leadT1ad

আনিসার খালা বললেন

‘এইচএসসি নয়, ওর প্রথম পরীক্ষা ছিল মাকে বাঁচানো’

মো. ইসতিয়াক
প্রকাশ : ২৭ জুন ২০২৫, ১৮: ৩০
আপডেট : ২৭ জুন ২০২৫, ১৯: ০৪
স্ট্রিম গ্রাফিক

চলতি বছরের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছে গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন)। তবে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে পরীক্ষার প্রথম দিনেই ঘটে যায় এক হৃদয়বিদারক ঘটনা। এটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোড়ন তোলে। আনিসা নামের এক শিক্ষার্থীর মায়ের স্ট্রোকের কারণে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছাতে দেরি হওয়ায় পরীক্ষায় অংশ নিতে দেওয়া হয়নি তাঁকে।

প্রায় দেড় ঘণ্টা পর সরকারি মিরপুর বাঙলা কলেজ কেন্দ্রে এসে পৌঁছান আনিসা। ততক্ষণে শুরু হয়ে গেছে এইচএইচসি পরীক্ষা। তাই নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ায় পরীক্ষাকক্ষে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি তাঁকে। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন আনিসা। অনেকক্ষণ গেটের বাইরে অপেক্ষার পর হতাশ হয়ে ফিরে যান তিনি।

মুহূর্তেই সেই দৃশ্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং তা ঘিরে তৈরি হয় তীব্র ক্ষোভ ও সহানুভূতি।

আনিসার খালা যা বললেন

এই প্রেক্ষাপটে আজ দুপুরে স্ট্রিম যোগাযোগ করে আনিসার পরিবারের সঙ্গে। আনিসার খালা স্ট্রিমকে জানান, ‘মেয়েটির পাশে দাঁড়ানোর মতো পরিবারে আর কেউ নেই। তাই তাঁকে একাই মাকে নিয়ে যেতে হয় হাসপাতালে। চিকিৎসা শেষে সে ছুটে আসে পরীক্ষা দিতে। কিন্তু তাঁকে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতেই দেওয়া হয়নি। মেয়েটা অনেক কষ্টে নিজের দায়িত্ব পালন করেছে।’

আনিসার খালা আরও বলেন, ‘এইচএসসি পরীক্ষা নয়, তার প্রথম পরীক্ষা ছিল মাকে বাঁচানো। সে তার এই দায়িত্ব ঠিকভাবেই পালন করেছে।’

নেটিজেনদের প্রতিবাদ

আনিসার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর গতকাল (২৬ জুন) সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক—সবার কণ্ঠে ফুটে ওঠে এক সুর, মেয়েটা তো ইচ্ছা করে দেরি করেনি। তাঁর জন্য নিয়ম শিথিল করা হোক।

ফেসবুকে একজন অভিভাবক মন্তব্য করেন, ‘মা স্ট্রোকে আক্রান্ত, সে-ই মাকে হাসপাতালে রেখে এসেছে। এর চেয়ে বড় পরীক্ষা আর কী হতে পারে? ওকে সুযোগ দেওয়া যেত।’

এই ঘটনায় রাতেই নিজের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল লেখেন, ‘আমি বিশ্বাস করি শিক্ষা বোর্ড ও শিক্ষা উপদেষ্টা মানবিক বিবেচনায় তার পরীক্ষার ব্যবস্থা করবে। যেন মেয়েটিকে আদালতের দ্বারস্থ হতে না হয়।’

শিক্ষা উপদেষ্টার আশ্বাস

আজ (২৭ জুন) বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরারকে উদ্ধৃত করে প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে একটি পোস্ট দেওয়া হয়। পোস্টে বলা হয়, ‘মানবিক বিবেচনায় ওই শিক্ষার্থীর বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি পাবলিক পরীক্ষা গ্রহণসংক্রান্ত আইন ও বিধির আলোকে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। তার এ দুঃসময়ে আমরাও সমব্যথী। এ পরীক্ষার্থীকে উদ্বিগ্ন না হওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।’

Ad 300x250

সম্পর্কিত