.png)

সালেহ ফুয়াদ

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রচার-মাঠে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় রয়েছে জামায়াতের মহিলা বিভাগের কর্মীরা। তালিম আর নারীবান্ধব সেবা নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নির্বাচনী মাঠ তৈরিতে ভূমিকা রাখছেন তাঁরা। সম্প্রতি দেশের কয়েকটি জেলায় বিপক্ষের বাধার মুখে পড়েছে তাদের এই কার্যক্রম। এ থেকে নারী কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছে দলের ভেতরেই।
দলীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে, এই কারণে নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে নারী কর্মীদের প্রচার কৌশলে কিছুটা পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে দলটি। উন্মুক্ত স্থানে আয়োজন হলে সেখানে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের অতিথি করে রাখা, একই সঙ্গে প্রশাসনিক ও সাংগঠনিক নিরাপত্তা বলয় তৈরি করে রাখায় গুরুত্ব দিচ্ছে দলটি। একান্ত ঘরোয়া আয়োজন না হলে একই ধরনের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতে জোর দিচ্ছে জামায়াত। নারী কর্মীদের প্রচারণায় অংশগ্রহণকে দলটি আগামী নির্বাচনে ‘গেম চেঞ্জার’ হিসেবে দেখছে।
গত ৩১ আগস্ট নির্বাচন কমিশন (ইসি) ২০২৫ সালের হালনাগাদ খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, দেশের মোট ভোটার ১২ কোটি ৬৩ লাখ ৭ হাজার ৫০৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৪১ লাখ ৪৪৫ জন এবং নারী ভোটার ৬ কোটি ২২ লাখ ৫ হাজার ৮১৯ জন। ইসির এই হিসাবে দেখা যাচ্ছে, নারী ভোটারের সংখ্যা মোট ভোটারের অর্ধেকের কাছাকাছি।
বিপুল সংখ্যক এই নারী ভোটারদের টানতেই চলতি বছরের শুরুতে মহিলা জামায়াতের কর্মীরা জোরেসোরে মাঠে নামেন। এর আগে নারী কর্মীদের অংশগ্রহণ একান্ত সাংগঠনিক ও ধর্মীয় কার্যক্রমের ভেতর নিয়ন্ত্রিত ছিল। প্রকাশ্যে তাদের খুব একটা দেখা যেতো না। ধর্ষণ, নারী ও শিশু নিপীড়নের প্রতিবাদে পাঁচ দফা দাবিতে গত মার্চে রাজধানীতে প্রেস ক্লাবের সামনে বৃহৎ পরিসরে মানববন্ধন করে সবার নজরে আসে জামায়াতের মহিলা বিভাগ। মানববন্ধনে অংশ নিয়ে কয়েকশ নারী নেতাকর্মী ধর্ষণের বিচার দাবিতে স্লোগান ও বক্তব্য দেন। আগে নারী কর্মীদের এভাবে প্রকাশ্যে স্লোগান বা বক্তব্য দিতে দেখা যায়নি।
এরপর সারা দেশে মহিলা বিভাগের কর্মীদের নানামুখী কার্যক্রম সামনে আসতে থাকে। আগে কখনো দেখা না গেলেও চলতি বছর বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে অনেকগুলো বৈঠকে নারী কর্মীদের দেখা গেছে। এ সময়ে নারী সমাবেশ, সভা-সেমিনার ও বিভিন্ন দিবস-কেন্দ্রিক অনুষ্ঠান আয়োজন করতে দেখা গেছে তাদের। এসব আয়োজনের কোনোটি উন্মুক্ত স্থানে, কোনোটি মিলনায়তনে, কোনোটি আয়োজন করা হয় ড্রয়িংরুমে। নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে মহিলা বিভাগের কর্মীরা সারা দেশে উঠান বৈঠক করছেন।
বাধার মুখে মহিলা বিভাগের কর্মীরা
