স্ট্রিম প্রতিবেদক
শিবিরের যেসব কর্মী নিজেদের পরিচয় গোপন করে হলে থাতেন, তাঁরা নিজেদের পরিচয় লুকাতে অতি উৎসাহী ভূমিকা নিতেন। নিজেদের ছাত্রলীগ প্রমাণ করতে ছাত্রলীগের সঙ্গে নির্যাতনে শামিল হতেন এবং ‘ছাত্রলীগের কালচার’ চর্চা করতেন। সেইসব অপরাধীরা এখন বহাল তবিয়তে আছেন আছেন শিবিরের বড় পদে।
কারও কারও দায়মুক্তি নিশ্চিত করতে ও মামলার বাইরে রাখতে চেষ্টা করছেন শিবিরের নেতারা। এসব নিয়ে ফেসবুকে বিস্তারিত লিখেছেন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবদুল কাদের। নাম পরিচয় উল্লেখ করেছেন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত এমন বেশ কয়েকজনের।
গতকাল রোববার (৩ আগস্ট) রাতে ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেন আবদুল কাদের।
আবদুল কাদের আওয়ামী লীগ আমলে ছাত্রলীগের হয়ে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন–নিপীড়নের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন হলের বেশ কয়েকজনকে ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করেছেন। নির্যাতনে অংশ নেওয়া ওই নেতা-কর্মীদের রক্ষা করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে কাদের বলেন, ‘হলে থাকার কারণে শিবিরের যে ছেলেগুলা সক্রিয়ভাবে ছাত্রলীগ করতো, তারা মূলত আইডেন্টেটি ক্রাইসিস থেকে উৎরানোর জন্য কিছু ক্ষেত্রে অতি উৎসাহী কর্মকাণ্ডে জড়াতো। সেটা কেবল নিজেকে লীগার প্রমাণের দায় থেকে। লীগ যে নিপীড়ন-নির্যাতন চালাতো তারা সেগুলার অংশীদার হতো, লীগের কালচার-ই চর্চা করত। আমার এই কথাটা অস্বীকার করার সুযোগ নাই, ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি তো এমন ছিল।’
কয়েক জনের নাম পরিচয় প্রকাশ করে আব্দুল কাদের তাঁর ফেসবুক স্ট্যাটাসে আরও লেখেন, ‘আমি বলেছি, শিবির করে আসা ছেলেরা নিজেকে ছাত্রলীগার প্রমাণ করার জন্য ক্ষেত্রবিশেষ উগ্রবাদী ছিল। ২৩ সালের ২২ জানুয়ারি রাতে বিজয় একাত্তর হলের শাহরিয়াদ নামে ১৯-২০ সেশনের একজন শিক্ষার্থীকে রাতভর মারধর করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সেখানে নেতৃত্বে ছিলেন মাজেদুর রহমান নামে একজন। যিনি আমার পাশের এলাকার। একই মাদ্রাসায় পড়ার সুবাদে জানতাম, তিনি ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত। ক্যাম্পাসে এসে বনে গেলেন ভয়ংকর নিপীড়ক, নির্যাতক!
ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সর্বশেষ কমিটির দপ্তর সম্পাদক ২০১৭-১৮ সেশনের মুসাদ্দিক বিল্লাহ, আমার জেলার। যার পরিবার জামাত, যিনি শিবিরের সাথী ছিলেন; কিন্তু পদপদবীর জন্য তিনি হয়ে গেলেন কট্টর ছাত্রলীগ। ইতিপূর্বে কোনো কমিটিতে না থেকেও তিনি সরাসরি ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক পদ ভাগিয়ে নেন। তাহলে চিন্তা করেন, তাকে কতটা বিশ্বস্ততার পরিচয় দিতে হইছে, কতটা ছাত্রলীগের চরিত্র ধারণ করতে হইছে!’
ওই স্ট্যাটাসে কাদের আরও বলেন, ‘জসীমউদ্দিন হলের ১৬-১৭ সেশনের আফজালুন নাঈম। গেস্টরুমে তার দুর্ব্যবহার, নিপীড়নের জ্বালায় হলের ছেলেরা অতিষ্ঠ ছিল। নাঈমের দুর্ব্যবহারের কথা হলের ছেলেদের মুখে মুখে। অথচ এই নাঈম এখন জামাত শিবিরের আইকন শিশির মুনিরের বিশেষ সহকারী!
‘মুজিব হলের জুনিয়রদের কাছে এক ত্রাসের নাম ছিল ১৬-১৭ সেশনের ইলিয়াস হোসাইন। সঞ্জিতের রাজনীতি করত ইলিয়াস, হল ক্যান্ডিডেট ছিল।
মিছিল মিটিং এ যাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদেরকে সর্বোচ্চ ফোর্স করতো, গেস্টরুমে অসহ্যকর মেন্টাল টর্চার করতো, ছাত্রলীগের পদও পেয়েছিল। ৫-ই আগস্ট পরবর্তীতে এই ইলিয়াস শিবিরের বড় নেতা হিসেবে আবির্ভূত হলো, চলাফেরা করেন এখন শিবিরের ইমামদের সাথে!’
