leadT1ad

রাউজানে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ: গুলি, গাড়ি ভাঙচুর ও সড়ক অবরোধ

প্রয়াত নেতা সিরাজুল ইসলামের কবর জিয়ারতে যাচ্ছিলেন গোলাম আকবর খন্দকার। একই সময় পূর্বঘোষিত মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করছিলেন গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী। চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়কের সত্তারহাট মোড়ে মুখোমুখি হওয়ার পরই সংঘর্ষ।

স্ট্রিম সংবাদদাতাচট্টগ্রাম
প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২৫, ২১: ১২
রাউজানে মঙ্গলবার সংঘর্ষের সময় একটি পাজেরো গাড়ির কাচ ভেঙে চুরমার করে প্রতিপক্ষ। স্ট্রিম ছবি

চট্টগ্রামে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলে আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাউজান উপজেলা। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকেলের দিকে দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা কমিটির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষে রক্তাক্ত হয়েছে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়কের সত্তারহাট এলাকা। এতে ‘ছররা গুলিতে’ আহত হন গোলাম আকবর খন্দকার। এরপর আগুন দেওয়া হয় মোটরসাইকেলে, ভাঙা হয় গাড়ির কাচ।

একই মোড়ে দুই পক্ষ, রূপ নিল সংঘর্ষে

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা বিএনপি প্রয়াত সভাপতি সিরাজুল ইসলামের কবর জিয়ারতে মঙ্গলবার বিকেলে লোকজন ও গাড়ি বহর নিয়ে যাচ্ছিলেন গোলাম আকবর খন্দকার। একই সময় চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়কে অনুসারীদের নিয়ে পূর্বঘোষিত মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করছিলেন গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী। মহাসড়কের সত্তারহাট মোড়ে মুখোমুখি হয় দুটি পক্ষ। এতে শুরুতে হাতাহাতিতে জড়ালেও পরে তা রূপ নেয় সংঘর্ষে। দুই পক্ষেই দফায় দফায় গুলিবর্ষণ, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ এবং লাঠিসোঁটা নিয়ে প্রতিপক্ষের ওপর হামলা চালায়।

ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, প্রতিপক্ষের হামলায় গোলাম আকবরের বহরের একটি পাজেরো গাড়ির সামনের ও পেছনের কাচ ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। এ সময় গাড়ির ভেতরেও ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। রাস্তার পাশে পুড়ে ছাই হয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে একাধিক মোটরসাইকেল। কয়েক মিনিটের ব্যবধানে অবরোধ করা হয় চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়ক। সংঘর্ষে গোলাম আকবর খন্দকারসহ উভয় পক্ষের একাধিক ব্যক্তি আহত হন বলে জানা গেছে।

গুলিতে আহতের দাবি গোলাম খন্দকারের

সংঘর্ষে আহত গোলাম আকবর খন্দকার বলেন, ‘আমরা শুধু কবর জিয়ারত করতে গিয়েছিলাম। সত্তারহাটে পৌঁছতেই তারা (গিয়াস উদ্দিনের লোকজন) হামলা চালায়। আমাদের বহরে গুলিও চালানো হয়। আমি নিজেও ঘাড়ে ছররা গুলি লেগে আহত হয়েছি।’

আকবর খন্দকারের দাবি, তাঁর ব্যক্তিগত সহকারীসহ অন্তত ১৫ নেতা-কর্মী হামলায় রক্তাক্ত হয়েছেন। এ জন্য তিনি সরাসরি গিয়াস উদ্দিন কাদেরের অনুসারীদের দায়ী করেন।

রাউজানে মঙ্গলবার সংঘর্ষে আহত চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকার। স্ট্রিম ছবি
রাউজানে মঙ্গলবার সংঘর্ষে আহত চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকার। স্ট্রিম ছবি

গিয়াস উদ্দিনের সাফাই, ‘ঘুমে ছিলাম’

অভিযোগ সম্পর্কে জানাতে চাইলে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী মোবাইন ফোনে জানান, তিনি গত কয়েকদিন ধরে অসুস্থ, সংঘর্ষের ব্যাপারে কিছুই জানেন না। ‘আমি ঘুমে ছিলাম, কিছু জানি না’ বলেন তিনি।

তবে গিয়াস উদ্দিনের ঘনিষ্ঠ নেতা রাউজান বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফিরোজ আহমেদ বলেন, ‘এটি ছিল পরিকল্পিত হামলা। যুবদলের শান্তিপূর্ণ শোভাযাত্রায় অতর্কিত গুলি চালিয়েছে গোলাম আকবরের লোকজন। তাঁরা ফটিকছড়ি থেকে ভাড়াটে সন্ত্রাসী এনে আমাদের ওপর হামলা চালান।’

কী বলছে প্রশাসন

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, ‘একটি পক্ষ কবর জিয়ারতে যাচ্ছিল, অন্য পক্ষ করছিল শোভাযাত্রা। সত্তারহাটে দুই পক্ষ মুখোমুখি হলে সংঘর্ষ বাঁধে। পুলিশ দ্রুত গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শুরুতে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেলেও পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়েছে।’

এদিকে গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে রাউজানে বিএনপি দুইটি পক্ষের আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে কমপক্ষে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১০টিই রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। একই সময়ের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে শতাধিক, গুলিবিদ্ধ হয়েছেন প্রায় ৩৫০ জন। আগুনে পুড়েছে বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, যানবাহন।

Ad 300x250

পীর শাহ মুহাম্মদ আহসানুজ্জামানের মৃত্যুতে তথ্য উপদেষ্টার শোক

রাউজানে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ: গুলি, গাড়ি ভাঙচুর ও সড়ক অবরোধ

মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের আইনের আওতায় আনতে সরকার বদ্ধপরিকর: ড. ইউনূস

মওলানা ভাসানী না থাকলে কখনো শেখ মুজিব তৈরি হতে পারতেন না: নাহিদ ইসলাম

৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচন, ভোটকেন্দ্র হলের বাইরে

সম্পর্কিত