এরই মধ্যে গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠান। বিবৃতিতে তিনি নওগাঁ, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি ও ঝিনাইদহে জামায়াতের নারী কর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে জানিয়ে এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা করেন। একই সঙ্গে কর্মীদের ‘অরাজনৈতিক কর্মকাণ্ড’ থেকে বিরত রাখতে বিএনপি নেতাদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
বিবৃতিতে গোলাম পরওয়ার বলেন, গত ২৮ অক্টোবর নওগাঁর বোয়ালিয়ায় ও নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে জামায়াতের নারী সদস্যদের পৃথক নির্বাচনী উঠান বৈঠক ও কোরআন তালিমের ক্লাসে বাধা, হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গত ২০ অক্টোবর ঝিনাইদহের মহেশপুরে মহিলা কর্মীদের নিয়মিত গণসংযোগে স্থানীয় বিএনপি নেতারা লাঠি-সোটা নিয়ে হামলা চালিয়েছেন।
পরে বাধার মুখে পড়া আরো কয়েকটি ঘটনার বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করে একই দিন বিবৃতি দেন মহিলা বিভাগের সেক্রেটারী অধ্যক্ষ নূরুন্নিসা সিদ্দিকা। মহিলা বিভাগের প্রচার সেক্রেটারি নাজমুন নাহার নীলুর পাঠানো ওই বিবৃতিতে বিভিন্ন উঠান বৈঠক ও তালিম অনুষ্ঠানে হামলার দিনক্ষণ ও হামলাকারীদের নামপরিচয় তুলে ধরা হয়।
নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি
দেশের বিভিন্নস্থানে মহিলা বিভাগের কর্মীদের হয়রানির ঘটনায় দলীয় কর্মীদের মাঝেও বিরূপ প্রতিক্রিয়ার তৈরি হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেক কর্মী-সমর্থক এর জন্য সরাসরি সাংগঠনিক দুর্বলতাকে দায়ী করেন। তাদের মতে, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না নিয়ে নির্বাচনী প্রচার অনুষ্ঠানে পাঠানোর কারণেই বিপক্ষ দলের রাজনৈতিক কর্মীদের হয়রানির মুখে পড়তে হচ্ছে পর্দানশীন নারী কর্মীদের। অনেকে হয়রানির ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার করে দ্রুত এই ব্যাপারে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ারও অনুরোধ জানিয়েছেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বাধার মুখে মহিলা বিভাগের কর্মীদের বিভিন্ন অনুষ্ঠান পণ্ড হয়ে যাওয়ার বিষয়টি জামায়াতের কেন্দ্রীয় কমিটিতেও আলোচনায় আসে। এরপরেই সেক্রেটারি জেনারেল ও মহিলা বিভাগের সেক্রেটারি পৃথক বিবৃতি দেন।
নিরাপত্তা জোরদারের কৌশল
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নারী-পুরুষ মিলিয়ে জামায়াতে ইসলামীতে ১০ লাখেরও বেশি কর্মী রয়েছে। এর মধ্যে ৬ লাখ পুরুষ ও ৪ লাখ নারী। অর্থাৎ দলটির মোট কর্মীর ৪০ শতাংশই নারী। রুকন, কর্মী ও সহযোগী সদস্য মিলিয়ে বিপুল সংখ্যক নারী রয়েছেন মহিলা বিভাগে। এই বিশাল জনবল মফস্বল থেকে রাজধানীর সর্বত্র ছড়িয়ে রয়েছে। জামায়াত নেতারা মনে করেন, প্রচারণার কাজে ঠিকমতো লাগাতে পারলে এরাই হবেন আগামী নির্বাচনের ‘গেম চেঞ্জার’।