যে শিবির কর্মীরা নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাঁদের অপরাধ আড়াল করতে শিবির ও জামায়াতের নেতারা সক্রিয় ভূমিকার অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘২০১৭ সালে হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলে ইসলামিক পেজে লাইক দেওয়ায় শিবির সন্দেহে পাঁচ শিক্ষার্থীকে রাতভর ভয়াবহ নির্যাতনের মাধ্যমে রক্তাক্ত করে হল ছাড়া করা হয়। এ ঘটনায় ১৩ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। মুহসীন হলের সাবেক ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক মো. শাহাদাত হোসেন ওরফে সোহেল ভুক্তভোগীর মোবাইল চ্যাক করেন এবং সাথে সাথেই অতর্কিত হামলা চালান। এই শাহাদাত আবার শিবির হিসেবে সর্বমহলে পরিচিত ছিল। চব্বিশ সালের সেপ্টেম্বরে এই মামলা হওয়ার পরে শাহাদাতকে নিয়ে একজন পোস্ট করেন। পরবর্তীতে ঐ পোস্টকারীর সাথে শিবিরের তৎকালীন সভাপতি সাদিক কায়েম যোগাযোগ করেন। শাহাদাৎ ভালো মানুষ, তাকে যেনো এসবের সাথে না জড়ায়!’
আবদুল কাদের আরও কয়েকজনের পরিচয় দিয়ে লেখেন, ‘ছাত্রলীগের হল ক্যান্ডিডেটদের পেছনে আবার কিছু গুপ্ত শিবির থাকতো। এরা তেলবাজি আর চাটুকারিতায় ছিল অনন্য। এরা সবকিছু আগ বাড়িয়ে আনজাম দিতো। ভাই কখন কোথায় আসবে, কখন ভাইটাল প্রোগ্রাম, সেটার তাগিদ দিয়ে, জোরপূর্বক ছেলেপেলেদেরকে হাজির করার দায়িত্ব নিতো এই প্রকৃতির শিবিররা।
‘এমন কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা একজন হচ্ছে জহু হলের ২১-২২ সেশনের হাসানুল বান্না, যিনি ৫-ই আগস্টের পরে শিবিরের সদস্য সম্মলনে গিয়ে নিজেকে সদস্য হিসেবে প্রকাশ করেন। আবার এই বান্না এখন শিবিরের জহু হল শাখার বড় নেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন।
‘আরেকজন আছেন এমন। এফ রহমান হলের ১৮-১৯ সেশনের রায়হান উদ্দিন। যে ছাত্রলীগের এক্টিভ কর্মী ছিলেন। মেধাবী হওয়ার দরুন হল ক্যান্ডিডেটের বক্তব্যগুলা যিনি নিজে লিখে দিতেন, সারাক্ষণ ক্যান্ডিডেটের আগেপিছে থাকতেন, কাউকে ভিড়তে দিতেন না। এফ রহমানের হলের কুখ্যাত ছাত্রলীগ সভাপতি রিয়াজের একনিষ্ঠ অনুসারী এই রায়হান ৫ তারিখের পরে শিবিরের বড় নেতা হিসেবে হাজির হয়েছেন। আগের ফেসবুক আইডি বাদ দিয়ে এখন নতুন আইডি চালান। তবে আগের আইডি এবং তার কৃতকর্ম মুছে ফেলতে পারেন নাই। এখনো আছে।’
যাঁরা সরাসরি নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত তাঁদের নামে মামলা করার কথা থাকলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার শিবিরের সাবেক সভাপতি সাদিক কায়েম ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত থাকা ও নির্যাতনে অংশ নেওয়া শিবিরের কর্মীদের রক্ষা করছেন বলে অভিযোগ তুলে আব্দুল কাদের লেখেন—
‘৫ তারিখের পরে শিবিরের যে সকল ছেলেপেলে ছাত্রলীগের ভেতরে থেকে ছাত্রলীগের মতো আচরণ করেছে, তাদেরকে আইনের আওতায় আনার বিষয়ে জনাব সাদিক কায়েমের সাথে আমার আলাপ হয়। ৫ তারিখের পরে হলে হলে, ছাত্রলীগের নিপীড়কদের লিস্ট হচ্ছিল। একদিন ফোনে এই বিষয়ে কথা বলার প্রেক্ষিতে সাদিক ভাইকে জিজ্ঞেস করলাম, একাত্তর হলের হাসান সাঈদী, এফ রহমানের তানভীর হাসান শান্তের মতো শিবিরের যারা লীগের আমলে অপকর্ম করছে, তাদেরকে মামলা দিবেন না? প্রতিত্তোরে উনি বললেন, তোমরা দাও।
আমি বললাম, ‘‘আমরা আর তোমরা দেওয়ার কি আছে! লিস্ট তো আমরা আপনারা মিলেই করতেছি।’’ এই বিষয়ে সাদিক ভাইয়ের সাথে বাকবিতণ্ডা হয়; কিন্তু শেষে আর হাসান সাঈদী কিংবা শান্তদের নাম মামলার তালিকায় উঠলো না!
