leadT1ad

সংবিধান সংস্কার পরিষদ নিয়ে অস্পষ্টতায় নতুন সংকটের বীজ বপন হলো: রুহিন হোসেন প্রিন্স

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ২১: ৩৩
সিপিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হসেন প্রিন্স। সংগৃহীত ছবি

ঐকমত্য কমিশনের গণভোট প্রস্তাব ও রাষ্ট্রপতির সনদ স্বাক্ষর নিয়ে সমালোচনা করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, রাষ্ট্রপতি কোন ভিত্তিতে ওই সনদে স্বাক্ষর করলেন, তা এখনো পরিষ্কার নয়। এ বিষয়ে বিচার বিভাগই বরং ভালোভাবে বলতে পারবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। সংবিধান সংস্কার পরিষদ নিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন যদি নির্বাচিত সংসদ নিজেদের সংবিধান সংস্কার পরিষদ ঘোষণা করে, তা গ্রহণযোগ্য হবে না। তারা কি পুরো সংবিধান রিরাইট করবে, না আংশিক সংশোধন করবে— সেটি স্পষ্ট নয়। এভাবে নতুন একটি সংকটের বীজ বপন করা হয়েছে।’

আজ বুধবার (১৩ নভেম্বর) ঢাকা স্ট্রিমকে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, 'আমাদের কাছে এখনো পরিষ্কার নয় যে রাষ্ট্রপতি কোন ভিত্তিতে সনদে স্বাক্ষর করেছেন। এ বিষয়ে আরও ব্যাখ্যা প্রয়োজন। ঐকমত্য কমিশনের কাজ ছিল সংকট নিরসন করা, কিন্তু তারা বরং ঐক্যের জায়গায় অনৈক্য তৈরি করেছে। প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে ভোট ফিরিয়ে আনার কোনো ইঙ্গিত নেই, বরং অনেকের মধ্যেই নতুন করে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।'

সংবিধান সংস্কার পরিষদ নিয়ে তিনি বলেন, 'আমরা সংবিধান সংস্কার পরিষদের বিষয়ে কোনো আলোচনাই করিনি। এখন যদি নির্বাচিত সংসদ নিজেদের সংবিধান সংস্কার পরিষদ ঘোষণা করে, তা গ্রহণযোগ্য হবে না। তারা কি পুরো সংবিধান রিরাইট করবে, না আংশিক সংশোধন করবে— সেটি স্পষ্ট নয়। এভাবে নতুন একটি সংকটের বীজ বপন করা হয়েছে।'

ঐকমত্য কমিশনের নোট অব ডিসেন্ট প্রসঙ্গে রুহিন প্রিন্স বলেন, 'এই বিষয়গুলো সুনির্দিষ্টভাবে প্রকাশ করা দরকার ছিল। কোন ৩০টি পয়েন্টের কথা বলা হচ্ছে, তা পরিষ্কার নয়। আমার জানা মতে, যে ৪৫টি প্রশ্ন ছিল, তার মধ্যে প্রায় সব ক্ষেত্রেই কোনো না কোনোভাবে নোট অব ডিসেন্ট আছে। এক বা দুইটি দল নয়, অনেক দলই নানাভাবে ভিন্নমত দিয়েছে। না দেখে এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা কঠিন।'

তিনি আরও বলেন, 'সংকট দূর হওয়ার কোনো লক্ষণ এখনো দেখছি না। বরং ঐকমত্যের পরিবর্তে অনৈক্যই এখন টিকে আছে।'

সিপিবির এই নেতা বলেন, 'আমরা গণভোটকে অপ্রয়োজনীয় মনে করি। গণভোট নিয়ে বিভিন্ন দলের মধ্যে মতপার্থক্য থাকায় ঐকমত্য করা কঠিন। আমাদের মতে, গণভোট প্রয়োজন হবে তখনই, যখন নির্বাচিত সংসদ কোনো মৌলিক সাংবিধানিক পরিবর্তনের প্রস্তাব আনবে। এখনই এ বিষয়ে গণভোটের কোনো যৌক্তিকতা নেই।'

ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবে উল্লেখিত ৩০টি পয়েন্ট নিয়েও প্রশ্ন তুলে রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘এই ৩০টা পয়েন্ট কী—তা আমরা এখনো নিশ্চিত নই। দেশের প্রায় ১২ কোটি ভোটারের অনেকেই শিক্ষিত নন, তারা এত জটিল বিষয় কীভাবে বুঝবেন? তাই এই অবস্থায় গণভোট বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।'

উচ্চকক্ষ নিয়ে অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, 'উচ্চকক্ষ গঠনের প্রস্তাব আমরা সমর্থন করি না। বাংলাদেশের মতো দেশে এটি "গরিবের ঘরে হাতি পোষার" মতো বিষয়। এটি এখন করা অপ্রয়োজনীয়। ভবিষ্যতে প্রয়োজনে আলোচনা হতে পারে, তবে এই মুহূর্তে নয়।'

প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ নিয়ে তিনি বলেন, 'অনেকে আশা করেছিলেন প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে সংকট দূর হবে, কিন্তু তেমন কোনো ইঙ্গিত আমি দেখছি না। বরং নতুন অনৈক্যের সূত্র তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে তিনি পানগাঁও কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে দেওয়ার যে ইঙ্গিত দিয়েছেন, তা দেশের জন্য ক্ষতিকর।'

সিপিবির এই সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, 'আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম তিনি নির্বাচনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট বক্তব্য দেবেন। কিছুদিন আগেই তিনি বলেছিলেন ১৫ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি দেখতে চান। আজ ১৩ নভেম্বর, তাহলে অগ্রগতি কী? তিনি যদি আজ স্পষ্টভাবে বলতেন যে ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন কমিশন তারিখ ঘোষণা করুক, তাহলে অনেক সংশয় দূর হতো।'

Ad 300x250

সম্পর্কিত