দলীয় সূত্র জানিয়েছে, একারণে মহিলা বিভাগের কর্মীদের নিরাপত্তার দিকটিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে দলটি। এখন থেকে মহিলা কর্মীদের অনুষ্ঠান আয়োজনের আগে প্রশাসনকে অবহিতকরণ ও সমান্তরালভাবে সাংগঠনিক উপায়ে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বলয় তৈরির মধ্য দিয়ে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায় জামায়াত। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে কেন্দ্র থেকে সারা দেশে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। নারীদের আয়োজিত অনুষ্ঠানের যেগুলো সরাসরি নির্বাচনী প্রচারণার সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং উন্মুক্ত স্থানে আয়োজিত সেগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ পুরুষ নেতাদের অতিথি হিসেবে উপস্থিতি নিশ্চিত করারও নির্দেশনা রয়েছে।
জামায়াতের মহিলা বিভাগের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ নূরুন্নিসা সিদ্দিকা স্ট্রিমকে বলেন, 'আমরা ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে অনেক নির্যাতিত হয়েছি। কিন্তু আমরা আমাদের লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছি, কখনো পিছপা হইনি। এখনো আমরা কাজ চালিয়ে যাবো, ইনশাল্লাহ। ফ্যাসিবাদের দোসররা অবশ্যই পিছপা হবে। স্থানীয়ভাবে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে থানাকে অবহিত করা, সংবাদ সম্মেলন করা এবং জনমত গড়ে তোলার চেষ্টা করছি।'
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের স্ট্রিমকে জানান, জামায়াতের মহিলা বিভাগের কর্মীরা নারীদের পরিসরেই কার্যক্রম চালাচ্ছেন। সেখানে বিএনপির পরিচয় দিয়ে একদল লোক বাধা দিচ্ছে। তিনি বলেন, ‘এটা একাধিক জায়গায় একাধিকবার হয়েছে। এই জন্য আমাদের সেক্রেটারি জেনারেল বিবৃতি দিয়েছেন। নারীদের ইনডোর প্রোগ্রামে গিয়ে হয়রানি করছে তারা।
এহসানুল মাহবুব জুবায়ের স্ট্রিমকে বলেন, ‘আমরা বোনদের নিরাপত্তার ব্যবস্থাটি দেখছি। যেখানেই প্রোগ্রাম হচ্ছে সেখানেই আমাদের ভাইরা থাকছেন। তাদের যানবাহন, চলাফেরার ব্যবস্থাসহ অন্যান্য বিষয়েও আমাদের অ্যাটেনশন থাকছে। তারপরেও অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে দুর্ঘটনাগুলো ঘটেছে।’
তিনি জানান, আগে বড় পরিসরে আয়োজন হলে প্রশাসনকে জানানো হতো, ঘরোয়া আয়োজন বা উঠান বৈঠক, তালিম অনুষ্ঠান ইত্যাদির ক্ষেত্রে প্রশাসনিক সহযোগিতা চাওয়া হতো না। একান্ত ঘরোয়া আয়োজন না হলে, ‘এখন থেকে ইনডোর প্রোগামেও প্রশাসনকে আগে থেকে জানানো হবে’ এবং একই সঙ্গে সাংগঠনিক উপায়ে সতর্ক থাকা হবে বলেও জানিয়েছেন জামায়াতের এই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রচার-মাঠে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় রয়েছে জামায়াতের মহিলা বিভাগের কর্মীরা। তালিম আর নারীবান্ধব সেবা নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নির্বাচনী মাঠ তৈরিতে ভূমিকা রাখছেন তাঁরা। সম্প্রতি দেশের কয়েকটি জেলায় বিপক্ষের বাধার মুখে পড়েছে তাদের এই কার্যক্রম। এ থেকে নারী কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছে দলের ভেতরেই।
দলীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে, এই কারণে নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে নারী কর্মীদের প্রচার কৌশলে কিছুটা পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে দলটি। উন্মুক্ত স্থানে আয়োজন হলে সেখানে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের অতিথি করে রাখা, একই সঙ্গে প্রশাসনিক ও সাংগঠনিক নিরাপত্তা বলয় তৈরি করে রাখায় গুরুত্ব দিচ্ছে দলটি। একান্ত ঘরোয়া আয়োজন না হলে একই ধরনের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতে জোর দিচ্ছে জামায়াত। নারী কর্মীদের প্রচারণায় অংশগ্রহণকে দলটি আগামী নির্বাচনে ‘গেম চেঞ্জার’ হিসেবে দেখছে।
গত ৩১ আগস্ট নির্বাচন কমিশন (ইসি) ২০২৫ সালের হালনাগাদ খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, দেশের মোট ভোটার ১২ কোটি ৬৩ লাখ ৭ হাজার ৫০৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৪১ লাখ ৪৪৫ জন এবং নারী ভোটার ৬ কোটি ২২ লাখ ৫ হাজার ৮১৯ জন। ইসির এই হিসাবে দেখা যাচ্ছে, নারী ভোটারের সংখ্যা মোট ভোটারের অর্ধেকের কাছাকাছি।
বিপুল সংখ্যক এই নারী ভোটারদের টানতেই চলতি বছরের শুরুতে মহিলা জামায়াতের কর্মীরা জোরেসোরে মাঠে নামেন। এর আগে নারী কর্মীদের অংশগ্রহণ একান্ত সাংগঠনিক ও ধর্মীয় কার্যক্রমের ভেতর নিয়ন্ত্রিত ছিল। প্রকাশ্যে তাদের খুব একটা দেখা যেতো না। ধর্ষণ, নারী ও শিশু নিপীড়নের প্রতিবাদে পাঁচ দফা দাবিতে গত মার্চে রাজধানীতে প্রেস ক্লাবের সামনে বৃহৎ পরিসরে মানববন্ধন করে সবার নজরে আসে জামায়াতের মহিলা বিভাগ। মানববন্ধনে অংশ নিয়ে কয়েকশ নারী নেতাকর্মী ধর্ষণের বিচার দাবিতে স্লোগান ও বক্তব্য দেন। আগে নারী কর্মীদের এভাবে প্রকাশ্যে স্লোগান বা বক্তব্য দিতে দেখা যায়নি।
এরপর সারা দেশে মহিলা বিভাগের কর্মীদের নানামুখী কার্যক্রম সামনে আসতে থাকে। আগে কখনো দেখা না গেলেও চলতি বছর বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে অনেকগুলো বৈঠকে নারী কর্মীদের দেখা গেছে। এ সময়ে নারী সমাবেশ, সভা-সেমিনার ও বিভিন্ন দিবস-কেন্দ্রিক অনুষ্ঠান আয়োজন করতে দেখা গেছে তাদের। এসব আয়োজনের কোনোটি উন্মুক্ত স্থানে, কোনোটি মিলনায়তনে, কোনোটি আয়োজন করা হয় ড্রয়িংরুমে। নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে মহিলা বিভাগের কর্মীরা সারা দেশে উঠান বৈঠক করছেন।
বাধার মুখে মহিলা বিভাগের কর্মীরা
এরই মধ্যে গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠান। বিবৃতিতে তিনি নওগাঁ, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি ও ঝিনাইদহে জামায়াতের নারী কর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে জানিয়ে এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা করেন। একই সঙ্গে কর্মীদের ‘অরাজনৈতিক কর্মকাণ্ড’ থেকে বিরত রাখতে বিএনপি নেতাদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
বিবৃতিতে গোলাম পরওয়ার বলেন, গত ২৮ অক্টোবর নওগাঁর বোয়ালিয়ায় ও নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে জামায়াতের নারী সদস্যদের পৃথক নির্বাচনী উঠান বৈঠক ও কোরআন তালিমের ক্লাসে বাধা, হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গত ২০ অক্টোবর ঝিনাইদহের মহেশপুরে মহিলা কর্মীদের নিয়মিত গণসংযোগে স্থানীয় বিএনপি নেতারা লাঠি-সোটা নিয়ে হামলা চালিয়েছেন।