এই সাঈদি ছিল শিবিরের সাথী। পরে একাত্তর হল ছাত্রলীগের সাথে জড়িয়ে গেছে। এমন কোনো অপকর্ম নাই যে সে করে নাই। ও একাত্তর হলের কুখ্যাত সন্ত্রাসী আবু ইউনুসের রাজনীতি করতো। শিবির সংশ্লিষ্টতার কারণে তারে পোস্ট পদবি দেয়নি দীর্ঘদিন। সে হতাশায় আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল। নিজেকে লীগার প্রমাণ করার জন্য সে আরো উগ্রো পন্থা বেচে নিল। একে তো শিবির সংশ্লিষ্টতা, তার উপর নিজের নাম সাঈদী হওয়ার কারণে পদ পদবী পাচ্ছে না, সেজন্য কাগজপত্রে নাম পরিবর্তন করে সাঈদ বানিয়েছেন তিনি! অবশেষে সে হীন কর্মকাণ্ডের মধ্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ, একাত্তর হল ছাত্রলীগের উপ দপ্তর সম্পাদক হয়। তারপর সৈকতের রাজনীতি করা শুরু করে, হল ক্যান্ডিডেট ছিল।
চব্বিশ সালের ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে এই সাঈদি সহ আরো কয়েকজন ছাত্রলীগার মিলে দুইজন ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে নিয়ে এসে মুহসীন হলে ৩ দিন ধরে আটকে রাখেন। ঐ ঘটনায় সাঈদী গ্রেপ্তার হয়, বহিষ্কৃতও হয় ছাত্রলীগ থেকে। কিন্তু বের হয়ে সে তার অপকর্ম এবং ছাত্রলীগের রাজনীতি চালিয়ে যায়। জুলাইয়ের ১৫ তারিখে ছাত্রলীগের হামলায় আহত হওয়া শিক্ষার্থীরা ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে গেলে সাঈদী সেখানে গিয়েও আহতদের উপর হামলা করে! যার ভিডিও ফুটেজ এখনো আছে। অথচ এই সাঈদি ৫ তারিখের পরে আইনের আওতার বাহিরে ছিল,ফেসবুকে শিবিরের গুণগান গাওয়া শুরু করে দিয়েছিল।
এরপর সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় সাঈদি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। সাঈদি FBS এর ফাইন্যান্স ডিপার্ট্মেন্টের শিক্ষার্থী; কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে ক্যাম্পাসের বাহিরে লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা দেওয়ানোর ব্যবস্থা করে। সেখানকার শিক্ষার্থীরা দেখে ফেলার পরে তারা এই সাঈদীকে আটক করে। কিন্তু সাঈদীকে আটক করার পরে শিক্ষার্থীদের কাছে শিবিরের তৎকালীন ঢাবি সভাপতি সাদিক কায়েম ফোন দিয়ে তদবির করেন, যেনো সাঈদিকে ছেড়ে দেওয়া হয়!
শিক্ষার্থীরা সাদিক কায়েমের তদবির শুনেন নাই, থানায় নিয়ে আসে সাঈদীকে। থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাও মামলা নিতে চান না। ঐ সময়টাতে শিবিরের আরেক দায়িত্বশীলও নাকি প্রক্টরের সাথেও একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছেন। নিজ এলাকার, নিজ সংগঠনের সাঈদীকে বাঁচানোর জন্য৷ অবশেষে শিক্ষার্থীদের অনমনীয়তার মুখে সাঈদীকে মামলার আওতায় নেয় থানা পুলিশ। কিন্তু এই সাঈদী সবাইকে অবাক করে দিয়ে এক সপ্তাহের মাথায় জেল থেকে বের হয়ে আসে! অথচ জুলাইয়ের মামলার আসামীর নাকি জামিন হয় না সহজে! তাহলে চিন্তা করলাম, এদের লিংক লবিং কোন পর্যায়ে!’
