leadT1ad

স্লোগান-নির্ভর রাজনীতির দিন ফুরিয়ে গেছে: তারেক রহমান

স্ট্রিম প্রতিবেদকঢাকা
প্রকাশ : ১২ আগস্ট ২০২৫, ২০: ১০
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন তারেক রহমান। সংগৃহীত ছবি

প্রচলিত স্লোগান-নির্ভর রাজনীতির দিন ফুরিয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, জনগণের আকাঙ্ক্ষার পরিবর্তন হয়েছে। এই আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য এখন আর প্রতিশ্রুতি নয়, প্রয়োজন প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন। প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন কীভাবে করা যায় আমরা সেই পরিকল্পনা করছি।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিকেলে আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদল ও ছাত্রদল আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তারেক রহমান।

তিনি বলেন, ‘দেড় দশক পর ফ্যাসিস্টমুক্ত বাংলাদেশে আগামী ফেব্রুয়ারিতে ইনশাল্লাহ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দেশের সর্বস্তরের জনগণের কাছে আমার আহ্বান, আগামী নির্বাচনে ধানের শীষে ভোট দিন, দেশ গড়ার সুযোগ দিন। আপনাদের সবার মাধ্যমে জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে চাই—ভোট দিলে ধানের শীষে, দেশ গড়ব মিলেমিশে।’

বক্তব্যে যুবসমাজের জন্য বিএনপির নানা পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তিগত জ্ঞান অর্জনে যুব সমাজ পিছিয়ে থাকলে রাষ্ট্রে অবদান রাখা সম্ভব না। আমি নিজে টেকনিক্যাল লোক নই, তবে আমার আশপাশে যারা আছেন তাঁদের কাছ থেকে বুঝেছি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো আধুনিক প্রযুক্তি মানুষের জীবনধারাকে বদলে দিচ্ছে।’

প্রযুক্তির বাজারে প্রবেশের জন্য দক্ষতা প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই দক্ষতা রপ্ত করাই চ্যালেঞ্জ। বিজ্ঞান ও কারিগরি দক্ষতা অর্জন করে মানবিক মানুষ হয়ে উঠা তরুণ সমাজের অন্যতম লক্ষ্য হওয়া উচিত। তাঁদের প্রযুক্তিনির্ভর করে গড়ে তোলার জন্য রাষ্ট্রকে উদ্যোগী ভূমিকা পালন করতে হবে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘তরুণ যুবশক্তিকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার জন্য বিএনপি পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। আমার আহ্বান নিজেদের প্রযুক্তির শিক্ষায় দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তুলুন। বিএনপির পরিকল্পনা যাতে বাস্তবায়ন করা যায়, এজন্য বিশেষজ্ঞ টিম কাজ করছে। স্কুল পর্যায়ে বাধ্যতামূলকভাবে প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করতে কাজ চলছে।’

যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরকে আরও কার্যকর করার সুযোগ রয়েছে বলেও জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘নতুন নতুন কী কর্মক্ষেত্র তৈরি করা যায় সেটি নিয়ে কাজ করছি। এসব পরিকল্পনা প্রনয়নে যে শুধু বিএনপির নেতা-কর্মীরা কাজ করছে তা নয়, বাইরের বিশেষজ্ঞদেরও নেওয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘দেশে ও বিদেশে চলমান বাস্তবতা আমরা উপলব্ধি করছি। বিএনপির নীতি জনগণের জীবনমান উন্নয়নের রাজনীতি। বাংলাদেশের জনসংখ্যা হতে পারে সাফল্য ও সমৃদ্ধির একমাত্র নিয়ামক। কারণ দেশের বেশিরভাগ জনসংখ্যা কর্মক্ষম। জনশক্তিকে প্রযুক্তিনির্ভর দক্ষ করে গড়ে তুলতে পারলে আমাদের সামলে সাফল্যের সকল দ্বার উন্মুক্ত।’

তারেক রহমান এ-ও বলেন, ‘প্রযুক্তির পাশাপাশি একটি অংশকে খেলাধুলায় পারদর্শী করে গড়ে তোলাও প্রয়োজন। নতুন কুড়ি আমরা ইনশাল্লাহ আবার চালু করব। খেলাধুলাকে পেশা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে কারিকুলামে এটা অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা করছি। বিদেশি ভাষা শিক্ষাকেও অন্তর্ভুক্ত করতে চাই। দুয়েকটা ভাষা জানা থাকলে কাজের জন্য বসে থাকতে হয় না।’

দলীয় নেতাকর্মীদের বিএনপির পরিকল্পনা জনগণের কাছে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘এসব পরিকল্পনা আমরা বাস্তবায়ন করব। জনগণের শক্তি প্রতিষ্ঠার জন্য জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির আপনাদের সহায়তা ও সমর্থন প্রয়োজন।’

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বিশাল সমস্যা, কোটি কোটি শিক্ষিত বেকার। এক, দুই বা তিন লক্ষ না। তাঁদের কর্মসংস্থান না হলে সমাজ টিকবে না। এজন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতার দূরদৃষ্টির কারণে, তাঁর প্রজ্ঞাময় রাজনীতির কারণে তিনি কিন্তু ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে এসেছেন। তাঁর কাজটা তিনি করেছেন। এখন আমাদের কাজ হচ্ছে এই নির্বাচন যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারি। আমরা বড় দল এখন, আওয়ামী লীগ নেই। আমাদেরই দায়িত্ব পালন করতে হবে, একটা সুষ্ঠু নির্বাচন যেন হয়।’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘বিএনপি যেহেতু সম্ভাব্য দল যারা সামনের দিনে রাষ্ট্র পরিচালনা করবে, এজন্য বিএনপিকে খাটো করার চেষ্টা করা হচ্ছে। দেশে যাই ঘটুক বিএনপির দিকে দোষ দেওয়া হচ্ছে।’

Ad 300x250

সম্পর্কিত