে বিজেপি-মমতা বাগবিতণ্ডা
সম্প্রতি বিজেপি বাংলাদেশ ইস্যুকে জাতীয় নিরাপত্তা এবং অবৈধ অভিবাসনের সঙ্গে যুক্ত করে। ২০২৫-এর জুলাই-আগস্ট মাসে বিজেপির নেতারা বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য প্রধান সামিক ভট্টাচার্য অভিবাসন, জনসংখ্যা পরিবর্তন, ভোটার তালিকা পর্যালোচনা ইস্যুতে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গের ‘ওয়েস্ট বাংলাদেশ’ বা বাংলাদেশের মতো হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
বিজেপির অভিযোগ, মমতা সরকার অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের আশ্রয় দিয়ে রাজ্যের নিরাপত্তা বিপন্ন করছে। ২০২৪ সালে নতুন নাগরিকত্ব আইনের মাধ্যমে বিজেপি বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশ থেকে যাওয়া হিন্দু, শিখ এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু রিফিউজিদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু মুসলমানদের বাদ দেওয়া হয়েছে। বিজেপি মুসলমান অভিবাসীদের ‘অবৈধ’ হিসেবে চিহ্নিত করে।
এর ফলে বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলো থেকে বাংলাভাষী মুসলমানদের পশ্চিমবঙ্গে ফেরত পাঠানো সহ বাংলাদেশেও ‘পুশ ইন’ ঘটনা বাড়ছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) এক প্রতিবেদনে অভিযোগ করে, ভারতের বিজেপি সরকার বাংলাভাষী মুসলমানদের অবৈধভাবে বাংলাদেশে ঠেলে দিচ্ছে। ২০২৫-এর জুন মাসে আল জাজিরাও অভিযোগ করে, এই পুশব্যাকের ফলে অনেকে দুই দেশের মধ্যেই ‘বিদেশি’ হয়ে পড়ছেন, কারণ বাংলাদেশও তাদের স্বীকার করছে না।
বিজেপির সমর্থকরা একে অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ হিসেবে দেখে। কিন্তু সমালোচকরা বলেন, এটি ধর্মীয় বৈষম্যের উদাহরণ। মমতাও বিজেপি সরকারের এই আচরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানালে বিজেপি নেতারা পাল্টা আক্রমণ করেন।
বিজেপি নেতারা বলেন, মমতা সরকার বাংলাকে বাংলাদেশে পরিণত করছে। এমনকি বিজেপি যদি পশ্চিমবঙ্গের দিকে মনোযোগ না দেয়, তাহলে ভবিষ্যতে এটি বাংলাদেশের সঙ্গে মিশে যাবে। বিজেপি নেতারা বলেন, বাংলা ভাষা বলেও কিছু নেই, এটি বাংলাদেশি ভাষা। চলতি মাসের শুরুতে দিল্লি পুলিশের একটি চিঠিতেও বাংলাকে বাংলাদেশের জাতীয় ভাষা হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
মমতা বন্দোপাধ্যায় বিজেপি নেতাদের এসব মন্তব্যকে বাংলা ভাষার মর্যাদা ও সংস্কৃতির ওপর আঘাত হিসেবে দেখেন। আগস্টের শেষদিকে এক রাজনৈতিক সভায় মমতা বলেন, ‘এখানে নাকি সব বাংলাদেশ হয়ে গেছে। ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের পাশেই পাকিস্তান। পাকিস্তানেরও একটা পাঞ্জাব প্রদেশ রয়েছে। সেখানে তো ওরা বলে না পাঞ্জাব পাকিস্তান হয়ে গেছে। আমাদের পাশে বাংলাদেশ তো আমরা তৈরি করিনি। আমাদের ভাষা যদি এক হয়, আমরা কী করতে পারি?’ মমতা বিজেপির বিরুদ্ধে গরিব মানুষকে বাংলাদেশি আখ্যা দিয়ে অত্যাচারের অভিযোগও করেন।
মমতা আরও অভিযোগ করেন, ভোটার তালিকা থেকে নির্দিষ্ট কিছু সম্প্রদায়ের ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার উদ্দেশ্যে জরিপ চালাতে পশ্চিমবঙ্গে ৫০০টিরও বেশি দল মোতায়েন করেছে বিজেপি। আর এই কাজ করতে অর্থ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
মমতা বলেন, ‘প্রতিটি বাংলাভাষী নাগরিককে ‘বাংলাদেশি’ আখ্যা দিয়ে হয়রানি এবং দেশ থেকে বের করে দিতে আমরা দেব না।’ এসময় মমতা ভারতের জাতীয় সঙ্গীত এবং গানও যে বাংলা ভাষায় লেখা তা স্মরণ করিয়ে দেন।
বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ভারতের রাজনীতিতে, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে, একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে, যা ভূ-রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্কের জটিলতাকে আরও গভীর করেছে। গণ-অভ্যুত্থান এবং রাজনৈতিক সংঘাতের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ভারতের রাজনীতিতে একটি কেন্দ্রীয় ইস্যু হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। সীমান্ত, ভাষা ও সাংস্কৃতিক কারণে দুই বাংলার সম্পর্ক অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত, যা বাংলাদেশের অস্থিরতাকে ভারতের রাজনৈতিক কৌশলের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত করেছে। এই ছায়াযুদ্ধ ভবিষ্যতে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক এবং পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতিকে আরও প্রভাবিত করবে, যেখানে কূটনৈতিক ভারসাম্য ও সামাজিক সংহতি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, আনন্দবাজার ও টাইমস অব ইন্ডিয়া
আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনামলে ভূ-রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিকভাবে বাংলাদেশ ভারতের সামনে একপ্রকার নতজানু অবস্থায়ই ছিল। সেসময় ভারত বাংলাদেশকে অনেকটা তার একটি করদরাজ্য হিসেবেই দেখত। কিন্তু গত বছর গণ-অভ্যুত্থানে পট পরিবর্তনের পর থেকে শুরু করে ভারতীয় রাজনীতির অঙ্গনে বাংলাদেশ এখন এক অভূত গুরুত্ব পাচ্ছে। বিশেষত পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে বারবারই আলোচনায় উঠে আসছে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি থেকে শুরু করে বিজেপি—সব দলই নানা সময়ে বাংলাদেশের পরিস্থিতিকে নিজেদের রাজনৈতিক কৌশলে ব্যবহার করছেন। যৌথ সীমান্ত, ভাষা ও সংস্কৃতির টানাপোড়েন এবং সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা মিলিয়ে এই ইস্যু ভারতের নির্বাচনী মাঠে এক বিশেষ মাত্রা তৈরি করেছে। মমতা ব্যানার্জির বিভিন্ন বক্তব্য, ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সঙ্গে তার বাগবিতণ্ডা এবং বাংলাভাষী মুসলমানদের বাংলাদেশে ‘পুশ ইন’ (বা পুশব্যাক) ইত্যাদি ঘটনা এই ইস্যুকে আরও জটিল করে তুলেছে।
ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব
ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ৪ হাজার ৯৬ কিলোমিটার লম্বা সীমান্ত রয়েছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে লম্বা যৌথ স্থলসীমান্তগুলোর একটি। এই সীমান্ত অভিবাসন, বাণিজ্য এবং নিরাপত্তা ইস্যুর কেন্দ্রবিন্দু। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সঙ্গে দেশটির যোগাযোগ রক্ষায়ও বাংলাদেশকে তাদের দরকার। কিন্তু অভিবাসন এবং সীমান্ত ‘অনুপ্রবেশ’ ভারতের রাজনীতিতে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ভারতের কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার প্রায়ই অভিযোগ করে যে বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অভিবাসীদের অনুপ্রবেশ পশ্চিমবঙ্গ এবং অন্যান্য রাজ্যের জনসংখ্যার ভারসাম্য নষ্ট করছে।