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত শিবির কর্মীদের মামলার বাইরে রাখা হচ্ছে উল্লেখ করে আব্দুল কাদের লেখেন—
‘ছাত্রলীগের ভিতরে ঢুকে ছাত্রলীগের কালচার চর্চা করা এমন গুপ্ত শিবিরের সংখ্যা কিন্তু কম ছিল না।
৫-ই আগস্টের পরে হলে হলে ব্যাচ প্রতিনিধি হয়, শৃঙ্খলা কমিটি হয়, এটা কার প্রেসক্রিপশনে হয়, সেটা প্রতিনিধিদের রাজনৈতিক পরিচয় দেখলেই বুঝা যায়। ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে অনলাইনে ভোটাভুটি করে অধিকাংশ ব্যাচ প্রতিনিধি শিবির নিজেদের লোকজনকে নির্বাচিত করে। এই ব্যাচ প্রতিনিধিরাই পরবর্তীতে সর্বেসর্বা হয়ে উঠে, একপ্রকার ছায়া প্রশাসন হিসেবে হলে ফাংশন করে। এই ব্যাচ প্রতিনিধিরাই আবার ৫ তারিখে পরে ছাত্রলীগের নাম তালিকা তৈরির দায়িত্ব নেয়। স্বাভাবিকভাবেই তারা নিজেদের সাথী ভাইদেরকে তালিকার বাহিরে রাখে।
‘৫- ই আগস্টের পরে জুলাইয়ের ঘটনার প্রেক্ষিতে দুইটা মামলা হয়। মাহিম সরকার এবং আরমান হোসেন বাদী হয়ে এই দুইটা মামলা করেন। এই দুই মামলার বাদীর সাথেই শিবিরের সাদিক কায়েম সরাসরি দেখা করে কয়েকজন ব্যক্তির ব্যাপারে তদবির করেন। মাহিন এবং আরমানকে একটা তালিকাও দেন , যেনো এই ব্যক্তিগুলার নাম মামলা থেকে কেটে দেয়, সেই বিষয়ে সাদিক কায়েম সরাসরি তদবির করেন। আরমান পরবর্তীতে খোঁজ নিয়ে দেখেন, সাদিক কায়েম যে নামগুলা দিছেন, তারা শিবিরের সাথে সংশ্লিষ্ট। এরমধ্যে একজম আসামী আরমানের কাছে স্বীকারও করছেন, তিনি শিবির করেন, তার নাম যেনো মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়!
‘জুলাইয়ের অঙ্গীকার রক্ষা করা যায় নাই এই তদবির কাণ্ডের কারণে, সবাই সবার দলীয় মানুষজনকে বাঁচিয়ে দিতে গিয়ে জুলাইয়ের সন্ত্রাসীদেরকে মুক্তি দিয়ে দিছে।
শিবির অস্বীকার করতেছে, তাদের কোনো নেতাকর্মী গুপ্তভাবে লীগের ভেতরে ঢুকে লীগের কালচার চর্চা করে নাই। তারা আমাদের কাছে প্রমাণ চাচ্ছে; কিন্তু শিবির তাদের বিগত একযুগের হল কমিটি এবং ঢাবি শাখার কমিটি প্রকাশ করুক। তাহলেই তো মানুষজন ক্লিয়ার হতে পারে, শিবির ছিল কি; ছিলো না। বর্তমানের হল কমিটিও তো প্রকাশ করতে পারে। ৫ তারিখের পর তাদের
ভয় কিসের? নাকি তাদের কৃতকর্ম প্রকাশ হয়ে যাবে, সেই ভয়ে প্রকাশ করতেছে না! হলে হলে এখন শিবিরের হয়ে মাতব্বরি করা মানুষের পূর্বের চেহারা প্রকাশ হয়ে যাবে!’
তবে আব্দুল কাদের এসবের বিরুদ্ধে সব সময় সোচ্চার থাকবেন এবং প্রয়োজনে একা লড়াই চালিয়ে যাবেন বলে ওই স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘অনেকেই হয়তো ভয়ের আশংকা দেখাচ্ছেন, সংঘবদ্ধভাবে ওরা মিডিয়ায় চরিত্র হনন করতেছে ক্রমাগত; কিন্তু আমি হার মানার পাত্র না। হাসিনার আমলে গুটিকয়েকজন মানুষ লড়াইটা চালিয়ে গিয়েছিল। হামলা-মামলা, জেল জুলুম সহ্য করে টিকে গিয়েছিলাম একটা সুন্দর সত্য রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সেই লড়াই চালিয়ে যাবো, ইনশাআল্লাহ। সেটা আমি একা হলেও।’
শিবিরের যেসব কর্মী নিজেদের পরিচয় গোপন করে হলে থাতেন, তাঁরা নিজেদের পরিচয় লুকাতে অতি উৎসাহী ভূমিকা নিতেন। নিজেদের ছাত্রলীগ প্রমাণ করতে ছাত্রলীগের সঙ্গে নির্যাতনে শামিল হতেন এবং ‘ছাত্রলীগের কালচার’ চর্চা করতেন। সেইসব অপরাধীরা এখন বহাল তবিয়তে আছেন আছেন শিবিরের বড় পদে।