পরে বাধার মুখে পড়া আরো কয়েকটি ঘটনার বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করে একই দিন বিবৃতি দেন মহিলা বিভাগের সেক্রেটারী অধ্যক্ষ নূরুন্নিসা সিদ্দিকা। মহিলা বিভাগের প্রচার সেক্রেটারি নাজমুন নাহার নীলুর পাঠানো ওই বিবৃতিতে বিভিন্ন উঠান বৈঠক ও তালিম অনুষ্ঠানে হামলার দিনক্ষণ ও হামলাকারীদের নামপরিচয় তুলে ধরা হয়।
নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি
দেশের বিভিন্নস্থানে মহিলা বিভাগের কর্মীদের হয়রানির ঘটনায় দলীয় কর্মীদের মাঝেও বিরূপ প্রতিক্রিয়ার তৈরি হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেক কর্মী-সমর্থক এর জন্য সরাসরি সাংগঠনিক দুর্বলতাকে দায়ী করেন। তাদের মতে, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না নিয়ে নির্বাচনী প্রচার অনুষ্ঠানে পাঠানোর কারণেই বিপক্ষ দলের রাজনৈতিক কর্মীদের হয়রানির মুখে পড়তে হচ্ছে পর্দানশীন নারী কর্মীদের। অনেকে হয়রানির ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার করে দ্রুত এই ব্যাপারে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ারও অনুরোধ জানিয়েছেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বাধার মুখে মহিলা বিভাগের কর্মীদের বিভিন্ন অনুষ্ঠান পণ্ড হয়ে যাওয়ার বিষয়টি জামায়াতের কেন্দ্রীয় কমিটিতেও আলোচনায় আসে। এরপরেই সেক্রেটারি জেনারেল ও মহিলা বিভাগের সেক্রেটারি পৃথক বিবৃতি দেন।
নিরাপত্তা জোরদারের কৌশল
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নারী-পুরুষ মিলিয়ে জামায়াতে ইসলামীতে ১০ লাখেরও বেশি কর্মী রয়েছে। এর মধ্যে ৬ লাখ পুরুষ ও ৪ লাখ নারী। অর্থাৎ দলটির মোট কর্মীর ৪০ শতাংশই নারী। রুকন, কর্মী ও সহযোগী সদস্য মিলিয়ে বিপুল সংখ্যক নারী রয়েছেন মহিলা বিভাগে। এই বিশাল জনবল মফস্বল থেকে রাজধানীর সর্বত্র ছড়িয়ে রয়েছে। জামায়াত নেতারা মনে করেন, প্রচারণার কাজে ঠিকমতো লাগাতে পারলে এরাই হবেন আগামী নির্বাচনের ‘গেম চেঞ্জার’।
দলীয় সূত্র জানিয়েছে, একারণে মহিলা বিভাগের কর্মীদের নিরাপত্তার দিকটিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে দলটি। এখন থেকে মহিলা কর্মীদের অনুষ্ঠান আয়োজনের আগে প্রশাসনকে অবহিতকরণ ও সমান্তরালভাবে সাংগঠনিক উপায়ে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বলয় তৈরির মধ্য দিয়ে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায় জামায়াত। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে কেন্দ্র থেকে সারা দেশে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। নারীদের আয়োজিত অনুষ্ঠানের যেগুলো সরাসরি নির্বাচনী প্রচারণার সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং উন্মুক্ত স্থানে আয়োজিত সেগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ পুরুষ নেতাদের অতিথি হিসেবে উপস্থিতি নিশ্চিত করারও নির্দেশনা রয়েছে।