পশ্চিমবঙ্গে এই ইস্যু আরও স্পর্শকাতর কারণ রাজ্যের জনসংখ্যার একটি বড় অংশ বাংলাভাষী মুসলমান। তাদের অনেকে বাংলাদেশের সঙ্গে ঐতিহাসিক সংযোগ রাখেন। বিষয়টি সেখানে ভোটব্যাংক পলিটিক্সে পরিণত হয়েছে। বিজেপি এই বাংলাভাষী মুসলমানদের ‘অবৈধ অভিবাসী’ এবং ‘অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে হিন্দু ভোটারদের একত্রিত করার চেষ্টা করে। তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি) তাদের পাশে দাঁড়িয়ে মুসলিম ভোটারদের আকর্ষণ করে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বারবার অভিযোগ করেছেন, বিজেপি সীমান্ত ইস্যুকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করছে। বিশেষ করে ‘বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ’ বা ‘পুশ ইন’ বিতর্ককে ঘিরে বিজেপির বক্তব্য তিনি কঠোরভাবে প্রতিহত করেছেন। মমতার দাবি, বাংলাভাষী মুসলমানদের টার্গেট করে বিজেপি বিভাজনের রাজনীতি চালাচ্ছে।
এর মধ্যেই বাংলাদেশে যখন গণ-অভ্যুত্থান বা রাজনৈতিক সংঘাতের খবর ছড়ায়, তা বিজেপির হাতে নতুন অস্ত্র হিসেবে উঠে আসে। বিজেপির রাজনৈতিক প্রচারণায় বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরেই একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে আছে। কখনো অনুপ্রবেশ ইস্যু, কখনো ‘ঘর ওয়াপসি’ বা ‘এনআরসি’— সব ক্ষেত্রেই বাংলাদেশকে ব্যবহার করা হয়েছে ভারতের জনমনে ভয় ও বিভাজন তৈরির জন্য।
বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়লে বিজেপি সেটিকে প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরে বলে, ‘দেখুন, ওখান থেকে সমস্যা আসতে পারে।’ আবার সীমান্তে পুশ ইন ইস্যু নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সরকারের বিরোধ বিজেপির জন্য এক ধরনের রাজনৈতিক লাভের ক্ষেত্র তৈরি করে। এতে মমতা ব্যানার্জির অবস্থানও জটিল হয়ে পড়ে।
ভাষা, সংস্কৃতি ও পারিবারিক বন্ধনের কারণে সীমান্তের দুই বাংলার মানুষের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ। ফলে ঢাকার রাজনৈতিক টালমাটাল অবস্থা কলকাতা কিংবা পশ্চিমবঙ্গের জনমনে দ্রুত প্রতিফলিত হয়। তাই বাংলাদেশে গণ-অভ্যুত্থান বা বড় রাজনৈতিক অস্থিরতা হলে তার প্রভাব শুধু ঢাকায় সীমাবদ্ধ থাকে না। সীমান্ত পার হয়ে এ প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে পশ্চিমবঙ্গেও। উদ্বাস্তু আশঙ্কা থেকে শুরু করে সীমান্ত নিরাপত্তা, সব কিছুই তখন ভারতের নির্বাচনী ইস্যু হয়ে ওঠে। বিজেপি এটিকে জাতীয় নিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে উপস্থাপন করে। আর মমতা ব্যানার্জি মানবিকতা ও বাংলার সামাজিক বাস্তবতার দিকটি তুলে ধরলেও বাস্তব পদক্ষেপে কেন্দ্রীয় সরকার তথা বিজেপির সিদ্ধান্তের বাইরে যেতে পারেন না।
সবমিলিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতি ভারতের নির্বাচনী মাঠে এক ধরনের ছায়াযুদ্ধ তৈরি করছে। যে কারণে বলা যায়— ভারতের রাজনীতিতে বাংলাদেশ এখন কেবল কূটনৈতিক প্রতিবেশী নয় বরং সরাসরি নির্বাচনী কৌশলের অংশও হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশ নিয়ে মমতার বিভিন্ন বক্তব্য
গত বছর (২০২৪) বাংলাদেশে গণ-অভ্যুত্থান শুরু হয় জুলাই মাসে, যা আগস্টে শেখ হাসিনার সরকারকে পতনের দিকে নিয়ে যায়। এই সময় থেকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশের পরিস্থিতি, অভিবাসন, সংখ্যালঘু নিরাপত্তা এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে একাধিক বক্তব্য দিয়েছেন। তাঁর মন্তব্যগুলো প্রায়ই রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
২১ জুলাই ছাত্র-জনতার ওপর আওয়ামী সরকারের সহিংসতা চলাকালে মমতা বলেছিলেন, পড়শি দেশ থেকে কেউ আমাদের কাছে আশ্রয় চাইলে আমার তাকে ফিরিয়ে দেব না। সেসময় আওয়ামী লীগ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ মমতার এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান। হাসান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ থেকে কারো ছেড়ে চলে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।