কারও কারও দায়মুক্তি নিশ্চিত করতে ও মামলার বাইরে রাখতে চেষ্টা করছেন শিবিরের নেতারা। এসব নিয়ে ফেসবুকে বিস্তারিত লিখেছেন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবদুল কাদের। নাম পরিচয় উল্লেখ করেছেন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত এমন বেশ কয়েকজনের।
গতকাল রোববার (৩ আগস্ট) রাতে ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেন আবদুল কাদের।
আবদুল কাদের আওয়ামী লীগ আমলে ছাত্রলীগের হয়ে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন–নিপীড়নের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন হলের বেশ কয়েকজনকে ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করেছেন। নির্যাতনে অংশ নেওয়া ওই নেতা-কর্মীদের রক্ষা করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে কাদের বলেন, ‘হলে থাকার কারণে শিবিরের যে ছেলেগুলা সক্রিয়ভাবে ছাত্রলীগ করতো, তারা মূলত আইডেন্টেটি ক্রাইসিস থেকে উৎরানোর জন্য কিছু ক্ষেত্রে অতি উৎসাহী কর্মকাণ্ডে জড়াতো। সেটা কেবল নিজেকে লীগার প্রমাণের দায় থেকে। লীগ যে নিপীড়ন-নির্যাতন চালাতো তারা সেগুলার অংশীদার হতো, লীগের কালচার-ই চর্চা করত। আমার এই কথাটা অস্বীকার করার সুযোগ নাই, ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি তো এমন ছিল।’
কয়েক জনের নাম পরিচয় প্রকাশ করে আব্দুল কাদের তাঁর ফেসবুক স্ট্যাটাসে আরও লেখেন, ‘আমি বলেছি, শিবির করে আসা ছেলেরা নিজেকে ছাত্রলীগার প্রমাণ করার জন্য ক্ষেত্রবিশেষ উগ্রবাদী ছিল। ২৩ সালের ২২ জানুয়ারি রাতে বিজয় একাত্তর হলের শাহরিয়াদ নামে ১৯-২০ সেশনের একজন শিক্ষার্থীকে রাতভর মারধর করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সেখানে নেতৃত্বে ছিলেন মাজেদুর রহমান নামে একজন। যিনি আমার পাশের এলাকার। একই মাদ্রাসায় পড়ার সুবাদে জানতাম, তিনি ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত। ক্যাম্পাসে এসে বনে গেলেন ভয়ংকর নিপীড়ক, নির্যাতক!
ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সর্বশেষ কমিটির দপ্তর সম্পাদক ২০১৭-১৮ সেশনের মুসাদ্দিক বিল্লাহ, আমার জেলার। যার পরিবার জামাত, যিনি শিবিরের সাথী ছিলেন; কিন্তু পদপদবীর জন্য তিনি হয়ে গেলেন কট্টর ছাত্রলীগ। ইতিপূর্বে কোনো কমিটিতে না থেকেও তিনি সরাসরি ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক পদ ভাগিয়ে নেন। তাহলে চিন্তা করেন, তাকে কতটা বিশ্বস্ততার পরিচয় দিতে হইছে, কতটা ছাত্রলীগের চরিত্র ধারণ করতে হইছে!’
ওই স্ট্যাটাসে কাদের আরও বলেন, ‘জসীমউদ্দিন হলের ১৬-১৭ সেশনের আফজালুন নাঈম। গেস্টরুমে তার দুর্ব্যবহার, নিপীড়নের জ্বালায় হলের ছেলেরা অতিষ্ঠ ছিল। নাঈমের দুর্ব্যবহারের কথা হলের ছেলেদের মুখে মুখে। অথচ এই নাঈম এখন জামাত শিবিরের আইকন শিশির মুনিরের বিশেষ সহকারী!
‘মুজিব হলের জুনিয়রদের কাছে এক ত্রাসের নাম ছিল ১৬-১৭ সেশনের ইলিয়াস হোসাইন। সঞ্জিতের রাজনীতি করত ইলিয়াস, হল ক্যান্ডিডেট ছিল।
মিছিল মিটিং এ যাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদেরকে সর্বোচ্চ ফোর্স করতো, গেস্টরুমে অসহ্যকর মেন্টাল টর্চার করতো, ছাত্রলীগের পদও পেয়েছিল। ৫-ই আগস্ট পরবর্তীতে এই ইলিয়াস শিবিরের বড় নেতা হিসেবে আবির্ভূত হলো, চলাফেরা করেন এখন শিবিরের ইমামদের সাথে!’
