leadT1ad

আড়াইহাজারে বিএনপি কার্যালয়ে মারধর, মৎস্যজীবী দলের নেতার মৃত্যু

গত বছরের পাঁচ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর মাহামুদপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির কার্যালয়ের জন্য জাহাঙ্গীরের কাছ থেকে একটি দোকানঘর ভাড়া নেওয়া হয। কিন্তু তারপর থেকে ভাড়া পরিশোধ করা হয়নি।

স্ট্রিম সংবাদদাতানারায়ণগঞ্জ
প্রকাশ : ৩০ জুলাই ২০২৫, ২১: ০৫
আড়াইহাজারে বিএনপি কার্যালয়ে মারধর, মৎস্যজীবী দলের নেতার মৃত্যু। ছবি: সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ভাড়ার পাওনা টাকা চাওয়ায় একটি ওয়ার্ড বিএনপির কার্যালয়ে মারধর করা হয় দোকানঘর মালিক ও মৎস্যজীবী দলের নেতা মো. জাহাঙ্গীর ভূঁইয়াকে (৫৭)। পরে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। ইউনিয়ন বিএনপি নেতা-কর্মীরা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের ছেলে রাসেল। উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তোতা মেম্বারসহ বারোজন এর সঙ্গে জড়িত বলে দাবি করেন তিনি। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি।

হত্যার শিকার মো. জাহাঙ্গীর ভূইয়া (৫৭) মাহামুদপুর ইউনিয়নের সালমদী নয়াপাড়া গ্রামের মৃত তালেব আলী ভূইয়ার ছেলে। তিনি মাহমুদপুর ইউনিয়ন মৎস্যজীবী দলের সহসাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ইউনিয়ন মৎস্যজীবী দলের সভাপতি নজরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, গত বছরের পাঁচ আগস্টের শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর মাহামুদপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির কার্যালয় করা হয়। এ জন্য জাহাঙ্গীরের কাছ থেকে একটি দোকানঘর ভাড়া নেন তোতা মেম্বার। কিন্তু তারপর থেকে ভাড়া পরিশোধ করা হয়নি।

কার্যালয়টি স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে বিএনপির কেন্দ্রীয় অর্থবিষয়ক সহ সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমনের অফিস হিসেবে পরিচিত ছিল। হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তরা সুমনের অনুসারী বলে দাবি করেছেন রাসেল।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বুধবার সকালে পার্টি অফিসের বকেয়া ১০ হাজার টাকা ভাড়া চাইতে গেলে ‘বিএনপির অফিসের জন্য কিসের ভাড়া দিব’ বলেন তোতা মেম্বার। এ সময় কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে তোতা মেম্বারকে ধাক্কা দেন জাহাঙ্গীর। পরবর্তীতে তোতা মেম্বারের অনুসারী ও তার ছেলেরা জাহাঙ্গীরকে ধরে পার্টি অফিসে নিয়ে মারধর করেন।

এ সময় জাহাঙ্গীর গুরুতর আহত হয়ে গেলে অভিযুক্তদের কয়েকজন জাহাঙ্গীর আলমকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

জাহাঙ্গীরের ছেলে রাসেল বলেন, ‘বুধবার সকালে ভাড়া চাইতে গেলে তোতা মেম্বার (৭০) ও তার ছেলে খোকন (৩৫), রাসেল (৩০) এবং বেণু হাজীর ছেলে আলম (৪৫) ও সাদ্দাম (৩৫) সহ ছয়-সাত জন মিলে আমার বাবাকে পার্টি অফিসে নিয়ে মারধর করে। পরে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করে।’

আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার নাসির উদ্দিন জানান, মাহামুদপুর ইউনিয়নে কয়েকটি দোকান মিলে বিএনপির একটি দলীয় কার্যালয় করা হয়েছে। দোকানগুলোর একটি অংশ জাহাঙ্গীরের। সকালে তিনি দোকানের ভাড়া চাইতে গেলে সেখানে মারপিটের ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করে। এই তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করবে বলে জানিয়েছে।’

জানতে চাইলে মাহমুদুর রহমান সুমন মোবাইল ফোনে তিনি বলেন, ‘আমি আসলে মৃত্যুর খবর শুনেছি। নিহত ব্যক্তিও আমার লোক। ঘটনা যাই ঘটুক, আমি এর বিচার চাই।’

মারধরে হত্যার ঘটনা শুনেছেন বলে জানান আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির সভাপতি ইউসুফ আলী মেম্বার। তিনি বলেন, ‘অপরাধীর কোনো দলীয় পরিচয় নেই। অপরাধী যে-ই হোক, আমরা তার বিচার চাই। তিনি দলে যুক্ত থাকলে আমরা দলীয়ভাবেও তার ব্যবস্থা নেব।’

Ad 300x250

সম্পর্কিত