leadT1ad

সিলেটে ‘উন্নয়ন-বৈষম্যের’ প্রতিবাদে দিনভর গণ-অবস্থান, ডিসির আশ্বাসে স্থগিত

স্ট্রিম সংবাদদাতা
স্ট্রিম সংবাদদাতা
সিলেট

প্রকাশ : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৮: ১৯
সিলেটে ‘উন্নয়ন-বৈষম্যের’ প্রতিবাদে দিনভর গণ-অবস্থান

সিলেটবাসীর সঙ্গে ‘উন্নয়ন-বৈষম্য ও বঞ্চনার’ প্রতিবাদে নগরের একটি প্রধান সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দিনভর গণ-অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। পরে বিকেলে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে কর্মসূচি স্থগিত করেন আন্দোলনকারীরা।

রোববার বিকেল সাড়ে ৪টায় গণ-অবস্থান কর্মসূচি স্থলে এসে ডিসি মো. সারওয়ার আলম আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে তাদের দাবিদাওয়া সরকারের কাছে তুলে ধরার আশ্বাস দিলে কর্মসূচি সাময়িকভাবে স্থগিতের ঘোষণা দেন আন্দোলনে নেতৃত্বদাতা সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী।

এরআগে, পূর্ব ষোঘণা অনুযায়ী রোববার বেলা ১১টা থেকে নগরের বন্দরবাজার সিটি পয়েন্ট থেকে সুরমা পয়েন্ট সড়কে অবস্থান নিয়ে আরিফুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে এ কর্মসূচি শুরু হয়। গণ-অবস্থানের অংশগ্রহণকারীরা বেলা ১টার দিকে আরিফুলের সিলেটের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের প্রধান ফটক বন্ধ করে দিয়ে উন্নয়ন বৈষম্য দূর করার দাবিতে নানা স্লোগান দেওয়া শুরু করেন।

‘সিলেট আন্দোলন’-এর ব্যানারে কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। কর্মসূচির শুরুতে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘সিলেটের সঙ্গে উন্নয়ন নিয়ে চরম বৈষম্য করা হচ্ছে। এর প্রতিবাদে আমরা রাজপথ দখলে নিলাম। সরকারের যৌক্তিক জবাব না পাওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না। সরকারের সুস্পষ্ট কোনো ঘোষণা ছাড়া কেউ রাজপথে ছেড়ে যাবেন না। যেহেতু সরকারের স্থানীয় প্রতিনিধি হচ্ছেন জেলা প্রশাসক, তাই তাঁর কার্যালয়ের প্রধান ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি (জেলা প্রশাসক) সরকারের সঙ্গে সিলেটবাসীর দাবির বিষয়ে আলোচনা করে নিশ্চয়ই সমাধানের একটা যৌক্তিক সিদ্ধান্ত দেবেন।’

আরিফুল হকের বক্তব্য শেষে বিভিন্ন সংঠনের নেতা ও বিশিষ্টজনেরা বক্তব্য শুরু করেন। কর্মসূচির শুরু থেকেই সিটি পয়েন্ট থেকে সুরমা পয়েন্ট সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে আশপাশের এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়।

কর্মসূচিস্থলে গিয়ে ডিসি মো. সারওয়ার আলম বলেন, ‘সিলেটের উন্নয়ন নিয়ে আপনাদের দাবিগুলো যৌক্তিক। আমিও এ বিষয়ে একমত। ইতোমধ্যেই সিলেটের উন্নয়নে বেশ কিছু প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা–সিলেট মহাসড়কের সংস্কার কাজ এবং আম্বরখানা থেকে এয়ারপোর্ট এলাকার সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ দ্রুতই শুরু হবে। বৃষ্টিপাত কমলেই এসব কাজ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।’

বিকেলে কর্মসূচিস্থলে গিয়ে কথা বলেন ডিসি মো. সারওয়ার আলম
বিকেলে কর্মসূচিস্থলে গিয়ে কথা বলেন ডিসি মো. সারওয়ার আলম

রেল যোগাযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে ইঞ্জিন সংকট থাকায় নতুন ট্রেন চালু করা সম্ভব নয়। তবে সিলেটের জন্য নতুন ৮টি কোচ যুক্ত করা হয়েছে। এর চেয়ে বেশি কোচ সংযুক্ত করা যাবে না, কারণ পাহাড়ি এলাকায় ভারী ট্রেন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ। পাশাপাশি রেললাইন সংস্কার কাজও হাতে নেওয়া হবে, তবে এটি শুরু করতে কমপক্ষে এক বছর সময় লাগবে।’

পরে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘সিলেটবাসী দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়নে অবহেলার শিকার। আজকের এই আন্দোলন ছিল সেই বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। প্রশাসনের আশ্বাসের ভিত্তিতে আমরা কর্মসূচি স্থগিত করেছি, তবে দাবিগুলো বাস্তবায়ন না হলে আবারও আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।’

এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে নগরের কুমারপাড়া এলাকার নিজ বাসভবনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন আরিফুল হক চৌধুরী। ওই সভা থেকে সিলেট অঞ্চলের ন্যায্য দাবি আদায়ে ‘সিলেট আন্দোলন’ নামে একটি সর্বজনীন প্ল্যাটফর্ম গঠন করা হয়। এতে রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, সাংবাদিক, ধর্মীয় ও পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা যুক্ত হয়েছেন।

এরআগে গত ১২ অক্টোবর নগরের কোর্ট পয়েন্টের সমাবেশ থেকে ১৫ দিনের আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছিল। এরপরও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এ কারণেই এবার গণ-অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

Ad 300x250
সর্বাধিক পঠিত

সম্পর্কিত