আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি—দুই দলই গণতন্ত্র হত্যাকারী বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা ও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ দেশের গণতন্ত্রকে ধারালো ছুরি দিয়ে জবাই করেছিল।’
আজ বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ৯০-এর ছাত্র গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ডা. শামসুল আলম খান মিলনের ৩৫তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
রিজভী আরও বলেন, শেখ হাসিনা ও এরশাদ একনায়কতন্ত্র কায়েম করে সবকিছু কুক্ষিগত করেছিল। কারণ এক নায়কদের কোনো আইন-বিচার লাগে না। যা মন চায়, সেটিই করে। তবে চূড়ান্ত পরিণতির কথা এরা কেউই ভাবেনি। সেজন্যই শেখ হাসিনা আজ শত-শত খুনের মামলায় ফাঁসির আসামি। দেশ থেকে পলাতক।
বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশে গণতন্ত্র বারবার হোঁচট খেয়েছে। একসময় জাতীয় পার্টি এরশাদের নেতৃত্বে ৯ বছর স্বৈরতন্ত্র কায়েম করেছিল। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, ৮৬-তে এরশাদের অধীনে নির্বাচনে গিয়ে শেখ হাসিনা এরশাদের স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থাকে সমর্থন দিয়েছিল। ঠিক তেমনি গত প্রায় ১৬ বছর শেখ হাসিনা যে স্বৈরতন্ত্র কায়েম করেছিল, তাতে সমর্থন দিয়েছিল জাতীয় পার্টি। মূলত জাতীয় পার্টির কারণেই শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী আমল এত দীর্ঘ হয়েছে।
বিএনপির জেষ্ঠ্য যুগ্ম মহাসচিব শেখ হাসিনার দুর্নীতির সমালোচনা করে বলেন, ব্যাংকের ভল্টে শেখ হাসিনার ৮৩২ ভরি স্বর্ণ পাওয়া গেছে। এটি প্রমাণ করে যে, সে কত বড় দুর্নীতিবাজ। মিথ্যা তথ্য দিয়ে নিজেসহ পরিবারের সদস্যদের নামে প্লট বরাদ্দ নিয়েছে। সেই মামলার রায়ে ২১ বছরের সাজা হয়েছে। শেখ হাসিনার আমলে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করা হয়েছে। বর্তমানে খেলাপি ঋণ ছয় লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
হাসিনার রায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দেওয়া রায়ে আদালতকে প্রভাবিত করার কোনো ঘটনা ঘটেনি। নিজের গড়া ট্রাইবুনালে শেখ হাসিনার বিচার হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের সময় আদালতে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই।
এরশাদবিরোধী আন্দোলনে ড. মিলনের ভূমিকা তুলে ধরে রিজভী বলেন, মিলন হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়েই এরশাদের পতন ত্বরান্বিত হয়। তাই মিলনের এই আত্মত্যাগ দেশবাসী কখনোই ভুলবে না।