এরপর ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের পর মমতা বলেন, ‘বাংলাদেশের সংকটে কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তকে আমরা সমর্থন করব। অন্তর্জাতিক বিষয়ে রাজ্য নয়, কেন্দ্রই সিদ্ধান্ত নেবে।’
ডিসেম্বরে হিন্দুদের ওপর কিছু হামলার ঘটনায় মমতা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বাংলাদেশের হিন্দুদের রক্ষা করা এবং যারা ভারতে ফিরতে চায় তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার কথা বলেন। এমনকি তিনি জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের প্রস্তাবও জানান বাংলাদেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে। এই বিষয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে জাতিসংঘের কাছে আহ্বান জানাতে বলেন। এর প্রতিবাদে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর কিছু হামলা নিয়ে ভারতের গণ-মাধ্যমে অতিরঞ্জিত করে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
পুশ ইন নিয়ে বিজেপি-মমতা বাগবিতণ্ডা
সম্প্রতি বিজেপি বাংলাদেশ ইস্যুকে জাতীয় নিরাপত্তা এবং অবৈধ অভিবাসনের সঙ্গে যুক্ত করে। ২০২৫-এর জুলাই-আগস্ট মাসে বিজেপির নেতারা বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য প্রধান সামিক ভট্টাচার্য অভিবাসন, জনসংখ্যা পরিবর্তন, ভোটার তালিকা পর্যালোচনা ইস্যুতে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গের ‘ওয়েস্ট বাংলাদেশ’ বা বাংলাদেশের মতো হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
বিজেপির অভিযোগ, মমতা সরকার অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের আশ্রয় দিয়ে রাজ্যের নিরাপত্তা বিপন্ন করছে। ২০২৪ সালে নতুন নাগরিকত্ব আইনের মাধ্যমে বিজেপি বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশ থেকে যাওয়া হিন্দু, শিখ এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু রিফিউজিদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু মুসলমানদের বাদ দেওয়া হয়েছে। বিজেপি মুসলমান অভিবাসীদের ‘অবৈধ’ হিসেবে চিহ্নিত করে।
এর ফলে বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলো থেকে বাংলাভাষী মুসলমানদের পশ্চিমবঙ্গে ফেরত পাঠানো সহ বাংলাদেশেও ‘পুশ ইন’ ঘটনা বাড়ছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) এক প্রতিবেদনে অভিযোগ করে, ভারতের বিজেপি সরকার বাংলাভাষী মুসলমানদের অবৈধভাবে বাংলাদেশে ঠেলে দিচ্ছে। ২০২৫-এর জুন মাসে আল জাজিরাও অভিযোগ করে, এই পুশব্যাকের ফলে অনেকে দুই দেশের মধ্যেই ‘বিদেশি’ হয়ে পড়ছেন, কারণ বাংলাদেশও তাদের স্বীকার করছে না।
বিজেপির সমর্থকরা একে অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ হিসেবে দেখে। কিন্তু সমালোচকরা বলেন, এটি ধর্মীয় বৈষম্যের উদাহরণ। মমতাও বিজেপি সরকারের এই আচরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানালে বিজেপি নেতারা পাল্টা আক্রমণ করেন।
বিজেপি নেতারা বলেন, মমতা সরকার বাংলাকে বাংলাদেশে পরিণত করছে। এমনকি বিজেপি যদি পশ্চিমবঙ্গের দিকে মনোযোগ না দেয়, তাহলে ভবিষ্যতে এটি বাংলাদেশের সঙ্গে মিশে যাবে। বিজেপি নেতারা বলেন, বাংলা ভাষা বলেও কিছু নেই, এটি বাংলাদেশি ভাষা। চলতি মাসের শুরুতে দিল্লি পুলিশের একটি চিঠিতেও বাংলাকে বাংলাদেশের জাতীয় ভাষা হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