যে শিবির কর্মীরা নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাঁদের অপরাধ আড়াল করতে শিবির ও জামায়াতের নেতারা সক্রিয় ভূমিকার অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘২০১৭ সালে হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলে ইসলামিক পেজে লাইক দেওয়ায় শিবির সন্দেহে পাঁচ শিক্ষার্থীকে রাতভর ভয়াবহ নির্যাতনের মাধ্যমে রক্তাক্ত করে হল ছাড়া করা হয়। এ ঘটনায় ১৩ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। মুহসীন হলের সাবেক ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক মো. শাহাদাত হোসেন ওরফে সোহেল ভুক্তভোগীর মোবাইল চ্যাক করেন এবং সাথে সাথেই অতর্কিত হামলা চালান। এই শাহাদাত আবার শিবির হিসেবে সর্বমহলে পরিচিত ছিল। চব্বিশ সালের সেপ্টেম্বরে এই মামলা হওয়ার পরে শাহাদাতকে নিয়ে একজন পোস্ট করেন। পরবর্তীতে ঐ পোস্টকারীর সাথে শিবিরের তৎকালীন সভাপতি সাদিক কায়েম যোগাযোগ করেন। শাহাদাৎ ভালো মানুষ, তাকে যেনো এসবের সাথে না জড়ায়!’
আবদুল কাদের আরও কয়েকজনের পরিচয় দিয়ে লেখেন, ‘ছাত্রলীগের হল ক্যান্ডিডেটদের পেছনে আবার কিছু গুপ্ত শিবির থাকতো। এরা তেলবাজি আর চাটুকারিতায় ছিল অনন্য। এরা সবকিছু আগ বাড়িয়ে আনজাম দিতো। ভাই কখন কোথায় আসবে, কখন ভাইটাল প্রোগ্রাম, সেটার তাগিদ দিয়ে, জোরপূর্বক ছেলেপেলেদেরকে হাজির করার দায়িত্ব নিতো এই প্রকৃতির শিবিররা।
‘এমন কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা একজন হচ্ছে জহু হলের ২১-২২ সেশনের হাসানুল বান্না, যিনি ৫-ই আগস্টের পরে শিবিরের সদস্য সম্মলনে গিয়ে নিজেকে সদস্য হিসেবে প্রকাশ করেন। আবার এই বান্না এখন শিবিরের জহু হল শাখার বড় নেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন।
‘আরেকজন আছেন এমন। এফ রহমান হলের ১৮-১৯ সেশনের রায়হান উদ্দিন। যে ছাত্রলীগের এক্টিভ কর্মী ছিলেন। মেধাবী হওয়ার দরুন হল ক্যান্ডিডেটের বক্তব্যগুলা যিনি নিজে লিখে দিতেন, সারাক্ষণ ক্যান্ডিডেটের আগেপিছে থাকতেন, কাউকে ভিড়তে দিতেন না। এফ রহমানের হলের কুখ্যাত ছাত্রলীগ সভাপতি রিয়াজের একনিষ্ঠ অনুসারী এই রায়হান ৫ তারিখের পরে শিবিরের বড় নেতা হিসেবে হাজির হয়েছেন। আগের ফেসবুক আইডি বাদ দিয়ে এখন নতুন আইডি চালান। তবে আগের আইডি এবং তার কৃতকর্ম মুছে ফেলতে পারেন নাই। এখনো আছে।’
যাঁরা সরাসরি নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত তাঁদের নামে মামলা করার কথা থাকলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার শিবিরের সাবেক সভাপতি সাদিক কায়েম ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত থাকা ও নির্যাতনে অংশ নেওয়া শিবিরের কর্মীদের রক্ষা করছেন বলে অভিযোগ তুলে আব্দুল কাদের লেখেন—
‘৫ তারিখের পরে শিবিরের যে সকল ছেলেপেলে ছাত্রলীগের ভেতরে থেকে ছাত্রলীগের মতো আচরণ করেছে, তাদেরকে আইনের আওতায় আনার বিষয়ে জনাব সাদিক কায়েমের সাথে আমার আলাপ হয়। ৫ তারিখের পরে হলে হলে, ছাত্রলীগের নিপীড়কদের লিস্ট হচ্ছিল। একদিন ফোনে এই বিষয়ে কথা বলার প্রেক্ষিতে সাদিক ভাইকে জিজ্ঞেস করলাম, একাত্তর হলের হাসান সাঈদী, এফ রহমানের তানভীর হাসান শান্তের মতো শিবিরের যারা লীগের আমলে অপকর্ম করছে, তাদেরকে মামলা দিবেন না? প্রতিত্তোরে উনি বললেন, তোমরা দাও।
আমি বললাম, ‘‘আমরা আর তোমরা দেওয়ার কি আছে! লিস্ট তো আমরা আপনারা মিলেই করতেছি।’’ এই বিষয়ে সাদিক ভাইয়ের সাথে বাকবিতণ্ডা হয়; কিন্তু শেষে আর হাসান সাঈদী কিংবা শান্তদের নাম মামলার তালিকায় উঠলো না!