জামায়াতের মহিলা বিভাগের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ নূরুন্নিসা সিদ্দিকা স্ট্রিমকে বলেন, 'আমরা ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে অনেক নির্যাতিত হয়েছি। কিন্তু আমরা আমাদের লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছি, কখনো পিছপা হইনি। এখনো আমরা কাজ চালিয়ে যাবো, ইনশাল্লাহ। ফ্যাসিবাদের দোসররা অবশ্যই পিছপা হবে। স্থানীয়ভাবে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে থানাকে অবহিত করা, সংবাদ সম্মেলন করা এবং জনমত গড়ে তোলার চেষ্টা করছি।'
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের স্ট্রিমকে জানান, জামায়াতের মহিলা বিভাগের কর্মীরা নারীদের পরিসরেই কার্যক্রম চালাচ্ছেন। সেখানে বিএনপির পরিচয় দিয়ে একদল লোক বাধা দিচ্ছে। তিনি বলেন, ‘এটা একাধিক জায়গায় একাধিকবার হয়েছে। এই জন্য আমাদের সেক্রেটারি জেনারেল বিবৃতি দিয়েছেন। নারীদের ইনডোর প্রোগ্রামে গিয়ে হয়রানি করছে তারা।
এহসানুল মাহবুব জুবায়ের স্ট্রিমকে বলেন, ‘আমরা বোনদের নিরাপত্তার ব্যবস্থাটি দেখছি। যেখানেই প্রোগ্রাম হচ্ছে সেখানেই আমাদের ভাইরা থাকছেন। তাদের যানবাহন, চলাফেরার ব্যবস্থাসহ অন্যান্য বিষয়েও আমাদের অ্যাটেনশন থাকছে। তারপরেও অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে দুর্ঘটনাগুলো ঘটেছে।’
তিনি জানান, আগে বড় পরিসরে আয়োজন হলে প্রশাসনকে জানানো হতো, ঘরোয়া আয়োজন বা উঠান বৈঠক, তালিম অনুষ্ঠান ইত্যাদির ক্ষেত্রে প্রশাসনিক সহযোগিতা চাওয়া হতো না। একান্ত ঘরোয়া আয়োজন না হলে, ‘এখন থেকে ইনডোর প্রোগামেও প্রশাসনকে আগে থেকে জানানো হবে’ এবং একই সঙ্গে সাংগঠনিক উপায়ে সতর্ক থাকা হবে বলেও জানিয়েছেন জামায়াতের এই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল।
.png)

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি সিলেট জেলা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন সুমনকে আটক করেছে মহানগর পুলিশ (এসএমপি)। শুক্রবার মধ্যরাতে নগরের কালিবাড়ি এলাকার সুমনের নিজ বাসা থেকে এসএমপি জালালাবাদ থানা পুলিশ তাঁকে আটক করেছে।
৩০ মিনিট আগে
বিজিএনের মাধ্যমে বিএনপি তৃণমূল কাঠামোকে আরও সংগঠিত ও শক্তিশালী করতে চায়। একই সঙ্গে অনলাইন প্রচার জোরদার করা এবং প্রতিপক্ষের প্রোপাগান্ডা মোকাবিলা করাই এ নেটওয়ার্কের মূল উদ্দেশ্য।
৯ ঘণ্টা আগে
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সহযোগী ছাত্রসংগঠন ‘জাতীয় ছাত্রশক্তি’র নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে সভাপতি হিসেবে জাহিদ আহসান এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আবু বাকের মজুমদার নির্বাচিত হয়েছেন।
১০ ঘণ্টা আগে
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, আমাদের এমন কোনো পরিস্থিতি বা জায়গা তৈরি করে দেওয়া তৈরি করা ঠিক হবে না, যেখানে ফ্যাসিস্টরা আবার প্রবেশ করতে পারে। সেজন্য দরকার ন্যূনতম জাতীয় ঐকমত্য। ন্যূনতম জাতীয় ঐকমত্য ছাড়া আমরা এই রাজনৈতিক উত্তরণ ঘটাতে পারবো না।
১২ ঘণ্টা আগে