leadT1ad

ফেসবুক পোস্টের জেরে এসআইকে হেনস্তা

গাইবান্ধার এসপি, ওসিসহ তিনজনের নামে আদালতে এসআইয়ের স্ত্রীর মামলা

স্ট্রিম সংবাদদাতা
স্ট্রিম সংবাদদাতা
গাইবান্ধা

প্রকাশ : ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ২১: ২৭
গাইবান্ধা সদর থানা। ছবি: সংগৃহীত

পারিবারিক বিরোধের জেরে করা ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে গাইবান্ধা সদর থানার এক উপপরিদর্শককে (এসআই) পুলিশ সুপারের (এসপি) কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জেলার এসপি, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবং লালমনিরহাটের এক জেল কর্মকর্তাসহ তিনজনের নামে আদালতে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী এসআইয়ের স্ত্রী।

গাইবান্ধা সদর আমলি আদালতের বিচারক মামলাটি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার আসামিরা হলেন—গাইবান্ধার পুলিশ সুপার (এসপি) নিশাত অ্যাঞ্জেলা, গাইবান্ধা সদর থানার ওসি শাহিনুর ইসলাম তালুকদার এবং লালমনিরহাটের জেল সুপারিনটেনডেন্ট তারেকুজ্জামান তুহিন। তাঁদের মধ্যে তুহিন ভুক্তভোগী এসআই মনিরুজ্জামানের বোনের সাবেক স্বামীর মামাতো ভাই।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাদীপক্ষের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান। এর আগে বুধবার গাইবান্ধা সদর আমলি আদালতে মামলাটি করেন ভুক্তভোগী এসআই মনিরুজ্জামানের স্ত্রী কাজলী খাতুন। মনিরুজ্জামান বর্তমানে রাজশাহী রেঞ্জে কর্মরত আছেন।

অভিযোগের নেপথ্যে

মামলার আরজি সূত্রে জানা যায়, এসআই মনিরুজ্জামান গাইবান্ধা সদর থানায় কর্মরত থাকাকালে তাঁর স্ত্রী কাজলী খাতুন পারিবারিক বিরোধের জেরে আসামি তারেকুজ্জামান তুহিনকে ‘ছাত্রলীগ’ ট্যাগ’ দিয়ে ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করেন। এই ঘটনায় তুহিন গাইবান্ধার এসপি কার্যালয়ে মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে একটি মৌখিক অভিযোগ দেন।

অভিযুক্ত এসপি নিশাত এ্যঞ্জেলা এবং ওসি শাহিনুর ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
অভিযুক্ত এসপি নিশাত এ্যঞ্জেলা এবং ওসি শাহিনুর ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২৫ মার্চ মনিরুজ্জামান ও তাঁর স্ত্রীকে ‘পূর্বপরিকল্পিতভাবে’ এসপি কার্যালয়ে ডেকে নেন সদর থানার ওসি ও পুলিশ সুপার। আরজিতে অভিযোগ করা হয়, এসপি কার্যালয়ে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই গাইবান্ধার তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ধ্রুব জ্যোতির্ময় গোপ গিয়ে মনিরুজ্জামানের কাছ থেকে তাঁর মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও সঙ্গে থাকা ১৩ হাজার টাকা জোর করে কেড়ে নেন। পরে যাচাই-বাছাই শেষে ফোন ও ল্যাপটপটি সদর থানার ওসির কাছে আটক রাখা হয়।

আরজিতে আরও দাবি করা হয়েছে, বিষয়টি বাইরে প্রকাশ করলে চাকরির ক্ষতি হবে বলে মনিরুজ্জামানকে ভয় দেখানো হয় এবং ‘ভাড়াটে গুণ্ডা দিয়ে গুম-হত্যার’ হুমকি দেওয়া হয়। এমনকি তাঁকে সমালোচিত ‘আয়নাঘরের’ মতো স্থানে গুম করার হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করা হয়। এর জেরেই মনিরুজ্জামানকে ‘উদ্দেশ্যমূলকভাবে’ গাইবান্ধা থেকে রাজশাহী রেঞ্জে বদলি করা হয়েছে বলে মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

মনিরুজ্জামান ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাঁর মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ উদ্ধার করতে ব্যর্থ হন। নিরুপায় হয়েই তাঁর স্ত্রী আদালতে মামলা করেছেন বলে জানানো হয়।

অভিযুক্তদের বক্তব্য

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গাইবান্ধা সদর থানার ওসি শাহিনুর তালুকদার স্ট্রিমকে বলেন, ‘সদর থানার সাবেক এসআই মনিরুজ্জামানের স্ত্রী কাজলী খাতুন তাঁদের এক আত্মীয়ের নামে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া তথ্য ছড়ান। তুহিন বিষয়টি জানালে আমরা যাচাই করার জন্য মনিরুজ্জামানের মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপটি চেক করি। পরে তাঁকে সেগুলো ফেরতও দেওয়া হয়।’

মামলার বিষয়ে জানতে গাইবান্ধার এসপি নিশাত অ্যাঞ্জেলার সরকারি মোবাইল ফোন নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলেও তাঁর সাড়া পাওয়া যায়নি।

Ad 300x250

সম্পর্কিত