মমতা বন্দোপাধ্যায় বিজেপি নেতাদের এসব মন্তব্যকে বাংলা ভাষার মর্যাদা ও সংস্কৃতির ওপর আঘাত হিসেবে দেখেন। আগস্টের শেষদিকে এক রাজনৈতিক সভায় মমতা বলেন, ‘এখানে নাকি সব বাংলাদেশ হয়ে গেছে। ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের পাশেই পাকিস্তান। পাকিস্তানেরও একটা পাঞ্জাব প্রদেশ রয়েছে। সেখানে তো ওরা বলে না পাঞ্জাব পাকিস্তান হয়ে গেছে। আমাদের পাশে বাংলাদেশ তো আমরা তৈরি করিনি। আমাদের ভাষা যদি এক হয়, আমরা কী করতে পারি?’ মমতা বিজেপির বিরুদ্ধে গরিব মানুষকে বাংলাদেশি আখ্যা দিয়ে অত্যাচারের অভিযোগও করেন।
মমতা আরও অভিযোগ করেন, ভোটার তালিকা থেকে নির্দিষ্ট কিছু সম্প্রদায়ের ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার উদ্দেশ্যে জরিপ চালাতে পশ্চিমবঙ্গে ৫০০টিরও বেশি দল মোতায়েন করেছে বিজেপি। আর এই কাজ করতে অর্থ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
মমতা বলেন, ‘প্রতিটি বাংলাভাষী নাগরিককে ‘বাংলাদেশি’ আখ্যা দিয়ে হয়রানি এবং দেশ থেকে বের করে দিতে আমরা দেব না।’ এসময় মমতা ভারতের জাতীয় সঙ্গীত এবং গানও যে বাংলা ভাষায় লেখা তা স্মরণ করিয়ে দেন।
বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ভারতের রাজনীতিতে, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে, একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে, যা ভূ-রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্কের জটিলতাকে আরও গভীর করেছে। গণ-অভ্যুত্থান এবং রাজনৈতিক সংঘাতের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ভারতের রাজনীতিতে একটি কেন্দ্রীয় ইস্যু হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। সীমান্ত, ভাষা ও সাংস্কৃতিক কারণে দুই বাংলার সম্পর্ক অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত, যা বাংলাদেশের অস্থিরতাকে ভারতের রাজনৈতিক কৌশলের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত করেছে। এই ছায়াযুদ্ধ ভবিষ্যতে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক এবং পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতিকে আরও প্রভাবিত করবে, যেখানে কূটনৈতিক ভারসাম্য ও সামাজিক সংহতি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, আনন্দবাজার ও টাইমস অব ইন্ডিয়া
কেফিয়ায় মুখ ঢেকে গণমাধ্যমে আসেন তিনি। তাঁকে নিয়ে রচিত হয়েছে বহু গান। যার একটি, ‘হে আবু উবায়দা, তোমার ইচ্ছাশক্তি দৃঢ়, তোমার কথাই বুলেটের গুলি’। তিনি আবু উবায়দা। বহু ফিলিস্তিনি বীরের মতো তিনিও শহীদ হয়েছেন। তাঁকে নিয়ে লিখেছেন সালেহ ফুয়াদ।
৭ ঘণ্টা আগেদেশের তিনটি প্রতিনিধিত্বশীল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অন্তবর্তী সরকার প্রধানের এ সংলাপ গণতন্ত্রের জন্য অবশ্যই একটি আশার বার্তা দিচ্ছে। অন্তত এটি দেখাতে পারছে যে সব পক্ষ মিলে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার ইচ্ছা তাদের রয়েছে।
১১ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের রাজনীতি বর্তমানে এক সংকটময় পরিস্থিতিতে এসে দাঁড়িয়েছে। জুলাই জাতীয় সনদের বাস্তবায়নসহ বেশ কিছু সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তীব্র মতবিরোধ এবং সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে।
১ দিন আগেগত ২৩ আগস্ট পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ঢাকায় সফর করেন। বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্কের সাম্প্রতিক এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তকে ইসলামাবাদ ‘ঐতিহাসিক’ ও ‘একটি তাৎপর্যপূর্ণ মাইলফলক’ হিসেবে বর্ণনা করে। ২০১২ সালের পর এটাই ছিল দুই দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ের আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ।
২ দিন আগে