এই সাঈদি ছিল শিবিরের সাথী। পরে একাত্তর হল ছাত্রলীগের সাথে জড়িয়ে গেছে। এমন কোনো অপকর্ম নাই যে সে করে নাই। ও একাত্তর হলের কুখ্যাত সন্ত্রাসী আবু ইউনুসের রাজনীতি করতো। শিবির সংশ্লিষ্টতার কারণে তারে পোস্ট পদবি দেয়নি দীর্ঘদিন। সে হতাশায় আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল। নিজেকে লীগার প্রমাণ করার জন্য সে আরো উগ্রো পন্থা বেচে নিল। একে তো শিবির সংশ্লিষ্টতা, তার উপর নিজের নাম সাঈদী হওয়ার কারণে পদ পদবী পাচ্ছে না, সেজন্য কাগজপত্রে নাম পরিবর্তন করে সাঈদ বানিয়েছেন তিনি! অবশেষে সে হীন কর্মকাণ্ডের মধ্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ, একাত্তর হল ছাত্রলীগের উপ দপ্তর সম্পাদক হয়। তারপর সৈকতের রাজনীতি করা শুরু করে, হল ক্যান্ডিডেট ছিল।
চব্বিশ সালের ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে এই সাঈদি সহ আরো কয়েকজন ছাত্রলীগার মিলে দুইজন ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে নিয়ে এসে মুহসীন হলে ৩ দিন ধরে আটকে রাখেন। ঐ ঘটনায় সাঈদী গ্রেপ্তার হয়, বহিষ্কৃতও হয় ছাত্রলীগ থেকে। কিন্তু বের হয়ে সে তার অপকর্ম এবং ছাত্রলীগের রাজনীতি চালিয়ে যায়। জুলাইয়ের ১৫ তারিখে ছাত্রলীগের হামলায় আহত হওয়া শিক্ষার্থীরা ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে গেলে সাঈদী সেখানে গিয়েও আহতদের উপর হামলা করে! যার ভিডিও ফুটেজ এখনো আছে। অথচ এই সাঈদি ৫ তারিখের পরে আইনের আওতার বাহিরে ছিল,ফেসবুকে শিবিরের গুণগান গাওয়া শুরু করে দিয়েছিল।
এরপর সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় সাঈদি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। সাঈদি FBS এর ফাইন্যান্স ডিপার্ট্মেন্টের শিক্ষার্থী; কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে ক্যাম্পাসের বাহিরে লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা দেওয়ানোর ব্যবস্থা করে। সেখানকার শিক্ষার্থীরা দেখে ফেলার পরে তারা এই সাঈদীকে আটক করে। কিন্তু সাঈদীকে আটক করার পরে শিক্ষার্থীদের কাছে শিবিরের তৎকালীন ঢাবি সভাপতি সাদিক কায়েম ফোন দিয়ে তদবির করেন, যেনো সাঈদিকে ছেড়ে দেওয়া হয়!
শিক্ষার্থীরা সাদিক কায়েমের তদবির শুনেন নাই, থানায় নিয়ে আসে সাঈদীকে। থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাও মামলা নিতে চান না। ঐ সময়টাতে শিবিরের আরেক দায়িত্বশীলও নাকি প্রক্টরের সাথেও একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছেন। নিজ এলাকার, নিজ সংগঠনের সাঈদীকে বাঁচানোর জন্য৷ অবশেষে শিক্ষার্থীদের অনমনীয়তার মুখে সাঈদীকে মামলার আওতায় নেয় থানা পুলিশ। কিন্তু এই সাঈদী সবাইকে অবাক করে দিয়ে এক সপ্তাহের মাথায় জেল থেকে বের হয়ে আসে! অথচ জুলাইয়ের মামলার আসামীর নাকি জামিন হয় না সহজে! তাহলে চিন্তা করলাম, এদের লিংক লবিং কোন পর্যায়ে!’
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত শিবির কর্মীদের মামলার বাইরে রাখা হচ্ছে উল্লেখ করে আব্দুল কাদের লেখেন—
‘ছাত্রলীগের ভিতরে ঢুকে ছাত্রলীগের কালচার চর্চা করা এমন গুপ্ত শিবিরের সংখ্যা কিন্তু কম ছিল না।
৫-ই আগস্টের পরে হলে হলে ব্যাচ প্রতিনিধি হয়, শৃঙ্খলা কমিটি হয়, এটা কার প্রেসক্রিপশনে হয়, সেটা প্রতিনিধিদের রাজনৈতিক পরিচয় দেখলেই বুঝা যায়। ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে অনলাইনে ভোটাভুটি করে অধিকাংশ ব্যাচ প্রতিনিধি শিবির নিজেদের লোকজনকে নির্বাচিত করে। এই ব্যাচ প্রতিনিধিরাই পরবর্তীতে সর্বেসর্বা হয়ে উঠে, একপ্রকার ছায়া প্রশাসন হিসেবে হলে ফাংশন করে। এই ব্যাচ প্রতিনিধিরাই আবার ৫ তারিখে পরে ছাত্রলীগের নাম তালিকা তৈরির দায়িত্ব নেয়। স্বাভাবিকভাবেই তারা নিজেদের সাথী ভাইদেরকে তালিকার বাহিরে রাখে।
‘৫- ই আগস্টের পরে জুলাইয়ের ঘটনার প্রেক্ষিতে দুইটা মামলা হয়। মাহিম সরকার এবং আরমান হোসেন বাদী হয়ে এই দুইটা মামলা করেন। এই দুই মামলার বাদীর সাথেই শিবিরের সাদিক কায়েম সরাসরি দেখা করে কয়েকজন ব্যক্তির ব্যাপারে তদবির করেন। মাহিন এবং আরমানকে একটা তালিকাও দেন , যেনো এই ব্যক্তিগুলার নাম মামলা থেকে কেটে দেয়, সেই বিষয়ে সাদিক কায়েম সরাসরি তদবির করেন। আরমান পরবর্তীতে খোঁজ নিয়ে দেখেন, সাদিক কায়েম যে নামগুলা দিছেন, তারা শিবিরের সাথে সংশ্লিষ্ট। এরমধ্যে একজম আসামী আরমানের কাছে স্বীকারও করছেন, তিনি শিবির করেন, তার নাম যেনো মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়!
