leadT1ad

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

পরীক্ষার ফল টেম্পারিংয়ের অভিযোগ দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০২৫, ২২: ২৪
স্ট্রিম গ্রাফিক

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. রবিন হোসেন দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে পরীক্ষার ফল টেম্পারিংয়ের অভিযোগ তুলেছেন। অভিযুক্ত দুই শিক্ষক হলেন প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক আশীষ কুমার দত্ত ও অধ্যাপক কামরুল হাসান। গত ৯ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযোগ দাখিল করেন ওই শিক্ষার্থী। একই সঙ্গে অভিযুক্ত শিক্ষকদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।

এর আগে চলতি বছরের ৫ মার্চ স্নাতক চূড়ান্ত পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়। এতে ‘রিসার্চ রিপোর্ট’ কোর্সে সিজিপিএ ৪-এর মধ্যে মাত্র ২.০০ পান রবিন। পরবর্তীতে ১৩ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর ফলাফল পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন জানান তিনি। সেই আবেদনে রবিনকে গ্রেড কমিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেন।

রবিনের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ১৪ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ আবদুর রবকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটিতে সদস্য হিসেবে ছিলেন ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. এমরান জাহান এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলাম।

কমিটিতে সদস্যসচিব করা হয় বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের সিস্টেম এনালিস্ট রেশাদ বিন কিবরীয়াকে। তদন্ত কমিটি পরীক্ষার খাতা পুনঃনিরীক্ষার পর রবিনের সিজিপিএ ২.০০ গ্রেড থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৩.২৫ হয়। নতুন ফলাফল প্রকাশের পর গত ৯ নভেম্বর দুজন শিক্ষকের বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর অভিযোগ করেন রবিন। অভিযোগে দুজন শিক্ষকের বিচার চেয়েছেন তিনি।

রবিন হোসেন স্ট্রিমকে বলেন, ‘আমি যখন চতুর্থ বর্ষের গ্রেডশিট তুলি, তখন দেখি আমার ‘রিসার্চ রিপোর্টে’ ডি গ্রেড দেওয়া হয়েছে। আমার সেই রিপোর্টের সেকেন্ড এক্সামিনার ছিলেন বিভাগের প্রভাষক অশীষ কুমার দত্ত। তিনি যখন আমাকে কম নম্বর দেন, তখন সেটা থার্ড এক্সামিনার অধ্যাপক ড. কামরুল হাসানের কাছে যায়। তারা দুজন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমার রিপোর্টের গ্রেড কমিয়ে ২.০০ দেন, যা ডি গ্রেড। তারা দুজনেই আমার বিভাগের ওয়াইল্ডলাইফ ব্রাঞ্চের শিক্ষক।’

কোনো নির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই তারা এটি করেছিলেন বলে দাবি রবিনের। রবিন আরও বলেন, ‘নতুন ফলাফল আসার পর এই মাসের ৯ তারিখ এই দুইজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি। তাদের শাস্তি হলে অব্যশই অন্য শিক্ষার্থীদের এমন বিড়ম্বনায় পড়তে হবে না।’

তদন্ত কমিটির প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ড. মো. আবদুর রব বলেন, ‘তদন্ত কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তার রিপোর্ট নতুন করে পুনঃনিরীক্ষা করবে। পুনঃনিরীক্ষার পর তার ফলাফল ২.০০ থেকে ৩.২৫ হয়েছে। শুনেছি নতুন করে বিচার চেয়ে সে আরেকটি অভিযোগ দিয়েছে। অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেটি আমলে নেবে।’

এদিকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদীতভাবে’ কম নম্বর প্রদান ও তা পুনর্মূল্যায়নের বিষয়ে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মানছুরুল হকের কাছে জানতে চাইলে কথা বলতে আপত্তি জানান তিনি। অভিযুক্ত দুই শিক্ষক প্রভাষক অশীষ কুমার দত্ত ও অধ্যাপক ড. কামরুল হাসানের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদের কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

এদিকে শিক্ষার্থীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ স্ট্রিমকে বলেন, ‘নতুন একটি অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অভিযোগটি আমলে নিয়েছেন। আগামী সিন্ডিকেট সভায় আশা করছি একটা সিদ্ধান্ত আসবে।’

Ad 300x250
সর্বাধিক পঠিত

সম্পর্কিত