leadT1ad

উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে ইরানে অবস্থিত বাংলাদেশিদের মধ্যে

পাকিস্তানের সহযোগিতায় ইরান প্রবাসীদের ফেরাবে সরকার

তেহরানের পাকিস্তান দূতাবাসে কূটনৈতিক পত্র দিয়েছে বাংলাদেশ দূতাবাস। বাংলাদেশের এমন প্রস্তাবে সহযোগিতা করতে চায় বলে নীতিগত সম্মতি জানিয়েছে পাকিস্তান।

প্রকাশ : ১৯ জুন ২০২৫, ১৯: ৪৭
আপডেট : ২০ জুন ২০২৫, ১২: ৫৫
ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ইরানের রাজধানী তেহরানের আবাসিক এলাকায় উদ্ধার তৎপরতা চালানো হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানে থাকে দুই হাজারের বেশি বাংলাদেশি, যার মধ্যে রাজধানী তেহরানেই চার শতাধিক। চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের মধ্যে চরম নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েছে তারা। এই অস্থিরতায় তাদের দেশে আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, ইরানে অবস্থিত যেসব বাংলাদেশি দেশে ফিরতে চায়, তাদের দেশে ফেরত আনা হবে। প্রথমে তাদের নৌপথে ইরান–পাকিস্তান সীমান্তে পাঠানো হবে। পরে পাকিস্তান থেকে আকাশপথে বাংলাদেশে পাঠানো হতে পারে।

ইরানপ্রবাসীদের দেশে আনতে পাকিস্তানের সহযোগিতা চেয়েছে বাংলাদেশ। এ ব্যাপারে তেহরানের বাংলাদেশ দূতাবাস পাকিস্তান দূতাবাসে কূটনৈতিক পত্র দিয়েছে। বাংলাদেশের এমন প্রস্তাবে সহযোগিতা করতে চায় বলে নীতিগত সম্মতি জানিয়েছে পাকিস্তান। তবে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানায়নি ইসলামাবাদ।

এর আগে বুধবার (১৮ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, এক শ জনের বেশি বাংলাদেশি তেহরান থেকে নিরাপদ স্থানে যেতে দূতাবাসে যোগাযোগ করেছেন। তাঁদের মধ্যে ৫০ জন ইতিমধ্যে তেহরান ছেড়েছেন। এ ছাড়া দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিক এবং তাঁদের পরিবারের সদস্য মিলিয়ে ৪০ জন নিরাপদ স্থানে সরে গেছেন।

এসব বিষয়ে জানতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব নজরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বাংলা স্ট্রিমকে বলেন, 'আমাদের কাছে নতুন কোনো আপডেট নেই। বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনতে আমাদের চেষ্টা চলমান রয়েছে।'

তেহরান থেকে একটি কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, ইরানের রাজধানী খালি হতে শুরু করেছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশিদের দেশে ফেরানো এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে পুরোদমে চালু থাকবে দূতাবাস। তবে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটলে দূতাবাসের কার্যক্রম স্থগিত করা হবে অথবা অন্য কোথাও গিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা হবে।

সোমবার (১৭ জুন) তেহরানে ইসরায়েলের হামলায় আক্রান্ত হয়েছে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাদের বাসভবন। এর মধ্যে দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি ওয়ালিদ ইসলামের বাড়িঘর ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এ বিষয়ে বিবিসি বাংলাকে ওয়ালিদ ইসলাম বলেন, ‘আমার বাসা পুরোপুরি গুঁড়িয়ে দিয়েছে। আমাদের আশপাশে এখন আর কিছুই নাই। কেবল কূটনীতিকদের কয়েকটি বাড়ি টিকে আছে।’

এই ঘটনার পর উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে ইরানে অবস্থিত বাংলাদেশিদের মধ্যে। মঙ্গলবার (১৭ জুন) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিক বলেন, ‘আমরা তাদের নিয়ে উদ্বিগ্ন। তারা হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কার মধ্যে আছে। তাদের এবং আমাদের দূতাবাসে যারা কাজ করছেন, এখন তাদের নিরাপত্তা প্রদানের কাজ করছি।

তেহরানে বর্তমানে বাংলাদেশি অবস্থান করছে চার শতাধিক, তারা সবাই অক্ষত রয়েছে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এ ছাড়া তেহরানে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য হটলাইন চালু করা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞ‌প্তিতে বলা হয়, বর্তমান পরিস্থিতিতে জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য তেহরানের বাংলাদেশ দূতাবাস এবং ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইমার্জেন্সি হটলাইন স্থাপন করেছে।

ইরানে বসবাসরত সব বাংলাদেশি নাগরিক ও বাংলাদেশে তাঁদের স্বজনেরা জরুরি প্রয়োজনে দূতাবাসের ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মোবাইলফোন নম্বরগুলোতে হোয়াটসঅ্যাপসহ সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবেন। নম্বরগুলো হলো: +৯৮৯৯০৮৫৭৭৩৬৮ ও +৯৮৯১২২০৬৫৭৪৫।

Ad 300x250

সম্পর্কিত