‘জুলাইয়ের অঙ্গীকার রক্ষা করা যায় নাই এই তদবির কাণ্ডের কারণে, সবাই সবার দলীয় মানুষজনকে বাঁচিয়ে দিতে গিয়ে জুলাইয়ের সন্ত্রাসীদেরকে মুক্তি দিয়ে দিছে।
শিবির অস্বীকার করতেছে, তাদের কোনো নেতাকর্মী গুপ্তভাবে লীগের ভেতরে ঢুকে লীগের কালচার চর্চা করে নাই। তারা আমাদের কাছে প্রমাণ চাচ্ছে; কিন্তু শিবির তাদের বিগত একযুগের হল কমিটি এবং ঢাবি শাখার কমিটি প্রকাশ করুক। তাহলেই তো মানুষজন ক্লিয়ার হতে পারে, শিবির ছিল কি; ছিলো না। বর্তমানের হল কমিটিও তো প্রকাশ করতে পারে। ৫ তারিখের পর তাদের
ভয় কিসের? নাকি তাদের কৃতকর্ম প্রকাশ হয়ে যাবে, সেই ভয়ে প্রকাশ করতেছে না! হলে হলে এখন শিবিরের হয়ে মাতব্বরি করা মানুষের পূর্বের চেহারা প্রকাশ হয়ে যাবে!’
তবে আব্দুল কাদের এসবের বিরুদ্ধে সব সময় সোচ্চার থাকবেন এবং প্রয়োজনে একা লড়াই চালিয়ে যাবেন বলে ওই স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘অনেকেই হয়তো ভয়ের আশংকা দেখাচ্ছেন, সংঘবদ্ধভাবে ওরা মিডিয়ায় চরিত্র হনন করতেছে ক্রমাগত; কিন্তু আমি হার মানার পাত্র না। হাসিনার আমলে গুটিকয়েকজন মানুষ লড়াইটা চালিয়ে গিয়েছিল। হামলা-মামলা, জেল জুলুম সহ্য করে টিকে গিয়েছিলাম একটা সুন্দর সত্য রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সেই লড়াই চালিয়ে যাবো, ইনশাআল্লাহ। সেটা আমি একা হলেও।’
আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘আপনাদের বিএনপির সাংবাদিক হওয়ার দরকার নেই। দেশের সাংবাদিক হোন, জনগণের সাংবাদিক হোন, মানুষের সাংবাদিক হোন এটাই হচ্ছে নতুন বাংলাদেশের প্রতিজ্ঞা।’
৮ মিনিট আগেসম্প্রতি মাহফুজ আলম থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনের সংবাদমাধ্যম ‘কনটেক্সট নিউজ’-কে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। সেখানে তিনি জুলাই অভ্যুত্থানসহ নানান বিষয়ে কথা বলেছেন। মো. তাহমিদ জামি’র নেওয়া সাক্ষাৎকারটি স্ট্রিম পাঠকদের জন্য অনূদিত হল।
২ ঘণ্টা আগেতিনি বলেন, ‘ঘোষণাপত্র সংবিধানে স্থান দেওয়া দরকার ছিল। ৫ আগস্ট থেকে এই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন করবে বলে আমরা শুনেছিলাম, কিন্তু এটা কখন থেকে বাস্তবায়ন হবে তার কোনো নির্দেশিকা নেই।’
৫ ঘণ্টা আগেজুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীতে সমাবেশ ও গণমিছিল করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের আয়োজনে মঙ্গলবার পৃথক সমাবেশ ও গণমিছিল করেছে দলটি। সমাবেশ থেকে জুলাই সনদকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্তের দাবি জানিয়েছে জামায়াত।
৫ ঘণ্টা আগে